Remove ads

তামাক গাছের আদি নিবাস উত্তরদক্ষিণ আমেরিকায়। তামাক গাছের শুকানো পাতাকে তামাক বলা হয়। তামাক গাছ ১২-১৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। তামাক অত্যন্ত নেশাদায়ক পদার্থ। তামাকে আগুন দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, চুরুট, হুঁকো ও অন্যান্য ধূমপানের মাধ্যম প্রস্তুত করা হয়। ধূমপান ছাড়াও তামাক নানা রকম ভাবে ব্যবহার হয়, যেমন চিবিয়ে (জর্দা, যা পানের সাথে খাওয়া হয়), ঠোঁটের ফাঁকে গুঁজে (যেমন গুল), বা নাকে ঠুসে (নস্যি)।

Thumb
তামাক চাষ

তামাকের মূল নেশাদায়ক উপাদান নিকোটিন এক প্রকারের স্নায়ুবিষ (নিউরোটক্সিন) যা এক ধরনের অ্যাসিটাইলকোলিন রিসেপ্টরের (কোলিনার্গিক অ্যাসিটাইলকোলিন রিসেপ্টর) উপর কাজ করে। কিন্তু তামাকের ধোঁয়াতে নিকোটিন ছাড়াও নানা ক্যান্সারপ্রদায়ী পদার্থ থাকে। যেমন, বেঞ্জোপাইরিন ইত্যাদি বহুচক্রী আরোমাটিক যৌগ। তামাক অত্যন্ত বিশাক্ত পদার্থ। একখানি সিগারেটে যতখানি তামাক আছে তা চিবিয়ে খেলে পুরপুরি শরীরে যদি প্রবেশ করত, তা থেকে দ্রুত মৃত্যু অনিবার্য। তবে ধূমপানের ফলেও ধীরে ধীরে আয়ু কমে আসতে থাকে- শুধু ক্যান্সারের প্রবণতার জন্যেই নয়, হৃদরোগের জন্যেও বটে।

Remove ads

নামকরণ

তামাকের ইংরেজি ‘Tobacco’ এসেছে স্প্যানিশ "tabaco" শব্দ থেকে। ধারণা করা হয় এই শব্দটির উৎপত্তি আরাওয়াকান ভাষা থেকে। ক্যারিবীয় অঞ্চলের তাইনো ভাষাতে এটি তামাক পাতার রোল অথবা ইংরেজি Y বর্ণের আকৃতির ধূমপানের একটি নলকে বোঝায়। [১]. যাহোক, ১৪১০ সাল থেকে একই রকম স্প্যানিশ ও ইতালীয় শব্দ ঔষধী উদ্ভিদ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে। [২]

ইতিহাস

ঐতিহ্যগতভাবে

আমেরিকা মহাদেশের দেশ মেক্সিকোতে ৬০০-৭০০ খ্রিস্টাব্দের দিকেও তামাক চাষের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।[৩] ন্যাটিভ আমেরিকানদের মাঝে তামাক চাষ প্রচলিত ছিল। ধুম্রপান ছাড়াও বিনিময়ে মাধ্যম হিসেবে তারা তামাক পাতা ব্যবহার করতো।[৪] কিছু কিছু সমাজে তামাক পাতাকে স্রষ্টার উপহার বিবেচনা করে তামাক সেবন স্রষ্টার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হতো।[৫]

জনপ্রিয়করণ

আমেরিকা মহাদেশে ইউরোপীয়দের পা ফেলার সাথে সাথে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে তামাক পাতা ব্যবহার শুরু হয়। স্পেনের রাজা ফিলিপ II এর আদেশে ১৫৫৯ সনে তামাকের বীজ ইউরোপে নিয়ে আসা হয়। [৬] কিউবা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপুঞ্জের অন্যান্য জায়গায় ১৮শতকের দিকে তামাক বিক্রয়ের জন্য চাষাবাদ করা হত। [৭]

Remove ads

ভারতে তামাক উৎপাদন

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর শহরে তামাক বোর্ড অবস্থিত।[৮] ভারতে নিবন্ধিত তামাক চাষী সর্বসাকুল্যে ৯৬ হাজার ৮৬৫ জন।[৯] এছাড়াও নিবন্ধনহীন আরো অনেক চাষী তামাক চাষের সাথে জড়িত। ভারতের প্রায় ০.২৫% চাষাবাদযোগ্য জমিতে তামাক পাতার চাষ হয়।[১০] ২০১০ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী দেশিতিতে প্রায় ৩,১২০ ধরনের তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনের কারখানা রয়েছে। [১১]

গবেষণা

গাছের কোষ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে কয়েক প্রজাতির তামাক গাছের ব্যবহার বিজ্ঞানীরা করে থাকেন।[১২] আধুনিক কৃষি জীবপ্রকৌশলীর উন্নতিতে তামাক গাছকে মডেল করে গবেষণা চালানো হয়েছে।[১৩] ১৯৮২ সালে সর্বোপ্রথম জীনপ্রকৌশল ব্যবহার করে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষমতা সম্পন্ন তামাক গাছে নকশা করা হয়।[১৩] জীনগতভাবে পরিবর্তন আনা বা ট্রান্সজেনিক শস্যের মধ্যে তামাক গাছই সর্বোপ্রথম মাঠ পর্যায়ে চাষাবাদ করা হয়। ১৯৩৩ সালে চীন সর্বোপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে ট্রানজেনিক তামাক চাষের বৈধতা দেয়, যা প্রথম কোন ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ হিসেবে চাষাবাদের বৈধতা পায়। [১৪]

Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Remove ads

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.

Remove ads