মধ্যপন্থা
রাজনৈতিক অভিমুখীতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রাজনীতিতে, মধ্যপন্থী বা মধ্যপন্থা হলো একটি দৃষ্টিভঙ্গি বা অবস্থান যেটি সামাজিক সাম্যের ভারসাম্য ও সামাজিক স্তরবিন্যাসের একটি নির্দিষ্ট মাত্রাকে গ্রহণযোগ্যতা বা সমর্থন দেয় এবং এমন রাজনৈতিক পরিবর্তন, যার ফলে সমাজে একটি উল্লেখযোগ্য ডানপন্থী বা বামপন্থী অভিমুখী শক্তিশালী রাজনৈতিক স্থানান্তর হবে, তার বিরোধিতা করে।[১]
মধ্য-বামপন্থা ও মধ্য-ডানপন্থা উভয় রাজনৈতিক মতবাদই কেন্দ্রপন্থার সাথে একটি সাধারণ সম্পর্ক রয়েছে, কেবল এগুলোর ক্ষেত্রে নিজ নিজ দিকে কিছুটা বাম–ডান রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়ে । বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ, যেমন খ্রিস্টান গণতন্ত্র,[২] পঞ্চশীল[৩][৪][৫] এবং সামাজিক উদারনীতির[৬] মতো উদারনীতির কিছু রূপকে মধ্যপন্থী হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে, এছাড়াও তৃতীয় পন্থাকেও[৭] মধ্যপন্থী হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তৃতীয় পন্থা একটি আধুনিক রাজনৈতিক আন্দোলন যেখানে মধ্য-বাম সামাজিক নীতির সাথে মধ্য-ডান অর্থনৈতিক অবস্থানের সংশ্লেষণের পক্ষে সমর্থন করে ডানপন্থী এবং বামপন্থী রাজনীতির মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করা হয়,[৮][৯] যা ছিল ১৯৯০ সালে বিল ক্লিনটন, টনি ব্লেয়ার এবং পল কিটিং কর্তৃক জনপ্রিয় হওয়া ভারসাম্যমুখী কট্টরপন্থাবিরোধী নীতিবিশিষ্ট একটি রাজনৈতিক মতবাদ।
বিভিন্ন দেশে
সারাংশ
প্রসঙ্গ
পাকিস্তান
ইমরান খান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নিজেদের পাকিস্তানের একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল বলে দাবি করে।[১০] ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর, পিটিআই ভোটের সংখ্যায় পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়।[১১] জুলাই ২০১৮ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে দলটি জয়লাভ করে এবং এর চেয়ারম্যান ইমরান খান দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।[১২]
বাংলাদেশ
প্রথাগতভাবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে "মধ্যপন্থী" (সেইসাথে মধ্য-বামপন্থী) শব্দটিকে প্রায়ই বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে সম্পর্কযুক্ত করা হয়, বিপরীতে ডানপন্থীদের বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও রাজনৈতিক ইসলামের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা হয়। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিদ্যমান মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল।[১৩][১৪] এটি মূলত মধ্য-বামপন্থী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, কিন্তু ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে মধ্যপন্থী রাজনীতির দিকে সরে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদ চর্চা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে দলটিকে উগ্রডানপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যান্য মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশ। এছাড়াও বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মাঝেও মধ্যপন্থী প্রবণতা লক্ষ্যণীয়।
২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী ছাত্রদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিও মধ্যপন্থী হওয়ার কথা রয়েছে, যা শীঘ্রই প্রতিষ্ঠিত হবে।
ভারত
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস,[১৫][১৬] আম আদমী পার্টি[১৭] এবং জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি[১৮] হলো ভারতের মধ্যপন্থী জাতীয় দল। দুটি রাজ্য দল – ভারত রাষ্ট্র সমিতি[১৯] ও তেলুগু দেশম পার্টি,[২০] পাশাপাশি অভিনেতা কমল হাসানের মাক্কাল নিধি মায়াম,[২১] অর্থ গণ-ন্যায়বিচার কেন্দ্র – মধ্যপন্থী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.