ফের্দিনান্দ এমানুয়েল এদ্রালিন মার্কোস, জ্যেষ্ঠ[টীকা 1] (জন্ম: ১১ সেপ্টেম্বর, ১৯১৭ - মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯) ইলোকস নর্টের সারাত এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ফিলিপাইনের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন।[2] ১৯৬৫ থেকে ১৯৮৬ মেয়াদে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত সামরিক আইনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করেন।[3][4] এর পূর্বে তিনি দুইবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।[5][6][7][8] কিন্তু, ১৯৮৬ সালে চারদিনের জনশক্তি আন্দোলনের ন্যায় অহিংস আন্দোলনে নিজ দপ্তর ত্যাগে বাধ্য হন ফের্দিনান্দ মার্কোস। তার কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক দূর্নীতি, রাজনৈতিক উৎপীড়ন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাঁধা দেয়ার জন্য পরিচিতি পেয়েছে।

দ্রুত তথ্য ফের্দিনান্দ এমানুয়েল মার্কোসওএস, পিএলএইচ, ফিলিপাইনের ১০ম রাষ্ট্রপতি ...
ফের্দিনান্দ এমানুয়েল মার্কোস
ওএস, পিএলএইচ
১৯৮২ সালে ফের্দিনান্দ মার্কোস
ফিলিপাইনের ১০ম রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬৫  ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬
প্রধানমন্ত্রীস্বয়ং (১৯৭৮-১৯৮১)
সিজার ভিরাতা (১৯৮১-১৯৮৬)
উপরাষ্ট্রপতিফের্নান্দো লোপেস (১৯৬৫-১৯৭৩)
আর্তুরো তোলেন্তিনো (১৬-২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬)
পূর্বসূরীদিওসদাদো মাকাপাগাল
উত্তরসূরীকোরাজন আকুইনো
ফিলিপাইনের ৩য় প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১২ জুন, ১৯৭৮  ৩০ জুন, ১৯৮১
পূর্বসূরীপদ সৃষ্ট
(পূর্বে পদধারণ করেছিলেন জর্জ বি. ভার্গাস)
উত্তরসূরীসেসার ভিরাতা
জাতীয় প্রতিরক্ষা সচিব
কাজের মেয়াদ
২৮ আগস্ট, ১৯৭১  ৩ জানুয়ারি, ১৯৭২
রাষ্ট্রপতিস্বয়ং
পূর্বসূরীহুয়ান পোনসে এনরিলে
উত্তরসূরীহুয়ান পোনসে এনরিলে
কাজের মেয়াদ
৩১ ডিসেম্বর, ১৯৬৫  ২০ জানুয়ারি, ১৯৬৭
রাষ্ট্রপতিস্বয়ং
পূর্বসূরীমাকারিও পেরাল্তা
উত্তরসূরীএরনেস্তো মাতা
ফিলিপাইন সিনেটে ১১শ সভাপতি
কাজের মেয়াদ
৫ এপ্রিল, ১৯৬৩  ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬৫
রাষ্ট্রপতিদিওসদাদো মাকাপাগাল
পূর্বসূরীএউলোখিও রোদ্রিগেস
উত্তরসূরীআর্তুরো তোলেন্তিনো
ফিলিপাইনের সিনেটর
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫৯  ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৬৫
ইল্লোকোস নর্তের দ্বিতীয় জেলা থেকে ফিলিপাইন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য
কাজের মেয়াদ
৩০ ডিসেম্বর, ১৯৪৯  ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৫৯
পূর্বসূরীপেদ্রো আলবানো
উত্তরসূরীসিমোন এম. বালদেস
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মফের্দিনান্দ এমানুয়েল এদ্রালিন মার্কোস[1]
(১৯১৭-০৯-১১)১১ সেপ্টেম্বর ১৯১৭
সারাত, ইলোকস নর্ট, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ
মৃত্যুসেপ্টেম্বর ২৮, ১৯৮৯(1989-09-28) (বয়স ৭২)
হনুলুলু, হাওয়াই, ইউ.এস.
সমাধিস্থলমার্কোস মিউজিয়াম এন্ড মসোলিয়াম, বাতাক, ইলোকস নর্ট, ফিলিপাইন
রাজনৈতিক দলকিলুসাং বাগং লিপুনান
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
লিবারেল পার্টি (১৯৪৬-১৯৬৫)
ন্যাশিওনালিস্তা পার্টি (১৯৬৫-১৯৭৮)
দাম্পত্য সঙ্গীইমেলদা রমুয়ালদেজ (১৯৫৪-১৯৮৯; মৃত্যু)
সন্তানমা. ইমেলদা মার্কোস
ফার্দিনান্দ মার্কোস, জুনিয়র
ইরিন মার্কোস-আরানেতা
এইমি মার্কোস
প্রাক্তন শিক্ষার্থীইউনিভার্সিটি অব দ্য ফিলিপাইনস কলেজ অব ল
জীবিকারাজনীতিবিদ
ধর্মরোমান ক্যাথলিক (সাবেক ইগলেসিয়া ফিলিপিনা ইনডিপেনডিয়েন্টে)
পুরস্কার
  • ফিলিপাইন মেডেল অব ভেলর
  • সিলভার স্টার
  • পার্পল হার্ট
স্বাক্ষর
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য Philippines
পদMajor মেজর
যুদ্ধদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
বন্ধ

