বন্দর সেরি বেগাওয়ান
ব্রুনাইয়ের রাজধানী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ব্রুনাইয়ের রাজধানী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বন্দর সেরি বেগাওয়ান (জাউই: بندر سري بڬاوان ; মালয়: [ˌbandar səˌri bəˈɡawan], বান্দার্ সারি বাগাওয়ান্; পূর্ববর্তী নাম: ব্রুনাই টাউন) ব্রুনাইয়ের রাজধানী শহর। আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভা বা মিউনিসিপালিটি (মালয়: বান্দারান) হিসেবে এটি শাসিত হয়। বন্দর সেরি বেগাওয়ানের জনসংখ্যা প্রায় ১,০০,৭০০।[1] ব্রুনাই-মুয়ারা জেলাসহ সম্পূর্ণ নগর এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ২,৭৯,৯২৪ জন।[2]
বন্দর সেরি বেগাওয়ান বন্দর ব্রুনাই | |
---|---|
শহর | |
উপরে থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: সুলতান ওমর আলি সাইফুদ্দিন মসজিদ, কাম্পং আয়ের, দ্য মল গাডং, জামে' আসর হাসসানিল বলকিয়াহ মসজিদ, গাদং বাণিজ্যিক এলাকা | |
স্থানাঙ্ক: ৪°৫৩′২৫″ উত্তর ১১৪°৫৬′৩২″ পূর্ব | |
দেশ | ব্রুনাই |
জেলা | ব্রুনাই-মুয়ারা |
ব্রুনাই সাম্রাজ্য | ৭ম–১৮শ শতাব্দী |
যুক্তরাজ্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত | ১৯শ শতক |
যুক্তরাজ্য কর্তৃক ভূমি উন্নয়ন | ১৯০৬ |
ব্রুনাই দারুসসালামের রাজধানী হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা | ১৯০৯ |
পরিচ্ছন্নতা বোর্ড এলাকা | ১৯২১ |
পৌরসভা (বর্তমান) | ১৯৩৫ |
সরকার | |
• শাসক | বন্দর সেরি বেগাওয়ান পৌরসভা বিভাগ |
আয়তন | |
• শহর | ১০০.৩৬ বর্গকিমি (৩৮.৭৫ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• আনুমানিক (২০০৭) | ১,০০,৭০০[1] |
• জনঘনত্ব | ১,০০৩/বর্গকিমি (২,৬০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২,৭৯,৯২৪ |
• বিশেষণ | সেরি বেগাওয়ানিজ / ওরাং বন্দর |
সময় অঞ্চল | বিএনটি (ইউটিসি+০৮:০০) |
এলাকা কোড | +৬৭৩ ০২ |
ওয়েবসাইট | www |
'বন্দর সেরি বেগাওয়ান' নামটি প্রমিত মালয় থেকে আগত যার অর্থ 'সেরি বেগাওয়ান নগর'। 'সেরি বেগাওয়ান' শব্দটি সংস্কৃত 'শ্রী ভগবান' (śrī bhagavan) শব্দটি থেকে এসেছে, যার অর্থ 'ঈশ্বরের অলৌকিক আভা'। ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহর পিতা সুলতান তৃতীয় ওমর আলি সাইফুদ্দিনের নামে এই শহরের নামকরণ করা হয়েছে।[3] ১৯৬৭ সালে সুলতানের সিংহাসন থেকে অবরোহনের পর তিনি রাজকীয় উপাধী হিসেবে 'সেরি বেগাওয়ান' নামটি গ্রহণ করেন।[3][4] ১৯৭০ সালে ব্রুনাইয়ের উন্নয়ন, বিশেষ করে ২০ শতকে ব্রুনাইয়ের আধুনিকায়নে সাবেক সুলতানের অবদানের কথা স্মরণ করে শহরটির তার নামে পুনঃনামকরণ করা হয়।[5] এর পূর্বে শহরটির নাম ছিল 'বন্দর ব্রুনাই' (শাব্দিক অর্থ 'ব্রুনাই নগর') বা 'ব্রুনাই টাউন'.[6][7]
শহরটি স্থানীয়ভাবে 'বন্দর' (অর্থ 'শহর') নামে পরিচিত। তবে এই নামে শহরের ঠিক কতটুকু অংশ বোঝানো হয় তা নির্দিষ্ট নয়। সরকারিভাবে স্বীকৃত মূল শহরের পাশাপাশি এই নামটি দ্বারা বিশেষভাবে পুসাত বন্দরকে (শাব্দিক অর্থ 'নগর কেন্দ্র') বোঝায়। এছাড়াও শহরের অন্যান্য নামে নামকৃত অংশকেও বোঝায় যা ২০০৭ সালের পূর্বে রাজধানীর অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আবার মূল শহরের বাইরের শহরতলি এমনকি কখনো কখনো সম্পূর্ণ ব্রুনাই-মুয়ারা জেলাকে এই নামে ডাকা হয়। জেলার বাইরের অধিবাসীরা বিশেষভাবে জেলাকে বন্দর হিসেবে বিশেষায়িত করে।
৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতকে বর্তমান শহরের কাছে একটি মালয় বাণিজ্য কেন্দ্র এবং মৎস্য আড়ৎ হিসেবে মানব বসতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।[4] ব্রুনাই নদীর তীরে প্রথম মানব বসতির অস্তিত্ব পাওয়া যায় ৮ম শতকে। এর অনুরূপ মানব বসতির সন্ধান পাওয়া যায় ক্যাম্পং আয়ারে, বর্তমান ব্রুনাই জাদুঘরের পাশে এবং আধুনিক শহরের বিপরীত তীরে।[8]
১৫শ-১৭শ শতকে ব্রুনাই সাম্রাজ্যের সময়ে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাসহ দক্ষিণাঞ্চল ও সম্পূর্ণ বোর্নিও সালতানাতের অধিকারে ছিল।[9][10] শহরের নিকটে জলব্যবস্থার পাশাপাশি সালতানাতের তৃতীয় প্রশাসনিক অঞ্চল ছিল (কোটা বাটু ও ক্যাম্পং আয়ার থেকে দুইবার স্থানান্তরের পর)।[4][6][11][12] ১৮শ শতকে স্প্যানিশ, ড্যানিশ ও ব্রিটিশদের আগমনের পর সালতানাতের শাসন দুর্বল হয়ে গেলে শহরের জনসংখ্যা কমে ২০,০০০ এ নেমে আসে।[4]
১৮৮৮ থেকে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত ব্রুনাই ছিল ব্রিটিশদের সংরক্ষিত রাজ্য। ১৯০৬ সালে ব্রিটিশরা সালতানাতের অধিবাসীদের দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে যেতে উৎসাহিত করে এবং এই অঞ্চলে ভূমি উন্নয়ন শুরু করে।[12] ১৮৯৯ সালে বন্দির সেরি বেগাওয়ানের ক্যাম্পুং কাসাতের নিকট আয়ার বেকুঞ্চি নামক স্থানে প্রথম তেলকূপ।স্থাপিত হয়। প্রায় ২৫৯ মিটার (৮৫০ ফুট) গভীরে খননের পরও তেলের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে ১৯২৪ সালে তেল অনুসন্ধান সেরিয়া ও বেলাইত জেলায় স্থানান্তর করা হয়।[13][14][15] সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ জামালুল আলম ব্রিটিশদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ১৯০৯ সালে পশ্চিম তীরে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন।[6] সেই সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য চীনাদের আগমন ঘটে। ১৯২০ সালে পশ্চিম তীরে একটি মসজিদ ও সরকারি ভবনসমূহ গড়ে ওঠে।[4] একই বছর নতুন বসতিস্থলকে নগর এলাকা ঘোষণা করে ব্রুনাইয়ের রাজধানী করা হয়।[12]
১৯৪১ সালে জাপানিদের দ্বারা দখল হওয়ার পর ও ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তি কর্তৃক উদ্ধার হওয়ার আগেই শহরের সমৃদ্ধি শেষ হয়ে যায়। যুদ্ধের সময় অধিকাংশ অবকাঠামোই জাপানি ও মিত্রশক্তি বোমার আঘাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[16] ১৯৪৫ সালের শেষ ভাগ থেকে ব্রিটিশরা আইন পুনর্প্রণয়ন ও বিদ্যালয় খোলার মাধ্যমে বোর্নিওতে পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করে।[16]
১৯৫০ সালে সুলতান তৃতীয় ওমর আলি সাইফুদ্দিনের সিংহাসনে আরোহণের পর ১৯৫৩ সালে ব্রিটিশদের সাথে বাণিজ্য কর ১০% থেকে ৩০% বৃদ্ধি করে একটি সমঝোতা করেন। জাপানি অধিগ্রহণের সময় ১.২ মালয় ডলার (০.৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ক্ষতির ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৯৪৬ সালে ১ মিলিয়ন মালয় ডলার ১৯৫২ সালে ১০০ মিলিয়ন মালয় ডলারে (৩২.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পরিণত হয়। ১৯৫৩ সালে ১০০ মিলিয়ন মালয় ডলারের একটি পাঁচ বছর মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়, যার মধ্যে ৮০% অবকাঠামোগত উন্নয়নে ও বাকি অংশ সামাজিক প্রকল্পে ব্যয় হয়।