Loading AI tools
ভারতীয় প্লেব্যাক গায়ক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সোনু নিগম (ইংরেজি: Sonu Nigam; জন্ম: ৩০শে জুলাই, ১৯৭৩)[1][2] হলেন একজন ভারতীয় জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী যিনি সাধারণত হিন্দি এবং কন্নড় ভাষায় গান করে থাকেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য উড়িয়া, তামিল, অসমীয়া, পাঞ্জাবী, বাংলা, মালায়ালাম, মারাঠি, তেলুগু এবং নেপালী ছবিতে গান গেয়েছেন। তিনি তার মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় পপ অ্যালবাম সহ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি তার নামের শেষের অক্ষর নিগম থেকে নিগামে পরিবর্তন করেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে আবার তার প্রকৃত নামে ফিরে আসেন।[3]
সোনু নিগম | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম | ফরিদাবাদ, হরিয়ানা, ভারত | ৩০ জুলাই ১৯৭৩
ধরন | পপ, রক, ক্লাসিক্যাল, গজল, প্লেব্যাক সিংগার |
পেশা | শিল্পী, মিউজিশিয়ান, কম্পোজার, অভিনেতা, সঙ্গীত পরিচালক, টেলিভিশন উপস্থাপক |
বাদ্যযন্ত্র | ভোকাল |
লেবেল | সনি মিউজিক, টি-সিরিজ, টিপস, সারেগামা, ভেনাস রেকর্ড এন্ড টেপস |
দাম্পত্যসঙ্গী | মধুমিতা |
ওয়েবসাইট | সোনু নিগম |
সন্তান | নিভান |
পিতা-মাতা | আগাম কুমার নিগম (পিতা), শোভা নিগম (মা), তিশা নিগম (বোন) |
নিগম ফরিদাবাদ শহরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।[4][5] তিনি তার পিতা আগাম কুমার নিগমের সঙ্গে মহম্মদ রফির "ক্যা হুয়া তেরে ওয়াদা, ও কসম ও ইরাদা" গানটি দিয়ে মাত্র চার বছর বয়সে স্টেজে গান গান গাওয়া শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে সোনু তার পিতার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তিনি তার পিতার সাথে উনিশ বছর বয়সে বলিউডে গান গাওয়ার জন্য মুম্বই শহরে চলে আসেন।[6] তিনি বিখ্যাত ক্লাসিক্যাল শিল্পী ওস্তাদ গোলাম মোস্তফা খান এর কাছে সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন।
সোনু মুম্বই শহরে প্রথম দিকের বছরগুলিতে প্রথমে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন। টি-সিরিজের কর্ণধার গুলশন কুমার মহম্মদ রফির গাওয়া গানগুলিকে নিয়ে "রফি কি ইয়াদে" অ্যালবাম প্রকাশ করে তাকে শ্রোতাদের কাছে পৌছানোর সুযোগ দিয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি জানম চলচ্চিত্রে প্রথম গান গাওয়ার সুযোগ পেলেও গানগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পায়নি। এরপর তিনি বেতারে বিজ্ঞাপনের কাজে সংযুক্ত হন।
