সুকেন্দ্রিক জীব
From Wikipedia, the free encyclopedia
সুকেন্দ্রিক জীব বা ইউক্যারিওট (eukaryote) বলতে সেই সমস্ত জীবকে বোঝানো হয়ে থাকে যাদের কোষের নিউক্লিয়াস ও অন্যান্য অঙ্গাণু জৈব পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে।
সুকেন্দ্রিক জীব সময়গত পরিসীমা: রায়াসিয়ান - বর্তমান 210–0 Ma | |
---|---|
বিভিন্ন বৈচিত্র্যের সুকেন্দ্রিক জীব | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
ক্ষেত্র: | ইউক্যারিওটা (এডোয়ার্ড স্যাটন, ১৯২৫) রবার্ট হুইটাকার ও লিন মার্গুলিস, ১৯৭৮ |
মহাদল[1] ও জগৎ | |
যে সমস্ত জীবকে উদ্ভিদ, প্রাণী বা ছত্রাক জগরতের মধ্যে শ্রেণীভুক্ত করা যায় না, তাদের অনেক সময় প্রোটিস্টা জগতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। | |
এই জীবগুলি ইউক্যারিয়া বা ইউক্যারিওটা শ্রেণিবিন্যাসের অন্তর্গত। এই জীবদের মূল বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এদের কোষে পর্দা-বেষ্টিত নিউক্লিয়াস সহ অন্যান্য অঙ্গাণু থাকে, যা প্রাক-কেন্দ্রিক জীবদের সঙ্গে এদেরকে পৃথক করে।[2][3][4] এই কোষে নিউক্লিয়াসের উপস্থিতির কারণে এই জীবদের নামকরণ ইউক্যারিওট দেওয়া হয়েছে, যা গ্রিক শব্দ ευ (ইউ) এবং κάρυον (ক্যারিওন) থেকে এসেছে।[5] নিউক্লিয়াস ছাড়া আর যে সমস্ত পর্দা বেষ্টিত অঙ্গাণু এই কোষে থাকে, সেগুলি হল, মাইটোকন্ড্রিয়া ও গল্গি বস্তু। এছাড়া উদ্ভিদ জগতে ক্লোরোপ্লাস্ট নামক এক ধরনের অঙ্গাণু থাকে। সুকেন্দ্রিক জীব এককোষী বা বহুকোষী হতে পারে। বহুকোষী জীবে বিভিন্ন ধরনের কোষ দ্বারা গঠিত অনেক রকমের কলা থাকে।
সুকেন্দ্রিক জীব মাইটোসিসের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন এবং মিওসিসের মাধ্যমে যৌন প্রজনন করে থাকে। মাইটোসিসের ক্ষেত্রে একটি কোষ বিভক্ত হয়ে জিনগত ভাবে অভিন্ন দুইটি কোষ উৎপন্ন হয়। মিওসিসের ক্ষেত্রে কোষে ডিএনএ রেপ্লিকেশন ও তার পরে দুই বারে কোষ বিভাজনের ফলে চারটি নতুন কোষ উৎপন্ন হয়, যাদের প্রত্যেকের মূল কোষের ক্রোমোজোমের থেকে অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমজোম থাকে। মিওসিসের ফলে উৎপন্ন হ্যাপ্লয়েড অপত্য কোষগুলি জননকোষ হিসেবে কাজ করে থাকে।
সমগ্র জীবজগতের তুলনায় সুকেন্দ্রিক জীবদের সংখ্যা নগণ্য বললেই চলে,[6] এমনকি মানবদেহের সমস্ত কোষের সংখ্যা মানব অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যার চেয়ে কম।[7] কিন্তু সুকেন্দ্রিক জীবদের অধিকাংশ সদস্যের আকৃতি বড় হওয়ার কারণে সারা বিশ্বজুড়ে তাদের সমষ্টিগত জৈবভর প্রাক-কেন্দ্রিক জীবের মোটামুটি সমান বলা চলে।[8]