দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার একটি ইউনিয়ন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার একটি ইউনিয়ন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দক্ষিণ শাহবাজপুর বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন। এর আয়তন ৪০.৪৬ বর্গমাইল এবং জনসংখ্যা ২৬,৮৪০ জন।[1]
দক্ষিণ শাহবাজপুর | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
বাংলাদেশে দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৪′২০.০০০″ উত্তর ৯২°১৪′৩১.৯৯৯″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | মৌলভীবাজার জেলা |
উপজেলা | বড়লেখা উপজেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৪,১৬৭ হেক্টর (১০,২৯৬ একর) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ২৬,৮৪০ |
• জনঘনত্ব | ৬৪০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৫৮ ১৪ ২৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
এই ইউনিয়নের দক্ষিণ শাহবাজপুর গ্রামের নাম থেকেই ইউনিয়নের নাম আসে। শাহবাজপুর পূর্বে কাউয়াকোণা নামে পরিচিত ছিল। এখানে জাংদার বংশের বাসভূমি ছিল, যারা পঞ্চখণ্ড পরগণার স্থানীয় হিন্দু জমিদার ছিলেন। এই বংশের শ্যামরায় জাংদারের পুত্র, স্বরূপরাম জাংদার কুমার সাঈদ মৌজায় বাসুদেবকে নিবেদন করে একটি বিগ্রহ চালু করেছিলেন। একবার তিনি সম্রাটের সাথে রাজস্ব নিয়ে আলোচনা করার জন্য দিল্লি সফরে যান ও পরে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর স্বরূপরাম জাংদারকে শাহবাজ খান নামে ভূষিত করা হয়, পরবর্তীকালে তিনি বৃহত্তর পঞ্চখণ্ড থেকে খারিজ হয়ে আলাদা শাহবাজপুর পরগণা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তিনি মক্কায় হজ্জ করতে যান। আশি বছর বয়সে, শাহবাজ খানের প্রথম এবং একমাত্র পুত্র, ফতেহ মোহাম্মদের জন্ম হয় (১৭০০-১৭৯০-এর দশকে), যিনি পরে শাহবাজপুরের জমিদার হিসাবে তার স্থলাভিষিক্ত হন। শাহবাজপুরের পরবর্তী জমিদার ছিলেন ফতেহ মোহাম্মদের পুত্র মোহম্মদ ফাজিল, ও তারপুত্র মোহাম্মদ আদিল। আদিলের কোন পুত্র ছিল না, তাই তার মেয়ে সম্পত্তির অধিকারিনী হন এবং তারপর তার নাতি, আব্দুল গফূর চৌধুরী উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হন। আব্দুল গফূরের পুত্র ও উত্তরসূরী নোমান মুকিদ চৌধুরী স্থানীয় অভিজাতদের একজন ছিলেন।[2]
জাংদার বংশের সাধারণ শ্রেষ্ঠত্ব ইতিহাসবিদ অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি এবং সৈয়দ মুর্তাজা আলীর লিপিবদ্ধ একটি প্রবাদবাক্যে পাওয়া যায়:[2]
পাল, প্রচণ্ড, জাংদার।
এই তিন মিরাশদার।
যার অর্থ দাঁড়ায়, পঞ্চখণ্ডের পাল পরিবার, প্রচণ্ড খাঁর সন্তানবর্গ ও জাংদার বংশের পরবর্তী পুরুষরাই অত্র অঞ্চলের প্রধান মিরাশদার[3] ছিলেন।[2]
আগস্ট ২০১৯ সালে, ভারতীয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী বোবারথল মাঝগন্ধাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর ইবনে মুরাকিব আলীকে গুলি করে হত্যা করে।[4]
ইউনিয়নটি প্রায় ৪০টি গ্রাম ৯ টি ওয়ার্ড ও ১৪ টি মৌজাতে বিভক্ত। [5][6]
ওয়ার্ড | গ্রাম | জনসংখ্যা |
