Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বর্ণমণ্ডল (chromosphere আক্ষরিক অর্থে "রঙের গোলক") সূর্য এর বায়ুমন্ডলের যে তিনটি মূল স্তর রয়েছে তার মধ্যে এটি দ্বিতীয় স্তর। এটি প্রায় ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার গভীর। এর গোলাপী লাল বর্ণটি কেবল গ্রহনের সময় দৃশ্যমান হয়। বর্ণমণ্ডলটি আলোকমণ্ডল এর ঠিক উপরে এবং সৌর স্থানান্তর অঞ্চল এর নীচে অবস্থান করে। আলোকমণ্ডলের উপরে এই বর্ণমণ্ডল স্তরটি সমসত্ব। লোমের মত দেখতে স্পিক্যুল-সমষ্টি সমজাতীয় স্তর থেকে উত্থিত হয় যার মধ্যে কিছু কিছু ১০,০০০ কিলোমিটার উপরে করোনা বা ছটামন্ডল পর্য্যন্ত প্রসারিত।
বর্ণমণ্ডলের ঘনত্ব আলোকমণ্ডল এর নীচে মাত্র ১০−৪ গুণ এবং পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুমণ্ডল এর ১০−৮ গুণ। এই কারণটিই বর্ণমণ্ডলকে স্বাভাবিকভাবে অদৃশ্য করে তোলে এবং কেবলমাত্র পূর্ণ গ্রহণ এর সময় একে দেখা যায়। তখন এটি লালচে বর্ণে প্রকাশিত হয়। এই বর্ণ গোলাপী থেকে লালের মধ্যে যে কোনও রকম হতে পারে। [1] বিশেষ সরঞ্জাম ছাড়া বর্ণমণ্ডলটি নীচের আলোকমণ্ডলের অপ্রতিরোধ্য উজ্জ্বলতার কারণে সাধারণত দেখা যায় না।
বর্ণমণ্ডলের ঘনত্ব সূর্যের কেন্দ্র থেকে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে হ্রাস পায়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই হ্রাস হয় ১০১৭ কণা প্রতি ঘন সেমি বা বাইরের সীমানায় মোটামুটিভাবে ২×১০−৪ কেজি/মি3 থেকে ১.৬×১০−১১ কেজি/মি3। [2] ছটামন্ডল এর রূপান্তর স্তর সহ বাইরের সীমানায় ৩৫,০০০ K এর ওপরের ওঠার আগে [3] অভ্যন্তরীণ সীমানা থেকে তাপমাত্রা হ্রাস পায় প্রায় ৬,০০০ K[3] সর্বনিম্ন প্রায় ৩,৮০০ K পর্যন্ত।[4]
সূর্য ছাড়া অন্য তারাতেও বর্ণমণ্ডল লক্ষ করা গেছে। [5] সূর্যের বর্ণমণ্ডল পরীক্ষা করা এবং রহস্যোদ্ধার করা শক্ত হলেও তড়িৎ চৌম্বকীয় বর্ণালীর সাহায্যে সেই পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।[6]
আলোকমণ্ডল এর একটি শোষণ রেখা বর্ণালী রয়েছে। আর বর্ণমণ্ডলের বর্ণালী তে আধিপত্য বিস্তার করছে নির্গমন রেখা। বিশেষ করে এর অন্যতম শক্তিশালী লাইন হ'ল Hα যার তরঙ্গদৈর্ঘ্য হল ৬৫৬.৩ nm। যখনই ইলেক্ট্রন n = ৩ থেকে n = ২ শক্তি স্তর এ রূপান্তর করে তখনই এই লাইনটি হাইড্রোজেন পরমাণু দ্বারা নির্গত হয়। ৬৫৬.৩ nm তরঙ্গদৈর্ঘ্য বর্ণালীর লাল অংশে রয়েছে। ফলে বর্ণমণ্ডলটির পরিচিত বৈশিষ্ট্য লালচে বর্ণ ধারণ করে।
বর্ণমণ্ডলের বর্ণালী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে সৌর বায়ুমণ্ডলের এই স্তরটির তাপমাত্রা বর্ণমণ্ডলেরই ক্রমবর্ধমান উচ্চতার সাথে বৃদ্ধি পায়। আলোকমণ্ডল এর শীর্ষে তাপমাত্রা প্রায় ৪,৪০০ K। আর বর্ণমণ্ডলের শীর্ষে প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার উঁচুতে এই তাপমাত্রা ২৫,০০০ K।[1][7] এটি আলোকমণ্ডল এ আমরা যেটি পাই তার বিপরীত। এখানে তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান উচ্চতার সাথে নেমে আসে। বর্ণমণ্ডলের তাপমাত্রা কোন কারণের ফলে সূর্য এর অভ্যন্তর অপেক্ষায় আরও বাড়তে পারে তা এখনও পুরোপুরি বোঝা যায় নি। তবে এটি চৌম্বকীয় পুনঃসংযোগ দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করার মতো বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্ণমণ্ডলে অনেক আকর্ষণীয় ঘটনা লক্ষ্য করা যায় যা খুব জটিল এবং পরিবর্তণশীল:
সৌর বর্ণমণ্ডলের ফ্ল্যাশ বর্ণালী দেখুন (৭ই মার্চ, ১৯৭০ এর গ্রহণ)।
অন্যান্য তারার বর্ণমণ্ডলের ক্রিয়াকলাপের একটি বর্ণালী পরিমাপ হ'ল মাউন্ট উইলসন এস-ইনডেক্স। [11][12] আরও দেখুন সুপারফ্লায়ার তারার বর্ণালী পর্যবেক্ষণ।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.