Loading AI tools
ব্রাজিলীয় ফুটবলার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মার্সেলো ভিয়েইরা দা সিলভা জুনিয়র (পর্তুগিজ: Marcelo; জন্ম: ১২ মে ১৯৮৮; মার্সেলো নামে সুপরিচিত) হলেন একজন ব্রাজিলীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে গ্রিসের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর সুপার লিগ গ্রিসের ক্লাব অলিম্পিয়াকোসের হয়ে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।[2] তিনি মূলত বাম পার্শ্বীয় রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে বাম পার্শ্বীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি ২০২১–২২ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি ১৯০৪ সালের পর রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম বিদেশী অধিনায়ক ছিলেন।[3][4]
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মার্সেলো ভিয়েইরা দা সিলভা জুনিয়র (সৌরভের দেখা ফুটবল জাদুকর) | ||
জন্ম | [1] | ১২ মে ১৯৮৮||
জন্ম স্থান | রিউ দি জানেইরু, ব্রাজিল | ||
উচ্চতা | ১.৭৪ মিটার (৫ ফুট ৮+১⁄২ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান | রক্ষণভাগের খেলোয়াড় | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | অলিম্পিয়াকোস | ||
জার্সি নম্বর | ১২ | ||
যুব পর্যায় | |||
২০০২–২০০৫ | ফ্লুমিনেন্সে | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০০৫–২০০৬ | ফ্লুমিনেন্সে | ৩০ | (৬) |
২০০৭–২০২২ | রিয়াল মাদ্রিদ | ৩৮৬ | (২৬) |
২০২২– | অলিম্পিয়াকোস | ০ | (০) |
জাতীয় দল | |||
২০০৫ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ | ৩ | (১) |
২০০৭ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ | ৪ | (০) |
২০০৮–২০১২ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২৩ | ১২ | (১) |
২০০৬–২০১৮ | ব্রাজিল | ৫৮ | (৬) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ০৭:৫৯, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। |
২০০২–০৩ মৌসুমে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ব্রাজিলীয় ফুটবল ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে মার্সেলো ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীকালে এই দলের হয়ে খেলার মাধ্যমেই তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০০৫–০৬ মৌসুমে, ফ্লুমিনেন্সের মূল দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, যেখানে তিনি মাত্র ১ মৌসুম অতিবাহিত করেছেন; ফ্লুমিনেন্সের হয়ে তিনি ৩০ ম্যাচে ৬টি গোল করেছেন। অতঃপর ২০০৬–০৭ মৌসুমে, তিনি প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ফ্লুমিনেন্সে হতে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ যোগদান করেছেন;[5][6] যেখানে তিনি ১৬ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ৫৪৬ ম্যাচে ৩৮টি গোল করার পাশাপাশি ২৫টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ২০২২–২৩ মৌসুমে, তিনি গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোসে যোগদান করেছেন।
২০০৫ সালে, মার্সেলো ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ২০০৬ সালে ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; ব্রাজিলের জার্সি গায়ে তিনি ৫৮ ম্যাচে ৬টি গোল করেছেন। তিনি ব্রাজিলের হয়ে এপর্যন্ত ২টি ফিফা বিশ্বকাপে (২০১৪ এবং ২০১৮)। এছাড়াও তিনি ব্রাজিলের হয়ে ২০১৩ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের শিরোপা জয়লাভ করেছেন।
ব্যক্তিগতভাবে, মার্সেলো বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ইএসপিএন এফসি ১০০ বর্ষসেরা বাম পার্শ্বীয় রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের পুরস্কার এবং ২০১০-এর দশকে ৬ বার ফিফা ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশে অন্তর্ভুক্তি অন্যতম।[7][8][9] দলগতভাবে, মার্সেলো এপর্যন্ত ২৫টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২টি ফ্লুমিনেন্সের হয়ে, ২২টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং ১টি ব্রাজিলের হয়ে জয়লাভ করেছেন।
মার্সেলো ভিয়েইরা দা সিলভা জুনিয়র ১৯৮৮ সালের ১২ই মে তারিখে ব্রাজিলের রিউ দি জানেইরুতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।
মার্সেলো ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭, ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ এবং ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে ব্রাজিলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ২০০৫ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের রানার-আপ হয়েছেন,[10] উক্ত প্রতিযোগিতার ফাইনালে তার দল মেক্সিকো অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।[11] ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে তিনি ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন,[12] তবে তার দল উক্ত প্রতিযোগিতায় ১৬ দলের পর্ব পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি ৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[13] মার্সেলো চীনে অনুষ্ঠিত ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্য ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত স্পেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলে স্থান পেয়েছিলেন;[14][15] যেখানে তিনি ৬ ম্যাচে ১টি গোল করার পাশাপাশি ব্রোঞ্জ পদক জয়লাভ করেছেন।[16][17] চার বছর পর লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের জন্য ঘোষিত ব্রাজিল দলে তিনি পুনরায় স্থান পেয়েছিলেন,[18][19] এই আসরের ফাইনালে তার দল মেক্সিকো অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে রৌপ্য পদক জয়লাভ করেছিল।[20] পূর্ববর্তী গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের মতো এই আসরেও মার্সেলো ৬ ম্যাচে অংশগ্রহণ করলেও কোন গোল করতে পারেননি।[21] ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি ১৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ২টি গোল করেছেন। তিনি ২০০৫ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত ২০০৫ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে তুরস্ক অনূর্ধ্ব-১৭দলের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেছেন।[22]
