প্লেগ
মারাত্মক মানব রোগ / From Wikipedia, the free encyclopedia
প্লেগ হলো ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস (Yersinia pestis) নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ।[2] প্লেগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, দুর্বলতা ও মাথাব্যথা।[1] সাধারণত সংক্রমণের এক থেকে সাত দিন পর এর লক্ষণ প্রকাশ পায়।[2] প্লেগের তিনটি ধরন রয়েছে, প্রতিটি শরীরের বিভিন্ন অংশকে সংক্রমিত করে এবং সংশ্লিষ্ট উপসর্গ সৃষ্টি করে। নিউমোনিক প্লেগ (Pneumonic) ফুসফুসকে সংক্রামিত করে, ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং বুকে ব্যথা হয়; বিউবনিক প্লেগ (Bubonic) লিম্ফ নোড (lymph node) গুলিতে প্রভাব ফেলে ও সেগুলি ফুলে যায়; এবং সেপ্টিসেমিক প্লেগ (Septicemic) রক্তকে সংক্রামিত করে ও টিস্যু কালো হয়ে মারা যেতে পারে।[1][2]
প্লেগ | |
---|---|
ফ্লুরোসেন্ট লেবেল সহ ২০০ গুণ বিবর্ধনে ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস দেখা যাচ্ছে। | |
বিশেষত্ব | সংক্রামক রোগ |
লক্ষণ | জ্বর, দুর্বলতা, মাথাব্যথা[1] |
রোগের সূত্রপাত | সংক্রমণের ১-৭ দিন পর[2] |
প্রকারভেদ | বিউবনিক প্লেগ, সেপ্টিসেমিক প্লেগ, নিউমোনিক প্লেগ[1] |
কারণ | ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস[2] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | লিম্ফ নোড, রক্ত, থুতুতে ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার মাধ্যমে[2] |
প্রতিরোধ | প্লেগের টিকা[2] |
চিকিৎসা | অ্যান্টিবায়োটিক এবং পরিচর্যা[2] |
ঔষধ | জেন্টামাইসিন এবং ফ্লুরোকুইনলোন[3] |
আরোগ্যসম্ভাবনা | ≈ মৃত্যুর ঝুঁকি ১০% (চিকিৎসা সহ)[4] |
সংঘটনের হার | ≈ বছরে ৬০০ টি আক্রান্তের ঘটনা[2] |
বিউবনিক ও সেপ্টিসেমিক প্লেগ সাধারণত মাছির (flea) কামড় বা সংক্রামিত প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে,[1] অপরদিকে নিউমোনিক প্লেগ সাধারণত সংক্রামক ফোঁটা (droplets) দ্বারা বাতাসের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়।[1] সাধারণত লিম্ফ নোড, রক্ত বা থুতু থেকে ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়।[2]
যারা আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের টিকা দেওয়া যেতে পারে।[2] যারা নিউমোনিক প্লেগ দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন তাদের প্রতিরোধমূলক ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে।[2] যদি কেউ আক্রান্ত হয় তবে অ্যান্টিবায়োটিক এবং পরিচর্যার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।[2] সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে জেন্টামাইসিন ও ফ্লুরোকুইনলোনের সংমিশ্রণ থাকে।[5] চিকিৎসায় মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১০% এবং চিকিৎসা ছাড়া প্রায় ৭০%।[6]
বিশ্বব্যাপী, বছরে প্রায় ৬০০টি আক্রান্তের ঘটনা ঘটে।[2] ২০১৭ সালে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের দেশগুলির মধ্যে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, মাদাগাস্কার ও পেরু।[2] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রামীণ এলাকায় মাঝে মাঝে সংক্রমণের ঘটনা ঘটে, যেখানে ব্যাকটেরিয়া ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে সংবাহিত হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।[7] ঐতিহাসিকভাবে প্লেগ মহামারী আকারে ছড়িয়েছে, যার মধ্যে ১৪ শতকের ব্ল্যাক ডেথ (Black Death) সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যার ফলে ইউরোপে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি মৃত্যু হয়েছিল।[2]