পাকিস্তানের প্রশাসনিক এককসমূহ ৪টি প্রদেশ, ১টি কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা, ২টি স্বশাসিত ও বিতর্কিত এলাকা এবং কেন্দ্র শাসিত একটি উপজাতীয় গোষ্ঠী এলাকা দ্বারা গঠিত। পাকিস্তানে ৩৪টি বিভাগ, ১৪৯টি জেলা (জিলা), ৫৮৮টি উপজেলা (তহশিল) এবং কয়েক হাজার ইউনিয়ন কাউন্সিল (শেরওয়ান) এর সমন্বয়ে ৩টি নিম্ন স্তরের সরকার রয়েছে।[1]

দ্রুত তথ্য পাকিস্তানের প্রশাসনিক এককসমূহ پاکستان کی انتظامی اکائیاں (Urdu), শ্রেণি ...
পাকিস্তানের প্রশাসনিক এককসমূহ
پاکستان کی انتظامی اکائیاں (Urdu)
  • অন্য নাম:
  • মুহাফাজা
পাকিস্তানের প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
শ্রেণিফেডারেট রাষ্ট্র
অবস্থানইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তান
সংখ্যা৫ প্রদেশ
১ কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা
২ স্বশাসিত এলাকা
১ কেন্দ্র শাসিত উপজাতীয় এলাকা
জনসংখ্যা১,৪৪১,৫২৩ (গিলগিত-বালতিস্তান) – ১১০,০১২,৪৪২ (পাঞ্জাব)
আয়তন৯০৬.০ কিমি (৩৪৯.৮১ মা) (ইসলামাবাদ রাজধানী এলাকা) – ৩,৪৭,২০০ কিমি (১,৩৪,০৫০ মা) (বেলুচিস্তান)
সরকার
  • প্রাদেশিক সরকার, কেন্দ্র শাসিত উপজাতীয় এলাকা সরকার
উপবিভাগ
  • জেলা, এজেন্সি
বন্ধ

ইতিহাস

২০১০ সালের হিসাবে পাকিস্তানের প্রশাসনিক একক ব্রিটিশ ভারত থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত প্রশাসনিক এককসমূহ থেকে প্রাপ্ত। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত, পাকিস্তানকে ১৬০০ কিলোমিটার দূরত্বের ভারতীয় অংশ দ্বারা দুইটি প্রান্তে পৃথক ছিল। পূর্বাঞ্চলীয় প্রান্ত পূর্ব বাংলার একক প্রদেশে গঠিত ছিল, যেটিতে তৎকালীন ব্রিটিশ রাজ প্রদেশের আসাম রাজ্যের সিলেট জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রান্ত তিনটি পূর্ণ প্রদেশ (খাইবার পাখতুনখোয়া, পশ্চিম পাঞ্জাব এবং সিন্ধ), একটি প্রধান কমিশনারের প্রদেশ (বেলুচিস্তান), ১৩টি দেশীয় রাজ্য এবং কাশ্মীরের অংশ দ্বারা গঠিত ছিল।

১৯৪৮ সালে করাচীর আশপাশের অঞ্চলকে সিন্ধ প্রদেশ থেকে ফেডারেল রাজধানী এলাকায় পৃথক করা হয়। ১৯৫০ সালে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশকে অ্যাম্ব এবং ফুলরা নামে দুইটি ছোট দেশীয় রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করে সম্প্রসারিত করা হয় এবং পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশকে পাঞ্জাব নামে পরিবর্তন করা হয়। ১৯৫২ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের ৪টি দেশীয় রাজ্যকে নিয়ে বেলুচিস্তান রাজ্য ইউনিয়ন গঠন করা হয়।

১৯৫৫ সালে ইস্কান্দার মির্জা এক ইউনিট ব্যবস্থা নীতি জারি করেন[2], যার ফলে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের সমস্ত প্রদেশ ও দেশীয় রাজ্যকে পশ্চিম পাকিস্তান নামে একটি নতুন প্রদেশে যুক্ত করা হয়, যার প্রাদেশিক রাজধানী হয় লাহোর। একই সাথে, পূর্ব বাংলার নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান করা হয়, যার প্রাদেশিক রাজধানী হয় ঢাকা। ১৯৬০ সারে ফেডারেল রাজধানী করাচী থেকে রাওয়ালপিন্ডিতে স্থানান্তর করা হয়, এবং পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে ইসলামাবাদে সরিয়ে নেয়া হয়। ১৯৬১ সালে ফেডারেল রাজধানী এলাকা পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে একত্রিত করা হয়।

এক ইউনিট ব্যবস্থা নীতির উদ্দেশ্য ছিল ব্যয় প্রবৃদ্ধি এবং প্রাদেশিক বিদ্বেষ দূর করা, কিন্তু ১৯৫৮ সালের আকস্মিক সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান নানা সমস্যার সংকেত দেয়, যখন প্রথম সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান গভর্নরের শাসনের পক্ষে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিলুপ্ত করেন। দ্বিতীয় সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ সালে পশ্চিম পাকিস্তানকে ভেঙ্গে চারটি নতুন প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ব পাকিস্তান ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ নামে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন একটি দেশের সৃষ্টি হয়। ১৯৭৪ সালে শেষ দুইটি দেশীয় রাজ্য (হুনজা এবং নাগার) বিলুপ্ত হয় এবং এ এলাকাদ্বয় গিলগিত এজেন্সির সাথে মিশে উত্তরাঞ্চল গঠন করে (বর্তমানে গিলগিত-বালতিস্তান নামে পরিচিত)। ১৯৭৫ সালে কেন্দ্র শাসিত উপজাতীয় এলাকাসমূহ দ্বারা হাজারার কিছু অংশ, পেশাওয়ার এবং ডেরা ইসমাঈল খান জেলা গঠিত হয়। ১৯৮১ সালে ইসলামাবাদ এলাকা রাজধানী এলাকায় পরিবর্তিত হয়। ২০১০ সালে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের নামকরণ খাইবার পাখতুনখোয়া করা হয়।

