ফিনল্যান্ড
উত্তর ইউরোপের রাষ্ট্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
ফিনল্যান্ড (ফিনীয়: Suomen tasavalta, উচ্চারণ: সুওমেন্ তাসাভাল্তা; সুয়েডীয়: Republiken Finland, উচ্চারণ: রেপুব্লিকেন্ ফিন্লান্দ্) উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে বাল্টিক সাগরের উপকূলে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। ফিনল্যান্ড ইউরোপের সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত দেশগুলির একটি। এর এক-তৃতীয়াংশ এলাকা সুমেরুবৃত্তের উত্তরে অবস্থিত। এখানে ঘন সবুজ অরণ্য ও প্রচুর হ্রদ রয়েছে।[10] প্রাচীরঘেরা প্রাসাদের পাশাপাশি আছে অত্যাধুনিক দালানকোঠা। দেশটির বনভূমি এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ; এগুলিকে প্রায়ই ফিনল্যান্ডের "সবুজ সোনা" নামে ডাকা হয়। হেলসিঙ্কি ফিনল্যান্ডের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
ফিনল্যান্ড প্রজাতন্ত্র Suomen tasavalta সুওমেন্ তাসাভাল্তা Republiken Finland রেপুব্লিকেন্ ফিন্লান্দ্ | |
---|---|
নীতিবাক্য: নেই১ | |
ফিনল্যান্ড-এর অবস্থান (গাঢ় সবুজ) – ইউরোপীয় মহাদেশ-এ (হালকা সবুজ & গাঢ় ধূসর) | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | হেলসিঙ্কি |
সরকারি ভাষা | ফিনীয়, সুয়েডীয় |
নৃগোষ্ঠী | |
ধর্ম (২০২০)[3] | |
সরকার | সংসদীয় গণতন্ত্র২ |
• রাষ্ট্রপতি | শাউলি নিনিস্তো |
• প্রধানমন্ত্রী | সানা মারিন |
স্বাধীনতা বলশেভিক রাশিয়া থেকে | |
• স্বায়ত্বশাসন | মার্চ ২৯ ১৮০৯ |
• ঘোষিত | ডিসেম্বর ৬ ১৯১৭ |
• স্বীকৃতি | জানুয়ারি ৩ ১৯১৮ |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৩৮,১৪৫ কিমি২ (১,৩০,৫৫৯ মা২) (৬৫তম) |
• পানি (%) | ৯.৪ [4] |
জনসংখ্যা | |
• ডিসেম্বর ২০২০ আনুমানিক | 5,536,146[5] (১১৬তম) |
• ২০০০ আদমশুমারি | ৫,১৮১,১১৫ |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০২০ আনুমানিক |
• মোট | $২৫৭ বিলিয়ন[6] (৬০তম) |
• মাথাপিছু | $৪৯,৩৩৪[6] (১৯তম) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০২০ আনুমানিক |
• মোট | $২৭৭ বিলিয়ন[6] (৪৩তম) |
• মাথাপিছু | $৪৮,৪৬১[6] (১৪তম) |
জিনি (২০১৯) | ২৬.২[7] নিম্ন · ৬ষ্ঠ |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৯) | ০.৯৩৮[8] অতি উচ্চ · ১১তম |
মুদ্রা | ইউরো (€)৩ (ইইউআর) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+২ (ইইটি) |
ইউটিসি+৩ (ইইএসটি) | |
কলিং কোড | ৩৫৮[9] |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | FI |
ইন্টারনেট টিএলডি | .এফআই ৪ |
|
ফিনল্যান্ড একটি নিম্নভূমি অঞ্চল। কয়েক হাজার বছর আগেও এটি বরফে ঢাকা ছিল। বরফের চাপে এখানকার ভূমি স্থানে স্থানে দেবে গিয়ে হাজার হাজার হ্রদের সৃষ্টি করেছে।[11] দেশটির সরকারি নাম ফিনল্যান্ড প্রজাতন্ত্র। তবে ফিনীয়রা নিজেদের দেশকে সুওমি বলে ডাকে। সুওমি শব্দের অর্থ হ্রদ ও জলাভূমির দেশ।
ফিনল্যান্ড উত্তর দিকে স্থলবেষ্টিত। উত্তরে নরওয়ে ও পূর্বে রাশিয়ার সাথে এর সীমান্ত আছে। দক্ষিণে ফিনল্যান্ড উপসাগর এবং পশ্চিমে বথনিয়া উপসাগর। ফিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে হাজার হাজার ক্ষুদ্র, পাথুরে দ্বীপ আছে। এদের মধ্যে কতগুলিতে মনুষ্য বসতি আছে। এদের মধ্যে বথনিয়া উপসাগরের মুখে অবস্থিত অলান্দ দ্বীপপুঞ্জটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ফিনল্যান্ডের মেরু অঞ্চলে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় সবসময় দিন থাকে। "মধ্যরাতের সূর্যের" এই দিনগুলিতে ফিনল্যান্ডের নয়নাভিরাম উপকূলীয় এলাকাগুলিতে হাজার হাজার লোক নৌকা নিয়ে বেড়াতে আসে। ফিনল্যান্ডের মধ্যভাগের বনভূমিতে অনেক পর্যটক রোমাঞ্চকর অভিযানের টানে ছুটে আসে।
ফিনল্যান্ডকে সাধারণত স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অংশ ধরা হয়, এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ার সাথে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও আছে। কিন্তু বহু শতাব্দী যাবৎ ফিনল্যান্ড বিরোধী শক্তি সুইডেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি সীমান্ত দেশ হিসেবেই বিদ্যমান ছিল। ৭০০ বছর সুইডেনের অধীনে শাসিন হবার পর ১৮০৯ সালে এটি রুশদের করায়ত্ত হয়। রুশ বিপ্লবের পর ১৯১৭ সালে এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালে ফিনল্যান্ড ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার একটি চুক্তি সম্পাদন করে এবং ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দেশ দুইটির মধ্যে দৃঢ় অর্থনৈতিক বন্ধন ছিল। ১৯৯১ সালের পরে ফিনল্যান্ড ইউরোপমুখী হয় এবং ১৯৯৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে।
ফিনল্যান্ড ইউরোপের সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্রগুলির একটি হলেও এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্য সুবিদিত। বিশেষত আধুনিক স্থাপত্যকলা ও শিল্পকারখানা ডিজাইনে ফিনল্যান্ডের সুনাম আছে। সাউনা তথা ফিনীয় ধাঁচের বাষ্পস্নান বিশ্ববিখ্যাত এবং এটি ফিনীয় দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ।