Loading AI tools
ফরাসি কমিক বই অঙ্কনশিল্পী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আলবেয়ার উদেরজো (জন্ম এপ্রিল ২৫, ১৯২৭) ফরাসি কমিক বই ও লিপিলেখক। তিনি অ্যাসটেরিক্স কমিক্স সিরিজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত, এছাড়াও তিনি রনে গোসিনির সাথে ঔমপাহ-পাহ কমিক্সের ছবি এঁকেছেন। উদেরজো ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চিত্রাঙ্কন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[1]
আলবেয়ার উদেরজো | |
---|---|
জাতীয়তা | ফরাসি |
ক্ষেত্র | লেখক, Artist |
উল্লেখযোগ্য কাজ | অ্যাসটেরিক্স ট্যাঙ্গু লাভাডিওর ঔমপাহ-পাহ |
সহযোগী | রনে গোসিনি |
পুরস্কার | সম্পূর্ণ তালিকা |
স্বাক্ষর | |
ফিশমেস (মার্নে, ফ্রান্স) এ জন্মগ্রহণ করেন উদেরজো। অভিবাসি সিলভিও (ভিনিস্বাসী বংশের) এবং আইরিয়া ক্রেস্তিনি (তুস্কান বংশের) ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতামাতা সম্প্রতি ইতালির লা স্পেজিয়া থেকে অভিবাসিত হয়েছিলেন।[2] তিনি দুই হাতে ছয় আঙ্গুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় আঙ্গুলদ্বয় অপসারিত হয়।[3] তিনি বর্ণান্ধ ছিলেন। শিশুকালে প্রথম চিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে তার এই সমস্যা ধরা পরে, তিনি সবুজ থেকে লাল পার্থক্য করতে পারতেন না।[4] শিশুকাল থেকে চিত্রাঙ্কনে তার প্রতিভার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তার স্বপ্ন ছিল বিমান মেকানিক হওয়ার।
১৯৩৪ সালে ফরাসী নাগরিকত্ব পান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়,তিনি প্যারিস ছেড়ে চলে যান এবং ব্রিটানিতে এক বছর অতিবাহিত করেন, সেখানে তিনি খামারে কাজ করার পাশাপাশি বাবার আসবাবপত্র ব্যবসায়ে সাহায্য করতেন। মানুষ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে ব্রিটানিকে ভালোবেসে ফেলেন। ব্রিটানিকে তিনি এতটাই ভালোবেসে ফেলেন যে গোসিনি যখন তাকে অ্যাস্টিরিক্স কাহিনির জন্য সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম বেছে নেয়ার দায়িত্ব দেন তখন তিনি ব্রিটানিকে নির্বাচন করতে কোন দ্বিধা বোধ করেন নি।
১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্যারিসে শিল্পী হিসেবে পেশা শুরু করেন এবং ফ্ল্যামবার্গ এবং ক্লোপিনার্ডের এর মতো চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি বেলয় ও অ্যারিস বাকের মত অন্যান্য কিছু কমিক্স রচনা করেন।
১৯৫১ সালে রেন গোসিনির সাথে পরিচিত হন উদেরজো। দ্রুত বন্ধু হয়ে উঠেন দু'জন এবং ১৯৫২ সালে বেলজিয়াম কোম্পানি ওয়ার্ল্ড প্রেস এর প্যারিস অফিসে একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের প্রথম রচনাগুলি ছিল ঔমপাহ-পাহ, যেহান পিস্তলেট এবং লুক জুনিয়র।[5][6] ১৯৫৮ সালে ফ্র্যাঙ্কো-বেলজিয়াম কমিক্স ম্যাগাজিন টিনটিন এ ঔমপাহ-পাহ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে এবং ১৯৬২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।[7] ১৯৫৯ সালে গোসিনি এবং উদেরজো কিশোর বয়সীদের লক্ষ্য করে প্রকাশিত পিলট পত্রিকার সম্পাদক এবং শিল্পী পরিচালক (যথাক্রমে) হিসেবে যোগ দেন। এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় প্রকাশ পায় অ্যাস্টেরিক্স এবং শুরুতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে কমিকটি।[5][8] এই সময় জিন-মাইকেল চার্লির সাথে উদেরজো মাইকেল টাঙ্গু যা পরবর্তীতে লে অ্যাডভেঞ্চার ডি ট্যাঙ্গু এট লাভাডিওর (ট্যাঙ্গু এবং লাভাডিওর অ্যাডভেঞ্চার) নামে পরিচিত একটি বাস্তববাদী ধারাবাহিক নিয়ে কাজ করছিলেন।[5]