২০০০ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় সরকার পুনর্গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বিভাগসমূহ বিলুপ্ত করা হয় এবং ২০০১ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে তা কার্যকর করা হয়। প্রদেশসমূহ দ্বারা পরিচালিত বেশিরভাগ কার্যকলাপ জেলা এবং উপজেলা (তহশিল) এ স্থানান্তর করা হয়েছে। ২০০৮ সালে নতুন বেসামরিক সরকার প্রতিটি বিভাগের জন্য বিভাগের প্রাক্তন স্তর এবং নিযুক্ত কমিশনার পুনঃস্থাপন করেছে।

প্রশাসনিক এককসমূহের গঠনপ্রক্রিয়া

পাকিস্তানের প্রশাসনিক এককসমূহের গঠনপ্রক্রিয়া নিম্নরূপ:

পাকিস্তানের চারটি প্রদেশ এবং অন্যান্য অঞ্চল সমূহের 'ক্লিক-যোগ্য' মানচিত্র
Thumb
পাকিস্তানের প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহের 'ক্লিক-যোগ্য' মানচিত্র
আরও তথ্য সংক্ষেপ, প্রশাসনিক একক ...
সংক্ষেপ প্রশাসনিক একক রাজধানী জনসংখ্য (২০১৭) আয়তন
(বর্গ কিলোমিটার)[3]
ঘনত্ব
(প্রতি বর্গ কিলোমিটারে)
মানচিত্র
AJK আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর (স্বশাসিত এলাকা)* (آزاد جموں و کشمیر) মুজাফ্ফরাবাদ ৪,০৪৫,৩৬৬ ১৩,২৯৮ ২২৩.৫৫ Thumb
BN বেলুচিস্তান (প্রদেশ) (بلوچستان) কোয়েটা ১২,৩৪৪,৪০৮ ৩৪৭,১৯০ ৩৭.৯১ Thumb
GB গিলগিত-বালতিস্তান (স্বশাসিত এলাকা) * (گلگت بلتستان) গিলগিত ১,৪৪১,৫২৩ (২০১২) ৭২,৯৭১ ১৯.৭৫ Thumb
ICT ইসলামাবাদ রাজধানী এলাকা (কেন্দ্রীয় রাজধানী এলাকা) (وفاقی دارالحکومت) ইসলামাবাদ ২,০০৬,৫৭২ ৯০৬ ১,২৭১.৩৮ Thumb
KP খাইবার পাখতুনখোয়া (প্রদেশ)
(خیبرپختونخوا)[4]
পেশাওয়ার ৩০,৫২৩,৩৭১ ৭৪,৫২১ ৩৬০.৯৩ Thumb
PB পাঞ্জাব (প্রদেশ) (پنجاب) লাহোর ১১০,০১২,৪৪২ ২০৫,৩৪৪ ৪৪৫.০১ Thumb
SD সিন্ধু (প্রদেশ) (سندھ) করাচী ৪৭,৮৮৬,০৫১ ১৪০,৯১৪ ৩৯২.০৫ Thumb
পাকিস্তান (پاکستان) ইসলামাবাদ ২০৭,৭৭৪,৫২০ ৮৮২,৩৬৩ ২২৩.৭৯
বন্ধ

*ভারতের সাথে বিতর্কিত

প্রদেশসমূহ ৩৪টি বিভাগে উপ-বিভক্ত হয়েছে, যেগুলো আবার ১৪৯টি জেলায় (উর্দু: ضلع) উপ-বিভক্ত হয়েছে। জেলাসমূহ ৫৮৮টি উপজেলা বা তহশিলে (تحصیل) উপ-বিভক্ত হয়েছে। তহশিলের শর্তাবলী সিন্ধু প্রদেশ ছাড়া পাকিস্তানের বাকি সব অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়, সিন্ধু প্রদেশে তালুকা (تعلقہ) পদ্ধতি বিরাজমান। গ্রাম অথবা পৌরসভাসমূহ তহসিলের অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তানে পাঁচ হাজারেরও অধিক স্থানীয় সরকার রয়েছে। ২০০১ সাল থেকে এসব স্থানীয় সরকার গণতান্ত্রিকভাবে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে, যার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে নাজিম (ناظم) ("কর্মকর্তা" বা "মেয়র")। মহিলাদের জন্য এসব পরিষদে কমপক্ষে ৩৩% আসন বরাদ্দ রয়েছে। মহানগর এলাকাযুক্ত কিছু জেলাকে জেলানগরী বলা হয়। জেলানগরীর উপ-বিভাগসমূহ শহর বা ইউনিয়ন পরিষদ নামে পরিচিত।

নিচের নকশাটি পাকিস্তান সরকার ব্যবস্থার ৬ স্তরের রূপরেখা (উদাহরণ সহ):

 
 
কেন্দ্রীয় সরকার
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
প্রদেশ (e.g. খাইবার পাখতুনখোয়া)
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
বিভাগ (e.g. মালাকান্দ বিভাগ)
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
জেলা (e.g. মালাকান্দ জেলা)
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
তহশিল/শহর (e.g. বাটখেলা)
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
ইউনিয়ন পরিষদ (e.g. মধ্য বাটখেলা)

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.