প্রারম্ভিক জীবন

মারিয়ানো মার্কোস ও জোসেফা এদ্রালিন দম্পতির সন্তান তিনি। ফিলিপাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯৩৯ সালে বার পরীক্ষায় ৯৮.৮% নম্বর পান। ১৮ বছর বয়সে তার বাবা মারিয়ানো মার্কোসের রাজনৈতিক বিরুদ্ধবাদী জুলিও নালান্দাসানকে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জোস পি. লরেল কর্তৃক উভয়েই মুক্তি পান।[9] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি দাবী করেন যে, ফিলিপাইনের সর্বাপেক্ষা পদকপ্রাপ্ত বীর তিনি। কিন্তু তিনি মাত্র তিনটি পদক পেয়েছিলেন।[10][11]

রাজনৈতিক জীবন

১৯৪৯ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রতিনিধি সভার সদস্য হন। এরপর ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৫ মেয়াদে ফিলিপাইনের সিনেটে সিনেটর হন। তন্মধ্যে, ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত সিনেট সভাপতি হন। ১৯৬৫ সালে সফলভাবে নির্বাচনী প্রচারণার পর রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।[12]

মার্কোসের শাসনামলে ফিলিপাইনের জাতীয় ঋণ ২ বিলিয়ন থেকে ৩০ বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ফিলিপাইনের উন্নতিতে শামিল হওয়ায় ১৯৭২ সালে সামরিক শাসন থাকা স্বত্ত্বেও মার্কোসের বিপক্ষে মার্কিন প্রশাসন রুখে দাঁড়ায়নি। কার্টার প্রশাসন বিশ্বব্যাংক থেকে ৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে, সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে ও তার শাসনকে নমনীয় স্বৈরশাসকরূপে আখ্যায়িত করে।[13] ১৯৭৬ সালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, সরকারীভাবে ৮৮টি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৭ সালে সামরিক বাহিনী চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৬০,০০০-এরও বেশি ফিলিপিনোকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে উপ-রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, গণতান্ত্রিক নীতি গ্রহণ করেছেন ও গণতান্ত্রিক পন্থায় দেশ শাসন করছেন।[lower-alpha 1] জনরোষের কবলে পড়ে ১৯৮৬ সালে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয় ও গণবিক্ষোভের মুখে ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যূত হন। ১৯৮৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিহত বিরোধী দলীয় নেতা ও সিনেটর বেনিগনো (নিনয়) অ্যাকুইনো, জুনিয়রের বিধবা পত্নী কোরাজন (কোরি) অ্যাকুইনো’র সমর্থকেরা তাকে ক্ষমতা ত্যাগে বাধ্য করে।[18]

ব্যক্তিগত জীবন

১৯৬৫ থেকে ১৯৮৬ সময়কালে মার্কিন মদদপুষ্ট মার্কোসের পরিবার দেশ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করে ও বিলাসবহুল জীবন উপভোগ করে। তার স্ত্রী ইমেলদা মার্কোস অর্থচুরির[4][19][20] সীমারেখা অতিক্রম করেন ও নিজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেন।[3][21][22][23] এ দম্পতির চার সন্তান রয়েছে। তন্মধ্যে, ইমেলদা তার দুই সন্তান ইমি মার্কোস ও ফার্দিনান্দ বংবং মার্কোস, জুনিয়রকে নিয়ে ফিলিপাইনের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।[24]

টীকা

  1. এই স্পেনীয় নামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় স্পেনীয় শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ-এ ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.