পাউলির অপবর্জন নীতি
পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি নীতি / From Wikipedia, the free encyclopedia
কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে পাউলির অপবর্জন নীতি থেকে জানা যায় যে অর্ধ-পূর্ণসংখ্যার [1] স্পিন বা ঘূর্ণন সহ দুই বা ততোধিক অভিন্ন কণা [2] অর্থাৎ ফার্মিয়ন [3] একসাথে একই কোয়ান্টাম তন্ত্রের [4] একই কোয়ান্টাম স্তরে [5] অবস্থান করে না। এই তত্ত্বটি ১৯২৫ সালে অস্ট্রীয় পদার্থবিদ ভোল্ফগাং পাউলি ইলেকট্রন-এর জন্য ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ১৯৪০ সালের স্পিন-পরিসংখ্যান তত্ত্বের [6] মধ্যে সমস্ত ফার্মিয়ন অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
পরমাণু মধ্যবর্তী ইলেকট্রনের ক্ষেত্রে বলা যায় যে, একটি বহু ইলেকট্রনযুক্ত পরমাণুর যেকোনো দুটি ইলেকট্রনের চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যার [7] মান কখনই একই হয় না। চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যা হল যথাক্রমে – মূখ্য কোয়ান্টাম সংখ্যা (n), গৌণ কোয়ান্টাম সংখ্যা (l) [8], চুম্বকীয় কোয়ান্টাম সংখ্যা (mℓ) এবং ঘূর্ণন কোয়ান্টাম সংখ্যা (ms)[9]। উদাহরণস্বরূপ, একই পারমাণবিক কক্ষককে [10] অবস্থিত দুটি পরমাণুর n, ℓ ও mℓ সমান হলেও ঘূর্ণন কোয়ান্টাম সংখ্যা ms পৃথক হয় অর্থাৎ সমকক্ষস্থ দুটি ইলেকট্রনের ঘূর্ণন অভিমুখ পরস্পর বিপরীত। একটির মান 1/2 হলে অন্যটির মান −1/2।
বোসন কণা [11] (পূর্ণ স্পিন বা ঘূর্ণন সম্পন্ন কণা) পাউলির অপবর্জন নীতি মেনে চলে না। যতখুশি বোসন কণা একই কোয়ান্টাম স্তরে অবস্থান করে। যেমন, বোস-আইনস্টাইন ঘনীভবন লেজার অথবা পরমাণুর সাহায্যে ফোটন উৎপাদিত হয়।
আরও জটিল বিবৃতি হল, দুটি অভিন্ন কণা বিনিময়ের [12] সময় মোট(অনেক সংখ্যক কণা) তরঙ্গ ফাংশন ফার্মিয়নের জন্য অপ্রতিসম [13] এবং বোসনের জন্য প্রতিসম। এর অর্থ এই যে, দুটি অভিন্ন কণার মধ্যে স্থান ও স্পিন স্থানাঙ্কগুলি বিনিময় হয়, তাহলে মোট তরঙ্গ চিত্র ফার্মিয়নের জন্য তার চিহ্ন পরিবর্তন করলেও বোসনের জন্য অপরিবর্তিত থাকে।
যদি দুটি ফার্মিয়ন একই কক্ষে অবস্থান করে, তাহলে তাদের পারস্পরিক অবস্থান বিনিময়ের পরেও তরঙ্গচিত্র অপরিবর্তিত থাকে। সম্মিলিত তরঙ্গচিত্রে উভয়েই ফার্মিয়নগুলির প্রয়োজন অনুসারে চিহ্ন পরিবর্তন করতে পারে এবং অপরিবর্তিত থাকতে পারে তখনই যখন পদার্থের অস্তিত্ব থাকে না। এই যুক্তি বোসন কণার জন্য প্রযোজ্য নয় কারণ বোসনের চিহ্নের পরিবর্তন হয় না।