তামিল ঈলাম (তামিল: தமிழீழம், প্রতিবর্ণী. তমিল্ড়ীল্ড়ম্) একটি প্রস্তাবিত স্বাধীনসার্বভৌম রাষ্ট্র যা শ্রীলঙ্কার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের তামিল জাতি অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত৷ তামিল ঈলাম মুলত শ্রীলঙ্কার তামিল জাতির লোকের আদিনিবাস৷ এই অঞ্চলের বৈশ্বিক রাষ্ট্রসমূহে কোনো কূটনৈতিক মান্যতা নেই৷ বস্তুত শ্রীলঙ্কার ঈলাম গোষ্ঠী ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম-এর আয়ত্তাধীন৷[5][6][7] তামিল ঈলাম নামটি শ্রীলঙ্কার তামিল ভাষাতে পুরানো নাম ঈলম থেকে গৃহীত৷[8]

দ্রুত তথ্য তামিল ঈলাম தமிழீழம், রাজধানী ...
তামিল ঈলাম
தமிழீழம்
আকাঙ্খিত রাজ্য
সঙ্গীত: ஏறுது பார் கொடி (এড়ুদু পার্ কোডি)
দেখো উদীয়মান পতাকা
Thumb
গাঢ় সবুজ রঙে দাবীকৃৃত তামিল ঈলামের মানচিত্র
স্থানাঙ্ক: ০৮°৪৫′ উত্তর ৮০°৩০′ পূর্ব
রাজধানীত্রিঙ্কোমালাই
বৃৃহত্তম নগরত্রিঙ্কোমালাই
জেলা
তালিকা
  • আম্পারা
  • বাট্টিকালোয়া
  • জাফনা
  • কিলিনোচ্চি
  • মান্নার
  • মুল্লাইতিভু
  • পুট্টালাম
  • ত্রিঙ্কোমালাই
  • ভাভুনিয়া
আয়তন[1]
  মোট২১,৯৫২ বর্গকিমি (৮,৪৭৬ বর্গমাইল)
  স্থলভাগ২০,৫৩৩ বর্গকিমি (৭,৯২৮ বর্গমাইল)
  জলভাগ১,৪১৯ বর্গকিমি (৫৪৮ বর্গমাইল)  ৬.৪৬%
জনসংখ্যা (২০১০)[2]
  মোট৩৩,৬৯,৯১৯
  জনঘনত্ব১৫০/বর্গকিমি (৪০০/বর্গমাইল)
জাতি(১৯৮১)[3]
  শ্রীলঙ্কীয় তামিল১১,৮৯,০০০
  সিংহলি৪৫,০০০
  মুর৪,১৫,২৬৭
  ভারতীয় তামিল৭৬,৯০৫
  অন্যান্য১০২৯২
Religion(২০১০)[4]
  হিন্দু১৩,৫৭,৭৪৪ (৪০.২৯%)
  মুসলিম৭,৬২,২৫৬ (২২.৬২%)
  বৌদ্ধ৭,১৩,৬০৯ (২১.১৮%)
  খ্রিস্টান৫,১৩,৭২০ (১৫.২৪%)
  অন্যান্য২২,৫৯০ (০.৬৭%)
দাপ্তরিক ভাষাতামিল
বন্ধ

ইতিহাস

প্রাচীনযুগ

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মতো মৃৃতদেহ সমাধিস্থ করার রীতির প্রমাণ পাওয়া যায় শ্রীলঙ্কার এই অঞ্চলগুলিতেও৷ পশ্চিম উপকূলের পোম্পারিপ্পু এবং পূর্ব উপকূলের কাটিরাভেলিতে খননকার্যের মাধ্যমে মেগালিথ থেকে এই সকল প্রমাণ পাওয়া যায়৷ এগুলি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালীন বলে অনুমান করা হয়৷[9] যদিও শ্রীলঙ্কায় তামিল জাতির বসতি ঠিক কোন সময় থেকে রয়েছে তার সঠিক প্রামাণ্য কিছু এখনো অবধি পাওয়া যায়নি৷ তামিল মণিমেকলাই কাব্য অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার উত্তরপ্রান্তের জাফনা উপদ্বীপ ছিলো নাগ জনগোষ্ঠীদের আদিবাসস্থান এবং সেখানে স্থানটিকে নাগনাড়ু বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷[10] এরাই পরবর্তীকালে তামিল জাতি হিসাবে অভিযোজিত হয়েছিলো, তাদেরকেই শ্রীলঙ্কার তামিলদের আদিপুরুষ এবং তামিল সংস্কৃতির বাহক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে৷[11] দক্ষিণ ভারতের বিক্রমশীল পল্লব সাম্রাজ্য ছিলো তামিল নাড়ুর চোল সাম্রাজ্য এবং নাগনাড়ুর নাগ জনগোষ্ঠীর শাসকদের বৈবাহিক সম্পর্কের ফলে সৃষ্ট৷ ইতিহাস মতে চোলরাজ কিলিবলবন এবং নাগরাজকুমারী পিল্লিবলাইয়ের বিবাহের ফলে পল্লববংশের সৃৃষ্টি৷[12]

