কার্গিল যুদ্ধ
১৯৯৯ সালে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
কার্গিল যুদ্ধ বা কার্গিল সংঘর্ষ (I) ১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাসে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘটিত একটি সশস্ত্র সংঘর্ষ। পাকিস্তানি ফৌজ ও কাশ্মীরি জঙ্গীরা উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে ডি ফ্যাক্টো সীমান্তরেখা হিসেবে পরিচিত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে এই যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।[9] যুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধের অব্যবহিত পরে পাকিস্তান এই যুদ্ধের দায় সম্পূর্ণত কাশ্মীরি জঙ্গিদের উপর চাপিয়ে দেয়। তবে যুদ্ধের পর ফেলে যাওয়া তথ্যপ্রমাণ এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের পরবর্তীকালের বিবৃতি থেকে স্পষ্টতই জানা যায় যে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনীও এই যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।এমনকি যুদ্ধের পরে নিহত এবং চিহ্নিত পাকিস্তান সেনাদের মরদেহ নিতে অস্বীকার করে পাকিস্তান সরকার, ফলে সেই সকল মৃত পাকিস্তানি সৈনিকদের ইসলামি রীতি অনুযায়ী কবর দিতে হয় ভারতকেই।[10][11] [12] এই বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেনারেল আশরাফ রাশিদ।[13] ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানি ফৌজকে আক্রমণ করে। পরে সেনাবাহিনীকে সহায়তা দান করে ভারতীয় বিমানবাহিনীও। অবশেষে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমর্থনের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানকে ফৌজ প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
কার্গিল যুদ্ধ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ | |||||||||
একটি ভারতীয় বোফোর্স ১৫৫ মিলিমিটার হাওইটজার ফিল্ড গান যুদ্ধকালে স্থানান্তরিত হচ্ছে। | |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
ভারত |
পাকিস্তান | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
জেনারেল বেদ প্রকাশ মালিক (ভারতীয় সেনাপ্রধান) | জেনারেল পারভেজ মুশাররফ (পাকিস্তানি শীর্ষ জেনারেল) | ||||||||
শক্তি | |||||||||
৩০,০০০-৪০,০০০ | ৫,০০০ | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
ভারত সরকার প্রদত্ত তথ্য: ৫২৭ জন নিহত,[2][3][4] ১,৩৬৩ জন আহত [5] ৫ জন যুদ্ধবন্দী |
পাকিস্তানের অনুমান: |
কার্গিল যুদ্ধ সুউচ্চ পার্বত্য এলাকায় যুদ্ধের সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। উচ্চতার কারণে দুই দেশকেই রসদ সরবরাহ ও সেনাবাহিনীর অভিযান চালাতে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও কার্গিল যুদ্ধ হল পারমাণবিক শক্তিধর দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘটিত দ্বিতীয় তথা সাম্প্রতিকতম প্রত্যক্ষ যুদ্ধ। এই ধরনের প্রথম যুদ্ধটি ছিল ১৯৬৯ সালের সিনো-সোভিয়েত সীমান্ত সংঘর্ষ। উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই পারমাণবিক অস্ত্রপরীক্ষণ চালায়। যদিও ভারতের প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রপরীক্ষাটি ঘটানো হয় ১৯৭৪ সালে।পাকিস্তান প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রপরীক্ষা কার্যকর্ম চালায় ১৯৯৮ সালে। এই যুদ্ধের ফলে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয় এবং তার ফলস্রুতিতে ভারতে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়বরাদ্দ বাড়ানো হয়। পাকিস্তানে এই যুদ্ধের ফলে সরকার ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে অস্থিরতার সৃষ্টি হয় এবং ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সেনাপ্রধান পারভেজ মুশাররফ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন।