গেয়র্গ কান্টর
জার্মান গণিতবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
গেয়র্গ ফের্ডিনান্ড লুডভিগ ফিলিপ কান্টর[টীকা 1] (জার্মান: Georg Ferdinand Ludwig Philipp Cantor; উচ্চারণ: গেয়ক্ ফেয়াডিনান্ট্ লুড্ভিক্ ফিলিপ্ কান্টোয়া) (৩ মার্চ [পুরোনো শৈলীতে ১৯ ফেব্রুয়ারি] ১৮৪৫ [1] – ৬ জানুয়ারি, ১৯১৮) একজন জার্মান গণিতবিদ যিনি তার সেট তত্ত্ব সংক্রান্ত কাজের জন্য সুপরিচিত, যা গণিতের একটি ভিত্তিসূচক তত্ত্বে পরিণত হয়েছে। কান্টর সেটের মধ্যে ঐকিক সম্বন্ধ (one-to-one correspondence) স্থাপনের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করেন, অসীম এবং সুবিন্যস্ত সেটকে সংজ্ঞায়িত করেন, এবং প্রমাণ করেন যে বাস্তব সংখ্যা স্বাভাবিক সংখ্যার চাইতে সংখ্যায় বেশি। প্রকৃতপক্ষে কান্টরের তত্ত্ব "অসীম সংখ্যক অসীমের" ধারণা দেয়। তিনি অংকবাচক এবং ক্রমবাচক সংখ্যা এবং তাদের পাটীগণিতের সংজ্ঞা দেন। কান্টরের গবেষণাকর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক গুরুত্ব ছিল, যা সম্বন্ধে তিনি ভালোভাবেই অবহিত ছিলেন।[2]
এই নিবন্ধের ইংরেজি পরিভাষা ও উইকিসংযোগগুলির অনুবাদ প্রয়োজন।টির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
গেয়র্গ কান্টর | |
---|---|
জন্ম | গেয়র্গ ফের্ডিনান্ড লুডভিগ ফিলিপ কান্টর (১৮৪৫-০৩-০৩)৩ মার্চ ১৮৪৫ |
মৃত্যু | ৬ জানুয়ারি ১৯১৮(1918-01-06) (বয়স ৭২) হালে, জার্মানি |
মাতৃশিক্ষায়তন | ইটিএইচ জুরিখ, ইউনিভার্সিটি অফ বার্লিন |
পরিচিতির কারণ | সেট তত্ত্ব |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | গণিত |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ইউনিভার্সিটি অফ হালে |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | আর্নস্ট কামার কার্ল ভায়েরস্ট্রাস |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | আলফ্রেড বামেক |
কান্টরের সীমাতিক্রমী সংখ্যার (transfinite number) ধারণাটি প্রকৃতপক্ষে এতটাই স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান পরিপন্থী — এমনকি অবিশ্বাস্য — হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল যে সেটি সমসাময়িক গণিতবিদ লেওপোল্ড ক্রোনেকার (Leopold Kronecker) এবং অঁরি পোয়াঁকারের কাছ থেকে প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়[3] এবং পরবর্তীতে হের্মান ভাইল এবং এল.ই.জে. ব্রাউয়েরও তার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন; এমনকি লুডভিগ ভিটগেনষ্টাইন তার তত্ত্বের বিরুদ্ধে দার্শনিক অসঙ্গতির অভিযোগ উত্থাপন করেন। কিছু খ্রিস্টান ধর্মতাত্ত্বিক কান্টরের ঈশ্বরের প্রকৃতির পরম অসীমতার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন,[4] এবং এক পর্যাটে তারা সীমাতিক্রমী সংখ্যার তত্ত্বকে সর্বেশ্বরবাদের সমতুল্য ঘোষণা করেন।[5] কিছু ক্ষেত্রে তার কাজের চরম বিরুদ্ধাচার করা হয়: পয়েনকেয়ার কান্টরের ধারণাকে গণিতের শৃঙ্খলায় একটি "গভীর অসুখ" হিসেবে বর্ণনা করেন[6] এবং ক্রোনেকার সর্বসমক্ষে কান্টরের বিরুদ্ধাচরণ করেন এবং তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে "হাতুড়ে বৈজ্ঞানিক", "বিশ্বাসঘাতক" এবং "তারুণ্যের অবক্ষয়কারী" হিসেবে দাবী করেন।[7] কান্টরের মৃত্যুর কয়েক দশক পর এক লেখায় ভিটগেনস্টেইন অনুতাপ করেন যে, গণিত "সেট তত্ত্বের ক্ষতিকারক বাগবিতণ্ডায় গভীরভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে" এবং একে "গাঁজাখুরি", "হাস্যকর" ও "ভুল" বলে উড়িয়ে দেন।[8] বয়স মধ্য-ত্রিশের পর থেকেই কান্টর মাঝে মধ্যেই বিষন্নতায় আক্রান্ত হতেন এবং এর জন্যে তার গাণিতিক ধারণাগুলি নিয়ে সমসাময়িক গণিতবিদদের বিতর্ককে দায়ী করা হত,[9] তবে বর্তমানে তার অসুখটিকে সম্ভাব্য বাইপোলার ডিসঅর্ডারের উপসর্গ হিসেবে মনে করা হয়।[10]
এই বিষম সমালোচনার উপশম তিনি পরবর্তীতে উষ্ণ সংবর্ধনায় লাভ করেন। ১৯০৪ সালে কান্টরকে সিলভেস্টার পদকে ভূষিত করা হয়, যা সেসময় গণিতের সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে বিবেচিত ছিল।[11] কান্টর বিশ্বাস করতেন তার সীমাতিক্রমী সংখ্যার তত্ত্ব স্বয়ং ঈশ্বর তার ওপর অবতীর্ণ করেছেন।[12] গণিতবিদ ডাভিড হিলবের্ট কান্টরের সমালোচনার বিরুদ্ধে এই বিখ্যাত উক্তিটি করেন: "কান্টর আমাদের জন্য যে স্বর্গ রচনা করে গেছেন, তা থেকে কেউ আমাদেরকে বহিস্কার করতে পারবে না"।[13]