মরগান পোর্টারফিল্ড ফ্রিম্যান, জুনিয়র (ইংরেজি: Morgan Porterfield Freeman, Jr.) (জন্ম: ১ জুন, ১৯৩৭) একজন মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, এবং নির্দেশক। তার সংরক্ষণমূলক মনোভাব, ও আচার-আচরণ, এবং কতৃত্বমূলক কণ্ঠ ও বাচনভঙ্গির জন্য তিনি বেশি পরিচিত।

দ্রুত তথ্য মরগান ফ্রিম্যান, জন্ম ...
মরগান ফ্রিম্যান
Morgan Freeman
Thumb
জানুয়ারি ২০০৮-এ জার্মানির বার্লিনে দ্য বাকেট লিস্ট চলচ্চিত্রদের মুক্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে মরগান ফ্রিম্যান
জন্ম
মরগান পোর্টফিল্ড ফ্রিম্যান জুনিয়র

(1937-06-01) জুন ১, ১৯৩৭ (বয়স ৮৭)
মেমফিস, টেনেসি, যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তামার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকান
পেশাঅভিনেতা
পরিচালক
কর্মজীবন১৯৭১–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীজনেট আদির ব্রাডশ (বি. ১৯৬৭; বিচ্ছেদ. ১৯৭৯)
মিরনা কালি-লি (বি. ১৯৮৪; বিচ্ছেদ. ২০১০)
বন্ধ

২০০৫ সালে মিলিয়ন ডলার বেবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মরগান ফ্রিমান সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া এর আগে তিনি স্ট্রিট স্মার্ট, ড্রাইভিং মিস ডেইজি, এবং দ্য শশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন-এর জন্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেছেন। এছাড়াও তিনি একবার করে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারস্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার লাভ করেছেন।

বিভিন্ন বক্স অফিসের সফল চলচ্চিত্রে ফ্রিম্যানকে দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে, আনফরগিভেন, সেভেন, ডিপ ইমপ্যাক্ট, দ্য সাম অফ অল ফিয়ারস, ব্রুস অলমাইটি, ব্যাটম্যান বিগিন্স, দ্য বাকেট লিস্ট, এভান অলমাইটি, ওয়ান্টেড, এবং দ্য ডার্ক নাইট

জীবনী

অভিনয়ের পাশাপাশি অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যান একজন চলচ্চিত্র পরিচালক ও সুবক্তা। আফ্রিকান বংশোদ্ভুত এ অভিনেতা জন্মগ্রহণ করেন আমেরিকার টেনেসির মেম্ফিসে। ১৯৩৭ সালের ১ ই জুন জন্ম নেয়া এ অভিনেতা শিক্ষকের সন্তান। তার পিতামাতা মর্গান পোর্টারফিল্ড ফ্রিম্যান ও নি রিভারি। তার শৈশব কেটেছে মিসিসিপি ,গ্যারি ,ইন্ডিয়ানা, শিকাগোর মত বিভিন্ন জায়গায় ।মর্গান ফ্রিম্যান এর অভিনয় জীবন শুরু হয় মাত্র নয় বছর বয়সে তার স্কুলে একটি নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর তিনি ব্রডস্ট্রীট স্কুলে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তিনি মাত্র বার বছর বয়সে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত নাট্য প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জেতেন। প্রথম তার তার নাট্যকলা প্রদর্শিত হয় “হ্যালো ডলি” এর মিউজিকের মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে ব্রডস্ট্রীট থেকে তিনি স্নাতক সম্পূর্ণ করেন ,তিনি জ্যাকসন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাট্যকলায় স্কলারশিপ পান। এরপর তিনি রাডার টেকনিশিয়ান হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি লস এঞ্জেলসে চলে যান এবং সেখানে অভিনয়ের ওপর পেসাডেনা নাট্যশালায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালের গোড়ার দিকে নাচের ওপর সানফ্রান্সিস্কোতে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসে প্রতিলিপি কেরানি হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি নিউইয়র্কে বাস করেন এবং ১৯৬৪ সালের ওয়ার্ল্ড ফেয়ারে একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। এ সময়ে ফ্রিম্যান সানফ্রান্সিস্কোর অপেরা রিং মিউজিক্যাল থিয়েটার গ্রুপের একজন সদস্যও ছিলেন।