[16] তেল ও গ্যাস শিল্পের বিস্তারের সাথে বাণিজ্যিকীকরণ ব্রুনাইয়ের রাজধানীতে পরিবর্তনের সূচনা করে এবং বেশ কিছু সরকারি ভবন গড়ে ওঠে। পাশাপাশি ১৯৭০ ও ৮০ এর দশকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য জেলার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়।[4][6] ২০০৭ সালের ১ আগস্ট সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ শহরের আয়তন ১২.৮৭ কিমি২ (৪.৯৭ মা২) থেকে ১০০.৩৬ কিমি২ (৩৮.৭৫ মা২) এ বৃদ্ধির জন্য সম্মতি প্রদান করেন।[11]
বন্দর সেরি বেগাওয়ান শহর শাসিত হয় ব্রুনাইয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বন্দর সেরি বেগাওয়ান পৌর বিভাগের অধীন বন্দর সেরি বেগাওয়ান পৌরসভা বোর্ড। পৌরসভা বোর্ড মূলত পরিচ্ছন্নতা বোর্ড (Lembaga Kebersihan) হিসেবে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বস্তুত এই বোর্ডের মূল কাজ বর্তমানেও ব্রুনাই শহরের পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে লক্ষ্য রাখা।[17] ১৯৩৫ সালে পরিচ্ছন্নতা বোর্ডকে পৌরসভা বোর্ডে (Lembaga Bandaran) রূপান্তরের মাধ্যমে বন্দর সেরি বেগাওয়ান (ব্রুনাই টাউন) শহরের bandaran মর্যাদা লাভ করে।[17] বস্তুত বন্দর সেরি বেগাওয়ান নগর হলেও সরকারিভাবে এটি শহর এবং তুতং, কুয়ালা বেলাইত ও সেরিয়ার মতো একই মর্যাদা বিশিষ্ট।
শহরটি ব্রুনাইয়ের সবচেয়ে ছোট কিন্তু সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ব্রুনাই-মুয়ারা জেলায় অবস্থিত।[18] শহরের এখতিয়ার ব্রুনাইয়ের প্রশাসনিক বিভাগের (মুকিম ও গ্রাম;'kampung') সাথে যুগপৎভাবে অভিলিপ্ত হয়। ২০০৭ থেকে শহরের আয়তন ১২.৮৭ বর্গকিলোমিটার (৪.৯৭ বর্গমাইল) থেকে ১০০.৩৬ বর্গকিলোমিটার (৩৮.৭৫ বর্গমাইল) এ বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দর সেরি বেগাওয়ান আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে নিম্নের মুকিমগুলো নিয়ে গঠিত:[19]
বুরং পিঙ্গাই আয়ার, পেরামু, সাবা, সুঙ্গাই কেবুন, সুঙ্গাই কেদায়ান এবং তামই সম্মিলিতভাবে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে নগরীর ঐতিহাসিক অংশ ক্যাম্পং আয়ার তৈরি করে।
বন্দর সেরি বেগাওয়ান ব্রুনাইয়ের রাজধানী এবং ব্রুনাইয় সরকারের দপ্তর এখানে অবস্থিত। ব্রুনাইয়ের বর্তমান সুলতান হাসানাল বলকিয়াহর প্রাসাদ ইসতানা নুরুল ইমানএখানে অবস্থিত। প্রাসাদটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। উল্লেখ্য ব্রুনাইয়ের সুলতানই প্রাধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া রাজধানীর জালান পেরদানা মেন্টারি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় কার্যালয় অবস্থিত।[20] ব্রুনাই সরকারের প্রায় সমস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর অবস্থিত।
বন্দর সেরি বেগাওয়ান ব্রুনাই নদীর উত্তর তীরে ৪°৫৩'২৫" উত্তর অক্ষাংশ ও ১১৪°৫৬'৩২" পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।
ব্রুনাইয়ে বিষুবীয় জলবায়ু বিদ্যমান যা প্রায় ক্রান্তীয় বৃষ্টিঝরা জলবায়ুর আন্তঃক্রান্তীয় সমকেন্দ্রিক অঞ্চলের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এখানে বিষুবরেখাগামী প্রবল বায়ু দেখা গেলেও ঘূর্ণিঝড় প্রায় দেখা যায় না বললেও চলে। জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র।[21] বন্দর সেরি বেগাওয়ানে সারাবছর ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব এবং জুন-অক্টোবরের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।[22]
