Remove ads
নোয়াখালী জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হাতিয়া বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত একটি দ্বীপাঞ্চল উপজেলা। যেটি বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গোপসাগর এর বুকে একটি দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলা। অপরদিকে, হাতিয়া শহরের আয়তন ৩৬ বর্গ কিলোমিটার। হাতিয়া উপজেলাতে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে নিঝুমদ্বীপ অন্যতম।
হাতিয়া | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে হাতিয়া উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°২২′১৬″ উত্তর ৯১°৭′৩৬″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | নোয়াখালী জেলা |
সংসদীয় আসন | ২৭৩ নোয়াখালী-৬ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | শূন্য |
• উপজেলা চেয়ারম্যান | মো: মাহবুব মোর্শেদ লিটন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
আয়তন | |
• মোট | ২,১০০ বর্গকিমি (৮০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ৫,০০,০০০ |
• জনঘনত্ব | ২৪০/বর্গকিমি (৬২০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৯% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৮৯০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ৭৫ ৩৬ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
হাতিয়া উপজেলার আয়তন ২১০০বর্গ কিলোমিটার। এটি আয়তনের দিক থেকে নোয়াখালী জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।[২] এ উপজেলা নোয়াখালী জেলার বেশ কিছু উপকূলীয় ১৯টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত।[৩] এর এলাকার পরিমাণ ২,১০০ বর্গ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে সুবর্ণচর উপজেলা ও লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলা, দক্ষিণে ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলা ও তজুমদ্দিন উপজেলা।[৪]
হাতিয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসানচর ব্যতীত সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম হাতিয়া থানার আওতাধীন এবং ভাসানচরের প্রশাসনিক কার্যক্রম ভাসানচর থানার আওতাধীন।
প্রমত্তা মেঘনা আর বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির প্রচণ্ড দাপটের মুখে হাতিয়ায় প্রকৃতির ভাঙা-গড়ার কারণে এক থেকে দেড়শ’ বছরের পুরনো কোনো নিদর্শন অবশিষ্ট নেই। দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি অনেক গবেষক হাতিয়ার ওপর গবেষণা করেছেন। তাদের মধ্যে সুরেশ চন্দ্র দত্ত কিছু যুক্তি দিয়ে হাতিয়ার বয়স অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণবঙ্গের ভূ-ভাগ সৃষ্টির রহস্য নিয়ে তার গবেষণায় তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রতি ১৩৬ থেকে ১৪০ বছর সময়ের মধ্যে এক মাইল স্থলভাগ সৃষ্টি হয় হাতিয়ায়। তার এ তথ্য আমলে নিয়ে হাতিয়ার বর্তমান আয়তনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে হাতিয়ার বয়স সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার বছর বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়ার চৌহদ্দি নিরূপণ করলে দেখা যায়, হাতিয়ার উত্তরে সুধারাম, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে সন্দ্বীপ এবং পশ্চিমে মনপুরা ও তজুমদ্দিন উপজেলা। এক সময় সন্দ্বীপের সঙ্গে হাতিয়ার দূরত্ব ছিল খুবই কম। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই দূরত্ব এখন ৬০ মাইল ছাড়িয়েছে। ক্রমাগত ভাঙনই এ দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। হাতিয়ার ভাঙা-গড়ার খেলা চতুর্মুখী দোলায় দোদুল্যমান। উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে ভাঙছে। আবার দক্ষিণে গড়ছে, পাশাপাশি আবার মূল ভূখণ্ডকে কেন্দ্র করে আশপাশে ছোট-বড় নানান ধরনের চর জেগে উঠছে। ওয়েব স্টার নামের একটি সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৮৯০ সাল থেকে হাতিয়ার আদি ভূখণ্ডের উত্তর ভাগের ভাঙন শুরু হয়। বিরাট আয়তনের জমি নদী ও সাগরের ভাঙনে বিলুপ্ত হলেও একই সময় দ্বীপের উত্তর দিকে হাতিয়ার আয়তন ভাঙনের প্রায় ২ থেকে ৫ গুণ হারে বাড়তে শুরু করে। সেই সময় এ অঞ্চলের জেগে ওঠা চরের যে হিসাব পাওয়া যায় তা হলো : ফেনী নদীর মুখে ৫টি, হাতিয়া দ্বীপের সম্প্রসারণ ১৮টি, হাতিয়া চ্যানেলে ৫টি, মেঘনার বুকে ৩টি ও ডাকাতিয়া নদীর মুখে ৩৫টি চর সৃষ্টির প্রক্রিয়া হাতিয়ার মোট আয়তনকে পরিবৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। ১২০ বছরের ব্যবধানে হিসাব-নিকাশে ঢের পরিবর্তন এসেছে। অনেক চর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, কিছু কিছু আবার ভাঙনের কবলে পড়ে হারিয়ে গেছে। ক্রমাগত ভাঙনের কারণে সঠিক আয়তন নির্ধারণ করা কঠিন হলেও উপজেলা পরিষদের হিসাব মতে হাতিয়ার বর্তমান আয়তন ২১শ’ বর্গকিলোমিটার বলে উল্লেখ আছে। হাতিয়া সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে পড়তে পারেন ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা ‘তিলোত্তমা হাতিয়া ও ইতিহাস’ শিরোনামের গ্রন্থটি।
হাতিয়ার বিভিন্ন সংগঠন থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিন, সাবেক উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আমীন রচিত 'তিলোত্তমা হাতিয়া : ইতিহাস ও ঐতিহ্য' বই ও দ্বীপের প্রবীণদের কাছ থেকে হাতিয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জানা গেছে, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতাব্দীর দিকে বঙ্গোপসাগর আর মেঘনার মোহনায় গড়ে ওঠা সবুজে ঘেরা দ্বীপটি মানুষের নজরে আসে। কিংবদন্তি রয়েছে, পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে বার আউলিয়া নামে খ্যাত বারজন আউলিয়া মাছের পিঠে সওয়ার হয়ে বাগদাদ থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে হাতিয়ায় বিশ্রাম নিয়েছিলেন। বিশ্রামকালে সন্দ্বীপ-হাতিয়ার অনেক মানুষ তাদের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। হজরত সুলতান ইব্রাহীম বলখি মাহীসাওয়ারও মাছের পিঠে চড়ে হাতিয়ায় এসেছিলেন। বিখ্যাত সাধক বায়েজিদ বোস্তামী এবং হজরত শাহ আলী বোগদাদি হাতিয়ায় কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। এর পর থেকে হাতিয়ায় প্রচুর আরব সাধক এসেছিলেন। সর্বশেষ একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয়ের চারশ’ বছর আগে ৭ম শতাব্দীতে কিছু আরব বণিক ধর্ম প্রচারের জন্য সমুদ্রপথে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় মনোরম এই দ্বীপটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে দ্বীপে কিছুকাল অবস্থান করেন। এসব আরব বণিক ও সাধক দ্বীপে বসবাসরত সাধারণ মানুষদের মাঝে ইসলাম প্রচার করেন।
