ইওসিনোফিল
একটি দানাদার শ্বেতকণিকা / From Wikipedia, the free encyclopedia
ইওসিনোফিল (ইংরেজি: eosinophil) বা ঊষারঞ্জক কোষ হলো শ্বেতকণিকার একটি উপধরন ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি উপাদান যা বহুকোষীয় পরজীবী ও মেরুদণ্ডী প্রাণীদের কিছু সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি অ্যাসিডোফিল বা অম্লাকর্ষী কোষ নামেও পরিচিত।[2] মাস্ট কোষ ও বেসোফিল শ্বেতকণিকার পাশাপাশি ইওসিনোফিলও হাঁপানি ও অ্যালার্জিতে ভূমিকা রাখে। এরা হলো দানাদার শ্বেতকণিকা যা অস্থিমজ্জায় হিমাটোপোয়েসিস বা রক্তজনন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়ে রক্তে পরিভ্রমণ করে এবং সেখানে সংপরিবর্তন বা বিভেদন ঘটে কিন্তু সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে না।[3] দেহের মোট শ্বেতকণিকার ১-৪% হলো ইওসিনোফিল। এই কোষগুলো তাদের বৃহৎ অম্লাকর্ষী সাইটোপ্লাজমীয় দানাগুলোর কারণে ইওসিনোফিলিক বা অম্ল-প্রেমী হয়। রোমানভস্কি রঞ্জন পদ্ধতিতে ইওসিন নামক একটি লাল রঞ্জক দ্বারা রঞ্জনের ফলে ইটের মতো লাল রং ধারণ করে।[4] এই রঞ্জন সাইটোপ্লাজমের ক্ষুদ্র দানাসমূহে ঘনীভূত হয়, যার মধ্যে অনেক রাসায়নিক মিডিয়েটর রয়েছে যেমন, ইওসিনোফিল পারঅক্সিডেজ, রাইবোনিউক্লিয়েজ, ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়েজ, প্লাজমিনোজেন, লাইপেজ ও মেজর বেসিক প্রোটিন। ইওসিনোফিল সক্রিয় হওয়ার পর ডিগ্র্যানুলেশন প্রক্রিয়ায় এই মিডিয়েটরগুলো অবমুক্ত হয়, এগুলো পরজীবী ও পোষক কলা উভয়ের জন্যই বিষাক্ত।
ইওসিনোফিল | |
---|---|
বিস্তারিত | |
উচ্চারণ | /ˌiːoʊˈsɪnəfɪl/)[1] |
পূর্বভ্রূণ | বহুজনি রক্তোৎপাদী মাতৃকোষ |
তন্ত্র | অনাক্রম্যতন্ত্র |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | ইওসিনোফিলাস |
মে-এসএইচ | D004804 |
টিএইচ | H2.00.04.1.02017 |
এফএমএ | FMA:62861 |
মাইক্রো শারীরস্থান পরিভাষা |
ইওসিনোফিলের ব্যাস ১২–১৭ মাইক্রোমিটার এবং এদের নিউক্লিয়াস দ্বিখণ্ডক।[3][5] ইওসিনোফিলগুলো রক্তে অবমুক্ত হলেও এরা টিসুতে বসবাস করতে পারে।[4] এদেরকে মেডুলা অবলংগাটা (সুষুম্নাশীর্ষ), থাইমাস গ্রন্থির কর্টেক্স (বল্কল) ও মেডালা বা মজ্জার সংযোগস্থল, নিম্ন পরিপাক নালি, ডিম্বাশয়, জরায়ু, প্লীহা ও লসিকাগ্রন্থিতে পাওয়া যায়; কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় ফুসফুস, ত্বক, অন্ননালি বা অন্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গে পাওয়া যায় না। কেবল রোগে আক্রান্ত হলেই পরে উল্লিখিত অঙ্গসমূহে ইওসিনোফিলের উপস্থিতি ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, ইওসিনোফিলিক অ্যাজমার রোগীদের উচ্চ মাত্রায় ইওসিনোফিল থাকে যা প্রদাহ সৃষ্টি করে টিসুর ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে রোগীর শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়।[6][7] ইওসিনোফিল সংবহনে ৮–১২ ঘণ্টা থাকে এবং উদ্দীপনার অনুপস্থিতিতে টিসুতে আরও অতিরিক্ত ৮–১২ ঘণ্টা টিকে থাকে।[8] ১৯৮০ সালের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এক্স-ভিভো কালচার গবেষণায় ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে, ইওসিনোফিল হচ্ছে একটি অনন্য দানাদার শ্বেতকণিকা, যার পরিপক্কতা লাভের পর বেশি সময় ধরে টিকে থাকার সক্ষমতা রয়েছে।[9]