চলচ্চিত্র জীবন

ফ্রিম্যান দ্য রয়েল হান্ট অফ দ্য সান ট্যুর কোম্পানির ভার্সনে অভিনয় করেন এবং চলচ্চিত্রে একজন এক্সট্রা অভিনেতা হিসেবে ১৯৬৫ সালে তাকে দেখা যায় “পউনব্রোকার” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, যেখানে তার চরিত্র ছিল একজন পথচারীর । তার অভিনয় জীবনের পূর্ণাঙ্গ অভিষেক হয় মূলত ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র “ হু সেইস আই কান্ট রাইড এ রেইনবো”তে । তার পরবর্তী চলচ্চিত্র ১৯৭৩ সালে রিলিজ পাওয়া চলচ্চিত্র “ব্লেড” । এরপর টিভি মুভি “আউট টু লন্স” তে তিনি অভিনয় করেন । ১৯৭১-১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি টিভি সিরিয়াল “দ্য ইলেকট্রিক কোম্পানি”তে অভিনয় করেন । ১৯৮০ সালের পর থেকে ফ্রিম্যান চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন । “ড্রাইভিং মিস ডেইজি(১৯৮৯)” , “গ্লোরি(১৯৮৯)” , “দ্য শোশাংক রেডেমশান(১৯৯৪)” এর মত বেশকিছু চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের চলচ্চিত্রজগতে দারুণভাবে অভিনয়ের নান্দনিকতার প্রকাশ ঘটান ।

৭০ দশকেও ফ্রিম্যান অভিনয় করতে থাকেন চলচ্চিত্রের পাশাপাশি মঞ্চেও । তার অভিনীত “ডেস্ক” এবং “ক্ল্যারেন্স” নাটক ডারওয়েন্ট পুরস্কার জয়ী , পাশাপাশি ১৯৭৮ সালে “জেন্টস” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যে “টনি” পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হন । ১৯৮০ সালে নিউইয়র্ক শেক্সপিয়র ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তিনি তার “এন্টি হিরো” চরিত্রের জন্যে এবং “মাদার কারেজ ও হার চিলড্রেন” কাজের জন্যে দুটি “ওভি অ্যাওয়ার্ড” পান । ১৯৮৪ সালে মেসেঞ্জার হিসেবে তার কাজের জন্যে তিনি আবার “ ওভি অ্যাওয়ার্ড” পান । ১৯৮৭ সালে তিনি আবারও “ওভি অ্যাওয়ার্ড” পান । “স্ট্রিট স্মার্ট” চলচ্চিত্রের জন্যে পার্শ্ব চরিত্রে, “ড্রাইভিং মিস ডেইজি” ও “শোশাংক রেডেমশান” চলচ্চিত্রের জন্যে প্রধান চরিত্রে তিনি যথাক্রমে ১৯৮৭,১৯৯০ এবং ১৯৯৫ সালে অস্কার মনোনয়ন পান । অবশেষে ২০০৫ সালে তার অভিনীত চলচ্চিত্র “ মিলিয়ন ডলার বেবি” এর জন্যে তিনি অস্কার পান । বেস্ট পারফর্মন্সের জন্যে “ড্রাইভিং মিস ডেইজি” চলচ্চিত্রে ১৯৯০ সালে তিনি পান “গোল্ডেন গ্লোব” অ্যাওয়ার্ড এবং বেস্ট অ্যাক্টিং টিম হিসেবে অভিনেত্রী জেসিকা টেন্ডি’র সাথে “ড্রাইভিং মিস ডেইজি” চলচ্চিত্রের জন্যে পান “বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল” অ্যাওয়ার্ড । ২০১১ সালে পান আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে “লাইফ টাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড” । ফ্রিম্যান এ পর্যন্ত ৫৬ টি পুরস্কার এবং ৪৫ বার বিভিন্ন পুরস্কারের জন্যে নমিনেশন পান ।

