Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কাবাব হল মধ্যপ্রাচ্যের রান্না থেকে আসা বিভিন্ন রকম রান্না করা মাংসের পদ। এই খাবারের বিভিন্ন ধরন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়।
প্রকার | মূল খাবার |
---|---|
উৎপত্তিস্থল | মধ্যপ্রাচ্য |
পরিবেশন | গরম |
প্রধান উপকরণ | মাংস |
বেশিরভাগ ইংরেজিতে বার্তালাপকারী দেশসমূহতে কাবাব সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে শিক কাবাব'[1]' বা শাশলিক নামে পরিচিত,[2][3] যদিও উত্তর আমেরিকার বাইরে কাবাব বলতে বোঝায় পথ চলতি খাবার বা ডোনার কাবাব বা এর বিভিন্ন বৈচিত্র্য।[3][4] মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল এবং মুসলিম বিশ্বের ভাষায়, কাবাব হল বিভিন্ন ধরনের পোড়ানো মাংসের খাবারগুলির মধ্যে একটি। মধ্যপ্রাচ্যের কাবাব থেকে প্রাপ্ত কিছু খাবারের স্থানীয় ভাষায় বিভিন্ন নাম থাকতে পারে, যেমন চৈনিক চুয়ান।
কাবাব পদগুলিতে কাটা বা পেষাই করা মাংস বা সীফুড ব্যবহার করা হয়, কখনও কখনও নির্দিষ্ট রন্ধন প্রণালী অনুসারে এর সঙ্গে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহার হয়। যদিও কাবাবগুলি প্রায়শই আগুনের উপরে লোহার শিকে গেঁথে রান্না করা হয়, এগুলি আগুনের ওপর এইভাবে না রেখেও রান্না করা যায়। আগুনে একটি পাত্রে রেখে শেঁকে (বেক) বা ভাপে সিদ্ধ করেও প্রস্তুত করা যায়।[2][5] বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাবাবের জন্য ব্যবহৃত মাংস ভেড়ার মাংস হয়, তবে আঞ্চলিক রন্ধন প্রণালীগুলিতে গরুর মাংস, ছাগল, মুরগী, মাছ, শূকরের মাংস ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে হোমিনিন প্রজাতি দ্বারা আগুনের ব্যবহার করে রান্নার প্রমাণ ৭৯০,০০০ বছর আগেও পাওয়া গেছে,[6] এবং কমপক্ষে ২৫০,০০০ বছর আগেকার প্রাগৈতিহাসিক আখা, মাটির উনুন এবং প্রাণীদের পোড়া হাড় ইউরোপ এবং মধ্য প্রাচ্য থেকে পাওয়া গেছে।[7] আকরোতিরির মিনোয়ান বসতি খনন করে আগুনের ওপর শিক রাখার জন্য পাথর পাওয়া গেছে, যেগুলি খ্রিস্টপূর্ব ১৭শ শতকের আগে ব্যবহার হয়েছে।[8] প্রাচীনকালে, হোমারের লেখা ইলিয়াড (১.৪৬৫) থেকে স্পিট (একটি লম্বা কঠিন দণ্ড, যা খাদ্য ধরে রাখতে ব্যবহৃত হয়)য়ে (ὀβελός),[9][10][11] রেখে মাংস পোড়ানোর কথা পাওয়া গেছে।প্রাচীন ভারতীয় রচনা মহাভারতেও স্পিটে এ পোড়ানো মাংসের কথা পাওয়া গেছে।[12][13]
ইবনে সাইয়ার আল-ওয়ারাক এর দশম শতাব্দীর বাগদাদী বই কিতাব আল-তাবিখ , যেখানে পরম্পরায় পাওয়া মেসোপটেমিয়া, পারস্য এবং আরব খাবারের একটি মিশ্রিত রন্ধন প্রণালী আছে, সেখানে কাটা মাংসের কাবাব এর বর্ণনা রয়েছে, সেগুলি হয় পাত্রে রেখে ভাজা বা আগুনে পোড়ানো।[14] এই অঞ্চলে, ছোট ছোট খণ্ড বা মাংসের টুকরোগুলি রান্না করার পদ্ধতিটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যেখানে কসাইয়ের দোকানে মাংসের ছোট ছোট টুকরো পাওয়া যেত এবং যেখানে রান্নার জ্বালানী তুলনামূলকভাবে খুব কম পাওয়া যেত, সেই শহরগুলিতেই এগুলি কার্যকর হত। তুলনামূলকভাবে ইউরোপে, যেখানে বনজ সম্পদ অনেক বেশি, সেখানে মাংসের বড় বড় টুকরো একসাথে পুড়িয়ে রান্না করা হত।[2] প্রকৃতপক্ষে, বহু সংস্কৃতিতে পাওয়া গেছে লোহার শিকে মাংস গেঁথে আগুনের উপরে রেখে রান্না করা, যেমন অ্যান্টিকুচো, যেটি ইউরোপ এবং এশিয়ার সাথে যোগাযোগের অনেক আগে থেকেই দক্ষিণ আমেরিকায় রান্না করা হত।
তবে, ইংরেজিতে, কাবাব বা শিশ কাবাব বলতে কখনও কখনও একটি রন্ধনসম্পর্কীয় শব্দ হিসাবে ব্যবহার হয়, যেটি কোনও শিকের উপরে ছোট ছোট মাংস রান্না করাকে বোঝায়,[2] কাবাব মূলত পারস্য এবং তুরস্কের মধ্যযুগীয় রান্নাঘরে তৈরি মাংসের বিভিন্ন খাবারগুলির সাথে সম্পর্কিত।[4] যদিও শব্দটির উৎস প্রাচীনকালের সঙ্গে সম্পর্কিত, তুর্কিরা একে জনপ্রিয় করে তুলেছিল, যেগুলি লোহার শিকে রান্না করা হত, তবে স্টু, মাংসের বল এবং অন্যান্য ধরনেও রান্না হত।[2][4] মুসলিম প্রভাবের সাথে সমান্তরাল ভাবে এই খাবারটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।[2] মরক্কো ভ্রমণকারী ইবন বতুতার মতে, দিল্লি সুলতানির সময় (১২০৬-১৫২৬) রাজবাড়িতে কাবাব পরিবেশিত হত, এমনকি সাধারণ মানুষেরাও প্রাতঃরাশে নানের সাথে এটি উপভোগ করত।[15] কাবাবের রন্ধন প্রণালী স্থানীয় রান্নার শৈলী এবং অভিনবত্বের সাথে গৃহীত হয়েছে এবং সংহত করা হয়েছে। এখনকার সর্বব্যাপী পথচলতি খাবার ডোনার কাবাব থেকে শুরু করে, সুতি কাবাব ও শিশ কাবাবের বিভিন্ন প্রকরণ পর্যন্ত, যেমন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এর সাটায়।[2][16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.