মাকতাবুল খিদমাত
From Wikipedia, the free encyclopedia
মাকতাবুল খিদমাত অথবা মাকতাবু খিদমাতিল মুজাহিদীন আল-আরব ( আরবি: مكتب الخدمات বা مكتب خدمات المجاهدين العرب), যা সংক্ষেপে MAK ও আফগান সার্ভিস ব্যুরো নামেও পরিচিত, আবদুল্লাহ আজ্জাম, ওয়ায়েল হামজা, জুলাইদান, বিন লাদেন এবং আয়মান আল জাওয়াহিরি কর্তৃক ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সেবামূলক সংগঠন ছিল। আফগান যুদ্ধে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তহবিল, অস্ত্র সংগ্রহ ও বিদেশী মুজাহিদদের নিয়োগ করার উদ্দেশে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। MAK আল-কায়েদার অগ্রদূত হয়ে ওঠে এবং ১৯৯০ এর দশকে আল-কায়েদাকে উপকৃত করে এমন তহবিল সংগ্রহ এবং নিয়োগের নেটওয়ার্ক তৈরিতে এটি সহায়ক ছিল। [1]
সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় মাকতাবুল খিদমাত একটি ন্যূনতম ভূমিকা পালন করেছিল; যুদ্ধের জন্য ১০০ জন মুজাহিদিনের একটি ছোট দলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আরব ও পশ্চিমা দেশগুলিতে বিশ্বব্যাপী অফিসগুলির একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উৎসারিত মুসলমানদের কাছ থেকে আনুমানিক $১ মিলিয়ন অনুদান বিতরণ করেছিল। মাকতাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখে, যার মাধ্যমে সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থা আল মুখাবরাত আল আম্মাহ মুজাহেদিনদের কাছে অর্থ সরবরাহ করে। এটি নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণের জন্য আফগানিস্তানে যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া প্রদান করে। [2] এটি পেশোয়ারে হিজব-ই-ইসলামি গুলবুদ্দিন দলকে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করেছিল।
আফগান যুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই মাকতাবের ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা নিয়ে আজ্জাম এবং আয়মান আল-জাওয়াহিরির নেতৃত্বাধীন দল মিশরীয় ইসলামি জিহাদের (EIJ) মধ্যে মতের পার্থক্য দেখা দেয় এবং এতে তার কার্যক্রম সীমিত হয়ে যায়। আজ্জাম তার তৈরি করা সম্পদ যুদ্ধোত্তর আফগানিস্তানে একটি বিশুদ্ধ ইসলামি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করার যে উদ্দেশ্যে নেটওয়ার্কটি তৈরি করেছিলেন তা তিনি সেই কাজেই ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন [3] এবং তিনি মুসলিম দেশগুলির সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণসহ মুসলিমদের মধ্যে ফিতনার বিরোধিতা করতেন। আল জাওয়াহিরি অনৈসলামিক হিসেবে বিবেচিত মুসলিম দেশগুলির সরকারদের উৎখাতসহ একটি বৈশ্বিক জিহাদের অর্থায়নের জন্য মাকতাবের সম্পদ ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। [4] [5] মাকতাবের জন্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তহবিল সংগ্রহকারী বিন লাদেন জাওয়াহিরি দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত ছিলেন; যদিও তিনি আব্দুল্লাহ আজ্জামেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। [6]
১৯৮৯ সালের ২৪ নভেম্বর আব্দুল্লাহ আজ্জাম অজ্ঞাত ঘাতকদের প্রেথিত ৩ টি মাইন বিস্ফোরণে নিহত হন। মাগরিবের নামাজের জন্য স্থানীয় মসজিদে যাওয়ার পথে এই হত্যাকাণ্ডে আজ্জাম ও তার দুই ছেলে নিহত হন। [7] আজ্জামের মৃত্যুর পরে ওসামা বিন লাদেন মাকতাবের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে এই সংগঠনটি আল কায়েদার মধ্যে নিমজ্জিত হয়। [8] [9] [10][11][12][13][14]