হুতাক রাজবংশ বা হুতাকি রাজবংশ ছিল একটি গিলজি পশতুন রাজবংশ।[1][2] ১৭০৯ খ্রিষ্টাব্দে মীরওয়াইস হুতাক এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি সাফাভি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং কান্দাহার স্বাধীন করেছেন।[1] ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দে আফশারি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নাদির শাহ শেষ হুতাক শাসক হুসাইন হুতাককে কান্দাহারের অবরোধের পর পরাজিত করেন।[3] হুতাক রাজবংশ বর্তমান আফগানিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান ও ইরানের অনেকাংশ শাসন করেছে।

দ্রুত তথ্য হুতাক সাম্রাজ্য, রাজধানী ...
হুতাক সাম্রাজ্য

১৭০৯–১৭৩৮
Thumb
পতাকা
Thumb
হুতাক সাম্রাজ্যের সর্বো‌চ্চ সীমানা (১৭২২-১৭২৯)
রাজধানীকান্দাহার
ইসফাহান
প্রচলিত ভাষাপশতু
ফার্সি
ধর্ম
ইসলাম (সুন্নি)
সরকাররাজতন্ত্র
আমির 
 ১৭০৯–১৭১৫
মীরওয়াইস হুতাক
 ১৭১৫–১৭১৭
আবদুল আজিজ হুতাক
 ১৭১৭–১৭২৫
মাহমুদ হুতাক
 ১৭২৫–১৭৩০
আশরাফ হুতাক
 ১৭২৫–১৭৩৮
হুসাইন হুতাক
ঐতিহাসিক যুগপ্রাক আধুনিক যুগ
এপ্রিল ১৭০৯
 কান্দাহার অবরোধ
২৪ মার্চ ১৭৩৮
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
সাফাভি রাজবংশ
মুঘল সাম্রাজ্য
আফশারি রাজবংশ
বর্তমানে যার অংশ Afghanistan
 Iran
 Pakistan
 Tajikistan
 Turkmenistan
বন্ধ

১৭১৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরওয়াইস হুতাক স্বাভাবিকভাবে মারা যান। এরপর তার ভাই আবদুল আজিজ হুতাক শাসনভার লাভ করেন। আবদুল আজিজ হুতাকের পর যথাক্রমে মাহমুদ হুতাক, আশরাফ হুতাকহুসাইন হুতাক শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ক্ষমতায় উত্থান

পারস্যের শিয়া সাফাভি রাজবংশ ১৬শ শতাব্দী থেকে ১৮শ শতাব্দীর প্রথমভাগ পর্যন্ত স্থানীয় সুন্নি আফগান গোত্রগুলোকে শাসন করত। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলে ছিল সুন্নি মুঘল সাম্রাজ্য। দক্ষিণ আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মুঘলদের সাথে সাফাভিদের কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে।[4] উত্তরের এলাকা বুখারা খানাতের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

১৭শ শতাব্দীর শেষ নাগাদ সাফাভিদের পতন শুরু হয়। ১৭০৪ খ্রিষ্টাব্দে শাহ সুলতান হুসাইন তার অধীনস্থ গুরগিন খান বলে পরিচিত কার্ত‌লির রাজাকে সাফাভি সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলের (বর্তমান আফগানিস্তান) সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।[5] তিনি প্রথমে এই অঞ্চলে বিদ্রোহ দমনে মনোযোগী হন। গুরগিন খান বিদ্রোহ সৃষ্টির জন্য সন্দেহ হওয়া আফগানদের বন্দী ও হত্যা করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কান্দাহারের প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য মীরওয়াইস হুতাকও একজন বন্দী ছিলেন। তাকে ইসফাহানে বন্দী হিসেবে পাঠানো হয়। পরে তিনি মুক্তি পান।[6]

১৭০৯ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে মীরওয়াইস হুতাইক ও তার অনুসারীরা কান্দাহারে সাফাভি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।[7] বিদ্রোহ সফল হয় এবং এই অঞ্চলে তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। হৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের জন্য পাঠানো একট বৃহদাকার পারস্যের বাহিনীকে মীরওয়াইস হুতাক পরাজিত করেছিলেন।[8]

Thumb
আফশারিমুঘল যুগে কান্দাহার।

মীরওয়াইস খান বাদশাহ উপাধি ধারণ করেননি। তাকে আফগানরা কান্দাহারের রাজপুত্র এবং জাতীয় বাহিনীর সেনাপতি নামে ডাকত। ১৭১৫ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে তিনি মারা যান। এরপর তার ভাই আবদুল আজিজ হুতাক শাসক হন। পরবর্তীতে মীরওয়াইস হুতাকের পুত্র মাহমুদ হুতাক আবদুল আজিজকে হত্যা করেন। ১৭২০ খ্রিষ্টাব্দে মাহমুদের আফগান বাহিনী সিস্তানের মরভূমিতে প্রবেশ করে কিরমান দখল করে।[8] তিনি পারস্যের রাজধানী ইসফাহান দখলের পরিকল্পনা করেছিলেন।[9] গুলনাবাদের যুদ্ধে পারস্যের বাহিনীকে পরাজিত করার পর তিনি অগ্রসর হন। এরপর ছয় মাস ইসফাহান অবরোধ করে রাখা হয়। অবরোধের ফলে ইসফাহানের পতন হয়।[10] ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ অক্টোবর শাহ সুলতান হুসাইন সিংহাসন ত্যাগ করে মাহমুদ হুতাককে পারস্যের শাহ হিসেবে মেনে নেন।[11] পরের সাত বছর পারস্যে আফগান শাসন বজায় ছিল। তবে আফগানিস্তানে ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত হুতাকদের শাসন টিকে ছিল।

পতন

১৭২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাহমুদ হুতাকের মৃত্যুর পর আশরাফ হুতাক বাদশাহ হন। ১৭২৯ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে সংঘটিত দামগানের যুদ্ধে নাদির শাহ হুতাক বাহিনীকে পরাজিত করেন। নাদির শাহ পারস্য থেকে হুতাকদের বিতাড়িত করে দুররানি আফগানদের নিজ সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৭৩৮ খ্রিষ্টাব্দে নাদির শাহর বাহিনী কান্দাহার জয় করেন। এই বাহিনীতে দুররানি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শাহ দুররানিও ছিলেন। এসময় হুসাইন হুতাক ক্ষমতায় ছিলেন।[9][12] এরপর নাদির শাহ নিজের নামে নিকটে নাদিরাবাদ নামক শহর গড়ে তোলেন।

শাসকগণ

আরও তথ্য Name, Picture ...
Name Picture Reign started Reign ended
মীরওয়াইস হুতাক ১৭০৯ ১৭১৫
আবদুল আজিজ হুতাক Thumb ১৭১৫ ১৭১৭
মাহমুদ হুতাক Thumb ১৭১৭ ১৭২৫
আশরাফ হুতাক Thumb ১৭২৫ ১৭২৯
হুসাইন হুতাক Thumb ১৭২৯ ১৭৩৮
বন্ধ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.