হাতিয়ার জাতি গোষ্ঠি নিয়ে তেমন কোন গবেষণা হয়নি ড. মোহাম্মদ আমিন ছাড়া। তিনি বলেছেন, “হাতিয়ার আদি জাতি গোষ্ঠি কিরাত। কিন্তু আমার গবেষণা ও নৃতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণ থেকে বলছে হাতিয়ার আদি জাতি গোষ্ঠি অস্ট্রিক। অস্ট্রালয়েড বা অস্ট্রিক ভাষী জাতি গোষ্ঠি ষাট হাজার বৎসর বা ১ লক্ষ বৎসর পূর্বে আফ্রিকার যাযাবর ও শিকারী শ্রেনীর মানুষ এডেন ও লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে ক্রমাগত উপকূল বেয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বিচরণ করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত বিচরণ করে ছিল। তাই এরা এশীয় অস্ট্রিক জাতি গোষ্ঠির অন্তভূক্ত। এদের দীর্ঘ মুণ্ডু, কৃষ্ণকায় দেহ রয়েছে, এদের চুল সোজা, ঢেউ খেলানো ও ভেড়ার চুলের মত কোঁকড়ানো। মিলেনেশিয়াদের ক্ষেত্রে চুল সোজা। উপমহাদেশে এদের অবস্থান পশ্চিম বঙ্গ হতে পূর্বে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রস্তর যুগে এরা গাছের ডাল পালা দিয়ে অস্ত্র বানাতো এবং ব্রোঞ্জের ব্যবহার জানতনা বলে এদের সভ্যতার বস্তুগত প্রমাণ মেলে না।
এরাই উপমহাদেশে প্রথম সভ্যতা ও বসতি স্থাপন করেছিল পরবর্তীতে প্রথম চাষাবাদ ও গুড় তৈরীর কৌশল আয়ত্ত করে। এরা শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করত কাউকে বিতাড়িত করেনি এবং আর্যদের সাথে সহবস্থান করেছিল। দুর্গম জমিকে পতিত জমিতে পরিণত করেছিল এবং বনের পশুকে পোষ মানিয়ে ছিল। নীহারঞ্জন রায়ের মতে সুন্দরবনের মৎস্য শিকারী, ময়মনসিংহ, যশোর ও নিম্ন বঙ্গের কিছু মানুষের মধ্যে কৃষ্ণকায় দেহ, শ্যাম বর্ণ, উণাবৎ কেশের উপস্থিতি অস্ট্রিক জাতির উপস্থিতি প্রমাণ করে।
উত্তারাধিকার সূত্রে পাওয়া হাতিয়া মানুষের উপরের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যেমন : চাষাবাদ, ধান চাষ, পশু ও পাখি পালন, মৎস্য শিকার, বসতি ও সভ্যতা স্থাপন এবং গুড় তৈরী ইত্যাদি। দেহ কৃষ্ণকায় ও শ্যাম বর্ণের, চুল সোজা, টেউ খেলানো ও কোঁকডানো।
আর্যদের আগমনের পূর্বেই উত্তর-পূর্ব ভারত ছিল মঙ্গোলীয় জাতীর আবাসস্থল, এরাই মূলত কিরাত জাতি হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ এরা মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তভূক্ত। মহাভারত ও রামায়নের যোগিনীতন্ত্রে কিরাতের দেশকে প্রাগজ্যোতিশপুর বলে আখ্যাহিত করা হয়েছে এবং এরা আসামের গিরিপথ অতিক্রম করে উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে মনিপুর, ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলাপূর্ণ পাহাড়ের মধ্যে অবস্থান করেছিল।
প্রাগজ্যোতিসপুর পরবর্তীতে কামরূপ রাজ্যে রূপান্তর লাভ করে। রামায়নে কিরাত সম্পর্কে বলা হয়েছে ব্রক্ষপুত্রের তীরে (ময়মনসিংহ) কনক চাপার মত দেহ জাতিই কিরাত। এদের স্থান ও ভাষার মধ্যে চীনা ভাষার প্রভাব রয়েছে। এদের বিভক্তি জাতি গুলো হল রাজবংশী, কোচ, মেচ ও চাকমা। সার্জন জেমস টেইলর মনে করেন এ জাতি কামরূপ রাজ্যর দক্ষিণ ও পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও যমুনা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। ড. সিরাজুল ইসলাম ও জেমস টেইলরকে সমর্থন করেন। উপরে আলোচনা হতে হাতিয়ার মানুষের কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কিরাত নয় অস্ট্রিকই হাতিয়ার আদি জাতি গোষ্ঠি॥[৬]
ইতিহাসে বাংলাদেশে ইসলামের প্রবেশদ্বার হিসেবে চট্টগ্রামকে ধরা হলেও হাতিয়াতেই ইসলামের সূত্রপাত হয় বলে বিশ্বাস করেন দ্বীপের মানুষেরা। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে এখানে একটি বৃহত্তম জামে মসজিদ গড়ে ওঠে। এটিই ছিল হাতিয়ার ঐতিহাসিক প্রথম জামে মসজিদ। নির্মাণের প্রায় ৮০০ বছর পর ১৭০২ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৮ সালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মজিদের নকশায় পুরনো সেই মসজিদের আদলে মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন হিসেবে এখানে আরেকটি মসজিদ গড়ে তোলা হয়। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত মসজিদটি অক্ষত ছিল।