Bandar Seri Begawan-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) | ৩৪.১ (৯৩.৪) |
৩৫.৩ (৯৫.৫) |
৩৮.৩ (১০০.৯) |
৩৭.৬ (৯৯.৭) |
৩৬.৪ (৯৭.৫) |
৩৬.২ (৯৭.২) |
৩৬.২ (৯৭.২) |
৩৭.৬ (৯৯.৭) |
৩৬.০ (৯৬.৮) |
৩৫.৩ (৯৫.৫) |
৩৪.৯ (৯৪.৮) |
৩৬.২ (৯৭.২) |
৩৮.৩ (১০০.৯) |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ৩০.৪ (৮৬.৭) |
৩০.৭ (৮৭.৩) |
৩১.৯ (৮৯.৪) |
৩২.৫ (৯০.৫) |
৩২.৬ (৯০.৭) |
৩২.৫ (৯০.৫) |
৩২.৩ (৯০.১) |
৩২.৪ (৯০.৩) |
৩২.০ (৮৯.৬) |
৩১.৬ (৮৮.৯) |
৩১.৪ (৮৮.৫) |
৩১.০ (৮৭.৮) |
৩১.৮ (৮৯.২) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ২৩.৩ (৭৩.৯) |
২৩.৩ (৭৩.৯) |
২৩.৫ (৭৪.৩) |
২৩.৭ (৭৪.৭) |
২৩.৭ (৭৪.৭) |
২৩.৪ (৭৪.১) |
২৩.০ (৭৩.৪) |
২৩.১ (৭৩.৬) |
২৩.১ (৭৩.৬) |
২৩.২ (৭৩.৮) |
২৩.২ (৭৩.৮) |
২৩.২ (৭৩.৮) |
২৩.৩ (৭৩.৯) |
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) | ১৮.৪ (৬৫.১) |
১৮.৯ (৬৬.০) |
১৯.৪ (৬৬.৯) |
২০.৫ (৬৮.৯) |
২০.৩ (৬৮.৫) |
১৯.২ (৬৬.৬) |
১৯.১ (৬৬.৪) |
১৯.৪ (৬৬.৯) |
১৯.৬ (৬৭.৩) |
২০.৫ (৬৮.৯) |
১৮.৮ (৬৫.৮) |
১৯.৫ (৬৭.১) |
১৮.৪ (৬৫.১) |
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ২৯২.৬ (১১.৫২) |
১৫৮.৯ (৬.২৬) |
১১৮.৭ (৪.৬৭) |
১৮৯.৪ (৭.৪৬) |
২৩৪.৯ (৯.২৫) |
২১০.১ (৮.২৭) |
২২৫.৯ (৮.৮৯) |
২২৬.৬ (৮.৯২) |
২৬৪.৪ (১০.৪১) |
৩১২.৩ (১২.৩০) |
৩৩৯.৯ (১৩.৩৮) |
৩৩৯.৬ (১৩.৩৭) |
২,৯১৩.৩ (১১৪.৭০) |
বৃষ্টিবহুল দিনগুলির গড় | ১৬ | ১২ | ১১ | ১৬ | ১৮ | ১৬ | ১৬ | ১৬ | ১৯ | ২১ | ২৩ | ২১ | ২০৫ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৮৬ | ৮৫ | ৮৪ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৪ | ৮৪ | ৮৩ | ৮৪ | ৮৫ | ৮৬ | ৮৬ | ৮৫ |
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ১৯৬ | ১৯১ | ২২৫ | ২৩৯ | ২৩৬ | ২১০ | ২২২ | ২১৮ | ১৯৯ | ২০৬ | ২০৫ | ২১১ | ২,৫৫৮ |
উৎস ১: বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা,[23] ডাচার ওয়েটারদাস্ট (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ১৯৭১–২০১২ এবং আর্দ্রতা, ১৯৭২–১৯৯০)[24] | |||||||||||||
উৎস ২: এনওএএ (সৌর, ১৯৬১−১৯৯০)[25] |
২০১১ সালে ব্রুনাইয়ের জনসমীক্ষা অনুযায়ী বন্দর সেরি বেগাওয়ানের জনসংখ্যা প্রায় ২০,০০০ যেখানে সম্পূর্ণ নগর এলাকায় জনসংখ্যা প্রায় ২,৭৯,৯২৪।[2][26] ব্রুনাইয়ের অধিকাংশ লোক মালয়, যেখানে চীনারা গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী গঠন করে।[2] এছাড়া অন্যান্য জাতির মধ্যে বিসায়া, বেলাইত, দুসুন, কেদায়ান, লুন বাওয়াং, মুরুত এবং তুতং উল্লেখযোগ্য। এদেরকে মালয় জাতিগোষ্ঠী হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয় এবং "বুমিপুতেরা" (সংস্কৃত: "ভূমিপুত্র") হিসেবে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়।[26] এছাড়া ব্রুনাই ও এর রাজধানী শহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শ্রমিকদের দেখা যায় যাদের অধিকাংশ মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া (মূলত বাটাউই) ও ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আগত।[27][28]
