কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক দিকনির্ণয়
এক ধরনের দিকনির্দেশক স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা যা কৃত্রিম উপগ্রহের দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের যেকোনো অবস / From Wikipedia, the free encyclopedia
কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক দিকনির্ণয় বা স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন সংক্ষেপে স্যাটনাভ এক ধরনের দিকনির্দেশক স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা যা কৃত্রিম উপগ্রহের দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠের যেকোনো অবস্থান প্রদর্শন করতে পারে। বেতার সংযোগের মাধ্যমে এটি ছোট বৈদ্যুতিন যন্ত্রের (জিপিএস) নিখুঁত অবস্থান (কিছু মিটার এর মধ্যে) বলে দিতে পারে (অক্ষাংশ দ্রাঘিমাংশ ও উচ্চতা)। এই ব্যবস্থা দিকনির্দেশন, অবস্থান বা জিপিএস যুক্ত কোন চলমান বস্তুর অবস্থান নিরূপণে কার্যকরী। জিপিএস-কে নিখুঁত স্থানীয় সময় নিরূপণের কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই মাধ্যম সম্পূর্ণ আন্তর্জাল এবং দূরভাষ নিরপেক্ষ, যদিও এগুলির ব্যবহার এই স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থাকে আরও নিখুঁত করে তোলে।
একটি স্যাটেলাইট ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা যদি পুরো বিশ্বে কার্যকরী হয় তবে তাকে গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম (জিএনএসএস) বলে। ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত মার্কিন NAVSTAR জিপিএস, রাশিয়ান GLONASS এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের Galileo গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের আওতায় আসে। চিন তাদের আঞ্চলিক BeiDou ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমকে ২০২০ নাগাদ BeiDou-2 GNSS গ্লোবাল ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের দিকে পরিণত করে ফেলার প্রক্রিয়ায় আছে।[1] ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের Galileo ২০২০ নাগাদ পুরোপুরি কার্যকর হয়ে উঠবে।[2] ভারতের কৃত্রিম উপগ্রহ নির্ভর প্রসারণ ব্যবস্থা, GPS Aided GEO Augmented Navigation(GAGAN) NAVSTAR জিপিএস এবং GLONASS -এর কার্যক্ষমতা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। ভারত ইতিমধ্যেই IRNSS কে NAVIC (Navigation with Indian Constellation) নাম দিয়ে কক্ষপথে স্থাপন করেছে, এটি মূলত কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহের সমষ্টি যা ভারতীয় উপমহাদেশে দিকনির্দেশনা করতে সক্ষম, জুন ২০১৬ এর মধ্যেই এটি কার্যকর হবে। ফ্রান্স ও জাপান তাদের নিজস্ব জিএনএসএস তৈরির পথে আছে।
পুরো বিশ্বে এই ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য মূলত ১৮ থেকে ৩০ টি মাঝারি উচ্চতার, বিভিন্ন কক্ষীয়তলে বিভক্ত উপগ্রহ পুঞ্জ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলির কক্ষীয়তল ৫০°-এর বেশি হেলে থাকে এবং আবর্তনকাল কমবেশি ১২ ঘণ্টা হয়ে থাকে (১২০০০ মাইল বা ২০০০০ কিমি উচ্চতায় এগুলি অবস্থিত)।