রোল্ফ ইরাসমাস ফন দার মারউই (আফ্রিকান্স: Roelof van der Merwe; জন্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৪) ট্রান্সভাল প্রদেশের জোহানেসবার্গে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা পেশাদার ওলন্দাজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। দক্ষিণ আফ্রিকানেদারল্যান্ডসের পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলছেন। স্বলসংখ্যক খেলোয়াড়দের একজন যিনি একাধিক আন্তর্জাতিক দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্দার্নস ও টাইটান্স, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরদিল্লি ক্যাপিটালস, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ব্রিসবেন হিট, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে সেন্ট লুসিয়া জোউকস এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলে থাকেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করে থাকেন ‘দ্য বুলডগ’ নামে পরিচিত রোল্ফ ফন দার মারউই

দ্রুত তথ্য ব্যক্তিগত তথ্য, পূর্ণ নাম ...
রোল্ফ ফন দার মারউই
Thumb
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রোল্ফ ইরাসমাস ফন দার মারউই
জন্ম (1984-12-31) ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৪ (বয়স ৩৯)
জোহানেসবার্গ, ট্রান্সভাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ডাকনামদ্য বুলডগ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৯৬)
৫ এপ্রিল ২০০৯ 
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই৩ জুন ২০১০ 
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৪১/৩৫)
২৯ মার্চ ২০০৯ 
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টি২০আই১৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
নেদারল্যান্ডস বনাম হংকং
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৬–২০১৪নর্দার্নস
২০০৭–২০১৫টাইটান্স (জার্সি নং ৫২)
২০০৯–২০১০রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
২০১১–২০১৩দিল্লি ক্যাপিটালস
২০১১সমারসেট
২০১১–২০১২ব্রিসবেন হিট
২০১৪সেন্ট লুসিয়া জোউকস
২০১৬–বর্তমানসমারসেট (জার্সি নং ৫২)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই টি২০আই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৩ ২৪ ৬২ ১৬৫
রানের সংখ্যা ৩৯ ১৭৪ ৩,০৫৩ ২,৪৫৭
ব্যাটিং গড় ৯.৭৫ ১৯.৩৩ ৩৫.০৯ ২৫.৮৬
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ৬/১৮ ১/৮
সর্বোচ্চ রান ১২ ৪৮ ২০৫* ১৬৫*
বল করেছে ৭০৫ ৪৮০ ৮,৪৩২ ৭,৩৭৭
উইকেট ১৭ ২৯ ১১৮ ২৩০
বোলিং গড় ৩৩.০০ ১৮.৮২ ৩৫.৫৮ ২৫.৪৩
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - - -
সেরা বোলিং ৩/২৭ ২/৩ ৪/২২ ৫/২৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/– ১২/– ৪৬/– ৬৩/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৭ মার্চ ২০১৮
বন্ধ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

২০০৬-০৭ মৌসুমে নর্দার্নসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। পরে মৌসুমেই বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল টাইটান্সে স্থানান্তরিত হন।

জোহেন্সবার্গে জন্মগ্রহণকারী ফন দার মারউই’র লিস্ট এ ক্রিকেটে অক্টোবর, ২০০৬ সালে নর্দান্সের সদস্যরূপে নর্থ ওয়েস্ট ক্রিকেট দলের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি শূন্য রানে আউট হন ও নির্ধারিত নয় ওভার বোলিং করে ২৯ রান প্রদান করেন।[1] ডিসেম্বর, ২০০৬ সালে একই দলের সদস্য হিসেবে লিমপোপো দলের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। খেলায় তিনি ১২ ওভার বোলিং করলেও কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি। ৩৬ রান খরচ করেন ও তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন।[2]

২০০৭-০৮ মৌসুমে সফলতম সময় কাটে ফন দার মারউই’র। এ সময় তিনি বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল টাইটান্সে চলে যান।[3] নভেম্বর, ২০০৭ সালে সুপারস্পোর্ট সিরিজে টাইটান্সের সদস্যরূপে ঈগলসের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো একদিনের খেলায় অংশগ্রহণ করেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় তিনি ৪/২৪ লাভ করেন।[4] এমটিএন ডমিস্টিক চ্যাম্পিয়নশীপে ১৪.২৫ গড়ে ২৭ উইকেট নিয় টাইটান্সের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত হন।[5] এছাড়াও, ২৯.৮৮ গড়ে ২৬৯ রান তুলেন তিনি।[6]

এরপর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক প্রো২০ সিরিজে ১৩.৯২ গড়ে ১৩ উইকেট লাভ করে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারী হন।[7] এছাড়াও, ২৭.৪২ গড়ে ১৯২ রান তুলে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখেন।[8] টাইটান্স দল ৫০ ওভার ও ২০ ওভারের প্রতিযোগিতায় শিরোপা জয় করে। অন্যদিকে, ফন দার মারউই বর্ষসেরা খেলোয়াড়, এমটিএন ডমিস্টিক চ্যাম্পিয়নশীপ বর্ষসেরা খেলোয়াড়, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক প্রো২০ সিরিজ বর্ষসেরা খেলোয়াড় ও মৌসুম শেষে দলের সেরা নবাগত খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন।[9] জাতীয় পর্যায়ে সেরা ঘরোয়া নবাগত খেলোয়াড় হিসেবে এসএ ক্রিকেট পুরস্কার পান।[10]

২০০৮-০৯ মৌসুমেও এমটিএন ডমিস্টিক চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে টাইটান্স দল। দলের এ সাফল্যে ফন দার মারউই প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ১৩.৯৬ গড়ে ৩০ উইকেট তুলে নেন যা অন্য যে-কোন বোলারের তুলনায় ১৪ উইকেট বেশি ছিল।[11]

কাউন্টি ক্রিকেট

নেদারল্যান্ডসের পক্ষে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করার পর ২০১৬ সালকে লক্ষ্য রেখে সমারসেটের পক্ষে কাউন্টি ক্রিকেট খেলার জন্য দুই বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।[12] এপ্রিল, ২০১৭ সালে লিস্ট এ ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করেন। র‌য়্যাল লন্ডন ওয়ান-ডে কাপে সারের বিপক্ষে ১৬৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি।[13]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

২০০৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নেন। এরপর জুন, ২০১৫ সালে ওলন্দাজ পাসপোর্ট লাভের অধিকারী হন। ফলে, ২০১৫ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডস দলে খেলার জন্য মনোনীত হন।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে

২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব -১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। পাঁচ খেলায় অংশ নিয়ে ১২৯ রান ও ৩ উইকেট দখল করেন।[14][15] এ প্রতিযোগিতার দুই বছর পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ফন দার মারউই এ প্রসঙ্গে বলেন যে, তিনি বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না ও সর্বদাই মজা উপভোগ করছেন।[16]

আগস্ট, ২০০৮ সালে সফরকারী বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা একাডেমি দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। পাঁচ খেলার ঐ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৭০ বল মোকাবেলা করে ৭৯ রান তুলেন ও ৬/৫২ পান।[17]

ফন দার মারউই ২০০৮ সালের হংকং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিক্সেস প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এখানেও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহক ও উইকেট শিকারী ছিলেন।[18]

মার্চ, ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার টুয়েন্টি২০ দলের সদস্য হন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুইটি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। দ্বিতীয় খেলায় তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৩০ বলে ৪৮ রান করেন। ঐ ইনিংসটিতে চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। এরপর ডেভিড হাসি’র উইকেট লাভের মাধ্যমে প্রথম টি২০আই উইকেট পান। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[19] অনবদ্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ জ্যাক কালিসের শূন্যতা পূরণে একদিনের আন্তর্জাতিক খেলার জন্য অন্তর্ভুক্ত হন।[20] সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় তার ওডিআই অভিষেক হয়। সুপারস্পোর্ট পার্কে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় পাঁচ ওভার বোলিং করলেও কোন উইকেট পাননি। এছাড়াও ব্যাট করার প্রয়োজন পড়েনি তার।[21]

১১ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে নিজস্ব দ্বিতীয় ওডিআইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন ও নির্ধারিত দশ ওভার বোলিং করে ৩/৩৭ লাভ করেন।[22] দুই খেলায় তিনি আরও পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে মোট আট উইকেট পান ১৮.৬২ গড়ে প্রথম ওডিআই সিরিজ শেষ করেন।[23]

নেদারল্যান্ডসের পক্ষে

২০১৫ সালে ফন দার মারউই’র ওলন্দাজ পাসপোর্ট নিশ্চিত হয়। নেপালের বিপক্ষে চার খেলার সিরিজ খেলার জন্য তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়।[24] এছাড়াও, ভিভিয়ান কিংমা’র পরিবর্তে ২০১৫ সালের টি২০ বিশ্বকাপ খেলার জন্য তাকে দলে রাখা হয়।[25]

৩ জুলাই, ২০১৫ তারিখে নেপালের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে নেদারল্যান্ডসের পক্ষে টি২০আই অভিষেক হয় রোল্ফ ফন দার মারউই’র।[26] এছাড়াও, ২০১৬ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ খেলার জন্য তাকে নেদারল্যান্ডস দলে রাখা হয়।

আন্তর্জাতিক পুরস্কার

টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক (দক্ষিণ আফ্রিকা)

ম্যান অব দ্য ম্যাচ

আরও তথ্য #, সিরিজ ...
# সিরিজ তারিখ প্রতিপক্ষ অবদান ফলাফল মন্তব্য
২০০৯ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ ৯ জুন, ২০০৯ নিউজিল্যান্ড ০ (৬ বল); ৪–০–১৪–২  দক্ষিণ আফ্রিকা ১ রানে বিজয়ী [27]
বন্ধ

টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক (নেদারল্যান্ডস)

ম্যান অব দ্য ম্যাচ

আরও তথ্য #, সিরিজ ...
# সিরিজ তারিখ প্রতিপক্ষ অবদান ফলাফল মন্তব্য
২০১৫ বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্ব ১২ জুলাই, ২০১৫ সংযুক্ত আরব আমিরাত ৪–০–১০–২; ৪১* (২৬ বল, ১x৪, ২x৬)  নেদারল্যান্ডস ৭ উইকেটে বিজয়ী [28]
বন্ধ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.