এইসময়ে এখানকার মিল রাজপরিবারগুলি তামিল শৈব ধর্মের পৃষ্টপোষক ছিলো বলে প্রমাণ পাওয়া যায়৷ উপকূল বরাবর পূর্বদিকে এর বিস্তৃতি ঘটে এবং খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর দিকে ত্রিঙ্কোমালাইয়ের কোনেশ্বরম মন্দির থেকে বাট্টিকালোয়ার তিরুকোভিল মন্দির অবধি নৌপরিহনের ব্যবস্থা থাকার কাব্যিক ও বাস্তবিক বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে৷[13]

মধ্যযুগ

খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে জাফনা উপদ্বীপের জাফনা সাম্রাজ্যের সাথে তামিল হিন্দুদের সার্বিক উন্নয়ন ও সামাজিক সংঘবদ্ধকরণ ব্যপকহারে শুরু হয়৷[14] শ্রীলঙ্কার উত্তর উত্তরপূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চলে সাম্রাজ্য বিস্তার করে শক্তিশালী রাজবংশ গঠনের পর এটি ১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ বর্তমান দক্ষিণ ভারতের পান্ড্য সাম্রাজ্যের একটি জায়গীরে পরিণত হয়৷ আবার ১৩২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে পান্ড্য সাম্রাজ্যের বিভাগীকরণের মাধ্যমে এটি স্বাধীনতা পায়৷[15][16]

খ্রিস্টীয় একাদশ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের উত্তরাংশে তামিল জাতিরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, যা ছিলো মূলত তাদের দ্বারাই প্রতিষ্ঠাপ্রাপ্ত৷[17] পূর্বাঞ্চলীয় তামিলদের মধ্যে "উর পোডিয়ার"কে কেন্দ্র করে গ্রামাঞ্চলগুলিতে সামন্তপ্রথা প্রবর্তিত হয়৷[18] এবং "কুড়ি ব্যবস্থা" এই সংক্রান্ত সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ স্থাপন করতো৷ তারা বন্নিমৈ প্রধানদের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ হয়, যা ছিলো ক্যান্ডি সাম্রাজ্যের অংশ৷[19] তৎকালীন সিংহলী কাব্যসাহিত্য "মুক্কর হতন" এবং "কোকিলসন্দেশ" থেকে জানা যায় দক্ষিণ ভারত থেকে একাধিকবার ব্যপক হারে তামিলরা শ্রীলঙ্কাতে অনুপ্রবেশ করে৷ এই অনুপ্রবেশকারীরা তখন শ্রীলঙ্কার তামিল সমাজে নিজেদের বেশ ভালো পদে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়, তাদের "মুক্কুবার" বলে অভিহিত করা হতো৷ পূর্ব শ্রীলঙ্কাতে স্থানীয় পদ্ধতিতে ভূসম্পত্তি পরিমাপ ও পুণর্বাসন বিষয়ক প্রচুর তথ্য মাট্ডকলপ্পু মানমিয়ম (তামিল: மட்டக்களப்பு மான்மியம்) গ্রন্থে পাওয়া যায় যা মূলত বাট্টিকালোয়ার ইতিহাস নিয়ে রচিত৷[20]

মধ্যযুগে বন্নি সর্দারদের তৎপরতায় জাফনার উত্তরাংশের পাননকলম,মালপাত্তু, মুল্লিয়াবলৈ, করুণাবলপাত্তু, কারিকট্টুমুলৈ এবং তেন্নামারবাড়ী প্রভৃৃতি দ্বীপাঞ্চলও জাফনা সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়৷ শুধু তাই নয় সময়ের সাথে সাথে ত্রিঙ্কোমালাইয়ের গোষ্ঠীপতিও উত্তরা জাফনা সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলো৷ এভাবে জাফনা উপদ্বীপের দক্ষিণাংশ এবং পূর্বে ত্রিঙ্কোমালাই জেলা তাদের করদ রাজ্যে পরিণত হয় ও বার্ষিক রাজস্ব দেয়৷ রাজস্ব মূলত দেওয়া হতো নগদ, ফসল, মধু, হাতি এবং অলংকারের মাধ্যমে৷ মূল জাফনার সাথে অধিক দূরত্ব থাকার জন্য বার্ষিক করসংগ্রহর ওপর অধিক জোর দেওয়া হতো৷[21]

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.