নেত্রকোণা জেলা
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নেত্রকোনা জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক এলাকা।এটি বাংলাদেশের একটি উর্বর ও সমৃদ্ধ এলাকা।প্রধান ফসলাদির মধ্যে ধানের ব্যাপক ফলন হয়। এটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা।[২] এখানে রয়েছে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়, পাহাড়ি জলপ্রপাত, চীনা মাটির পাহাড়, টিলা, হাওড়, নদী, খাল এবং অসংখ্য ছোট-বড় বিল। ধান, পাট, গম, কুমড়া, কমলা ইত্যাদি কৃষি পণ্য এই অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক পণ্য হলেও বিভিন্ন ছোট শিল্প এবং খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে এই জেলায়। কাঁচ বালি, সিলেকশন বালি, কয়লা, কেউলিন (চীনা মাটি) এবং পাথর এই জেলায় পাওয়া যায়। সুনেত্র গ্যাস ক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য অংশ নেত্রকোনা জেলায় অবস্থিত।
নেত্রকোনা | |
---|---|
জেলা | |
নেত্রকোনা | |
ডাকনাম: হাওরাঞ্চল | |
বাংলাদেশে নেত্রকোণা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫২′৪৮″ উত্তর ৯০°৪৩′৪৮″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | বনানী বিশ্বাস |
আয়তন | |
• মোট | ২,৮১০.২৮ বর্গকিমি (১,০৮৫.০৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২১)[১] | |
• মোট | ২৩,২৪,৮৫৬ |
• জনঘনত্ব | ৮৩০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৬.১৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৭২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে এ অঞ্চল গুপ্ত সম্রাটগণের অধীন ছিল। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গুপ্তযুগে সমুদ্রগুপ্তের অধীনস্থ এই অঞ্চলসহ উত্তর-পশ্চিম ময়মনসিংহ অঞ্চল কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দুরাজ শশাংকের আমন্ত্রণে চৈনিক পরিব্রাজক হিউ এন সাঙ যখন কামরূপ অঞ্চলে আসেন, তখন পর্যন্ত নারায়ণ বংশীয় ব্রাহ্মণ কুমার ভাস্কর বর্মণ কর্তৃক কামরূপ রাজ্য পরিচালিত ছিল। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগে পূর্ব ময়মনসিংহের উত্তরাংশে পাহার মুল্লুকে বৈশ্য গারো ও দুর্গা গারো তাদের মনগড়া রাজত্ব পরিচালনা করতো। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ দিকে জনৈক মুসলিম শাসক পূর্ব ময়মনসিংহ অঞ্চল আক্রমণ করে অল্প কিছুদিনের জন্য মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। চতুর্দশ শতাব্দীতে জিতারা নামক একজন সন্ন্যাসী কামরূপের তৎকালীন রাজধানী ভাটী অঞ্চল আক্রমণ ও দখল করেন। সে সময় পর্যন্তও মুসলিম শাসক ও অধিবাসী স্থায়ীভাবে অত্রাঞ্চলে অবস্থান ও শাসন করতে পারেনি। খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের শাসনামলে (১৪৯৩-১৫১৯) সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চল মুসলিম রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ’র পুত্র নসরৎ শাহ’র শাসনামলে (১৫১৯-১৫৩২) দু'একবার বিদ্রোহ সংঘটিত হলেও বিদ্রোহীরা সফল হয়নি। সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চলেই নসরৎ শাহ’র শাসন বলবৎ ছিল। নসরৎ শাহ-র উত্তরাধিকারীরা (১৫৩৩-১৮৩৮) কিংবা তার পরবর্তী লক্ষ্মণাবতীর অন্য শাসকেরা ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপর আধিপত্য বজায় রাখতে পারেনি। ময়মনসিংহের উত্তরাংশ কোচদের পুনরাধীন হয়ে পড়ে। বাকী অংশ দিল্লীর পাঠান সুলতান শেরশাহ-র (১৫৩৯-১৫৪৫) শাসনভুক্ত হয়েছিল। তৎপুত্র সেলিম শাহ’র শাসনের সময়টি (১৫৪৫-১৫৫৩) ছিল বিদ্রোহ ও অস্থিরতায় পূর্ণ। রাজধানী দিল্লী থেকে অনেক দূরে ও কেন্দ্রীয় রাজশক্তির দূর্বলতার সুযোগে প্রধান রাজস্ব সচিব দেওয়ান সুলায়মান খাঁ (যিনি পূর্বে কালিদাস গজদানী নামে পরিচিত ছিলেন) সম্রাটের বিরুদ্ধাচরণ করেন। এতে করে দেশী ও বিদেশী রাজ্যলিপ্সুরা এতদঞ্চল দখলের প্রয়াস পায়। এর মধ্যে ভাটী অঞ্চল (পূর্ব-উত্তরাংশ) সোলায়মান খাঁ-র দখলভুক্ত ছিল। কেন্দ্রীয় শাসকের প্রেরিত সৈন্যদের হাতে সোলায়মান খাঁ নিহত হলেও তার দু’পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র ঈশা খাঁ খিজিরপুর থেকে ভাটী অঞ্চলে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ঈশা খাঁ’র মৃত্যুর পর তৎপুত্র মুসা খাঁ ও আফগান সেনা খাজা উসমান খাঁ কর্তৃক অত্রাঞ্চল শাসিত ছিল। সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে (১৬০৫-১৬২৭) সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চল মোঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।[৩][৪]
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮০ খিস্টাব্দে হওয়া নেত্রকোণা মহকুমাকে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলা করা হয়।
এই জেলার উত্তরে উত্তরে ভারতের মেঘালয়, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা।
নেত্রকোণা জেলা ১০টি উপজেলা, ১০ টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৮৬টি ইউনিয়ন, ১৯৬৭টি মৌজা, ২২৯৯টি গ্রাম ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
নেত্রকোণা জেলায় মোট ১০টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৬] | সংসদ সদস্য[৭][৮][৯][১০][১১] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
১৫৭ নেত্রকোণা-১ | দুর্গাপুর উপজেলা এবং কলমাকান্দা উপজেলা | শূণ্য | |
১৫৮ নেত্রকোণা-২ | নেত্রকোণা সদর উপজেলা এবং বারহাট্টা উপজেলা | শূণ্য | |
১৫৯ নেত্রকোণা-৩ | আটপাড়া উপজেলা এবং কেন্দুয়া উপজেলা | শূণ্য | |
১৬০ নেত্রকোণা-৪ | মদন উপজেলা, খালিয়াজুড়ি উপজেলা এবং মোহনগঞ্জ উপজেলা | শূণ্য | |
১৬১ নেত্রকোণা-৫ | পূর্বধলা উপজেলা | শূণ্য |
অতীতে শিক্ষার হার কম থাকলেও দিনেদিনে এই হার ক্রমশ বাড়তেছে ।শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৬.১৩%। নেত্রকোণা জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ১ টি, মেডিকেল কলেজ ১ টি, কলেজ ২৯ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৩৬ টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৮৩ টি, মাদ্রাসা ১৬০টি রয়েছে।
নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়(শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়)
শুটকি, চ্যাপা, কবাক, গরুর মাংসের শুটকি, বালিশ মিষ্টি, দামড়া পিঠা ইত্যাদি।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.