জালান কিয়াঙ্গেহ'র নিকটে অবস্থিত লাপাউয়ে (রাজকীয় অনুষ্ঠান কক্ষ) ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানসমূহ অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৮ সালের ১ আগস্ট এখানেই সুলতান হাসানাল বলকিয়াহর অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। লাপাউয়ের অভ্যন্তর ও সুলতানের সিংহাসন সোনার সূক্ষ্ম কাজ দ্বারা অলঙ্কৃত। দেওয়ান মজলিস লাপাউয়ের সীমানাতেই অবস্থিত, যেখানে পূর্বে আইনসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। এই ভবনে প্রবেশের।জন্য দর্শনার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক অনুমতির প্রয়োজন হয়। জালান মাবোহাইয়ে নতুন আইনসভা ভবন নির্মাণের পর লাপাউ সালতানাতের সাংবিধানিক ইতিহাসের প্রতীকে পরিণত হবে।
ব্রুনাই নদীর সামান্য দূরে জালান তুতং-এ রাজকীয় সমাধিসৌধ ও কবরস্থান (কুবাহ মাকাম ডি রাজা) অবস্থিত। বংশপরম্পরায় সুলতানদের দ্বারা এই সমাধিস্থলটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সমাধিসৌধের অভ্যন্তরে সর্বশেষ দশ সুলতানের দেহাবশেষ বিদ্যমান। তারা হলেন, সুলতান তৃতীয় ওমর আলি সাইফুদ্দিন (১৯৫০-৬৭), যিনি।১৯৮৬ সালে মারা যান, সুলতান আহমদ তাজউদ্দিন (১৯২৪-৫০), সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ জামালুল আলম (১৯০৬-২৪), সুলতান হাশিম জালিলুল আলম আকামাদ্দিন (১৮৮৫-১৯০৬), সুলতান আবদুল মুমিন (১৮৫২-৮৫), সুলতান দ্বিতীয় ওমর আলি সাইফুদ্দিন (১৮২৮-৫২), সুলতান মুহাম্মদ কানজুল আলম (১৯০৭-২৬), সুলতান প্রথম মুহাম্মদ জামালুল আলম, যিনি ১৮০৪ সালে এক বছরের চেয়ে কম সময় রাজত্ব করেন, সুলতান মুহাম্মদ তাজউদ্দিন (১৭৭৮-১৮০৪, ১৮০৪-১৮০৭), সুলতান প্রথম ওমর আলি সাইফুদ্দিন (১৭৪০-৭৮)। এছাড়া তাদের সময়কার রাজপরিবারের সদস্যদেরও এই সমাধিস্থলে কবর দেওয়া হয়।
ব্রুনাইয়ের কিংবদন্তি অনুযায়ী একজন চরিত্রকে ব্যভিচারের অপরাধে ক্যাম্পং আয়ারের সমাজ থেকে বিতারিত করা হয়। তৎকালীন ব্রুনাই সমাজে ব্যভিচার নিষিদ্ধ ছিল। ধারণানুসারে এই কিংবদন্তিতুল্য চরিত্র অধুনা পুসাত বন্দরে (নগর কেন্দ্র) মৃত্যুবরণ করেন। কেউ কেউ মনে করেন তিনি ব্রুনাইয়ের রানি।ছিলেন।
এই ইস্তানা বা প্রাসাদটি ব্রুনাই নদীর তীরে অবস্থিত। এটি ব্রুনাইয়ের অন্যতম প্রাচীন অনাবাসিক প্রাসাদ। এটি বেগাওয়ান সুলতান তৃতীয় ওমর আলি সাইফুদ্দিনের আবাসস্থল ও সুলতান হাসানাল।বলকিয়াহর জন্মস্থান। এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।
ইসতানা নুরুল ইমান ব্রুনাইয়ের সুলতানের আবাসিক প্রাসাদ। এটি বন্দর সেরি বেগাওয়ানের কেন্দ্রস্থল থেকে ৩ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। 'ইস্তানা নুরুল ইমান' নামটি আরবি শব্দ থেকে গৃহীত যার অর্থ 'বিশ্বাসের আলোর প্রাসাদ'। মালয় ও ইসলামি স্থাপত্যশৈলির সমন্বয়ে তৈরি ভবনটির নকশা করেন লিয়ান্দ্রো লোকসিন এবং নির্মাণ করে ফিলিপিনো প্রতিষ্ঠান আয়ালা কর্পোরেশন।[30] এতে ১,৭৮৮টি কক্ষ, ২৫৭টি বাথরুম এবং ৫,০০০ অতিথি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি ভোজনকক্ষ রয়েছে। প্রাসাদটি বছরে হারি রায়া আদিলফিতরি উৎসবের সময় তিন দিন সর্বসাধারণের সময় খোলা থাকে।[31]
