Loading AI tools
কলকাতা উড়ালপুল বিপর্যয় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২০১৬ সালের ৩১ মার্চ কলকাতার গিরিশ পার্কে নির্মাণাধীন বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙ্গে পরে এক বিরাট বিপর্জয় ঘটায়। উড়ালপুলটি ১২.৩২ (দুপুর) এর সময় ভেঙ্গে পরে।
সময় | ১২.৩০ পিএম (দুপুর) |
---|---|
স্থিতিকাল | ৩১ মার্চ ২০১৬ |
অবস্থান | গিরিশ পার্ক,কলকাতা, ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২২.৫৮° উত্তর ৮৮.৩৫° পূর্ব |
নিহত | ৫০+ |
আহত | ১০০ |
২০০৮ সালে বাম সরকারের সময় প্রথম এই ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপুলটির নির্মাণের কথা শুরু হয় এবং ২০০৯ সালে বিবেকানন্দ রোডের উপর এই উড়ালপুল নির্মাণ শুরু হয়। উরালপুল বা উড়ালসেতুটির নির্মাণের বরাত পায় হায়দ্রাবাদ ভিত্তিক নির্মাণ সংস্থা।সেই সময়ে বলা হয়েছিল ২০১০ সালের মধ্যে উড়ালপুলটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে।[1] সময় পেরিয়ে গেলেও সংস্থাটি নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়। এরপর নতুন সরকারের মুখ্যমুন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সময় ২০১৩ সালে নতুন করে সংস্থাটিকে নির্মাণের বরাত দেওয়া হয় ও নির্মাণ খরচ ১৬৫ কোটি(₹) টাকা স্থির করা হয় এবং ১৮ মাস সময় দেওয়া হয় নির্মাণ শেষ করার জন্য। তবে এবারও সংস্থাটি ব্যর্থ হয় নির্মাণ শেষ করতে।এই সংস্থটি পূর্বেই উত্তর প্রদেশ ও ঝাড়খণ্ড সরকার দ্বারা কাল তালিকা ভূক্ত ছিল।[2][3]
৩০ শে মার্চ ২০১৬ সালে, পতনের এক দিন আগে, সেতুতে কংক্রিট স্থাপন করা হয়েছিল। [2] পতনের মাত্র এক ঘণ্টা আগে, নির্মান শ্রমিকরা সেতুর উপর স্থাপিত কংক্রিটের ক্রেকিং গোলমাল বা কংক্রিট ফাটার শব্দ শুনেতে পেয়েছিলেন। [4]
১২.৩২ (দুপুর) এর সময় হঠাৎ করে বিবেকানন্দ উড়ালপুল এর ৪০ মিটার লম্বা ইস্পাতের গাডার বক্স সহ সেতুটি ভেঙ্গে পরে নিচের রবীন্দ্র সরনি ও কে.কে ঠাকুর রোডের সংযোগ স্থলে।ভেঙ্গে পরা সেতুর নিচে বাস,লরি,টাক্সি ও পথচারী মানুষ তৎক্ষণাৎ চাপা পড়ে।ফলে ২৭ জন নিহত ও ৮০ জন ওর বেশি মানুষ আহত হয় যা কলকাতার সবচেয়ে বড় উড়ালপুল বিপর্যয়।[5] ধ্বংসস্তূপ থেকে ৯০ জনেরও বেশি মানুষকে টেনে বারকরা হয়েছে, কিন্তু বেসরকারি মতে ১ এপ্রিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত সংখ্যাটি ছিল ১০০ জনেরও বেশি। [3][6] জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এনডিআরএফ) পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মীদের সহযোগ উদ্ধার কাজ করেছিল [অস্পষ্ট]। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে অনেক ছবি এবং ভিডিও দ্রুত পোস্ট করা হয়েছিল। [7]
১ এপ্রিল ২০১৬ সালে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অধীনে নির্মাণ সংস্থা আইভিআরসিএল-এর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। পুলিশ কলকাতায় পাঁচ জন এবং হায়দ্রাবাদে দুইজন আইভিআরসিএল কর্মকর্তাকে আটক করে এবং কলকাতায় আইভিআরসিএল-এর স্থানীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। [8] একটি উড়ালপুলের পতনকে "দুর্ঘটনা" বলা হয়, যার সাথে এক আইভিআরসিএলের আধিকারিক এটি "ঈশ্বরের কাজ" হিসাবে বর্ণনা করেন। [9] দুর্ঘটনার পর কোম্পানির শেয়ার ছিল ১১.৭%। [2] দুর্ঘটনাস্থলের পাশে ভবনগুলিতে বসবাসকারী ৬২ টি পরিবারকে সাময়িকভাবে স্থানান্তর করা হয়, ধ্বংসস্তূপের ধ্বংসাবশেষ নিরাপদে সরিয়ে ফেলার জন্য। [10] বিএসইতে পাঠানো একটি চিঠিতে, আইভিআরসিএল দাবি করেছে যে উড়ালপুলের নকশাটি কলকাতার একটি সুপরিচিত পরামর্শদান সংস্থা দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল।
নির্মলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয় নকশার দুর্বলতাগুলির কারণে উড়ালপুলের পতন ঘটেছে। [11] আইআইটি-কেজিপি-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন প্রধান আনন্দপ্রসন্ন গুপ্ত বলেন যে উড়ালপুলের নির্মাণ, নকশা, নির্মাণের কাঁচামাল এবং তত্ত্বাবধান একাধিক ক্ষেত্রে অসঙ্গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। [12] বিরাঞ্চি নারায়ণ আচার্য, একজন পেশাগত অভিজ্ঞ প্রকৌশলী দাবি করেন যে প্রধান কারণ ছিল একটি পিয়ার ক্যাপের ব্যর্থতা, কারণ এটি দুটি স্প্যান্সকে ধরে রাখে। বেশ কয়েকটি পিয়ার ক্যাপ / পিয়ারের জোড়া বা কিছু অবাঞ্ছিত অযৌক্তিক লোডিংয়ের যোগফল উড়ালপুল পতনের জন্য দায়ী হতে পারে। [13]
এই উড়ালপুল বিপর্যয় নিয়ে রাজনৈত্রিক মহলে চাপান উতর ও সাধারণ মানুষের মাঝে সৃষ্টি করেছে ক্ষোভ। উড়ালপুল নির্মাণে দূর্নীতির প্রশ্ন উঠে এসেছে সবার উপরে।[14] পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমুন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিপর্যয়ের দায় বাম সরকারের উপর চাপিয়েছেন ,বিরোধীরা বলছে দুর্নীতির কথা।[15] নগর উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, মন্তব্য করেছেন যে উড়ালপুলের নির্মাণ কাজ অসাংবিধানিকভাবে চলছিল এবং "তিন বছর আগে উল্টডাঙা উড়ালপুলের পতনের পরও রাজ্য প্রশাসন কোনও শিক্ষানেয়নি"। [15] আইভিআরসিএলের আইন উপদেষ্টা শীলা প্যাডিন্টি বলেন, "কাচ ভেঙ্গে গেছে। এটি একটি বিস্ফোরণ হতে পারে।" [10]
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী আহতদের ও দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেন। তিনি কোন রাজনৈতিক বিবৃতি তৈরি করতে অস্বীকার করেন। পরে, তিনি ঘটনাক্রমে সমাবেশে অভিযোগ উত্থাপন করেন এবং ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের অবহেলার অভিযোগ করেন। [16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.