২০০৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর তারিখে, মাত্র ১৮ বছর ৩ মাস ২৪ দিন বয়সে, বাম পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী মার্সেলো ওয়েলসের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ব্রাজিলের হয়ে অভিষেক করেছেন। তিনি উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তবে ৭৪তম মিনিটে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় গিলবার্তো সিলভার বদলি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মাঠ ত্যাগ করেন; ম্যাচে তিনি ৬ নম্বর জার্সি পরিধান করে বাম পার্শ্বীয় রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন।[23] অভিষেক ম্যাচেই তিনি ব্রাজিলের জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেন; ম্যাচের ৬০তম মিনিটে জিলবের্তোর অ্যাসিস্টে ম্যাচের প্রথম গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেন।[24] ম্যাচটি ব্রাজিল ২–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[25] ব্রাজিলের হয়ে অভিষেকের বছরে মার্সেলো ১ ম্যাচে ১টি গোল করেছেন। ২০১৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তারিখে, তিনি ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন, ম্যাচটি ব্রাজিল ০০–০০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[26][27][28]
মার্সেলো ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য লুইজ ফেলিপে স্কলারির অধীনে ঘোষিত ব্রাজিল দলে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান।[29][30][31] ২০১৪ সালের ১২ই জুন তারিখে, তিনি ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ফিফা বিশ্বকাপে অভিষেক করেছেন,[32] উক্ত ম্যাচের ১১তম মিনিটে মার্সেলো একটি আত্মঘাতী গোল করেছিলেন যা ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার একমাত্র গোল ছিল।[33][34] এই আসরের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ব্রাজিল নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল।[35] উক্ত বিশ্বকাপে তিনি সর্বমোট ৬ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন।[36] অতঃপর মার্সেলো ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য প্রকাশিত ব্রাজিলের ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দলে অন্তর্ভুক্ত হন।[37][38][39] এই আসরের গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের তিনি ব্রাজিলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।[40] উক্ত বিশ্বকাপে তিনি ৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন।[41]
২০১৭ সালের ১৪ই নভেম্বর তারিখে ইংল্যান্ডের লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তিনি ব্রাজিলের জার্সি গায়ে তার ৫০তম ম্যাচ খেলেছেন, ম্যাচটি ০–০ গোলে ড্র হয়েছিল, যেখানে তিনি পূর্ণ ৯০ মিনিট খেলেছেন।[42][43][44]
২০০৮ সালে, মার্সেলো তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী ক্লারিস আলভেসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের উভয়ের এনজো গাত্তুসো আলভেস ভিয়েরা (জন্ম: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯) এবং লিয়াম (জন্ম: ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫) নামে দুটি পুত্রসন্তান রয়েছে।[45]
তার বাম হাতে তার জার্সি নম্বর এবং জন্ম তারিখের (১২) উল্কি সহ বেশ কয়েকটি উল্কি রয়েছে।[46] তার দাদা পেদ্রোর (যিনি মার্সেলোকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিলেন যেন তিনি ব্রাজিলে ফুটবল খেলতে পারেন) চিত্রও তিনি তার হাতে উল্কি করেছেন। মার্সেলো তাকে এবং তার স্ত্রীকে তার প্রতিটি গোল উৎসর্গ করেন। রিয়াল মাদ্রিদ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন যে পেদ্রো না থাকলে তিনি ফ্লুমিনেন্সের হয়ে কখনও ফুটবল খেলতে পারতেন না। তার দাদা ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সময় মৃত্যুবরণ করেছেন।[47]
২০১১ সালের ২৬শে জুলাই তারিখে মার্সেলো স্পেনীয় জাতীয়তা অর্জন করেছন, যা তাকে ইইউ-বহির্ভূত খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তে স্বাভাবিকভাবে নিবন্ধিত হতে দেয়।[48][49][50] তিনি রিউ দি জানেইরু ভিত্তিক ক্লাব বোতাফোগোর একজন সমর্থক এবং তিনি এই ক্লাবের হয়ে খেলার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।[51]
দল | সাল | ম্যাচ | গোল |
---|---|---|---|
ব্রাজিল | ২০০৬ | ১ | ১ |
২০০৭ | ১ | ০ | |
২০০৮ | ২ | ০ | |
২০০৯ | ২ | ০ | |
২০১১ | ২ | ১ | |
২০১২ | ৮ | ২ | |
২০১৩ | ১২ | ০ | |
২০১৪ | ৯ | ০ | |
২০১৫ | ৫ | ০ | |
২০১৬ | ৩ | ০ | |
২০১৭ | ৫ | ২ | |
২০১৮ | ৮ | ০ | |
সর্বমোট | ৫৮ | ৬ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.