Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মাধুরী দীক্ষিত ১৯৮৪ সালে অবোধ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। কিছু শিশু ও সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকায় অভিনয়ের পর তিনি তেজাব (১৯৮৮)[1] ছবিতে প্রধান নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এ ছবিটিই তাকে খ্যাতির উচ্চতর আসনে বসায় ও প্রথমবারের মতো ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন এনে দেয়।
তারপর তিনি বেশকিছুসংখ্যক হিট ছবি হিসেবে রাম-লক্ষ্মণ (১৯৮৯), পরিন্দা (১৯৮৯), ত্রিদেব (১৯৮৯), কিশেন কানহাইয়া (১৯৯০) এবং প্রহর (১৯৯১)-এ অভিনয় করেন। ঐ ছবিগুলোয় একত্রে অভিনয়ের কারণে অনিল কাপুরের সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব হয়।
ইন্দ্র কুমারের দিল (১৯৯০) ছবিতে মাধুরী আমির খানের সাথে অভিনয় করেন। ছবিতে তিনি মধু মেহরা নামে একটি ধনী ও উগ্র মেজাজের বালিকা হিসেবে রাজা’র প্রেমে পড়েন এবং তাকে বিয়ে করে বাড়ী ত্যাগ করেন। চলচ্চিত্রটি ভারতে সে বছরের অন্যতম বক্স-অফিস হিট তকমা লাভ করে[2] এবং অনবদ্য অভিনয়ের কারণে মাধুরী তার প্রথম ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কার লাভ করেন।
দিল ছবির ব্যবসায়িক সাফল্য অনুসরণ করে সাজন (১৯৯১), বেটা (১৯৯২), খলনায়ক (১৯৯৩), হাম আপকে হেঁ কৌন..! (১৯৯৪) এবং রাজা (১৯৯৫) বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ‘বেটা’[3] ছবিতে দীক্ষিতের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল - একজন নারী কর্তৃক অশিক্ষিত ব্যক্তিকে বিয়ে করা ও শাশুড়ি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়া। ছবিটি তাকে সেরা অভিনেত্রীর আসনে বসিয়ে ২য়বারের মতো ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জয় করতে সাহায্য করে।
হাম আপকে হেঁ কৌন..! ছবিটি হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বৃহত্তম ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করে। অর্থের অঙ্কে ভারতে ৬৫ কোটি রূপী এবং বহির্বিশ্বে ১৫ কোটি রূপী আয় করে। ছবিটির জন্য মাধুরী ৩য় বারের মতো ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। একই বছরে তাকে আঞ্জাম ছবিতে তার চমৎকার অভিনয়শৈলী ও নৈপুণ্যের জন্য একই বিভাগে মনোনয়ন পান।
একটি অসফল বছরের পরে, যশ চোপড়ার দিল তো পাগল হ্যায় (১৯৯৭) ছবিতে পুজা চরিত্রে স্বরূপে আবির্ভূত হন। চলচ্চিত্রটি সৃষ্টিশীলতা ও বাণিজ্যিকভাবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং দীক্ষিতকে ৪র্থ বারের মতো ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার এনে দেয়।[4] একই বছরেই প্রকাশ ঝা’র মৃত্যুদণ্ড ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে প্রশংসা পান। বাণিজ্যিক এবং শিল্পধর্মীয় চলচ্চিত্রের মর্যাদা পেয়ে দেশের বাইরেও খ্যাতি অর্জন করে। জেনেভা‘র সিনেমা টট একরান এবং ব্যাংকক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। চলচ্চিত্রে অসামান্য অভিনয়ের জন্য তিনি স্ক্রিন পুরস্কার লাভ করেন।
শুধু অভিনয় দক্ষতার জন্যই দীক্ষিত পরিচিত ছিলেন না;[5][6][7][8][9][10] তাঁর নৃত্যকলাও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।[11] বলিউড গানে তার নৃত্যশৈলী “এক দো তিন” (তেজাব), “হামকো আজ কাল হ্যায়” (সায়লাব), “বড় দুখ দিনহা” (রাম লক্ষ্মণ), “ধক ধক” (বেটা), “চানে কে খেত মে” (আনজাম), “দিদি তেরা দেবর দিওয়ানা” (হাম আপকে হে কৌন), “চোলি কি পিছে” (খলনায়ক), “আখিয়া মিলাও” (রাজা), “মেরা পিয়া ঘর আয়া” (ইয়ারানা) “কে সেরা সেরা” (পুকার), “মার ডালা” (দেবদাস) গানগুলোয় দেখা যায় ও সকলের ভূয়সী প্রশংসা কুড়ায়।
২০০২ সালে সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর দেবদাস ছবিতে শাহরুখ খান এবং ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। অসামান্য অভিনয় শৈলী ও অপূর্ব দক্ষতার জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল এবং কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল এবং সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য একাডেমি পুরস্কারে ভারতীয় নিবেদন হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।
পরের বছর একটি চলচ্চিত্রে ‘মে মাধুরী দীক্ষিত বনানা চাহতি হো’ তার নামে করা হয়েছিল[12] এবং প্রদর্শনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল যাতে একটি নারী (অন্তরা মালি) বলিউড শিল্পে ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে নিজেকে মাধুরী দীক্ষিত হিসেবে পরিচিতি পেতে চেষ্টা করেছিল।[8][9]
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে দেবদাস ছবির গানের জন্য তাকে ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দেয়া হয়।[13] সরোজ খানের করিওগ্রাফীতে তিনি অনবদ্য অভিনয় করেন।
তিনি বিখ্যাত ভারতীয় চিত্রকর এম এফ হুসাইনের জন্য ‘গজ গামিনী’ (২০০০) ছবিতে নারীবাদী চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিতে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল।[14] এই চলচ্চিত্র তাকে কালীদাসের নারীচরিত্র, লিওনার্দো’র মোনালিসা, একজন উগ্রবাদী এবং সঙ্গীতবিদ ইত্যাদি বিভিন্ন নারীরূপে দেখা যায়।
৭ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে দীক্ষিত স্বামী-সন্তানসহ মুম্বাইয়ে ফিরে আসেন এবং আজা নাচলে (২০০৭) ছবিতে অভিনয় করেন।[15] চলচ্চিত্রটি নভেম্বর, ২০০৭ মুক্তি পায় এবং প্রচণ্ড সমালোচনা[16][17][18] সত্ত্বেও নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা হয় ‘তিনি (অর্থাৎ মাধুরী) এখনও তা দেখাতে পারেন’ শিরোনামে দীক্ষিতের অভিনয়ের উচ্চ প্রশংসাসহ গভীরভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছিল।[19][20]
২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রেডিফ মাধুরী দীক্ষিতকে বলিউডের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ঘোষণা করে।[5] মে ২০০৮ সালে লস এঞ্জেলসে ভারতীয় ছায়াছবি উৎসবে সম্মানিত করা হয়।[21] মার্চ ২০১০ সালে ইকোনমিক টাইমস ঘোষণা করে যে, মাধুরী দীক্ষিত “৩৩ মহিলার একজন, যাকে নিয়ে ভারতবাসী গর্বিত”।[22]
সাল | ছবি | চরিত্রে নাম | অন্যান্য / মন্তব্য |
---|---|---|---|
১৯৮৪ | অবোধ | গৌরী | |
১৯৮৫ | আওয়ারা বাপ | ||
১৯৮৬ | স্বাতী | আনন্দী | |
১৯৮৭ | মোহরে | মায়া | |
হিফাজত | জানকী | ||
উত্তর দক্ষিণ | চান্দা | ||
১৯৮৮ | খাতরুন কি খিলাড়ী | কবিতা | |
দয়াবান | নীলা বেলহু | ||
তেজাব | মোহিনী | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
১৯৮৯ | বরদী | জয়া | |
রাম লক্ষণ | রাধা | ||
প্রেম প্রতীজ্ঞা | লক্ষ্মী | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
ইলাকা | বিদ্যা | ||
মুজরিম | সোনিয়া | ||
ত্রিদেব | দিব্যা মাথুর | ||
কানুন আপনা আপনা | ভারতী | ||
পারিন্দা | পারো | ভারত সরকার কর্তৃক অসকারের জন্য প্রেরণ | |
পাপ কা আথ | |||
১৯৯০ | মহা সংগ্রাম | ||
কিশেন কানহাইয়া | অঞ্জু | ||
ইজ্জতদার | মোহিনী | ||
দিল | মধু মেহরা | বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
দিওয়ানা মুঝ সা নাহিন | অনীতা | ||
জীবন এক সংঘর্ষ | মধু সেন | ||
সয়লাব | ডা. সুষমা | ||
জামাই রাজা | রেখা | ||
থানেদার | চান্দা | ||
১৯৯১ | পেয়ার কা দেবতা | দেবী | |
খিলাফ | সীতা | ||
হানড্রেড ডেজ | দেবী | ||
প্রতীকার | মধু | ||
সাজন | পূজা | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
প্রহার : দ্য ফাইনাল এটাক | শার্লি | ||
১৯৯২ | বেটা | সরস্বতী | বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার |
জিন্দেগী এক জুয়া | জুহী | ||
প্রেম দিওয়ানে | শীবাঙ্গী মেহরা | ||
খেল | সীমা / ডা. জাদি বুটি | ||
সঙ্গীত | |||
১৯৯৩ | ধরবী | ড্রীম-গার্ল | |
সাহিবান | সাহিবান | ||
খলনায়ক | গঙ্গা (গঙ্গোত্রী দেবী) | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
ফুল | |||
১৯৯৩ | দিল তেরা আশিক | সোনিয়া খান্না / সাবিত্রী দেবী | |
আসু বানে আঙ্গারে | |||
১৯৯৪ | আঞ্জাম | শিবানী চোপড়া | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার |
হাম আপকে হ্যায় কন | নিশা চৌধুরী | বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
১৯৯৫ | রাজা | মধু গাড়েয়াল | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার |
ইয়ারানা | ললিতা / শিখা | ||
১৯৯৬ | প্রেম গ্রন্থ | কাজরী | |
পাপী দেবতা | |||
রাজ কুমার | |||
১৯৯৭ | কয়লা | গৌরী | |
মহান্ত | জেনী পিন্টু | ||
মৃত্যুদণ্ড | কেতকী | ||
মোহাব্বত | সীতা শর্মা | ||
দিল তো পাগল হ্যায় | পূজা | বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
১৯৯৮ | বড়ে মিয়া ছোটে মিয়া | মাধুরী দীক্ষিত | বিশেষ অভিনয় |
ওয়াজুদ | অপূর্বা চৌধুরী | ||
১৯৯৯ | আরজু | পূজা | |
২০০০ | পুকার | অঞ্জলী | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার |
গজ গামিনী | গজ গামিনী / সঙ্গীতা / শকুন্তলা / মনিকা / মোনালিসা | ||
২০০১ | ইয়ে রাস্তে হ্যায় পেয়ার কী | নেহা | |
লজ্জ্বা | জানকী | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার | |
২০০২ | হাম তুমহারে হ্যায় সনম | রাধা | |
দেবদাস | চন্দ্রমুখী | বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার
ভারতের সরকারীভাবে অস্কারের জন্য অন্তর্ভুক্তি | |
২০০৭ | আজা নাচালে | দিয়া | মনোনয়ন: ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার |
২০১৮ | টোটাল ধামাল |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.