Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মহিলা সৈন্য শাখা (ইংরেজিঃ Women's Army Corps বা সংক্ষেপে WAC) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর নারীদের শাখা (সেনাদল) ছিলো। এই শাখাটি গড়ে তোলা হয়েছিলো ১৯৪২ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে; ১৯৪৩ সালের ১ জুলাই এই শাখাটি মার্কিন সেনাবাহিনীর নিয়মিত সৈন্যদলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়; নারীদের সেনা ব্যারাক পুরুষ সেনাদলের সাথে ছিলোনা কিন্তু ১৯৭৮ সালের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখে এই সেনাদলটি ভেঙে দেওয়া হয় এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী কর্মরত নারী সৈন্যরা পুরুষদের সেনা ব্যারাকগুলোতে মিশ্রিত হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মহিলা সৈন্য শাখার সকল সদস্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো, এছাড়াও শাখাটির সদস্যদেরকে কোরীয় যুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধেও স্বল্প পরিমাণে নিয়োজিত করা হয়েছিলো।
মহিলা সৈন্য শাখা | |
---|---|
সক্রিয় | ১৫ মে ১৯৪২-২০ অক্টোবর ১৯৭৮ |
দেশ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
আনুগত্য | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
শাখা | মার্কিন সেনাবাহিনী |
হোম স্টেশন | ফোর্ট ম্যাকক্লেলান, আলাবামা |
শাখা রঙ | পুরোনো স্বর্ণালি |
যুদ্ধসমূহ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোরীয় যুদ্ধ ভিয়েতনাম যুদ্ধ |
এই শাখার সদস্যদেরকে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীতে মহিলা সেনাদল গঠনের পরিকল্পনা করেছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল গিলমান সি. মাজেট, যদিও তার সকল পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছিলো; তিনি আশা করেছিলেন মাত্র ১১,০০০ সদস্যের একটি সেনাদল।[1] প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমর্থন ছাড়া; এডিথ নোউর্স রজার্স নামের একজন নারী সংসদ সদস্য নারীদের সৈন্যদল গঠনের জোরালো প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন ১৯৪১ সালের ২৮ মে তারিখে। মহিলা সাংসদের কথা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়নি প্রথমে; পরে মার্কিন সেনাবাহিনী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিয়ে ফেললে ঐ মহিলা সাংসদের কথা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়। মার্কিন সংসদ ১৯৪১ সালের ১৪ মে একটি আইন পাশ করে যে নারীদেরকে সেনাবাহিনীতে নেওয়া হবে এবং এটা কার্যকর হয় ঠিক এক বছর পরে অর্থাৎ ১৯৪২ সালের ১৪ মে।[2] মার্কিন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট নারীদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ প্রদানের অনুমতি সংক্রান্ত কাগজে স্বাক্ষর করেন এবং প্রথম বছরে ২৫,০০০ নারীকে মার্কিন সেনাবাহিনীতে ঢোকানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হেনরি এল. স্টিমসন ১,৫০,০০০ নারীকে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ দেবার পরিকল্পনা করেন।[3]
তৎকালীন মার্কিন সেনাপ্রধান জেনারেল জর্জ মার্শাল নারীদেরকে কীভাবে নিয়োগ দেয়া হবে এই দিকে মনোনিবেশ করেন, প্রাথমিকভাবে নারীদেরকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর মতো করে নিয়োগ দেবার কথা ভাবা হয়; ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নারীরা সৈনিক হিসেবে কাজ করেছিলো।[4][5] ১৯৪২ সালে প্রথমবারের মতো নারীরা ডি মোয়েন, আইওয়ার একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু করেন। প্রথম দিনে তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য উপযুক্ত কিনা তা যাচাই করা হয়।[6]
তিনটি বিশেষ কাজে মহিলাদেরকে প্রাথমিক ভাবে নেওয়া হয় - টেলিফোন অপারেটর, মিস্ত্রি এবং পাচকের কাজে। পরে পোস্টাল ক্লার্ক, ড্রাইভার, স্টেনোগ্রাফার এবং ক্লার্ক টাইপিস্ট হিসেবে নারীদেরকে নেওয়া শুরু হয়। ক্ষুদ্রাস্ত্র এবং ভারী অস্ত্র মেরামতের কাজেও নারীদেরকে নেওয়া শুরু হয়।
সেনাবাহিনীর চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকতো যে, "আপনারই চাকরিঃ পুরুষদের মতো আপনিও সৈনিক হউন"।[7] তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিলো, মার্কিন সেনাবাহিনীতে নারী নিয়োগ ছিলো এই প্রথম। "ইউ মাস্ট বি ফিট" শিরোনামের একটি শারীরিক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল (ছোটো গ্রন্থ) ১৯৪৩ সালের জুলাই মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিলো, যার লক্ষ্য ছিল শীর্ষ শারীরিক মানের নারী সৈনিক প্রার্থী পাওয়া। চাকরি নিয়োগের বিজ্ঞাপনে লেখা থাকতো যে, নারীদেরকে অবশ্যই সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য মানসিক এবং শারীরিক ভাবে শক্ত থাকতে হবে, শারীরিক প্রশিক্ষণ পুরুষদের মতোই হচ্ছিলো যদিও পুরোপুরি নয় কিন্তু কুচকাওয়াজ পুরুষদের মতোই ছিলো এবং নারীদের জন্য সামরিক উর্দির ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর নিজস্ব রীতি অনুযায়ী শার্ট এবং ঘাঘরা পরিধানের ব্যবস্থা করা হয়; মাথার চুল কাটার নিয়মও মার্কিন সেনাবাহিনীর নিজস্ব রীতি অনুযায়ী তৈরি করা হয়।[7]
সেনাবাহিনী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে অনেক নারীই আবেদন করা শুরু করে। নারীরা অস্ত্র, কামান, ট্যাংক এবং যানবাহন মেরামতকারী হিসেবে নিয়োগ পেতো আর সেনা বিমান শাখাতে নারীদেরকে বিমান এবং বিমানের যন্ত্রাংশ মেরামত করার কাজে নেওয়া হতো।[3] নারীরা এসব কাজ ছাড়াও সামরিক পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব, চিকিৎসা সহকারীর দায়িত্ব, সৈন্যদের খাবার এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের দায়িত্ব পেতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ১৯৪২ সাল থেকে (মহিলা সৈনিক শাখা প্রতিষ্ঠাকালীন সময় হতে) ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত মার্কিন সেনাবাহিনীতে নারীদের সংখ্যা ছিলো প্রায় দেড় লাখ জন।[8] মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এইসব নারীরাই ছিলো প্রথম যারা যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলো।[9]
১৯৪৩ সালে একটি অভিযোগ ওঠে যে নারীদেরকে সেনাবাহিনীতে সৈন্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা উচিৎ নয়; এটা অনৈতিক একটা কাজ।[10] বহু পুরুষ সৈন্য নারীদেরকে সৈন্য হিসেবে নেবার বিরোধিতা করতো কারণ তারা বিশ্বাস করতো যে, নারীরা সৈনিক হিসেবে মানানসই নয়, তাছাড়া এরকমও চিন্তা করা হতো যে, বহু পুরুষ সৈন্য নারীদের সঙ্গে যৌনক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়তে পারে এবং নারীরা নারীদের সঙ্গে একই সেনাছাউনীতে থেকে সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে - এইগুলো সেনাবাহিনীর জন্য খুবই অপমানজনক এবং শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্ম যা যুদ্ধে পরাজয় ডেকে আনতে পারে।[11] এছাড়া একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, মার্কিন নারীরা সেনাবাহিনীতে যৌন সেবিকা হিসেবে যোগ দিচ্ছে যে নারী সৈনিকরা আসলে নাকি সত্যিকারের সৈনিক নয় তারা পুরুষ সৈনিকদের প্রমোদবালা হিসেবে নাকি সেনাবাহিনীতে ঢুকছে।[12] গুজব গুলো মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়ে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে কয়েকটি বিজ্ঞপ্তি দৈনিক সংবাদ পত্রগুলোতে প্রকাশিত হচ্ছিলো এবং সাধারণ মানুষদেরকে কোনো গুজবে কান না দেবার আহ্বান জানানো হয়েছিলো।[13][14]
অনেক অসৎ সাংবাদিক ছিলেন যারা নারী সৈন্য নিয়োগের নামে দৈনিক সংবাদপত্রে কুৎসা রটাচ্ছিলেন,[15][16][17] এবং নারী সৈনিক নিয়োগ বন্ধ করার জন্য সংবাদপত্রে কুযুক্তিমূলক কথা লিখছিলেন,[18][19] জন ও. ডনেল নামের একজন কলাম লেখক ছিলেন যিনি প্রায় প্রতিনিয়ত নারীদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ নিয়ে কুৎসা প্রচার করতেন পত্রিকায়। সেনাবাহিনীর একটি ইতিহাস থেকে জানা যায়,[20] ১৯৪৩ সালের ৮ জুন তারিখে ডনেল একটি কলাম লেখেন যার শিরোনাম ছিলো "নারীদের অপূরণীয় ক্ষতি"।[21] কলামটির লেখা শুরুই হয়েছিলো এইভাবে যে, নারীরা পুরুষ সৈনিকদের সঙ্গে যৌনক্রিয়ায় জড়াবেন আর তাদের জন্য সেনাবাহিনী থেকেই নাকি গর্ভনিরোধক বড়ি দেওয়া হবে।[22] ডনেল নারী সৈন্যদেরকে সমকামী বলেও অপমান করেছিলেন; মার্কিন সমাজে সমকামীদেরকে সেই সময়কালে ভালো চোখে দেখা হতোনা।[23]
নারী সৈন্যদের বিরুদ্ধে চালিত মিথ্যে এবং নেতিবাচক কথাগুলোর প্রত্যেকটার জবাব দিচ্ছিলো সামরিক কর্তৃপক্ষ,[17][24][25] যদিও অনেকেই সংবাদপত্রের মিথ্যে কথায় কান দিচ্ছিলেন। নারী সৈন্যদের নিয়ে কথাবার্তা সাধারণ মানুষদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিলো।[26] ডনেল[19] এবং অন্যান্য অসৎ সাংবাদিকদের বানানো কথাগুলো অনেক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলো তৎকালীন মার্কিন সমাজে।[27] কিন্তু তাও নারী সৈনিক নিয়োগ প্রক্রিয়া থেমে থাকেনি এবং বেশ ভালো ভাবেই চলেছিলো।
কৃষ্ণ বর্ণের নারীদেরকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হতোনা এবং হলেও সেটা অনেক কম ছিলো আর মার্কিন নৌবাহিনীতে কৃষ্ণ নারীরা যোগদানের সুযোগই পেতেননা।[28] কৃষ্ণ বর্ণের নারী সেনারা অনেক বৈষম্যের শিকার হতেন, তাদের পদোন্নতি কম দেওয়া হতো; শ্বেতাঙ্গ নারীরা কোনো ধরনের বৈষম্যের শিকার হতেননা।[29] শুরুতে কৃষ্ণ বর্ণীদের এতোই বৈষম্য করা হতো যে তাদেরকে শ্বেতাঙ্গ নারীদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে দেওয়া হতোনা। মার্কিন সেনা কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ কৃষ্ণ নারী নিতে চাইলেও পরে তা কমিয়ে মাত্র ৫ শতাংশে নিয়ে আসে।