Loading AI tools
ভারতীয় রন্ধনশৈলী বলতে প্রধানত হিন্দু রন্ধনশৈলী টাকে বোঝায়। মুসলিম আক্রমণকারী রা তাদের সাথে উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারতীয় রসনা বা ভারতীয় রন্ধনশৈলী বলতে ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং প্রথাগত রন্ধনশৈলীর সমন্বয় বোঝায়। মাটির ধরন, আবহাওয়া, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী এবং পেশা এই রসনাকে দিয়েছে বহুমাত্রিক বৈচিত্র্য। এসব রন্ধনশৈলীতে স্থানীয়ভাবে পাওয়া মশলা, গুল্ম, শাকসবজি এবং ফল ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় রসনা ধর্ম বিশেষ করে হিন্দু এবং মুসলিম ধর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।[1] মুঘল শাসনামল থেকে বিশেষ করে উত্তর ভারতীয় রন্ধনশৈলীতে মধ্য প্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়া প্রভাব বিস্তার করে আছে।[2] অন্যান্য সংস্কৃতির সংগে ভারতীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধন অব্যাহত থাকায় ভারতীয় রসনার পরিধি এখনও বিস্তৃত হচ্ছে।[3][4]
ঐতিহাসিক ঘটনা যেমন বিদেশী আক্রমণ, বাণিজ্য সম্পর্ক এবং উপনিবেশবাদ ইত্যাদি ভারতীয় রসনায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। কিছু কিছু খাদ্য উপাদান যেমন আলু পর্তুগিজগণ ভারতীয় উপমহাদেশে নিয়ে আসে এবং অল্পদিনের এটা ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অন্যতম প্রধান খাদ্যে পরিণত হয়। পর্তুগীজদের মাধ্যমেই লঙ্কা এবং রুটিফল ভারতে আসে।[5] ভারতীয় রসনা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্ধারণেও ভূমিকা রেকেছে। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং ইউরোপের মধ্যকার সম্পর্কের প্রাথমিক সম্পর্ক ছিলো মশলা ব্যবসা যার সুত্র ধরে ইউরোপে আবিষ্কারের যুগ শুরু হয়।[6] ভারত থেকে কেনা মশলায় ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাণিজ্য বাজার তৈরি করে। ভারতীয় রসনা বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চলের উপর প্রভাব রেখেছে যেমন ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, সাব-সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ, ফিজি, এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চল ইত্যাদি।[7][8]
ভারতীয় রসনায় প্রতিফলিত হয় ৮০০০ বছর ধরে এই উপমহাদেশের বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির প্রভাব। আধুনিক ভারতীয় রসনায় স্বাদের বৈচিত্র্য ও বিভিন্ন আঞ্চলিক রসনা পরিলক্ষিত হয়।
মধ্যযুগে গুপ্ত বংশ সহ বিভিন্ন ভারতীয় রাজবংশ সমৃদ্ধি লাভ করে। এই সময়ে ভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন নতুন ধরনের রন্ধণপ্রণালী এবং পণ্য যেমন চা'য়ের ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন ঘটে। পরবর্তীতে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন জাতীসত্তার হাতে ভারতের শাসনভার আসলে ভারতীয় এবং মধ্য এশীয় রন্ধশৈলীর সমন্বয়ে মুঘল রন্ধনশৈলী গড়ে ওঠে। জাফরানের মত মশলার ব্যবহার শুরু হয়।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলের রসনায় সামুদ্রিক খাবার গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আন্দামানি আদিবাসীদের খাদ্যতালিকায় আছে মূল, মধু, ফল, মাংস, মাছ ইত্যাদি যা শিকার এবং সংগ্রহের মাধ্যমে জোগাড় করা হতো। কিছু কিছু পোকামাকড়ও খাওয়ার প্রচলন আছে। মূলভূখন্ডের অধিবাসীদের আগমণের ফলে এখানকার রন্ধনশৈলীতে বৈচিত্র্য এসেছে।
তেলুগুভাষী দুটো অঞ্চল রায়ালসীমা এবং উপকূলীয় অন্ধ্র অঞ্চল নিয়ে অন্ধ্র রসনা গড়ে উঠেছে। এটা তেলুগু রসনার একটা উপশ্রেণী। অন্ধ্র রসনা অধিক পরিমাণে মশলা ব্যবহারের জন্য প্রসিদ্ধ এবং অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় রন্ধনশৈলীর মত এতেও প্রচুর তেঁতুলের ব্যবহার হয়। ভাত এখানকার প্রধান খাদ্য যা বিভিন্ন প্রকার ডাল এবং সব্জি তরকারি দিয়ে খাওয়া হয়। অন্ধ্র রসনায় প্রায়শই ডালের সংগে বিভিন্ন সবুজ শাক এবং সবজি যেমন বেগুন যোগ করা হয়। আচার অন্ধ্র রসনার অনুষঙ্গ। আমের বিভিন্ন আচার যেমন আভাকায়া ও মাগায়া, আমলকির আচার উসিরিকিয়া, লেবুর আচার নিম্মাকায়া এবং টমেটোর আচার বেশ জনপ্রিয়। সকালের খাবারে থাকে দোসা, পেসারাত্তু, ভাদা ও ইডলি ইত্যাদি।
