হেজাজ
বর্তমান সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হেজাজ় (আরবি: الحجاز al-Ḥiǧāz, আক্ষরিক অর্থ বাধা) হল বর্তমান সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ। এর পশ্চিমে লোহিত সাগর, উত্তরে জর্ডান, পূর্বে নজদ ও দক্ষিণে আসির অবস্থিত।[১] এর প্রধান শহর জেদ্দা। তবে ইসলামের পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার জন্য এই অঞ্চল অধিক পরিচিত। ইসলামের পবিত্র স্থানের অবস্থানের কারণে হেজাজ আরব ও ইসলামি বিশ্বে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমে তিহামাহ থেকে পূর্বের নজদকে পৃথক করেছে বলে এই অঞ্চলের এরূপ নাম হয়েছে। এটি "পশ্চিম প্রদেশ" বলেও পরিচিত[২]

ঐতিহাসিকভাবে হেজাজ সৌদি আরবের বাকি অংশ থেকে পৃথক বিবেচিত হয়ে এসেছে।[৩] এটি সৌদি আরবের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল।[৪] মোট সৌদি জনসংখ্যার ৩৫% এখানে বসবাস করে।[৫] হেজাজি আরবির সাথে মিশরীয় আরবির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।[৬] সৌদি হেজাজিদের জাতিগত উৎস ভিন্ন।[৭]
আরব উপদ্বীপের মধ্যে হেজাজ সর্বাধিক সার্বজনীন।[৭] সৌদি আরবের যেকোনো আঞ্চলিক গোষ্ঠীর চেয়ে হেজাজের জনগণ অধিকতর পৃথক পরিচয় বহন করে। উৎপত্তিগত উৎসের কারণে সৌদি আরবের কাছ থেকে তারা কিছু মাত্রায় পৃথক। ফলে আরব উপদ্বীপের ইতিহাসের বয়ানে পার্থক্য ধরা পড়ে।[৮] এ কারণে হেজাজিরা নজদের সাথে উত্তেজনাকর অবস্থার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে।[৮] হেজাজের লোকেরা কখনো সৌদি শাসন পূর্ণরূপে গ্রহণ করেনি।
প্রত্নতত্ত্ব
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী হেজাজের উত্তরাংশ রোমান প্রদেশ আরাবিয়া পেট্রাইয়ার অংশ ছিল।[১০]
মাহদ আদ জাহাবের স্বর্ণ খনন অঞ্চল ও উত্তর পূর্ব দিকে পারস্য উপসাগরের দিকে ওয়াদি আল বাতিন প্রক্রিয়ায় প্রবাহিত পানির উৎস (বর্তমানে শুষ্ক) হিজাজের অন্তর্ভুক্ত। বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা অনুযায়ী ২৫০০-৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বে নদী ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।[১১][১২]
পবিত্র দুই শহরের উপস্থিতির কারণে হেজাজ অঞ্চল আধুনিক ইতিহাসের বেশ কিছু সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। দামেস্কে রাজধানী স্থানান্তরের আগ পর্যন্ত হেজাজ খিলাফতের কেন্দ্র ছিল। পরবর্তী অধিকাংশ সময়জুড়ে হেজাজ মিশর ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর ২০ শতকের প্রথমদিকে সংক্ষিপ্তকালের জন্য হেজাজ রাজনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করে।
১৯১৬ সালে হুসাইন-ম্যাকমোহন সমঝোতার ভিত্তিতে হুসাইন বিন আলী নিজেকে হেজাজের স্বাধীন রাজা বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সংঘটিত আরব বিদ্রোহ উসমানীয় সাম্রাজ্যের অবসান ঘটায়। ১৯২৪ সালে পার্শ্ববর্তী নজদ অঞ্চলের আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ কর্তৃক হুসাইন বিন আলী ক্ষমতাচ্যুত হন। হেজাজ নজদ ও হেজাজ রাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত যা পরবর্তীতে সৌদি আরব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
- রাশিদুন খিলাফতের (৬৩২–৬৬১) পতাকা।
- উমাইয়া খিলাফতের (৬৬১-৭৫০) পতাকা।
- আব্বাসীয় খিলাফতের (৭৫০-১২৫৮) পতাকা।
- ফাতেমীয় খিলাফতের (৯০৯-১১৭১) পতাকা।
- আইয়ুবীয় রাজবংশের (১১৭১-১২৫৪) পতাকা।
- মামলুক সালতানাতের (১২৫৪-১৫১৭)।
- উসমানীয় সাম্রাজ্যের (১৫১৭-১৯১৬) পতাকা।
- হেজাজ রাজতন্ত্রের (১৯১৬-১৯২৫) পতাকা।
- সৌদি আরবের (১৯২৫-বর্তমান) পতাকা।
হেজাজের জনগোষ্ঠী
সৌদি আরবের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে হেজাজের অধিবাসীরা পৃথক বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উৎপত্তিগত পার্থক্যের কারণে আরব উপদ্বীপের ইতিহাসের ভিন্ন বয়ান পাওয়া যায়। [৮]
হেজাজের অধিবাসীরা পূর্ণরূপে সৌদি শাসন কখনো পুরোপুরি মেনে নেয়নি। উমাইয়া খিলাফত থেকে উসমানীয় খিলাফত পর্যন্ত বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত থাকার কারণে অনেকেই তাদের অধিক বিশ্বজনীন মনে করে।[১৩]
ভূগোল
এই অঞ্চল লোহিত সাগরের তীর ঘেষে অবস্থিত। গাঢ় আগ্নেয় বালির কারণেও এই অঞ্চল পরিচিত। হেজাজে অনেক উচ্চ পর্বত রয়েছে। এগুলো নজদকে তিহামাহ থেকে পৃথক করে। গুগগুল গাছ হেজাজে প্রচুর জন্মায়।
শহর
আরও দেখুন

উইকিমিডিয়া কমন্সে হেজাজ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
|
|
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.