ব্রুনাই নদীর ৮ কিমি (৫.০ মা) এর মধ্যে ক্যাম্পং আয়ার (পানির গ্রাম) অবস্থিত। এটি বন্দর সেরি বেগাওয়ানের শহরতলির সাথে সংযুক্ত। ১০০০ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রামে বাড়িগুলো লম্বা খুঁটির ওপর নির্মিত।[32] এই গ্রামটিকে খুঁটির উপর নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গ্রাম বলা হয়। গ্রামটিতে প্রায় ২,০০০টি বাড়িতে প্রায় ৩০,০০০ লোকের বসবাস ছিল।[33] শহরের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য জেলার ঠিক পূর্বে অবস্থিত কোটা বাটুর পানির গ্রাম পরিদর্শন করে আন্তোনিও পিগাফেত্তা এই গ্রামকে "প্রাচ্যের ভেনিস" বলে অভিহিত করেন। ফার্দিনান্দ মেগালানের সর্বশেষ অভিযাত্রায় পিগাফেত্তা তার সঙ্গ দেন এবং ১৫২১ সালে ব্রুনাই ভ্রমণ করেন।[34]
বন্দর সেরি বেগাওয়ানের নতুন সংযোজন ঐতিহাসিক ক্যাম্পং আয়ারের অনুকরণে তৈরি। এটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে প্রায় ১.৮-হেক্টর (৪.৪ একর) জায়গা ও প্রায় তিন বছর সময় লাগে। ২০১১ সালের ২৮ মে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। জলধারের বিনোদন পার্কটি ২৪ ঘণ্টা সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকে। মানুষ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে এবং ক্যাফেতে বিভিন্ন পানীয় পান করে সময় কাটাতে পারে।
সরু ভূমির পার্কটি ১৯৮৬ সালে চত্বর হিসেবে জালান তুতং ও সুঙ্গেই ব্রুনাইয়ের মাঝখানে তৈরি করা হয়। প্রতিটি আসিয়ান রাষ্ট্রের একজন ভাস্করের স্থায়ী ভাস্কর্য এখানে প্রদর্শিত হয়েছে। ১ কিমি (০.৬২ মা)-দীর্ঘ পার্কটিতে গুল্মঘেরা পায়ে হাঁটা রাস্তা এবং ম্যানগ্রোভ বন পুলাউ রাঙ্গু রয়েছে, যেখানে প্রোবস্কিস বানর (শুধুমাত্র বোর্নিওতে পাওয়া যায়) সহ দুই প্রজাতির বানর পাওয়া যায়। পার্ক থেকে ইস্তানা দারুল ইমানের চমৎকার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা যায়।
শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে কয়েক মিনিট দূরত্বে এটি অবস্থিত যা বন্দর সেরি বেগাওয়ানের সাধারণ লোকের মাঝে জনপ্রিয় হাঁটার জায়গা। এই পার্কের ভেতরে বেঞ্চপাতা হাঁটার রাস্তা, পিকনিক স্পট, ঝরনা ও শাপলা ফোঁটা পুকুর রয়েছে।
এই পার্ক থেকে ক্যাম্পং আয়ার এবং বন্দর সেরি বেগাওয়ানের ব্যবসায়িক কেন্দ্রের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। পার্কে কাঠের সুনির্মিত হাঁটার পথ ও পথের পাশে দেখার ছাউনি রয়েছে। ছাউনিগুলো থেকে ক্যাম্পং আয়ার ও এর আশেপাশের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা যায়।
ব্রুনাইয়ের পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানী শহর সড়কপথে সরাসরি সংযুক্ত। ব্রুনাইয়ের পূর্বাঞ্চলের (তেমবুরং জেলা) সাথে সড়কপথে মালয়েশিয়ার সারাওয়াকের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয় যা কুয়ালা লুরাহ বাস টার্মিনাল থেকে প্রবেশযোগ্য। পশ্চিম থেকে বন্দর সেরি বেগাওয়ানে যাতায়াতের জন্য সারাওয়াকের মিরির মধ্য দিয়ে ও পরে সাগরের তীরের মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
শহরের প্রধান বাস টার্মিনাল জালান কাটোরে একটি বহুতল পার্কিং-এর নিচতলায় অবস্থিত। বন্দর সেরি বেগাওয়ানে সেবাদানকারী তিনটি বাস লাইন রয়েছে; কেন্দ্রীয় লাইন, সার্কেল লাইন, পূর্বাঞ্চলীয় লাইন, দক্ষিণাঞ্চলীয় লাইন, পশ্চিমাঞ্চলীয় লাইন ও উত্তরাঞ্চলীয় লাইন। বাসগুলো সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেবা প্রদান করে। শুধু ১ ও ২০ নম্বর বাস রাত পর্যন্ত সেবা প্রদান করে। সকল বাস প্রধান বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রা আরম্ভ ও শেষ করে। বন্দর সেরি বেগাওয়ান থেকে ব্রুনাইয়ের অন্যান্য শহর যেমন তুতং, সেরিয়া কুয়ালা বেলাইতগামী বাসগুলোও প্রধান টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়। এছাড়া শহরে ট্যাক্সিক্যাব পরিবহন সেবা প্রদান করে।
ব্রুনাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সারা দেশ এমনকি বিশ্বের সাথে বন্দর সেরি বেগাওয়ানকে সংযুক্ত করে। শহরের কেন্দ্র থেকে ১১ কিমি (৬.৮ মা) দূরে অবস্থিত বিমানবন্দরে সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ মহাসড়ক ধরে ১০ মিনিটে পৌঁছানো যায়। ব্রুনাইয়ের জাতীয় এয়ারলাইন্স রয়েল ব্রুনাই এয়ারলাইন্সের সদর দপ্তর শহরের আরবিএ প্লাজায় অবস্থিত।[35][36]
বন্দর সেরি বেগাওয়ানের বাণিজ্য কেন্দ্র থেকে ক্যাম্পং আয়ারে যাতায়াতের জন্য ওয়াটার ট্যাক্সি (স্থানীয়ভাবে 'পেনামবাং' নামে পরিচিত) ব্যবহৃত হয়। ক্যাম্পুং আয়ারে যাতায়াতের জন্য ওয়াটার ট্যাক্সি সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। ব্রুনাই নদীর তীরে বিভিন্ন ঘাট থেকে ট্যাক্সিগুলো ছেড়ে যায়। এর ভাড়া সহনীয় পর্যায়ের। প্রতিদিন সকাল ৭:৪৫ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো তেমবুরং-এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়াও এখান থেকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহর যেমন লিমবাং, লাওয়াস, সুন্দর এবং লাবুয়ানের উদ্দেশ্যে ওয়াটার ট্যাক্সি ছেড়ে যায়। এছাড়া বাঙ্গার ও লিমবাং থেকে পেনামবাং ফেরিতে যাতায়াতের জন্য একটি স্পিডবোট ব্যবহৃত হয়।
শহরটির মূল উৎপাদন সামগ্রী হল আসবাবপত্র,[37] পোশাক সামগ্রী, কারুশিল্পের তৈজসপত্র এবং গাছের গুড়ি।[38][39]
বন্দর সেরি বেগাওয়ানে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিপণিকেন্দ্র রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে:
এই বাজারে স্থানীয়ভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত শাকসবজি, ফল, মুরগি, মাছ, টবে লাগানো চারাগাছ, তৈরি খাদ্য ও পানীয় বিক্রি হয়।
গাদং মল থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত এই বিপণিকেন্দ্রে তামু কিয়াঙ্গেহ'র মতোই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করে। তবে এখানে খাদ্যদ্রব্য যেমন সাতে, সোতো, নাসি কাটোক ও আমবুয়াতের মতো জাতীয় খাদ্য, ফল, পানীয় ও কাঠের হস্তশিল্প বেশি বিক্রিত হয়। স্থানীয় উৎপাদনকারীরা তাদের উৎপাদিত টবে লাগানো চারাগাছ বিক্রি করে থাকে।
বন্দর সেরি বেগাওয়ানে কিন্ডারগার্টেন থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
বন্দর সেরি বেগাওয়ানে সরকারি-বেসরকারি মিলে অসংখ্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তবে সেরি মুলিয়া আন্তর্জাতিক বিদ্যালয় ছাড়া অন্য সকল বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি দেশের অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতোই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।