'পিলট' এ অ্যাস্টেটিক্স ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হলেও, ১৯৬১ সালে অ্যাস্টেরিক্স লে গলৈস (অ্যাস্টেরিক্স দি গল) বই হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৬৭ সাল নাগাদ কমিকটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে উভয়ই তাদের পুরো সময় এই ধারাবাহিকের পেছনে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭৭ সালে গোসিনির মৃত্যুর পর, উদেরজো একাই নতুন বই এর কাহিনি এবং অঙ্কন চালিয়ে যান। এতে প্রতিবছর দুটি বইয়ের যায়গায় প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছরের একটি কাহিনী প্রকাশ হতে থাকে। যদিও বইগুলো প্রচ্ছদে তখনও "গোসিনি এবং উদেরজো" লেখা থাকতো।
উদেরজো ১৯৫৩ সালে আদা মিলানীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান সিলভি উডেরো ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করে। অ্যাস্টেরিক্স দা গল বই অনুসারে ধারণা করা হয় যে উদেরজো প্যানেসিয়া এবং জাজার চরিত্র যথাক্রমে আদা এবং সিলভির উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন। যদিও উদেরজো এটি অস্বীকার করেছেন।
২০০৭ সালে উদেরজো, সিলভি এবং তার স্বামীকে তার সম্পত্তির ব্যবস্থাপক থেকে বহিষ্কার করেন এবং তার অ্যালবার্ট রেনে সংস্করণের শেয়ার হাচে লাইভারের কাছে বিক্রি করতে রাজি হন। 'ল্য মোঁদ' এর এক কলামে এই বিক্রয়কে সিলভি, "যেন রোমান সাম্রাজ্যের সামনে গলিশ গ্রামের দরজা উন্মুক্ত করা হয়েছে" বলে অভিযোগ করেন। তার মৃত্যুর সাথে সাথে অ্যাস্টেরিক্সের মৃত্যু ঘটবে বলে এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন উদারজো। কিন্তু, হাচেটের কাছে বিক্রয়ের শর্তাবলী অনুযায়ী কোম্পানিটি উদারজোর অংশগ্রহণ ছাড়াই অ্যাস্টেরিক্স প্রকাশ চালিয়ে যেতে পারবে। উদারজো ২০১৩ সালে তার কন্যা এবং জামাতার নামে "মানসিক সহিংসতার" জন্য মামলা করেন। সিলভির তার বিরুদ্ধে করা মামলার জবাবে আরেকটি মামলা করেন এবং বলেন একজন নামহীন ব্যক্তি তার পিতার "দুর্বলতা"র সুযোগ নিচ্ছে। মামলাটি ২০১৪ সালে আদালত বাতিল করে দেয় এবং পরবর্তীতে দুইজন মিটমাট হয়ে যায়।[9]
২০১১ সালে উদারজো অবসর গ্রহণ করলে অ্যাস্টেরিক্স এর দায়িত্ব জের-ইয়েভেস-ফেরি (কাহিনী) এবং ডিডিয়ার কনর্যাড (শিল্প) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
আলবার্ট রেনে সংস্করণের ৪০% মালিকানা সিলভি এবং বাকি ৬০% (উদারজো এবং তার কন্যার অংশ) এর মালিকানা হাচে লাইভার এর।[10]
উদারজোর এক ভাই মার্সেল কার্টুনিস্ট।[11]
অ্যাস্টেরিক্স অ্যান্ড দি ফলিং স্কাই তার মৃত ভাই ব্রুনোর (১৯২০-২২০৪) নামে উৎসর্গ করা হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.