হাতিয়ার নামকরণ সম্পর্কে একাধিক প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে। প্রবাদগুলো যেমন মজার তেমন আকর্ষণীয়। ইতিহাস ও বাস্তবতার সমৃদ্ধ উপ্যাখানগুলো সংশ্লিষ্ট প্রবক্তকরা গ্রহণযোগ্য করার প্রয়াসে যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যাও সংযুক্ত করেছেন। হাতিয়ার নামকরণ প্রবাদের দুটি প্রধান ধারা লক্ষণীয়। তন্মধ্যে একটি হাতিয়া অন্যটি হাতি প্রবাদ নামে খ্যাত। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হাফেজ মাওলানা এ কে মোমাজাদ আহমদ তার আমার দেখা হাতিয়া প্রবন্ধে উল্লেখ করেন- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনের সময় এক ইংরেজ আলোচ্য দ্বীপে উঠে এ এলাকার নাম কি জিজ্ঞাসা করেন। জবাবে এলাকার লোকজন বলে হাটিয়া। এরপর থেকে ইংরেজ দ্বারা হাটিয়া নামজারী হয়ে গেল। যা পরবর্তীতে বাংলা উচ্চারণের সুবিধার্থে হয়ে গেল হাতিয়া। মৌলভী জামাল উদ্দিন বলে ফরাসীরা বাণিজ্য করতে ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন। তারা নদীপথে এ অঞ্চল দিয়ে যাতায়াত করত। হাতিয়া তখন মাত্র দুটি দ্বীপ। সাগরদি ও নিলক্ষী। দূর থেকে তা দেখতে তলোয়ার বা হাতিয়ার এর মতো মনে হতো। এ হাতিয়ার বা তলোয়ার থেকে হাতিয়া নামের উৎপত্তি। এডভোকেট শরিফ মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন- সন্দ্বীপের দিলাল রাজার একটি হাতি ছিল। হাতিটি হাতিয়া ভূ-খণ্ডের পাশে একটি কর্দমাক্ত খালে আটকা পড়ে মারা যায়। পরবর্তীতে এ ভূ-খণ্ডের নাম হয়- “হাতি”-পা -আ থেকে হাতিয়া”। দ্বীপের বিখ্যাত কবি আবদুর রশিদ তার পিতার লিখিত পুঁথির আলোকে বলেন- একদা এ অঞ্চলে বড় ধরনের জলোচ্ছাসে কোথা থেকে একটি হাতি ভেসে আসে এবং দ্বীপের খালে আটকা পড়ে মৃত্যু ঘটে বিধায় এ দ্বীপের নাম হয় হাতিয়া। দ্বীপের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী দ্বীপের নামকরণ সম্পর্কে বলেন- একদা এ দ্বীপে জলদস্যুদের দৌরাত্ম ও অত্যাচার ছিল। জলদস্যুদের অত্যাচারের খবর তৎকালীন বাংলার শাসক শেরশাহ্ এর নিকট পৌঁছলে তিনি দস্যুদের দমনের জন্য হাতিয়াল খা নামক সেনাপতির নেতৃত্বে একদল সৈন্য প্রেরণ করেন এবং অত্যন্ত সুনামের সহিত দস্যুদের দমন করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন। ঐ সেনাপতির নামানুসারে এ দ্বীপের নামকরণ করা হয় “হাতিয়াল দ্বীপ”। কালক্রমে হাতিয়াল থেকে ‘ল’ উঠে গিয়ে এর নাম হয় হাতিয়া দ্বীপ। উপরোক্ত হাতিয়া দ্বীপের নামকরণ ইতিহাস আলোচনা কালে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়, হাতিয়া দ্বীপের নামকরণে হাতি নামটি অনেক আলোচনায় এসেছে। তাই দ্বীপের নামকরণ সম্পর্কিত উপরোক্ত কাহিনী ও তথ্য কতটুকু সত্য এবং ইতিহাস নির্ভর তা ঐতিহাসিককের অনুসদ্ধান ও সঠিক গবেষণার বিষয়।
আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে হাতিয়া উপজেলা নোয়াখালী জেলার একটি বৃহত্তম উপজেলা। জানা যায় হাতিয়ার প্রাচীন দ্বীপ ছিল সাগর দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিপূর্ণ এ দ্বীপটি সুবিশাল জলরাশি ভেদ করে ক্রমান্বয়ে উর্বর ও প্রায় সমতল এ দ্বীপ সৃষ্টির অমোষ রহস্যের আলোয়ে গড়ে উঠে। ১৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত গ্রীক জ্যোতির্বিদ টলেমির বিবরণ (৩০০০ বছরের নোয়াখালী) এবং ডঃ আবদুল করিম বিরচিত বাংলার ইতিহাস গ্রন্থের বরাত সূত্রে জুগীদিয়া সোনাদিয়া, আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে হাতিয়া উপজেলা নোয়াখালী জেলার একটি বৃহত্তম উপজেলা। জানা যায় হাতিয়ার প্রাচীন দ্বীপ ছিল সাগর দ্বীপ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পরিপূর্ণ এ দ্বীপটি সুবিশাল জলরাশি ভেদ করে ক্রমান্বয়ে উর্বর ও প্রায় সমতল এ দ্বীপ সৃষ্টির অমোষ রহস্যের আলোয়ে গড়ে উঠে। ১৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত গ্রীক জ্যোতিবিদ টলেমির বিবরণ (৩০০০ বছরের নোয়াখালী) এবং ডঃ আবদুল করিম বিরচিত বাংলার ইতিহাস গ্রন্থের বরাত সূত্রে জুগীদিয়া সোনাদিয়া, ট্রগিদিয়া, গোয়াকুলা, বামনী, তেরকাটিয়া সন্দ্বীপ, হাতিয়া, ভুলুয়া প্রভৃতি দ্বীপের কথা উল্লেখ আছে। দ্বীপগুলো তখনও জনবসতিপূর্ণ ছিল। এ অর্থ হচ্ছে ১৫০ খ্রিস্টাব্দেও হাতিয়া একটি সমৃদ্ধ জনপথ হিসাবে পরিচিত ছিল। এ থেকে অনুমান করা হয় হাতিয়ার বর্তমান বয়স ৩০০০ বছর। এ বি ছিদ্দিক শ্বাশ্বত সন্দ্বীপ গ্রন্থে ও হাতিয়ার বয়স ৩০০০ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। (১৬৬৬-১৭৬৫খৃঃ) মোঘল আমলে প্রশাসন কর্তৃক নিয়োজিত ফৌজদার নামক একজন কর্মকর্তা হাতিয়ার (সন্দ্বীপ) পরগনার প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ফৌজদারী ও তার অধিক্ষেত্র এলাকার আইন শৃংখলা রক্ষা এবং দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। কানুনগো পদ মর্যাদার ওদাদার নামক একজন কর্মকর্তা রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতেন। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ বৃটিশ সরকার ফৌজদার পদ বিলুপ্ত করে এবং হাতিয়াকে চৌকি মর্যাদায় উন্নীত করে একজন দারোগার উপর হাতিয়ার বিচার ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দারোগাদের কার্যক্রমে জটিলতা ও অসন্তোষ দেখা দিলে সরকার পুনরায় প্রশাসনিক ক্ষমতা ও পদ পুর্নবিন্যাসের মাধ্যমে নায়েব-ওয়াদাদাদের উপর প্রশাসনিক ও বিচার কার্য সম্পর্কিত বিষয়ের মূল দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১৮৮৯ খৃঃ ফৌজদারী কার্যবিধি প্রচলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এরূপ বিধান প্রচলিত ছিল। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়া ঢাকার প্রদেশিক পরিষদ তথা ঢাকা বিভাগের আওতাধীন চট্টগ্রাম জেলার অধীনে সন্দ্বীপ পরগনার অন্তর্ভূৃক্ত ছিল। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দ হাতিয়াকে চট্টগ্রাম কালেক্টটর আওতাভূক্ত করা হয়। ১৭৭২-১৭৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়ার শাসন ও বিচার ব্যবস্থা দেওয়ানী ও ফৌজদারী দুই পদ্ধতিতে পরিচালিত হতো। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়া চট্টগ্রাম জেলার থেকে যায়। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ মেঘনা নদী পশ্চিমাংশ শাহবাজপুুর (বর্তমানে ভোলা) এবং বর্তমানে বৃহত্তর নোয়াখালী এলাকা সমূহকে নিয়ে ভুলুয়া নামে পৃথক একটি জেলার সৃষ্টি করা হয়। হাতিয়া তখন ভুলুয়া তথা নোয়াখালী জেলার অধীনে ছিল। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ ভুলুয়া জেলার নাম পরিবর্তন করে নোয়াখালী রাখা হয়। ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালী জেলায় জেলা জজ পদের সৃষ্টি করা হলে জেলা জজের অধিভুক্ত হাতিয়ার দেওয়ানী বিচার সমূহ নোয়াখালীতে নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। এরপর ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে সাব-ডেপুটি কালেক্টর এর মর্যাদা ও তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসনিক প্রধান করে হাতিয়ার শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করার জন্য নিযুক্ত করা হলেও ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে তা পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু করা হয়নি। তিনি একাধারে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলার বিচার সম্পাদন করতেন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে হাতিয়ায় সর্বপ্রথম সার্কেল প্রথার প্রবর্তন করা হয়। এ সময় হাতিয়াকে বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন থানা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ হতে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটকে হাতিয়ার প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে নিযুক্তির রেওয়াজ চালু হয়। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ হতে উপজেলা পরিষদ গঠনের পূর্ব পর্যন্ত এ অবস্থা বহাল ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফৌজদারী বিচার, উপজেলা প্রশাসন এবং সরকারের শাসন কার্য একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালনা করতেন। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নামক পদে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এর ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করে পূর্বতন থানা প্রশাসন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনা হয়। উপজেলা পরিষদ গঠনের পর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলার সার্বিক কর্তৃত্বের এবং নির্বাহী অফিসার নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন। ট্রগিদিয়া, গোয়াকুলা, বামনী, তেরকাটিয়া সন্দ্বীপ, হাতিয়া, ভুলুয়া প্রভৃতি দ্বীপের কথা উল্লেখ আছে। দ্বীপগুলো তখনও জনবসতিপূর্ণ ছিল। এ অর্থ হচ্ছে ১৫০ খ্রিস্টাব্দেও হাতিয়া একটি সমৃদ্ধ জনপথ হিসাবে পরিচিত ছিল। এ থেকে অনুমান করা হয় হাতিয়ার বর্তমান বয়স ৩০০০ বছর। এ বি ছিদ্দিক প্রণীত শ্বাসত সন্দ্বীপ গ্রন্থে ও হাতিয়ার বয়স ৩০০০ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। (১৬৬৬-১৭৬৫খৃঃ) মোঘল আমলে প্রশাসন কর্তৃক নিয়োজিত ফৌজদার নামক একজন কর্মকর্তা হাতিয়ার (সন্দ্বীপ) পরগনার প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ফৌজদারী ও তার অধিক্ষেত্র এলাকার আইন শৃংখলা রক্ষা এবং দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। কানুনগো পদ মর্যাদার ওদাদার নামক একজন কর্মকর্তা রাজস্ব সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতেন। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ বৃটিশ সরকার ফৌজদার পদ বিলুপ্ত করে এবং হাতিয়াকে চৌকি মর্যাদায় উন্নীত করে একজন দারোগার উপর হাতিয়ার বিচার ও প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে দারোগাদের কার্যক্রমে জটিলতা ও অসন্তোষ দেখা দিলে সরকার পুনরায় প্রশাসনিক ক্ষমতা ও পদ পুর্নবিন্যাসের মাধ্যমে নায়েব-ওয়াদাদাদের উপর প্রশাসনিক ও বিচার কার্য সম্পর্কিত বিষয়ের মূল দায়িত্ব অর্পণ করেন। ১৮৮৯ খৃঃ ফৌজদারী কার্যবিধি প্রচলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এরূপ বিধান প্রচলিত ছিল। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়া ঢাকার প্রদেশিক পরিষদ তথা ঢাকা বিভাগের আওতাধীন চট্টগ্রাম জেলার অধীনে সন্দ্বীপ পরগনার অন্তর্ভূৃক্ত ছিল। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দ হাতিয়াকে চট্টগ্রাম কালেক্টটর আওতাভূক্ত করা হয়। ১৭৭২-১৭৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়ার শাসন ও বিচার ব্যবস্থা দেওয়ানী ও ফৌজদারী দুই পদ্ধতিতে পরিচালিত হতো। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হাতিয়া চট্টগ্রাম জেলার থেকে যায়। ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ মেঘনা নদী পশ্চিমাংশ শাহবাজপুুর (বর্তমানে ভোলা) এবং বর্তমানে বৃহত্তর নোয়াখালী এলাকা সমূহকে নিয়ে ভুলুয়া নামে পৃথক একটি জেলার সৃষ্টি করা হয়। হাতিয়া তখন ভুলুয়া তথা নোয়াখালী জেলার অধীনে ছিল। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ ভুলুয়া জেলার নাম পরিবর্তন করে নোয়াখালী রাখা হয়। ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে নোয়াখালী জেলায় জেলা জজ পদের সৃষ্টি করা হলে জেলা জজের অধিভুক্ত হাতিয়ার দেওয়ানী বিচার সমূহ নোয়াখালীতে নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়। এরপর ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে সাব-ডেপুটি কালেক্টর এর মর্যাদা ও তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসনিক প্রধান করে হাতিয়ার শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করার জন্য নিযুক্ত করা হলেও ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে তা পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু করা হয়নি। তিনি একাধারে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলার বিচার সম্পাদন করতেন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে হাতিয়ায় সর্বপ্রথম সার্কেল প্রথার প্রবর্তন করা হয়। এ সময় হাতিয়াকে বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন থানা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট, ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ হতে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটকে হাতিয়ার প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে নিযুক্তির রেওয়াজ চালু হয়। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ হতে উপজেলা পরিষদ গঠনের পূর্ব পর্যন্ত এ অবস্থা বহাল ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফৌজদারী বিচার, উপজেলা প্রশাসন এবং সরকারের শাসন কার্য একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালনা করতেন। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নামক পদে একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এর ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করে পূর্বতন থানা প্রশাসন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনা হয়। উপজেলা পরিষদ গঠনের পর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলার সার্বিক কর্তৃত্বের এবং নির্বাহী অফিসার নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন।
মোট জনসংখ্যা ৪,৫২,৪৬৩ জন (প্রায়), পুরুষ ২,২৩,৮৫৩ জন (প্রায়), নারী ২,২৮,৬১০ জন (প্রায়)। জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩০০ (প্রতি বর্গ কিলোমিটারে), জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩%। মোট ভোটার সংখ্যা ২,১৮,০১৯ জন, পুরুষ ভোটার ১,১০,২০০ জন, মহিলা ভোটার ১,০৭,৮১৯ জন
হাতিয়া উপজেলার সাক্ষরতার হার ