অর্ধপরিবাহী
পদার্থবিজ্ঞানের পরিভাষা / From Wikipedia, the free encyclopedia
অর্ধপরিবাহী এক বিশেষ ধরনের পদার্থ, যাদের তড়িৎ পরিবাহিতা পরিবাহী এবং অন্তরকের মাঝামাঝি। সিলিকন, জার্মেনিয়াম, ক্যাডমিয়াম সালফাইড, গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ইত্যাদি অর্ধপরিবাহী পদার্থের উদাহরণ। কোন পদার্থ কতটুকু তড়িৎ পরিবহন করতে সক্ষম তা তাদের আপেক্ষিক রোধের মানের ওপর নির্ভর করে। যার আপেক্ষিক রোধ যত বেশি তার পরিবাহিতা তত কম। যেমন, স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কাচের (অন্তরক) আপেক্ষিক রোধ ১০১৬ ওহম-মিটার আর তামার (পরিবাহী) হলো ১০−৮। অর্ধপরিবাহীর আপেক্ষিক রোধের গড় মান এদের মাঝামাঝি (সাধারণত ১০−৫ থেকে ১০৮ এর মধ্যে)।[1]
আধুনিক যুগে প্রযুক্তির প্রভূত অগ্রগতির মূলে রয়েছে এই অর্ধপরিবাহী। কারণ এটি দিয়েই প্রথমে ডায়োড এবং পরবর্তীতে ট্রানজিস্টর নির্মীত হয়। আর এদের হাত ধরেই যাত্রা শুরু হয় আধুনিক ইলেকট্রনিক্স যুগের। তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলে এর বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আর বিজ্ঞানের যে শাখায় এ নিয়ে আলোচনা করা হয় তা হল কঠিন অবস্থা পদার্থবিজ্ঞান (সলিড স্টেট)। অর্ধপরিবাহীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একে উত্তপ্ত করা হলে তড়িৎ পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়। তাই উচ্চ তাপমাত্রায় এটি সুপরিবাহীর মত আচরণ করে। অথচ সুপরিবাহীকে উত্তপ্ত করলে তার পরিবাহিতা কমে যায়। এর সর্বপ্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কোন বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে নির্দিষ্ট কোনো অপদ্রব্যের খুব সামান্য পরিমাণ (এক কোটি ভাগে এক ভাগ[2]) যোগ করলে তার রোধ অনেকগুণ কমে যায়, ফলতই পরিবাহিতা বেড়ে যায় অনেকগুণ। এভাবে অপদ্রব্য মেশানোর প্রক্রিয়াকে বলে ডোপায়ন। এই ডোপায়নের মাধ্যমেই ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ করা হয়।