[30]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে মার্কিন সেনাবাহিনীতে ডগলাস ম্যাকআর্থার নামের একজন জেনারেল ছিলেন, তিনি নারী সৈন্যদের অনেক প্রশংসা করতেন, তিনি বলতেন, আমাদের নারী সেনারা অনেক মন দিয়ে কাজ করে।[31] অনেক সেনাপতিই আরো নারী সৈন্য নিয়োগের ব্যাপারে ব্যাকুল ছিলেন, তারা চাচ্ছিলেন মার্কিন সমাজে নারীদের সত্যিকারের ক্ষমতায়ন আসুক।[32] জেনারেল এবং পরে রাষ্ট্রপতি ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার যুদ্ধে নারীদের অবদানের অনেক প্রশংসা করেছিলেন।[33]
একই সময়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর নৌ শাখা অর্থাৎ মার্কিন নৌবাহিনীতেও যুদ্ধ জাহাজে নারী নাবিক ওঠানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিলো, নৌবাহিনীর নারীদেরকে ওয়েভস বলা হতো; যুক্তরাষ্ট্র মেরিন কোর-এ নারীদের কম নেওয়া হয়েছিলো যদিও। মার্কিন সমাজ নাকি তখন নারীদেরকে সৈন্য হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলোনা এমনটাই দাবি করেন মার্কিন ইতিহাসবেত্তা ডি'এন ক্যাম্পবেলঃ
১৯৪৩ সালের শুরুর দিকে ৪২২ জন নারী সেনাকে সামরিক প্রকৌশল শাখাতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো ম্যানহাটন প্রকল্পের কাজের জন্য। মেজর জেনারেল লেসলি আর. গ্রোভস ছিলেন একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী সেনাপতি; তিনি নারীদের দক্ষতাপূর্ণ অবদানের কথা বলেছিলেন এভাবে যে, নারী সৈন্যরা পুরুষ সৈন্যদের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলোনা।
নারীদেরকে কর্মকর্তা পদবিতেও খুবই দ্রুত নেওয়া শুরু হয়; নারীদেরকে পুরুষ কর্মকর্তাদের মতো সামরিক একাডেমীতে না নেওয়া হলেও অফিসার ক্যান্ডিডেট স্কুলে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হতো।
নারী সেনারা অনেক সামরিক পদক অর্জন করেছিলো তাদের যুদ্ধে অবদানের জন্য;[35] মহিলা সৈন্যরা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও বিশেষ সম্মাননা পেয়েছিলো।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে মহিলা সৈনিক শাখার সদস্যরা প্রধানত অফিস কর্মে নিযুক্ত ছিলো, মহিলা সৈনিকদের অধিকাংশই ছিলো করণিক; যুদ্ধটিতে মহিলা সৈনিকদের মোট সংখ্যা ছিলো ৭০০ জনের মতো।[36][37]
১৯৭৮ সালের ২০শে অক্টোবর মহিলা সৈন্য শাখা ভেঙে দিয়ে কর্মরত নারী সেনা সদস্যদেরকে পুরুষদের ব্যারাকগুলোতে একীভূত করে দেওয়া হয় এবং নারীরা পুরুষদের সাথে বিভিন্ন কোরে যুক্ত হয়ে যায়। তখন থেকে নারীরা পুরুষদের সঙ্গে একই সেনা ব্যারাকে থাকার নির্দেশ সহ পুরুষদের সঙ্গে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার নির্দেশ পাচ্ছিলো যেটা আগে ছিলোনা এবং পুরুষদের সঙ্গে একই ব্যারাকে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা দেওয়া হয়, নারী সেনাদের পদবি হুবহু পুরুষদের মতো করে দেওয়া হয়, তাছাড়া নারীদের শারীরিক প্রশিক্ষণ মানও পুরুষদের সমান উন্নীত করা হয় এবং নারীদের মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ পুরুষদের মতো হুবহু করে দেওয়া হয় যেখানে সকল নারী প্রশিক্ষণার্থীদের বাধ্যতামূলক ভাবে বন্দুক চালনা প্রশিক্ষণ শুরু হয় পুরুষদের সাথে; লেস এসপিন ছিলেন তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং তিনি এসব নির্দেশ দিয়েছিলেন যে নারী সেনাদের সঙ্গে পুরুষ সেনাদের যেনো কোনো ধরনের বৈষম্য না করা হয়। ২০০৫ সালে জ্যা পেইস নামের একজন নারী ওয়ারেন্ট অফিসার পদবিতে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং তিনি ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রথম নারী সৈন্য যিনি সবচেয়ে বেশি পদক পেয়েছিলেন।[38][39][40] ১৯৭২ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে সাধারণ সৈনিক (প্রাইভেট সোলজার) পদবিতে সেনা বাদক দলের একজন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।[39]
প্রাথমিক ভাবে মহিলা সৈন্যদের পদবি ছিলো চারটি (অক্সিলিয়ারি, জুনিয়র লিডার, লিডার, এবং সিনিয়র লিডার) এবং অফিসার পদবি ছিলো তিনটি (ফার্স্ট, সেকেন্ড অ্যান্ড থার্ড অফিসার)। পরিচালককে মেজরের সমান ধরা হতো; পরে কর্নেল পদবির সমান সম্মান দেওয়া হয়েছিলো এবং প্রথম মহিলা সৈনিক শাখার পরিচালক ওভেটা কাল্প হবিকে কর্নেলই বলা হতো। নারী সৈনিক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো কারণ যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তাই তাদেরকে ডেকে আনছিলো। খুব দ্রুত পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছিলো যুদ্ধের সময়ে।
মহিলা সৈন্য শাখা সংস্থাটির অন্যতম একটি চিহ্ন ছিলো ঈগল পাখির। এই চিহ্নটা মাথার টুপির ব্যাজে পরতো নারী সেনারা, এছাড়াও তাদের শার্টের বোতামেও এটা থাকতো ছোটো করে। নারী সৈন্য আর অফিসারদের পোশাকের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিলোনা। নিয়মিত সৈন্য হিসেবে নারীরা পুরুষদের মতোই ড্রিল এবং স্যালুটিং শিখতো তবে নারীদের শারীরিক প্রশিক্ষণ পুরুষদের মতো হুবহু ছিলোনা।
মহিলা সৈন্যদলের পদবি (মে, ১৯৪২ – এপ্রিল, ১৯৪৩) | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
মহিলা সাধারণ সৈন্য | মার্কিন সেনাবাহিনীর পুরুষদের সম-সম্মান | মহিলা সৈন্য কর্মকর্তা | মার্কিন সেনাবাহিনীর পুরুষদের সম-সম্মান | |||
সিনিয়র লিডার | মাস্টার সার্জেন্ট | মহিলা সৈন্য পরিচালক | মেজর | |||
সিনিয়র লিডার | ফার্স্ট সার্জেন্ট | ফার্স্ট অফিসার | ক্যাপ্টেন | |||
লিডার | টেকনিক্যাল সার্জেন্ট | সেকেন্ড অফিসার | ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট | |||
লিডার | স্টাফ সার্জেন্ট | থার্ড অফিসার | সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট | |||
লিডার | সার্জেন্ট | |||||
জুনিয়র লিডার | কর্পোর্যাল | |||||
অক্সিলিয়ারি ফার্স্ট ক্লাস | প্রাইভেট ফার্স্ট ক্লাস | |||||
অক্সিলিয়ারি সেকেন্ড ক্লাস | প্রাইভেট | |||||
অক্সিলিয়ারি থার্ড ক্লাস | রিক্রুট | |||||
মহিলা সৈন্য শাখা পদবি (এপ্রিল, ১৯৪৩ – জুলাই, ১৯৪৩) | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
মহিলা সাধারণ সৈন্য | মার্কিন সেনাবাহিনীর পুরুষদের সম - সম্মান | মহিলা সৈন্য কর্মকর্তা | মার্কিন সেনাবাহিনীর পুরুষদের সম-সম্মান | |||
চীফ লিডার | মাস্টার সার্জেন্ট | মহিলা সৈন্য পরিচালক | কর্নেল | |||
ফার্স্ট লিডার | ফার্স্ট সার্জেন্ট | সহকারী মহিলা সৈন্য পরিচালক | লেফটেন্যান্ট কর্নেল | |||
কারিগরী লিডার | কারিগরী সার্জেন্ট | যুদ্ধক্ষেত্র পরিচালক | মেজর | |||
