Loading AI tools
চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী পেশাদার ব্যক্তি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চিকিৎসক বা ডাক্তার হলেন একধরনের স্বাস্থ্য সেবা প্রদায়ক, যাঁদের পেশা (অর্থাৎ চিকিৎসাবিদ্যা বা ডাক্তারী) হল শারীরিক বা মানসিক রোগ, আঘাত বা বিকারের নিরীক্ষণ, নির্ণয় ও নিরাময়ের দ্বারা মানুষের স্বাস্থ্য বজায় রাখা বা পুনর্বহাল করা। এঁদের মধ্যে কেউ যদি কোন বিশেষ প্রকারের রোগ (যেমন স্নায়ুরোগাদি, মধুমেহ, হৃদরোগ ইত্যাদি) বা রোগী (যেমন শিশু, পোয়াতি, বৃদ্ধ ইত্যাদি) বা চিকিৎসাপদ্ধতির (যেমন স্নায়ুশল্যচিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি ইত্যাদি) চর্চার প্রতি নিবিষ্ট হন তাদের সেই রোগ বা রোগীপ্রকার বা পদ্ধতির বিশেষজ্ঞ বা স্পেশালিস্ট বলা হয়। অন্যরা যাঁরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক, পরিবারকেন্দ্রিক, জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক ইত্যাদি বিভিন্ন ভিত্তিতে, বয়স রোগ নির্বিশেষে, ক্রমান্বয়ে বা সর্বতোভাবে সাধারণ মানুষের নানারকম রোগবিকারাদির সাধারণ চিকিৎসা করে থাকেন তাদের জেনারাল প্র্যাক্টিশনার বলা হয়। চিকিৎসার সঠিক ব্যবহার শুধু চিকিৎসাবিজ্ঞানের বুনিয়াদী পঠনভিত্তিক জ্ঞানের উপরেই নির্ভর করে না, বরং এর কার্যকারিতা ও প্রচলন প্রায় সম্পূর্ণরূপেই নির্ভর করে এই বিজ্ঞানকে পরিশীলিতভাবে প্রয়োগ করবার তথা ফলিত কলাবিদ্যায় পারদর্শীতার উপর। । চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য সেবার অন্যান্য পেশাদারী ব্যক্তিদের (যথাঃ নার্স,পরীক্ষাগারের কর্মী, ঔষধশিল্পের সাথে জড়িত ফার্মাসিস্ট ও কেমিস্ট, মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ ইত্যাদি) সাথেও অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িত।
পেশা | |
---|---|
নাম | চিকিৎসক, পেশাদারী ডাক্তার, ডক্টর অব মেডিসিন, মেডিক্যাল ডাক্তার অথবা শুধুমাত্র ডাক্তার |
পেশার ধরন | চিকিৎসাবিদ্যা বা ডাক্তারি |
প্রায়োগিক ক্ষেত্র | ঔষধ, স্বাস্থ্য সেবা |
বিবরণ | |
যোগ্যতা | ঔষধবিদ্যার নীতি, শিল্প এবং বিজ্ঞান; বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা, জটিল চিন্তা-ভাবনা |
শিক্ষাগত যোগ্যতা | চিকিৎসা শিক্ষা পদ্ধতি |
কর্মক্ষেত্র | ক্লিনিক, হাসপাতাল |
সম্পর্কিত পেশা | সাধারণ সেবা প্রদানকারী অথবা পারিবারিক চিকিৎসক, শল্যচিকিৎসক, অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক |
ইবনে সিনা ছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যতম একজন ব্যাক্তি। তার লেখা বইগুলো আজ আধুনিক যুগের চিকিৎসকগন অনুসরণ করছেন। তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
চিকিৎসকদের প্রধানত দুইটি দলে ভাগ করা যায়: প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
একজন প্রাথমিক সেবাপ্রদানকারী চিকিৎসক গুরুতর নয় এমন স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগের চিকিৎসা করেন, স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত প্রশ্নাদির উত্তর প্রদান করেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা (চেক-আপ) করেন, নিয়মমাফিক ডাক্তারি পরীক্ষা (যেমন রক্তে গ্লুকোজ বা কোলেস্টেরলের মাত্রা) সম্পাদন করেন, প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রতি রোগীকে নির্দেশনা দান করেন এবং কোনও ব্যক্তির চিকিৎসা-সংক্রান্ত নথি-বিবরণী গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করেন। ইংরেজিতে এদেরকে "প্রাইমারি কেয়ার ফিজিশিয়ান" (Primary care physician, সংক্ষেপে PCP) বলা হয়।
প্রাথমিক সেবাপ্রদানকারী চিকিৎসকদেরকে আবার কয়েকটি উপদলে ভাগ করা যায়, যথা - সাধারণ চিকিৎসক, পারিবারিক চিকিৎসক, অন্তররোগ বিশেষজ্ঞ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং জরারোগ বিশেষজ্ঞ।
একজন চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার্থী চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে সাধারণত চার কিংবা পাঁচ বছর মেয়াদী উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম শেষ করে সাধারণত এক বছর হাসপাতাল বা চিকিৎসালয়ে শিক্ষানবিশী (ইন্টার্ন) চিকিৎসক হিসেবে হাতে-কলমে চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করার পরে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধিত সাধারণ চিকিৎসকের সনদ লাভ করে। একজন সাধারণ চিকিৎসক কোনও তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুক্তভোগী রোগীর প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা বা জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রদান করেন, এবং ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ও সুস্বাস্থ্য রক্ষা বিষয়ক পরামর্শ দেন। তারা যেকোনও বয়সের ও যেকোনও লিঙ্গের ব্যক্তির বিভিন্ন রোগ ও অসুস্থতার ব্যাপারে জ্ঞান রাখেন। তারা চিকিৎসার সময় নির্দিষ্ট অঙ্গ বা তন্ত্রের উপর জোর দেন না, বরং প্রতিটি রোগীর স্বাস্থ্যরক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সামগ্রিকভাবে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিয়ামকগুলির উপরে বেশি জোর দেন। দেশভেদে এবং একই দেশে গ্রাম ও নগরাঞ্চলভেদে সাধারণ চিকিৎসকের দায়িত্বের পরিধি কমবেশী হতে পারে। ইংরেজিতে এদেরকে "জেনারেল প্র্যাকটিশনার" (General practitioner) বলা হয়।
একজন পারিবারিক চিকিৎসক সাধারণত শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক, বৃদ্ধ, সব বয়সের ও লিঙ্গের ব্যক্তিদের চিকিৎসা করেন। এদেরকে ইংরেজিতে "ফ্যামিলি প্র্যাকটিস ফিজিশিয়ান" (Family practice physician) বা "ফ্যামিলি মেডিসিন ডক্টর" (Family medicine doctor) বলা হয়। সাধারণত একজন সাধারণ চিকিৎসক পারিবারিক চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে দেশভেদে তিন বছর বা তারও বেশি সময়কাল ধরে বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ করে পারিবারিক চিকিৎসকের সনদ বা উপাধি লাভ করেন। সাধারণত পারিবারিক চিকিৎসকেরা একই পরিবারের বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গের সদস্যদের নিয়মিত প্রাথমিক সেবা প্রদান করেন, ফলে পরিবারের সদস্যদের সাথে তার এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারিবারিক চিকিৎসক একক ব্যক্তির রোগের ইতিহাসের পাশাপাশি সমগ্র পরিবারের রোগের ইতিহাসের, বিশেষ করে পুনরাবৃত্ত রোগের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেন। ফলে পরিবারের সবার অধিকতর সর্বাত্মক সেবাগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
একজন অন্তররোগ বিশেষজ্ঞ একজন পারিবারিক চিকিৎসকের মতো প্রায় একই দায়িত্ব পালন করেন, তবে অন্তররোগ বিশেষজ্ঞরা কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। এদেরকে ইংরেজিতে "ইন্টার্নাল মেডিসিন ফিজিশিয়ান" (Internal medicine physician) বা "ইন্টার্নিস্ট" (Internist) বলে ডাকা হয়। যদিও পারিবারিক চিকিৎসকেরাও প্রাপ্তবয়স্কদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে পারেন, তাদের সাথে অন্তররোগ বিশেষজ্ঞের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য আছে। অন্তররোগ বিশেষজ্ঞরা সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশেষায়িত উপক্ষেত্রগুলি সম্পর্কেও প্রাথমিক প্রশিক্ষণ লাভ করতে পারেন। অন্যদিকে পারিবারিক চিকিৎসকেরা অপেক্ষাকৃত ব্যাপকতর ও অগভীর প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং তারা রোগ প্রতিরোধ ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার উপর বেশি জোর দেন।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জন্ম থেকে কিশোর বয়স পর্যন্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এদেরকে ইংরেজিতে "পিডিয়াট্রিশিয়ান" (Pediatrician) বলে। তারা বাচ্চা ও শিশুদের সুস্থতা পরীক্ষার জন্য সাক্ষাৎ দিয়ে থাকেন, বিদ্যালয় ও শিশু-কিশোর ক্রীড়াক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, শৈশবকালীন টিকাপ্রদান সেবা প্রদান করেন, বাচ্চা ও শিশুদের রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ প্রদান করেন এবং তাদের বিভিন্ন রোগ ও জখমের চিকিৎসা করেন।
জরারোগ বিশেষজ্ঞরা বৃদ্ধ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে নিয়োজিত। তাদেরকে ইংরেজিতে "জেরিয়াট্রিক মেডিসিন ডক্টর" (Geriatric medicine doctor) বা "জেরিয়াট্রিশিয়ান" (Geriatrician) বলা হয়। জরারোগ বিশেষজ্ঞরা সাধারণত পারিবারিক চিকিৎসক বা অন্তররোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে মানুষের বৃদ্ধ হবার প্রক্রিয়া, বৃদ্ধ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রোগপ্রতিরোধমূলক সেবা, ঐসব ব্যক্তিদের বিভিন্ন রোগ ও অসুস্থতা নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান, ইত্যাদি বিষয়ে অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
লাতিন ভাষায় মেডিকাস শব্দ থেকে ("আরোগ্য লাভে সক্ষম," "যিনি যত্ন নেন, আরোগ্য") চিকিৎসক শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। পারিভাষিক শব্দ হিসেবে এটি ফরাসী ভাষায় আরবি طبيب (তাবিব) শব্দের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
স্বাস্থ্যের উত্তরণ ও সুরক্ষা ঘটানো সম্ভবপর। কিন্তু স্বাস্থ্য যে চীরকাল একই থাকবে তা কিন্তু কেউই বলতে পারেন না। কিন্তু স্রষ্টার অমোঘ নিয়ম ও ধ্রুব সত্য যে জন্মিলেই মরিতে হইবে। আপনি কিছু রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারেন ও মৃত্যুকে বিলম্বিত করতে পারেন। প্রত্যেকটি রোগ এবং প্রতিটি মৃত্যুর ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। তা নির্ভর করে - ব্যক্তিকে কীভাবে রোগে আক্রান্ত করে থাকে তার উপর। ভাববাদীত্বের তুলনায় অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞানের সাহায্যে ও যথার্থ ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তিকে সুস্থ করা সম্ভব। রোগের ফলে প্রত্যেক রোগীর ব্যক্তিগত জীবনধারায় যথেষ্ট পরিবর্তন সূচীত হয়। একজন চিকিৎসকের চিকিৎসাসেবায় ব্রত থাকা উচিত যে, "কোন রোগ নেই, কিন্তু আপনি অসুস্থ আছেন"। এর মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে যে, অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞানের পরিবর্তে ভাববাদীত্বের কোন মূল্য নেই। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে একজন চিকিৎসক রোগীকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, কিন্তু রোগকে নয়। অসুস্থ ব্যক্তি রোগের চেয়েও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অবশ্যই অনাকাঙ্খিত মৃত্যুরোধ করব।[1]
বর্তমানকালে একজন চিকিৎসক মূলতঃ চারটি প্রধান কারণে এ পেশায় অংশগ্রহণ করে থাকেন।[2]
সাধারণতঃ চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষাগ্রহণ এবং জীবিকানির্বাহে চিকিৎসকদের কর্মপন্থা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রূপ হয়ে থাকে।
প্রধানত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই চিকিৎসা শাস্ত্র বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সকল উন্নত দেশসমূহে চিকিৎসা বিদ্যাগ্রহণের পর্যায় মূলতঃ তৃতীয়-ধাঁপে হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিকিৎসা বিদ্যালয় কিংবা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়গুলো কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ শেষে ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণসাপেক্ষে তীক্ষ্ণ ধী-শক্তির অধিকারী শিক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। উত্তীর্ণরাই পরবর্তীকালে স্নাতক-পূর্ব পড়াশোনা হিসেবে চিকিৎসা বিদ্যায় অংশগ্রহণ করতে হয়। এ প্রশিক্ষণ বছরের শুরুতেই অথবা কয়েক বছর পর হতে পারে।
সাধারণতঃ শিক্ষা পাঠ্যক্রম সম্পাদনের জন্য পাঁচ থেকে ছয় বছরের প্রয়োজন পড়ে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই চিকিৎসা বিদ্যা অধ্যয়ন করে থাকেন। তারপরও মৌলিকভাবে চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জনের জন্য আইন-কানুন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর নির্ভর করে পাঁচ থেকে আট বৎসর সময় ব্যয়িত হয়।
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাগ্রহণ অর্থাৎ চিকিৎসা শাস্ত্র স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে পূর্ণাঙ্গভাবে নিবন্ধনকার্য সম্পাদনের জন্য সাধারণতঃ এক থেকে দুই বছর অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ডাক্তারী বিদ্যা চর্চার প্রয়োজন পড়ে। এ সময়কালকে ইন্টার্নশীপ কিংবা ফাউন্ডেশন বছর নামে যুক্তরাজ্যে উল্লেখ করা হয়। বিশ্বের অন্যত্র এটি শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন নামে অভিহিত হয়ে থাকে। কিছু নিয়ম-কানুন সংযুক্ত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর সাথে আবাসিক চর্চার বিষয়টিও যুক্ত করে থাকে।
চিকিৎসা কার্যপরিচালনার অধিকার অর্জনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকারীকে চিকিৎসা সনদ প্রদান করে। এরফলেই তিনি দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক বৈধ কিংবা নিবন্ধিত চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত হন। কিছু কিছু দেশে বৈধ কিংবা নিবন্ধিত চিকিৎসক হিসেবে পরিচিতির জন্য ইন্টার্নশীপ অথবা শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে।
পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই চিকিৎসককে তার চিকিৎসা কার্য পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। জনগণ তথা রোগীর নিরাপত্তা ও রক্ষা করার লক্ষ্যেই স্বাস্থ্য সেবায় সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ।
কিছু আইনে (যেমনঃ সিঙ্গাপুর) চিকিৎসক তার শিক্ষাগতযোগ্যতা প্রদর্শনের লক্ষ্যে ডক্টর পদবী পত্র যোগাযোগ কিংবা নেমকার্ডে তুলে ধরতে পারেন। এমনকি তিনি যদি স্নাতক পর্যায়েও ডাক্তারী বিদ্যায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলেও তিনি এ যোগ্যতার অধিকারী হবেন। কিন্তু অন্যান্য দেশে (যেমনঃ জার্মানি) ডক্টরেট পদবীধারীরাই কেবলমাত্র নিজেদেরকে ডাক্তার বা চিকিৎসক হিসেবে নিজের পরিচয় দেন।
যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে নেয়ার জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র গ্রহণ করতে হয়। এছাড়া ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য দেশ বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ডসহ কমনওয়েলথভূক্ত দেশে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করা আবশ্যক। লাইসেন্স কিংবা রেজিস্ট্রেশনের সমার্থক শব্দ হিসেবে স্পেনে colegiación, জাপানে ishi menkyo, নরওয়েতে autorisasjon, জার্মানিতে Approbation এবং গ্রীসে "άδεια εργασίας" শব্দ ব্যবহার করা হয়। ফ্রান্স, ইতালি এবং পর্তুগালে একজন সাধারণ চিকিৎসককে অবশ্যই ঔষধ প্রয়োগের লক্ষ্যে চিকিৎসার জন্য অর্ডার অব ফিজিশিয়ানের সদস্য হতে হয়।
চিকিৎসকগণ তাদের পেশার প্রতি যথেষ্ট দায়িত্বশীল ও সময় সচেতন হয়ে থাকেন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় তার সহজাত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় রোগীর কাছে দিয়ে থাকেন। তারপরও ছোটোখাটো চিকিৎসাজনিত ভুল-ভ্রান্তি, মদপান করাসহ অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা, ব্যক্তিগত সমস্যা ও সমালোচনায় তাদের পেশাদারী আচরণকে বিশ্বব্যাপী প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।[3] ২০০০ সালে রোগী-নিরাপদ আন্দোলন নামে সমালোচনাধর্মী একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।[4][5] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান চিকিৎসকদের কার্যকলাপ ও দক্ষতার বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে নজরদারী করছে।
প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি আয়ুর্বেদ, ইউনানী চিকিৎসা এবং হোমিওপ্যাথির জনপ্রিয়তা বাংলাদেশ, ভারতে রয়েছে ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা জাতীয় চিকিৎসা নীতির আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় উপমহাদেশেও বিখ্যাত হয়ে আছেন। বৈদ্য,কবিরাজ,হাকীম এবং হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক নামেই স্ব-স্ব চিকিৎসা পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্টরা পরিচিতি পেয়ে থাকেন।
ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারী (বিএইচএমএস) , ব্যাচেলর অব আয়ুর্বেদ মেডিসিন এন্ড সার্জারী (বিএএমএস) ও ব্যাচেলর অব ইউনানী মেডিসিন এন্ড সার্জারী (বিইউএমএস) তিনটি পৃথক ডিগ্রীর প্রচলিত আছে। এছাড়াও চার বছর মেয়াদে ডিপ্লোমা কোর্স করে তারা বৈধভাবে চিকিৎসা শাস্ত্র রোগীর উপর প্রয়োগ করেন ও নিজেদেরকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা বিজ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ শাখা। বিভিন্ন দেশে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার উপর ডিপ্লোমা, গ্রাজুয়েশন ও পোষ্ট গ্রাজুয়েশনসহ ডক্টরেট ডিগ্রী রয়েছে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে শারীরিক অক্ষমতা ও ব্যথা জনিত সমস্যা থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। যারা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা প্রদান করেন তারা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক,ওনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদ থেকে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা বিষয়ে পাঁচ বছর ( তত্ত্বীয় চার বছর ও ইনটা্রন এক বছর) পড়াশোনা করেন। এ ছাড়া ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের সহকারী হিসাবে সহায়তা করার জন্য ৩-৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সহ দক্ষিণ এশিয়ার এর চিকিৎসা চালু রয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.