বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক
From Wikipedia, the free encyclopedia
বাংলাদেশ এবং ভারত দক্ষিণ এশিয়ার দুইটি প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশ একটি বাঙালি জাতীয়তাবাদী, জাতি রাষ্ট্র হলেও ভারত বিভিন্ন জাতীর সমষ্টিগত দেশ। ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের পর অধিকাংশ বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা পাকিস্তানের অংশ হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বিরোধী বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতীয় বাঙালি সম্প্রদায় ও ভারত সরকারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ পরবর্তী ফারাক্কা বাধ, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা , চটগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলের বিচ্ছনতাবাদিদের ভারতীয় সাহায্য সহ বিভিন্ন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য দুরত্ব থাকলেও বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক সার্বিক দিক দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ। দুটি দেশই একই সাথে সার্ক, বিমসটেক, আইওরা এবং কমনওয়েলথের সাধারণ সদস্য। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে বাঙ্গালীদের বসবাস যারা ১৯৪৬-৪৭এর দাঙ্গার পর পূর্ববঙ্গ (বর্তমান বাংলাদেশ) পরিত্যাগে বাধ্য হয় এবং বাংলাদেশ পাকিস্তানের অধীনস্থ হয়েছিল।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী জোটের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭০ সালের শেষ দিকে এবং আশির দশকের বিভিন্ন স্নায়ু যুদ্ধে এই সম্পর্ক আরও উন্নত হয়।[1][2] দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উদারীকরণের সূত্রপাত সাথে তারা বৃহত্তর প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যের উদ্ভাবন ঘটায়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী সবসকৌশলগত অংশীদার হিসেবে ভূমিকা রাখছে। ফলে তারা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে উঠে।[3] দ্বিমুখী বাণিজ্য আয় প্রায় $৭ বিলিয়নের মার্কিন ডলারের বেশি হতে পারে বলে অনুমান করা হয়।
তবে উভয় দেশই পরস্পরের ভৌগোলিক সীমারেখা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে অর্থনৈতিক বিনিময় বিস্তৃতকরণের মাধ্যমে দৃই দেশের মধ্যেকার এই সম্পর্ক আরও ত্বরান্বিত হয়। বাংলাদেশের ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের হাই কমিশন অফিস এবং রাজশাহী ও সিলেটে সেক্রেটারি কমিশন অফিস রয়েছে; পাশাপাশি ভারতের দিল্লিতে বাংলাদেশী দূতাবাসের হাই কমিশন অফিস এবং মুম্বাই ও কোলকাতায় ডেপুটি কমিশন অফিস রয়েছে। বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের সম্মাননাস্বরুপ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের নব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথবাক্য পাঠের অনুষ্ঠানে অন্যতম আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ২০১৪ সালের জুনে বাংলাদেশে তার প্রথম আন্তর্জাতিক সফর করেন। ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে স্হলসীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে৷ ২০১৪ সালের জরিপ অনুযায়ী ৭০ শতাংশ বাংলাদেশী জনগণ ভারতের পক্ষে ইতিবাচক মত দিয়েছেন।[4]