ব্রুনাইয়ের মুসলিম শিক্ষার্থীদের ইসলামি শিক্ষা দানের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান। রাজধানীতে অ্যারাবিক প্রিপারেটরি স্কুলের মতো ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরবি মাধ্যমে ধর্মীয় ধারার মাধ্যমিক স্তরে প্রবেশের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করে। এছাড়াও ইনস্টিটিউট তাহফিজ আল-কুরআন সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ নামক বিশেষায়িত মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে হাফেজ তৈরি করে থাকে।[40] এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।
রাজধানীতে কয়েকটি সরকারি সিক্সথ ফর্ম কলেজ রয়েছে। এ-লেভেলের প্রস্তুতিগ্রহণকারী শ্রেণিকে বলা হয় সিক্সথ ফর্ম। রাজধানীর ডুলি পেঙ্গিরান মুদা আল-মুহতাদি বিল্লাহ কলেজ সাধারণ ধারার ও হাসানাল বলকিয়াহ আরবি মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় আরবি মাধ্যমিক স্কুল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সিক্সথ ফর্মের শিক্ষা প্রদান করে।
ইনস্টিটিউট অব ব্রুনাই টেকনিক্যাল এডুকেশন (আইবিটিই) ও ব্রুনাই পলিটেকনিক (প্রধান ক্যাম্পাস) রাজধানীতে কারিগরি ও কৌশলগত শিক্ষা প্রদান করে। আইবিটিইর বাণিজ্য ক্যাম্পাস ও সুলতান রিজাল ক্যাম্পাস পূর্বে পৃথক প্রতিষ্ঠান ছিল। এদের নাম ছিল যথাক্রমে বিজনেস স্কুল (সেকোলাহ পেরদাগাঙ্গান) ও সুলতান সাইফুল রিজাল টেকনিক্যাল কলেজ (মাক্তাব টেকনিক সুলতান সাইফুল রিজাল)।[41]
এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট স্তরে কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয়।
চারটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটিই রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানে অবস্থিত। গাদং এলাকায় অবস্থিত সুলতান শরিফ আলি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলাম শিক্ষায় ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।[42] সেরি বেগাওয়ান টিচার্স বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রধানত দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে। অন্য দুই বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রুনাই দারুসসালাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রুনাই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্দর সেরি বেগাওয়ানের শহরতলি টুঙ্কুতে অবস্থিত।
এছাড়াও বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ কলেজ ও লাকসামানা বিজনেস কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।[43][44]
বিভিন্ন দেশ বন্দর সেরি বেগাওয়ানে তাদের দূতাবাস, কমিশন ও কনস্যুলেট স্থাপন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: অস্ট্রেলিয়া,[45] বাংলাদেশ,[46] বেলজিয়াম, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, বার্মা,[47] কম্বোডিয়া, কানাডা,[48] চিলি, চীন,[49] ফিনল্যান্ড,[50] ফ্রান্স,[51] জার্মানি,[52] ভারত,[53] ইন্দোনেশিয়া,[54] জাপান,[55] লাওস, মালয়েশিয়া,[56] নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, রাশিয়া, সৌদি আরব,[57] সিঙ্গাপুর,[58] দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড,[59] যুক্তরাজ্য,[60] যুক্তরাষ্ট্র[61] ও ভিয়েতনাম।[62][63]
বন্দর সেরি বেগাওয়ানের ১টি যমজ শহর (ইংরেজি: twin town) আছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.