বিষ্ণুর একটি রূপ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নারায়ণ (সংস্কৃত: नारायण, আইএএসটি: Nārāyaṇa) হলেন হিন্দু দেবতা। বৈষ্ণবধর্মে তাকে "পুরুষোত্তম" বা শ্রেষ্ঠ পুরুষ মনে করা হয়। তিনি বিষ্ণু বা হরি নামেও পরিচিত।
"নারায়ণ" শব্দের অর্থ "যিনি জলের উপর শয়ন করেন।" হিন্দুশাস্ত্র মতে, জল প্রথম সৃষ্ট বস্তু, তাই সৃষ্টিকর্তা নারায়ণ জলেই বাস করেন। এই জন্য হিন্দু শিল্পকলায় নারায়ণকে প্রায়শই জলের উপর অবস্থানকারী মূর্তিতে চিত্রিত করা হয়। সংস্কৃত ভাষায় "নর" শব্দের অর্থ মানুষ। তাই "নারায়ণ" শব্দের অন্য অর্থ হল, "মানুষ যেখানে আশ্রয় গ্রহণ করে।"
ভাগবত পুরাণে নারায়ণকে বলা হয়েছে সর্বোচ্চ উপাস্য। এই পুরাণ মতে, তিনি অসংখ্য জগৎ সৃষ্টি করে প্রতিটি জগতে জগদীশ্বর রূপে প্রবেশ করেছেন।[১] ব্রহ্মা রূপে রজঃ গুণ অবলম্বন করে তিনি চোদ্দটি জগৎ সৃষ্টি করেছেন। বিষ্ণু রূপে সত্ত্ব গুণ অবলম্বন করে তিনি সেগুলো রক্ষা করেন এবং রুদ্র রূপে তমঃ গুণ অবলম্বন করে তিনি তা ধ্বংস করেন।[২][৩][৪]
নারায়ণের অপর নাম "মুকুন্দ"। এই শব্দের অর্থ, যিনি জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি অর্থাৎ মোক্ষ প্রদান করেন।[৫]
জাগতিক বিশ্বের বাইরে নারায়ণের সর্বোচ্চ ও চিরন্তন অধিষ্ঠান বৈকুণ্ঠে। বৈকুণ্ঠকে হিন্দুরা আনন্দময় স্থান মনে করেন। বৈকুণ্ঠকে পরমধামও (অর্থাৎ, সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান যেখানে মুক্তাত্মারা পরমেশ্বেরের সান্নিধ্যে চিরকালের জন্য বাস করেন) বলা হয়। হিন্দুরা মনে করেন, বৈকুণ্ঠের ধারণা কোনো জাগতিক বিজ্ঞান বা যুক্তির সাহায্যে করা যায় না।[৬] কোনো কোনো ক্ষেত্রে, ক্ষীরসাগর, যেখানে বিষ্ণু অনন্তনাগের উপর শয়ন করেন, তাকে জাগতিক বিশ্বের "স্থানীয় বৈকুণ্ঠ" বলা হয়।
মহাভারত-এ কৃষ্ণকে একাধিকবার নারায়ণ ও অর্জুনকে নর বলা হয়েছে।[৭] এই মহাকাব্যে তাদের বোঝাতে বহুবচন "কৃষ্ণদ্বয়" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বিষ্ণুর পূর্ববর্তী অবতার নর-নারায়ণের সঙ্গে তাদের একত্ব বোঝাতে।[৮] শক্তিসাধকরা নারায়ণকে আদ্যাশক্তি মহামায়ার পুরুষ আকার রূপে আরাধনা করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.