এশিয়ার ইতিহাস মূলত ইউরেশিয়ার স্তেপ অঞ্চল দ্বারা সংযোজিত এশিয়ার প্রান্তস্থ কিছু উপকূলীয় এলাকা যেমন পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ইত্যাদির সমবেত বা যৌথ ইতিহাস।

Thumb
প্রাচীন রেশম পথ এশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন সভ্যতাকে সংযুক্ত করেছিল।[1]
Thumb
১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এশিয়া, মঙ্গোল সাম্রাজ্যের উত্থানের অব্যবহিত পূর্বে
Thumb
১৮৯২ সালে এশিয়ার মানচিত্র

বিশ্বের প্রাচীনতম তিনটি সভ্যতা মেসোপটেমিয়া, ভারত ও চীন সভ্যতা এশিয়ার সমুদ্র-উপকূলীয় সীমানাতে বড় কিছু নদীর অববাহিকাস্থিত উপত্যকা তথা নিম্নভূমিতে গড়ে উঠেছিল। নদীগুলির অববাহিকার মাটি ছিল উর্বর ও এখানে অনেক ফসল ফলত। সভ্যতা তিনটির মধ্যে অনেক মিল ছিল এবং এগুলি সম্ভবত একে অপরের সাথে প্রযুক্তি ও জ্ঞান লেনদেন করেছিল (যেমন গণিত ও চাকা)। তিনটি সভ্যতাই নিজস্ব লিখন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। এইসব নিম্নভূমিতে নগর, রাষ্ট্র ও সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে।

এশিয়ার মধ্যভাগের স্তেপ অঞ্চলটিতে বহুযুগ ধরেই অশ্বারোহী যাযাবর জাতিরা বাস করে আসছে। কেন্দ্রীয় স্তেপ অঞ্চল থেকে তারা এশিয়ার সর্বত্র পৌঁছাতে পারত। এশিয়ার উত্তর অংশ, যা মূলত সাইবেরিয়ার সিংহভাগ গঠন করেছে, ঘন অরণ্য ও তুন্দ্রাভূমিতে আবৃত ছিল বলে স্তেপ অঞ্চলের যাযাবরেরা এখানে যেতে পারত না। ফলে সাইবেরিয়ার এই অঞ্চলগুলিতে জনবসতি খুবই কম ছিল।

এশিয়ার কেন্দ্রভাগ ও পরিসীমা অঞ্চলগুলি মরুভূমি ও পর্বত দ্বারা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন। ককেসাস পর্বতমালা, হিমালয় পর্বতমালা, কারাকুম মরুভূমি ও গোবি মরুভূমির কারণে স্তেপের অশ্বারোহী জাতিরা অনেক কষ্ট স্বীকার করার পর এগুলি অতিক্রম করতে পারত। একবার অতিক্রম করার পর অবশ্য তারা উপকূলীয় জাতিগুলিকে সামরিকভাবে প্রায়ই পরাজিত করত। কিন্তু এসব অঞ্চলে উন্মুক্ত তৃণভূমির অভাব থাকার কারণে অশ্ববাহিনী পালন করে রাখা যেত না, ফলে যাযাবর জাতিগুলি স্থানীয় সমাজ-সংস্কৃতির সাথে শীঘ্রই মানিয়ে নিত।

দক্ষিণ এশিয়াতে সিন্ধু সভ্যতা খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিরাজ করেছিল। এরপর এখানে আর্য জাতির আগমন ঘটে। আর্যদের ধর্ম ধীরে ধীরে হিন্দু ধর্মে রূপ নেয়। মৌর্য রাজবংশ দক্ষিণ এশিয়াকে একত্রিত করে বিরাট সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১২শ শতক থেকে এখানে মুসলমান শাসকদের আগমন ঘটে।

পূর্ব এশিয়াতে চীনা সংস্কৃতি আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০শ শতক পর্যন্ত বহু হাজার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলি রাজবংশ চীন শাসন করে। উত্তর ও মধ্য এশিয়ার একটি জাতি, যাদের নাম মঙ্গোল জাতি, ১৩শ ও ১৪শ শতকে এশিয়ার সিংহভাগ জুড়ে তাদের সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিল।

এশিয়ার বিপুর ঐশ্বর্যের নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে একাধিক ইউরোপীয় জাতি বহু এশীয় দেশ ও অঞ্চল আক্রমণ করে ও এগুলিকে উপনিবেশে পরিণত করে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের শেষে উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা লাভ করতে শুরু করে। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তার স্বাধীনতা লাভ করে। মধ্য এশীয় রাষ্ট্রগুলি রুশ সাম্রাজ্যের অংশ ছিল এবং এগুলি সাম্যবাদী সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশে পরিণত হয়; এরা ১৯৯০-র দশকে এসে স্বাধীনতা লাভ করে। সোভিয়েতদের পাশাপাশি চীনেও বিশ শতকের মধ্যভাগে সাম্যবাদীরা ক্ষমতায় আসে। সাম্যবাদীরা কোরিয়া ও ভিয়েতনামে পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে, ফলে ১৯৭৫ সালে একীভূত ভিয়েতনাম রাষ্ট্রের জন্ম হয়, কিন্তু কোরিয়া দুইভাগ হয়ে যায়।

দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়াতে ২০শ শতক জুড়ে অনেকগুলি সংঘাত ঘটে; ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠা, ইসরায়েল-আরব যুদ্ধসমূহ, ইরান-ইরাক যুদ্ধ, পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ, ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.