![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/e/e4/Streptococcus_pyogenes.jpg/640px-Streptococcus_pyogenes.jpg&w=640&q=50)
প্রসোবত্তর সংক্রমণ
From Wikipedia, the free encyclopedia
পারপেরাল সংক্রমণ, যা প্রসবোত্তর সংক্রমণ, পারপেরাল ফিভার বা চাইল্ডবেড ফিভার (ইংরেজি: postpartum infections) নামেও পরিচিত, সেটি হলো বাচ্চার জন্ম বা গর্ভপাতের পর নারী প্রজননতন্ত্রের যেকোনো ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ । লক্ষণ ও উপসর্গসমূহের মধ্যে রয়েছে এমন জ্বর যা ৩৮.০ °সে (১০০.৪ °ফা) হালকা জ্বরের চেয়ে বেশি, কাঁপুনি, তলপেটে ব্যথা, এবং যোনি থেকে বের হয়ে আসা তরল পদার্থের সম্ভাব্য দুর্গন্ধ।[1] এটি সাধারণত প্রসবের ২৪ ঘণ্টা পরে এবং প্রথম দশ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে।[5]
প্রসবোত্তর সংক্রমণ | |
---|---|
প্রতিশব্দ | পারপেরাল সংক্রমণ, প্রসবোত্তর সংক্রমণ, পারপেরাল ফিভার বা চাইল্ডবেড ফিভার |
![]() | |
বিশেষত্ব | ধাত্রীবিদ্যা |
লক্ষণ | জ্বর, তলপেটে ব্যথা, দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব[1] |
কারণ | বিভিন্ন প্রকারের ব্যাকটেরিয়া[1] |
ঝুঁকির কারণ | সিজারিয়ান সেকশন, মেমব্রেনের অকাল ফাটা, দীর্ঘ শ্রম, অপুষ্টি, বহুমুত্ররোগ[1][2] |
চিকিৎসা | অ্যান্টিবায়োটিক[1] |
সংঘটনের হার | ১.১৮ কোটি[3] |
মৃতের সংখ্যা | ১৭,৯০০[4] |
সবচেয়ে কমন সংক্রমণ হলো গর্ভাশয় এবং এর চারপাশের টিস্যুর সংক্রমণ যা পারপেরাল সেপসিস বা পোস্টপার্টাম মেট্রিটিস নামে পরিচিত। ঝুঁকির নিয়ামকগুলোর অন্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সিজারিয়ান সেকশন, যোনিপথে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি যেমন: গ্রুপ বি স্ট্রেপ্টোকক্কাস, সময়ের আগেই ঝিল্লি ছিঁড়ে যাওয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রসব বেদনা । বেশিরভাগ সংক্রমণের সাথে বিভিন্ন ধরনের অনেকগুলো ব্যাকটেরিয়া জড়িত। যোনিপথ বা রক্তের কালচার পরীক্ষা দ্বারা রোগ নির্ণয়ে খুব কমই সহায়তা পাওয়া যায়৷ যাদের উন্নতি ঘটে না তাদের জন্য মেডিকেল ইমেজিং এর দরকার হতে পারে। প্রসবোত্তর জ্বরের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে: স্তন প্রদাহ, মুত্রনালীর সংক্রমণ, তলপেটের কাটা জায়গা বা এপিসিওটমি-তে সংক্রমণ এবং অ্যাটেলেক্টাসিস ।[1]
সি-সেকশন পরবর্তী ঝুঁকিসমূহের কারণে অস্ত্রোপচারের সময়কালে সব মহিলাদের জন্য এম্পিসিলিন এর মত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধক ডোজ গ্রহণের সুপরিশ করা হয়। এযাবত জ্ঞাত সংক্রমণগুলোর চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েই করা হয় যেখানে বেশিরভাগ রোগীই দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সেরে ওঠেন। হালকা রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হতে পারে, অন্যথায় শিরায় গ্রহণের অ্যান্টিবায়োটিক সুপারিশ করা হয়ে থাকে। সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে রয়েছে, যোনিপথে প্রসবের ক্ষেত্রে এম্পিসিলিন ও জেন্টামাইসিন এর সমন্বয় অথবা যাদের সি-সেকশন করা হয়েছে তাদের জন্য ক্লিন্ডামাইসিন ও জেন্টামাইসিন। যথাযথ চিকিৎসায় সেরে উঠছেন এমন ব্যক্তিদের ফোঁড়ার মত অন্য কোনো জটিলতা থাকলে তা বিবেচনায় নেয়া উচিত।[1]
উন্নত বিশ্বে প্রায় এক থেকে দুই শতাংশের মধ্যে যোনিপথে প্রসবের পর গর্ভাশয়ের সংক্রমণ দেখা যায়। প্রতিরোধক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে, যাদের আরও বেশি প্রসবকালীন জটিলতা ছিল তাদের ক্ষেত্রে এটি পাঁচ থেকে তের শতাংশ এবং সি-সিজারিয়ান করা হয়েছে এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।[1] ২০১৩ সালে এই সংক্রমণ ২৪,০০০ মৃত্যুর কারণ ঘটিয়েছিল যা ১৯৯০ সালের ৩৪,০০০ মৃত্যুর চেয়ে কম ছিল। [6] অবস্থাটির সর্বপ্রথম জ্ঞাত বিবরণ পাওয়া যায় কমপক্ষে খৃষ্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে হিপোক্রেটসের লেখা থেকে।[7] এই সংক্রমণগুলোই ছিল শিশু জন্মদানের সময়কালব্যাপী মৃত্যুর অতি সাধারণ কারণ যা কমপক্ষে ১৮ শতাব্দীতে শুরু হয়ে ১৯৩০ এর দশক পর্যন্ত চলেছে, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রচলন হওয়ার আগ পর্যন্ত৷[8] ১৮৪৭ সালে অস্ট্রিয়াতে ইগনাজ সেমেলউইস ক্লোরিন দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা চালু করে এই রোগজনিত মৃত্যুর হার প্রায় বিশ শতাংশ থেকে দুই শতাংশে নামিয়ে এনেছিলেন।[9][10]