আসামি রন্ধনশৈলীতে বিভিন্ন আদিবাসী রান্না, আঞ্চলিক বৈচিত্র্যতা এবং বৈদেশিক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। কম মশলা ব্যবহারের জন্য আসামের রন্ধনশৈলী সুপরিচিত। স্থানীয় গুল্ম, শাক সব্জি ও ফল ব্যবহার করে কড়া স্বাদ আসামের রন্ধনশৈলীর বৈশিষ্ট্য। ভাত প্রধান খাদ্য। মাছ বিশেষ করে স্বাদুপানির মাছ অধিক পরিমানে খাওয়া হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের রান্নাতে সাধারণত রান্নার পূর্বে মশলা ভুনা করে নেওয়া হয়। আসামের রান্নায় এটা অনুপস্থিত। আসামের খাবার শুরু হয় খার দিয়ে এবং শেষ হয় টেংগা দিয়ে। খাবার শেষে পান সুপারি খাওয়ার প্রচলন আছে।
বিহারের রন্ধনশৈলী খুবই সাধারণ। মধ্যবিত্তদের মধ্যে লবনযুক্ত গমের আটার পিঠার সাথে বাইগন ভর্তা (বেগুন ভর্তা) খুবই জনপ্রিয়। রোস্ট করা বেগুন ও টমেটো দিয়ে বেগুন ভর্তা করা হয়। গরম মশলার সাথে আলুদিয়ে ছাগলের মাংস মিট সালান খুবই জনপ্রিয়। ডালপুরি, বালুশাহী, মালপুয়া (মালপোয়া) ইত্যাদি বিহারি রসনার অংশ। ছট পুজোর সময় ঠেকুয়া বলে এক ধরনের মিষ্টি খাবার প্রস্তুত করা হয়।
পাঞ্জাব ও হরিয়ানার রাজধানী চন্ডিগড় উত্তর ভারতীয় রসনা সহ বিশ শতকের বহুজাতিক খাবারের চারণভূমি। এখানকার লোকেরা সকালের খাবারে পারান্থা, রুটি সবজি দিয়ে খেতে পছন্দ করে। শাসন দা শাগ, ডাল মাখানি, গোল গাপ্পা জনপ্রিয় খাবার।
ছত্তিশগড় অঞ্চলের রন্ধনশৈলী স্বতন্ত্র এবং ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সংগে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানকার প্রধান খাদ্য ভাত। এখানকার লোকেরা মহুয়া ফুলের মদ, তালের রসের তাঁড়ি খেয়ে থাকে। বাস্তার অঞ্চলের উপজাতীদের মধ্যে মাশরুম, বাঁশের আচার, বাঁশের সব্জি খুবই জনপ্রিয়।
স্থানীয় রন্ধনশৈলীর সংগে গুজরাতি রন্ধনশৈলীর মিল লক্ষ্য করা যায়। সব্জি এবং ডাল দিয়ে তৈরি উবাদিয়ু স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়। সাধারণ খাদ্যের মধ্যে আছে ভাত, রুটি, সব্জি, নদীর মাছ এবং কাঁকড়া ইত্যাদি। লোকেরা ঘিদুধ এবং চাটনি খেয়ে থাকে।
দামান এবং দিউ - একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, যা ভারতের মত গোয়াছিলেন সাবেক ঔপনিবেশিক দখল থেকে পর্তুগাল. এর ফলে, উভয় স্থানীয় গুজরাতি খাদ্য এবং প্রথাগত ইতালীয় খাবার প্রচলিত আছে. একটি হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের সম্প্রদায়ের প্রধানত নির্ভরশীল সীফুড. সাধারণত rotli এবং চা নেয়া হয়, ব্রেকফাস্ট জন্য rotla এবং saak জন্য লাঞ্চ এবং chokha বরাবর saak এবং কারি নেয়া হয় ডিনার জন্য. কিছু থালা-বাসন প্রস্তুত উল্লসিত অনুষ্ঠান হল পুরী, lapsee, potaya, dudh-plagএবং dhakanu. যখন মদ নিষিদ্ধ করা হয়, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র, গুজরাত, মদ্যপান করা হয়, সাধারণ দামান এবং দিউ. ভাল হিসাবে পরিচিত "পাব" গুজরাত. সব জনপ্রিয় ব্রান্ডের মদ সহজলভ্য হয়.
দিল্লি মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিলো এবং এটা মুঘল রন্ধনশৈলীর জন্মভূমি। দিল্লীর পথপার্শ্বিক খাবার খুবই নামকরা। চাঁদনি চকের পরান্থা গলি পরাটার নামেই পরিচিতি লাভ করেছে। দিল্লীতে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোক এসে বসতি গড়েছে। তাই এখানকার খাবারে বিভিন্ন ঐতিহ্য সংযোজিত হয়েছে। এখানে পাঞ্জাবি সম্প্রদায়ের আধিক্যের কারণে পাঞ্জাবি কুইজিনের প্রভাব বেশি। দিল্লী কুইজিন মূলত বিভিন্ন রন্ধনশৈলীর একটি মিশ্র প্রকাশ। কাবাব, কাচুড়ি, চাট, ভারতীয় মিষ্টি, কুলফি ইত্যাদি দিল্লীর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে তৈরি করা হয় যা খুবই জনপ্রিয়।
গোয়া অঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু বিদ্যমান। তাই এই অঞ্চলে মশলা আর স্বাদ হয় তীব্র। এখানকার খাবারে কোকুম ব্যবহার করা হয়। গোয়ার রন্ধনশৈলী মাছ ও মাংসভিত্তিক। প্রধান খাবার মাছ ভাত। ৪০০ বছর পর্তুগীজদের উপনিবেশ থাকায় গোয়া কুইজিনে পর্তুগিজ প্রভাব বিদ্যমান। পর্তুগীজগণ এই অঞ্চলে পাউরুটি নিয়ে আসে যা এখনো সকালের নাস্তায় জনপ্রিয়। গোয়ার নিরামিষভোজন সমান জনপ্রিয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.