---|---|---|
১ | বানীকোনা | ৫৯৩ |
দেউল | ৩৯৪ | |
রামচন্দ্রপুর | ৯৬ | |
বাগাটিকর | ২৫৭ | |
বিছরাবন্দ | ৭৮৬ | |
তাজপুর | ২০১ | |
ঘড়ুয়া | ৪২৫ | |
২ | সুজাউল | |
পাঁচপাড়া | ২৩৯৯ | |
সরিয়া | ৩৬৬ | |
কায়েস্তাশাসন | ১০৫ | |
৩ | শাবাজপুর চা বাগান | ১১০৯ |
বালিশকোনা | ১৮৫ | |
ছিকড়উনি | ১১৫ | |
সুয়ারারতল | ৮৭৪ | |
৪ | বাহাদুপুর চা বাগান | ৪৯৪২ |
চন্ডিনগর | ১৮৭৯ | |
চান্দেরগুল | ৭২৮ | |
৫ | তারাদরম | ১৭৪৩ |
মুড়াউল | ১৩৯৪ | |
৬ | বোবারথল | ৪৯৪২ |
৭ | ঘোলসা | ৩০৩৫ |
বাউলেরচক | ৭৫৮ | |
৮ | গ্রামথলা | ২৬৫২ |
৯ | মহাম্মদনগর | ২৯৩৯ |
ছোটলিখা চা বাগান | ১৪৮৬ | |
রহমানিয়া চা বাগান | ৪৭ | |
নিউ পাল্লা | ||
? | নালিখাই পুন্জি | ৫৩৬ |
করই ছড়া | ২৯৭ | |
ইসলাম নগর | ১২৫৮ | |
শ্রীধরপুর | ১১৪৭ | |
গান্ধাই | ১৬২২ | |
পাকু | ১০২ | |
দক্ষিণ শাহবাজপুরের জনসংখ্যা হল ২৬,৮৪০ জন। এর মধ্যে ১২,৮২৫ জন পুরুষ এবং ১৪,০১৫ জন মহিলা। [1]
ইউনিয়নে ৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩ টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এখানে ৫ টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৬ টি মাদ্রাসা রয়েছে। মহ বড়গুল কওমি মাদ্রাসায় একটি এতিমখানা রয়েছে। [7] অন্যান্য মাদ্রাসাগুলির মধ্যে রয়েছে সুজাউল সিনিয়র ফাযিল মাদ্রাসা, তারাদরোম মহিলা দাখিল মাদ্রাসা এবং বড়লেখা জামিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা। [8] এই ইউনিয়নের শিক্ষার হার ৫৪.৩%।
দক্ষিণ শাহবাজপুরে ৪টি হাট বাজার রয়েছে; মহাম্মদনগর বাজার (বৃহত্তর-বাজার), তারাদরম বাজার, মুরাউল বাজার ও অফিস বাজার। এই ইউনিয়নে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী রয়েছে যারা সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, গ্রীস, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, ব্রাজিল, স্পেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইতালিতে থাকেন ও ইউনিয়নের অর্থনীতির ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। মোহাম্মদ আতাউল করিম এই অঞ্চলের ব্যক্তি ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে, বোবারথলে কয়লার সন্ধান পাওয়া গেছে। [9]
জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে: চারটি চা বাগান যা শাহবাজপুর, বাহাদুরপুর, ছোটোলেখা ও রাহমানিয়ায় অবস্থিত। এই ইউনিয়নের তারাদরম, ঘোলা, মুরাউল মহাম্মদনগর এবং সুজুলের ৫টি ক্রীড়া ক্লাব রয়েছে। এখানে মহাম্মদনগর ফুটবল মাঠে প্রতি বছর খেলা হয় এবং গোলসা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতা গণমাধ্য্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।
ইউনিয়নে ৪২টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হল:
এই ইউনিয়নে ৬টি ঈদগাহ রয়েছে। এগুলি হলেন তারাদোরাম শাহী ঈদগাহ, মুরাউল ঈদগাহ, সুজাউল শাহী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ, পূর্ব তারাদরম মসজিদ ঈদগাহ, ঘোলাশাহী ঈদগাহ এবং বিছরাবন্দ ঈদগাহ।[10]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.