স্টাফ লিডার | স্টাফ সার্জেন্ট | ফার্স্ট অফিসার | ক্যাপ্টেন | |||
লিডার | সার্জেন্ট | সেকেন্ড অফিসার | ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট | |||
জুনিয়র লিডার | কর্পোর্যাল | থার্ড অফিসার | সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট | |||
অক্সিলিয়ারি ফার্স্ট ক্লাস | প্রাইভেট ফার্স্ট ক্লাস | |||||
অক্সিলিয়ারি সেকেন্ড ক্লাস | প্রাইভেট | |||||
অক্সিলিয়ারি থার্ড ক্লাস | রিক্রুট | |||||
১৯৪৩ সালের জুলাই মাসে মহিলা সৈন্য শাখা মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি পূর্ণ নিয়মিত শাখায় রূপান্তরিত হয়ে যায়।[41] মার্কিন সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত একটি ঈগল চিহ্ন মহিলা সৈন্যদের জন্য চালু হয়ে যায় খুব দ্রুত যেটা আগে ছিলো একজন প্রাচীন গ্রীক দেবীর মূর্তি (আথিনা)।
নারী সেনাদের কোনো ওয়ারেন্ট অফিসার পদবি ছিলোনা; এরকম নিয়ম শুধু এই শাখা তৈরির শুরুর দিকে ছিলো।
মহিলা সৈন্যদের পদবি (সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ - '৪৫) | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
বেতন গ্রেড | সাধারণ সৈন্য (নারী) | মাসিক বেতন | বার্ষিক বেতন | মহিলা সৈন্য অফিসার | মাসিক বেতন | বার্ষিক বেতন |
গ্রেড ১ | মাস্টার সার্জেন্ট | $১৩৮ | $১৬৫৬ | কর্নেল | $৩৩৩ | $৪০০০ |
গ্রেড ১ | ফার্স্ট সার্জেন্ট | $১৩৮ | $১৬৫৬ | লেফটেন্যান্ট কর্নেল | $২৯১ | $৩৫০০ |
গ্রেড ২ | টেকনিক্যাল সার্জেন্ট | $১১৪ | $১৩৬৮ | মেজর | $২৫০ | $৩০০০ |
গ্রেড ৩ | স্টাফ সার্জেন্ট | $৯৬ | $১১৫২ | ক্যাপ্টেন | $২০০ | $২৪০০ |
গ্রেড ৩ | টেকনিশিয়ান থার্ড গ্রেড | $৯৬ | $১১৫২ | ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট | $১৬৬ | $২০০০ |
গ্রেড ৪ | সার্জেন্ট | $৭৮ | $৯৩৬ | সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট | $১৫০ | $১৮০০ |
গ্রেড ৪ | টেকনিশিয়ান ৪র্থ গ্রেড | $৭৮ | $৯৩৬ | চিফ ওয়ারেন্ট অফিসার | $১৭৫ | $২১০০ |
গ্রেড ৫ | কর্পোর্যাল | $৬৬ | $৭৯২ | ওয়ারেন্ট অফিসার (জুনিয়র গ্রেড) | $১৫০ | $১৮০০ |
গ্রেড ৫ | টেকনিশিয়ান ৫ম গ্রেড | $৬৬ | $৭৯২ | |||
গ্রেড ৬ | প্রাইভেট ফার্স্ট ক্লাস | $৫৪ | $৬৪৮ | |||
গ্রেড ৭ | প্রাইভেট | $৫০ | $৬০০ | |||
• | কর্নেল ওভেটা কাল্প হবি | (১৯৪২-'৪৫) | |
• | কর্নেল ওয়েস্টরে বেটল বয়সে | (১৯৪৫-'৪৭) | |
• | কর্নেল ম্যারি এ. হ্যালারেন | (১৯৪৭-'৫৩) | |
• | কর্নেল আইরিন ও. গ্যালাওয়ে | (১৯৫৩-'৫৭) | |
• | কর্নেল ম্যারি লুইজ রেজমুসজন | (১৯৫৭-'৬২) | |
• | কর্নেল এমিলি সি. গরম্যান | (১৯৬২-'৬৬) | |
• | ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এলিজাবেথ পি. হোইসিংটন | (১৯৬৬-'৭১) | |
• | ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইল্ডরেড ইনেজ ক্যারুন বেলে | (১৯৭১-'৭৫) | |
• | ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ম্যারি ই. ক্লার্ক | (১৯৭৫-'৭৮) |
এই সংঘটি ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ছিলো; তৈরি হয়েছিলো ১৯৪৬ সালে। সংঘটির উদ্দেশ্য ছিলো অবসরপ্রাপ্ত নারী সেনাদের মনোবল বজিয়ে রাখা।[42]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.