বাইজেন্টাইন-উসমানীয় যুদ্ধ
ধারাবাহিক দ্বন্দ্ব ও যুদ্ধ / From Wikipedia, the free encyclopedia
বাইজেন্টাইন-উসমানীয় যুদ্ধ দ্বারা উসমানীয় তুর্কী ও বাইজেন্টাইনদের মধ্যকার সংঘাতকে বুঝানো হয়। যেই সংঘাতের সর্বশেষ ফল ছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতন এবং উসমানীয় সামাজ্যের উত্থান। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ ক্রুসেডারদের দ্বারা বাইজেন্টাইন রাজধানী দখল ও পূর্ববর্তী রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করায় খ্রিস্টানদের পূর্ব-পশ্চিম ভাগের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য ইতোমধ্যেই দুঃশাসনের ফলে দুর্বল এবং বিশৃঙ্খলার মধ্যে বিভাজিত হয়ে পড়েছিল।[1][2][3]
বাইজেন্টাইন-উসমানীয় যুদ্ধ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: উসমানীয় সাম্রাজ্যের উত্থান এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতন | |||||||
দক্ষিণাবর্তে উপরের বাম হতে: কনস্টান্টিনোপলের দেয়াল, উসমানীয় জেনেসারী, বাইজেন্টাইন পতাকা, উসমানীয় ব্রোঞ্জ কামান | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
উসমানীয় বেলিক, সামন্ত:
|
|
রুম সালতানাতের সেলজুকরা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে পশ্চিম আনাতোলিয়ার অঞ্চল দখল করতে শুরু করে। তবে নিকিয়ান সাম্রাজ্য সেলজুক তুর্কীদের রোমানদের অধীনে থাকা অবশিষ্ট অঞ্চলগুলো থেকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়।[4] শেষপর্যন্ত ১২৬১ সালে নিকিয়ান সাম্রাজ্য লাতিন সাম্রাজ্য থেকে কনস্টান্টিনোপল দখলে নিয়ে নেয়। এপিরাস ডেসপোটেট, সার্বিয়া ও দ্বিতীয় বুলগেরীয় সাম্রাজ্যের মত প্রতিদ্বন্দ্বী সাম্রাজ্যের কারণে ইউরোপে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অবস্থান অনিশ্চিত ছিল। এই বিষয়টির সাথেসাথে (বাইজেন্টিয়ামদের এশিয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী) রুম সালতানাতের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় থ্রেসে বাইজেন্টিয়াম ক্ষমতা ধরে রাখতে আনাতোলিয়া থেকে সৈন্যদের সরিয়ে নেয়া হয়।[5]
রুম সালতানাতের দুর্বলতা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের তেমন দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা টেনে আনেনি। কারণ গাজী নামের সরদাররা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের খরচে জমিদারী স্থাপন করা শুরু করেন। যেখানে অনেক তুকী বেরা বাইজেন্টাইন এবং সেলজুক অঞ্চলের অনেক অংশ দখল করে রেখেছিলেন। এমনই একজন বে, উসমান গাজীর নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলগুলো নিকিয়া ও কনস্টান্টিনোপলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। উসমান গাজী উসমান বেলিক প্রতিষ্ঠার ৯০ বছরের মধ্যে বাইজেন্টাইনরা তাদের আনাতোলিয়ার সমস্ত অঞ্চল থেকে দখল হারিয়ে ফেলে।[6] এবং ১৩৮০ খ্রিস্টাব্দে উসমানীয়রা বাইজেন্টাইনদের থেকে থ্রেসের দখলও কেড়ে নেয়। ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এককালের মহান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের কাছে মোরেয়া ডেসপোটেট, অল্প কয়েকটি এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আর রাজধানীর আশেপাশে থাকা থ্রেসের একটি ভূখন্ড ব্যতীত কিছুই বাকী ছিলনা। ধ্বংসপ্রায় কনস্টান্টিনোপল ১৩৯৬ খ্রিস্টাব্দে নিকোপোলিসের ক্রুসেড, ১৪০২ খ্রিস্টাব্দে তৈমুরের আক্রমণ এবং সর্বশেষ ১৪৪৪ খ্রিস্টাব্দে ভার্নার ক্রুসেডের পরও ১৪৫৩ সালে সমূলে পতন হবার আগপর্যন্ত কোনোমতে নিজেকে পরাজয় থেকে রক্ষা করে ছিল। যুদ্ধ পরিসমাপ্তিতে পূর্ব ভূমধ্য সাগরে উসমানীয়দের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।