Loading AI tools
মঙ্গোলীয়ার রন্ধনশৈলী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মঙ্গোলীয় রন্ধনশৈলীতে প্রাথমিকভাবে দুগ্ধজাত খাদ্য দ্রব্য, মাংস, এবং প্রাণীজ চর্বি অন্তর্গত। সবথেকে প্রচলিত গ্রাম্য খাবারের পদের মধ্যে রয়েছে রান্না করা ভেড়ার মাংস। শহরাঞ্চলে, মাংস ভর্তি সেদ্ধ পুডিংবিশেষ,"বুউজ" হচ্ছে জনপ্রিয়।
মঙ্গোলিয়ার চরম মহাদেশীয় জলবায়ু তার ঐতিহ্যবাহী খাবারে প্রভাবিত করেছে। এখানে শাক সবজি এবং মসলার ব্যবহার খুবই সীমিত। ভৌগোলিক নৈকট্য এবং চীন ও রাশিয়ার সাথে দৃঢ় ঐতিহাসিক বন্ধনের কারণে, মঙ্গোলীয় রন্ধনশৈলী চীনা এবং রাশিয়ার রন্ধনশৈলী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।[1]
মঙ্গোলিয়ার যাযাবররা গৃহপালিত পশুর মাধ্যমে সরাসরি তাদের জীবন ধারণ করে থাকে, এগুলোর মধ্যে রয়েছে- গরু, ঘোড়া, উট, চমরী গাই, ভেড়া, এবং ছাগল, এমনকি শিকারযোগ্য পাখিও।[1] স্যুপ এবং পুডিংবিশেষের (বুউজ, খূসূর, বান্শ, মান্টি) একটি উপকরণ হিসেবে, মাংস হয় রান্না করা হয়, নতুবা শীতের জন্য শুকিয়ে রাখা হয় (বোর্টস)।[1] মঙ্গোলীয় খাবার দাবারের একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে প্রাণীজ চর্বি, যা মঙ্গোলীয়দের শীতের ঠাণ্ডায় টিকে থাকতে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে দরকার হয়ে থাকে। শীতকালের তাপমাত্রা -৪০°C (-৪০°F) এরও কম থাকে, ফলে বাইরের কাজকর্মের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তির দরকার পড়ে। দুধ এবং ক্রিম ব্যবহার করে হরেক রকমের পানীয় তৈরি করা হয়, পনীর এবং এই জাতীয় খাদ্য দ্রব্যও বানানো হয়।[2]
গ্রামাঞ্চলের যাযাবররা নীতিগতভাবে আত্ম-প্রত্যয়ী। ভ্রমণকারীরা রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর গুয়াঞ্জ হিসেবে নির্দেশিত গের পাবে, যা সাধারণ রেস্টুরেন্ট হিসেবে পরিচালিত হয়। গের-এর মধ্যে, যেগুলো দেখতে স্থানান্তরযোগ্য বাসস্থান কাঠামোর মতো (একই আকৃতির বাসস্থানের জন্য ইয়ার্ট হচ্ছে একটি তুর্ক শব্দ, তবে গের নামটি হচ্ছে মঙ্গোলিয়া ভাষার), এগুলোতে মঙ্গোলীয়রা কাঠ বা প্রাণীর শুষ্ক গোবর জ্বালানী (আর্গাল) ব্যবহার করে ছোট ছোট চুলায় সাধারণত ঢালাই-লোহা বা এলুমিনিয়ামের পাত্রে রান্নাবান্না করে।
গ্রাম্যের সবথেকে প্রচলিত খাবারের পদ হচ্ছে রান্না করা ভেড়ার মাংস, যা প্রায়শই কোন প্রকার উপাদান ছাড়াই রান্না করা হয়। শহরের খাদ্যে, প্রতিটি স্থানীয় খাদ্য তালিকায় "বুউজ" নামের খাবারের চিহ্ন লেগে আছে। এগুলো হচ্ছে মাংসে ভর্তি সেদ্ধ পুডিং বা বড়া বিশেষ। অন্য ধরনের পুডিং যা পানিতে সেদ্ধ (বান্শ, মান্টি), বা গাঢ় করে ভেড়ার চর্বি (খূসূর) দিয়ে ভাঁজা। অন্যান্য খাবারের পদের মধ্যে আছে ভাতের সাথে মাংস বা টাটকা নুডলসের সংমিশ্রণে তৈরি বিভিন্ন জাতের ভাপে সিদ্ধ মাংস (জুইভান, বুদাতাই হূরগা) বা নুডলস স্যুপ (গুরিলতাই শোল)।
সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক রন্ধন প্রক্রিয়াগুলো শুধুমাত্র বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রয়োগ করা হয়। এই ক্ষেত্রে, মাংসগুলোকে (প্রায় সময় শাকসবজির সাথে) পাথরের সাহায্যে রান্না করা হয়ে থাকে, যা আগুনে পূর্ব থেকে গরম করে রাখা হয়। এই পদ্ধতিটা হয়তো দুধের আবদ্ধ পাত্রে (খরখগ) ভেড়ার মাংসের বড় তালে, অথবা হার-ছাড়ানো ছাগলের বা পার্বত্য মূষিকের (বোডগ) উদরিস্থ কোঠরে প্রয়োগ করে করা হয়।
দুধকে সিদ্ধ করতে করতে ক্রীম (ওরম, তঞ্চিত ননী) আলাদা করা হয়।[2] অবশিষ্ট সর পড়া দুধকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পনীর ("ব্যাস্লাগ"), শুষ্ক দই (আরুল), ইয়ুগার্ট, কেফির, এবং এক ধরনের হালকা দুগ্ধ লিকারে (শিমীন আরখি) পরিণত করা হয়। সবথেকে জনপ্রিয় জাতীয় পানীয় হচ্ছে আইরাগ, যা ঘোড়ার দুধকে গাঁজনের মাধ্যমে বানানো হয়।[2] যব হচ্ছে একটি জনপ্রিয় শস্যদানা, যা ভাঁজা বা শুকানো হয়ে থাকে। এতে যে ময়দা (আরভাইন গুরিল) পাওয়া যায়, তা পরিজ (জাউ) হিসেবে দুগ্ধ চর্বি এবং চিনিতে মিশিয়ে খাওয়া হয় বা দুধ চায়ের সাথে পান করা হয়। প্রতিদিনকার পানীয় হচ্ছে নোনতা চা (সূতেই চায়ে), যেটার সাথে চাল, মাংস বা বান্শ যোগ করে শক্ত স্যুপেও পরিণত করা যেতে পারে। সমাজতান্ত্রিক শাসনামলে রাশিয়ার প্রভাবের ফলশ্রুতিতে, ভদকাও কিছুটা জনপ্রিয়তা লাভ করে[2] বিপুল সংখ্যক স্থানীয় ব্র্যান্ডের (সাধারণত দানাদার স্পিরিট) সাথে।
মঙ্গোলিয়ায় ঘোড়ার মাংস খাওয়া হয় এবং প্রতিটি মুদি দোকানে পাওয়া যায়।
মঙ্গোলিয়ায় মিষ্ঠান খাবারের মধ্যে আছে বোর্টসগ, এক প্রকার বিস্কুট বা কুকি যা বিশেষ উপলক্ষ হিসেবে খাওয়া হয়।
ভদকা হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় শুরা জাতীয় পানীয়; চিঙ্গিস ভদকা (চেঙ্গিজ খানের নাম থেকে আগত) হল সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, যা পাতিত মদ্য বাজারের ৩০% জুড়ে আছে।[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.