চলচ্চিত্র সমূহ

  • ম্যারী (১৯৮৫)
  • স্ট্রীট স্মার্ট (১৯৮৭)
  • গ্লোরি (১৯৮৯)
  • ড্রাইভিং মিস ডেইজি (১৯৮৯)
  • লীন অন মি (১৯৮৯)
  • জনি হ্যান্ডসাম (1989)
  • রবিন হুডঃ প্রিন্স অব থিফস (১৯৯১)
  • আনফরগিভেন (১৯৯২)
  • দ্যা শশাংক রেডেম্পশন (১৯৯৪)
  • সেভেন (১৯৯৫)
  • মোল ফ্ল্যান্ডারস (১৯৯৬)
  • অ্যামিস্টাড (১৯৯৭)
  • কিস দ্য গার্লস (১৯৯৭)
  • ডীপ ইম্প্যাক্ট (১৯৯৮)
  • নার্স বেটি (২০০০)
  • অ্যালং কেম এ স্পাইডার (২০০১)
  • দ্য সাম অব অল ফিয়ারস (২০০২)
  • হাই ক্রাইমস (২০০২)
  • ব্রুস অলমাইটি (২০০৩)
  • মিলিয়ন ডলার বেবি (২০০৪)
  • অ্যান আনফিনিসড লাইফ (২০০৫)
  • ব্যাটম্যান বিগিনস (২০০৫)
  • লাকি নাম্বার স্লেভিন (২০০৬)
  • ১০ আইটেমস অর লেস (২০০৬)
  • ইভান অলমাইটি (২০০৭)
  • গন, বেবি, গন (২০০৭)
  • দ্য বাকেট লিস্ট (২০০৭)
  • ফিস্ট অব লাভ (২০০৭)
  • ওয়ান্টেড (২০০৮)
  • দ্য ডার্ক নাইট (২০০৮)
  • ইনভিক্টাস (২০০৯)
  • রেড (২০১০)
  • ডলফিন টেইল (২০১১)
  • দ্য ডার্ক নাইট রাইজেস (২০১২)
  • অলিম্পাস হ্যাজ ফলেন (২০১৩)
  • অবলিভিয়ন (২০১৩)
  • নাও ইউ সি মি (২০১৩)
  • লাস্ট ভেগাস (২০১৩)
  • দ্য লেগো মুভি (২০১৪)
  • ট্র্যান্সেন্ডেন্স (২০১৪)
  • লুসি (২০১৪)
  • ডলফিন টেইল ২ (২০১৪)
  • মোমেন্টাম (২০১৫)
  • টেড ২ (২০১৫)
  • লন্ডন হ্যাজ ফলেন (২০১৬)

হলিউড জীবন

৯০ এর দশকে অভিনেতা ফ্রিম্যান যেন হলিউডের অভিনয় জগতে শক্ত অবস্থান নেয়া শুরু করেন । ১৯৯২ সালে তার “পাওয়ার অফ ওয়ান” এবং “আন ফরগিভেন” চলচ্চিত্র মুক্তি পায় । ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় তার দ্য শশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন চলচ্চিত্র এবং ১৯৯৫ সালে “সেভেন” চলচ্চিত্রে ফ্রিম্যানের দেখা মিলে, যাতে ফ্রিম্যান অভিনয় করে গোয়েন্দা চরিত্রে । চলচ্চিত্রগুলোতে তার অভিনয়শৈলী দর্শকে দারুণভাবে নাড়া দেয় এবং তাকে একজন সুঅভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলে । ২০০৩ সালে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র “ব্রুস অলমাইটি”তে তাকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ে দেখে চলচ্চিত্রমোদীরা। ২০০৪ সালে আরেক বিখ্যাত অভিনেতা ক্লিন স্টুড এর পরিচালনায় “মিলিয়ন ডলার বেবি” চলচ্চিত্রে ফ্রিম্যান ক্লিন স্টুড এর সাথে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন, এ চলচ্চিত্র তাকে এনে দেয় “অস্কার” পুরস্কারের স্বাদ ।

টেলিভিশনের পর্দায়

ফ্রিম্যানকে টেলিভিশনের পর্দায় প্রথম দেখা যায় শিশুদের টেলিভিশন ওয়ার্কশপে বিভিন্ন চরিত্রে, ১৯৭১ সালে তাকে দেখা যায় “দ্য ইলেকট্রিক কোম্পানি”তে । পরবর্তীতে তিনি শিশুদের এডভেঞ্চার ঘরনার ফিচার ফিল্ম “হু সেইস আই কান্ট রাইড এ রেইনবো !”তে অভিনয় করেন । ১৯৭৩ সালে থ্রিলারধর্মী চলচ্চিত্র “ব্লেড” এ তাকে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় । ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র “ জুলিয়াস সিজার” এ “কেস্কার” চরিত্রে অভিনয় করেন । প্রতিভাবান এ চলচ্চিত্র অভিনেতা ও নির্মাতা ১৯৮৯ সালে অভিনয় করেন মহাকব্যিক গৃহযুদ্ধের চলচ্চিত্র “গ্লোরি”তে, যাতে স্থান পায় আফ্রিকান ক্রীতদাসদের কথা ।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.