১৯৯৫ সালে নিগম "সা রে গা মা" নামক জনপ্রিয় টিভি শোতে সঞ্চালকের ভূমিকা নেন। ঐ বছর তিনি বেওয়াফা সনম চলচ্চিত্রে "আচ্ছা সিলা দিয়া" গানটি গান।[6] তার প্রথম বড় ধরনে সফলতার পেছনে ছিল বর্ডার চলচ্চিত্রে অনু মালিকের সুরে গাওয়া "সন্দেশে আতি হে" গানটি। সোনুর দিওয়ানা অ্যালবামটি মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালে টি-সিরিজের ব্যানারে, অ্যালবামটিতে তার রোমান্টিক গান গাওয়ার প্রতিভা প্রকাশ পেয়েছিল। দিওয়ানা অ্যালবামটি ভারতীয় পপ এ্যালবামের জগতে অন্যতম একটি ব্যাবসাসফল এ্যালবাম বলে বিবেচনা করা হয়॥ তিনি নিজেকে সৃষ্টি করলেন একটি ব্যতিক্রমি একজন শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং ভারতীয় ভোকাল গানের জগতে একটি রোল মডেল হিসেবে মর্যাদা লাভ করেন।[6]
সোনুর মুক্তিপ্রাপ্ত পপ অ্যালবাম গুলি হল হিন্দী, ওড়িয়া, পাঞ্জাবী এবং কন্নড় ভাষায়। তার সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দী গানের সংকলন "ক্ল্যাসিক্যাল মাইল্ড" একটি সেমি ক্লাসিক্যাল এ্যালবাম"[7] তিনি কয়েকটি হিন্দু এবং ইসলামিক ভক্তিমূলক এ্যালবামেও কাজ করেছেন। তিনি গৌতম বুদ্ধের শিক্ষার ওপর বুদ্ধা হি বুদ্ধা হ্যায় (পার্ট ১ ও ২) এ্যালবাম এবং ভীমরাও রামজি আম্বেডকরের ওপর মারাঠি ভাষায় জিওয়ালা জিয়াচ দান (পার্ট ১ ও ২) নামক অ্যালবামেও গান করেন। এছাড়াও ২০০৭ সালে মহম্মদ রফির স্মরণে কাল আজ অউর কাল নামক একশটি গানের এ্যালবামেও তিনি কাজ করেন।[8] ২০০৮ সালের ক্ল্যাসিক্যাল মাইল্ড এ্যালবামটি মুক্তির পরে তিনি পাঞ্জাবি রিলিজ নামক একটি একক পাঞ্জাবি গান[9] এবং রফি রিসারাক্টেড নামক অ্যালবামে গান করেন।
নিগম তার ফেসবুক ফ্যানদের সঙ্গে জ্যাকসনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে একটি গানে কন্ঠ দেন যা "দ্য বিট অব আয়ার হার্টস নামক বিশ্বের ১৮টি গানের সংকলনে স্থান পায়।[10] নিগম ব্রিটনি স্পিয়ার্সের সাথে "আই ওয়ানা গো" গানটিতেও কাজ করেন।[11]
তার সঙ্গীত জীবনে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, রাশিয়া, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, মরিশাস, নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে গান করেছেন। ২০০৭ সালের মে তিনি আশা ভোঁসলে, কুনাল গাঞ্জাওয়ালা এবং কৈলাশ খেরের সাথে উত্তর আমেরিকার "দ্য ইনক্রেডিবল" নামক বিখ্যাত শোতে অংশগ্রহণ করেন। একই বছরের সেপ্টেম্বর/অক্টোবরে তিনি করেন "সিম্পলি সোনু" নামে এক অনুষ্ঠানে কানাডা এবং জার্মানিতে এবং প্রথম ভারতীয় শিল্পী হিসেবে একক অনুষ্ঠান করেন।[12] ২০১১ সালে সোনু এবং লক্ষ্মীকান্ত-প্যারেলাল এবং কাকাস এন্টারটেইনমেন্টের সাথে "মায়েস্ত্রো" কনসার্টে মহম্মদ রফির গানগুলি গান।[13]
নিগম "স্প্রিরিট আনফোল্ডিং" নামক ইংরেজি ভাষার এ্যালবাম[14] এবং "টাইম ট্রাভেল" নামে একটি প্রকল্পে কাজ করেন [15] তিনি দুইবার ইউএস টপচার্টে ১ নং শিল্পী ছিলেন।(সেপ্টেম্বর ০৭ এবং অক্টোবর ০৫, ২০১৩ তারিখে)[16][17]
১৯৯৯ সালে "সা রে গা মা" শোতে নিগম সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন।[18] ২০০৭ সালের অক্টোবরে সারেগামাপা লি'ল চ্যামস ইন্টারন্যাশনাল অনুষ্ঠানে তাকে বিচারক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নিগম ছিলেন সারেগামাপা মেগা চ্যালেঞ্জ অনুষ্ঠানের ১০০০ তম পর্বে অনুষ্ঠানে গ্রান্ড ফাইনালের বিচারক। নিগম আলাদিন চলচ্চিত্রের হিন্দী ভাষায় অনূদিত ভার্সনের প্রধান চরিত্র আলাদিনের কণ্ঠ প্রদান করেন।[19] তিনি সঞ্জয় লীলা বানসালি এবং শ্রেয়া ঘোষালের সাথে যুগ্মভাবে এক্স ফ্যাক্টর (ইন্ডিয়া) অনুষ্ঠানের প্রথম সিজনের বিচারক ছিলেন।[18]
নিগম ১৯৮৩ সালে বেতাব নামক হিন্দী চলচ্চিত্রে অভিনয় জীবন শুরু করেন।[20]। তার পরিণত বয়সে অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে জানি দুশমন: এক আনোখি কাহানি, কাশ আপ হামারে হোতে উল্লেখযোগ্য। যদিও তার কোন ছবিই বক্স অফিসে তেমন ব্যবসায়িক ভাবে সফল হয়নি, তবে তার অভিনয় নজর কেড়েছিল। তিনি তার লাভ ইন নেপাল ছবির পরে আর কোন ছবিতে ফিরে আসেননি কিন্তু সম্প্রতি একজন অন্ধ গায়কের ভূমিকায় আখো আখো মে চলচ্চিত্রে কাজ করছেন।[21]
২০০৬ সালে রেডিওসিটি ৯১.১ এফএম রেডিওতে "লাইফ কি ধুন উইথ সোনু নিগম" নামক অনুষ্ঠানে তিনি সঞ্চালকের ভূমিকা নেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি লতা মঙ্গেশকর সহ বিভিন্ন সঙ্গীত শিল্পীদের সাক্ষাৎকার নেন।[22]
ছবির নাম | মৌলিক কন্ঠস্বর | চরিত্র | দ্বৈত ভাষা | মৌলিক ভাষা | মৌলিক মুক্তি | দ্বৈত মুক্তি | উল্লেখযোগ্য |
---|---|---|---|---|---|---|---|
আলাদিন[23] | স্কট ওয়েঙ্গার ব্রাড ক্যালেব কেনে (কণ্ঠ) | আলাদিন | হিন্দী | ইংরেজি | ১৯৯২ | ২০০৫ | এই ছবিতে আলাদিনে সমস্ত কণ্ঠস্বর দিয়েছেন। |
রিও | জেসি এইসেনবার্গ | ব্লু | হিন্দী | ইংরেজি | ২০১১ | ২০১১ |
সোনু নিগম ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০২ বাঙালী পরিবারের মেয়ে মধুমিতার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[24] তাদের নিভান নামে একটি পুত্রসন্তান ২০০৭ সালে জন্মগ্রহণ করে।[25] সোনু তার শারীরিক গঠন ঠিক রাখার নিয়মিত যোগ ও ব্যায়ামচর্চা করে থাকেন এবং তাইকুন্দোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।[26] নিগম মূলত ক্যান্সার, কুষ্ঠরোগ, অন্ধত্ব এবং মহিলাদের কল্যাণের জন্য সমর্পিত ভারতের বিভিন্ন সমাজসেবক প্রতিষ্ঠানের হয়ে এবং বহির্বিশ্বের সামাজিক প্রতিষ্ঠান ডিগনিটি ফাউন্ডেশনের মত প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করে থাকেন।[1]
তিনি ২০১৭ সালে মসজিদের মাইকে আজান দেওয়াকে গুন্ডাগিরি বলে সমালোচিত হয়েছিলেন।[27]
নিগম বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় করেছেন।
ছবির নাম | চরিত্র | বছর |
---|---|---|
প্যায়ারে দুশমন | টিকা সিং | ১৯৮০ |
কামচর | সোনু (রাকেশ রোশানের ভাগ্নে) | ১৯৮২ |
উস্তাদ উস্তাদ সে | রাজু (শিশু মিঠুন চক্রবর্তী) | ১৯৮২ |
বেতাব | সানি (শিশু সানি দেওল) | ১৯৮৩ |
হাম সে জামানা | শিভা (শিশু মিঠুন চক্রবর্তী) | ১৯৮৩ |
তকদির (১৯৮৩ ছবি) | শিবা (শিশু শত্রুঘ্ন সিনহা) | ১৯৮৩ |
কৃষ্ণ কৃষ্ণ | সুধামা | ১৯৮৬ |
জানে দুশমন: এক আনোকি কাহানি | বিবেক সাক্সিনা | ২০০২ |
কাশ আপ হামারে হে | জয় কুমার | ২০০৩ |
লাভ ইন নেপাল | অভি | ২০০৪ |
নভ্রা মাঝা নাভাসা | অতিথি | ২০০৫ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.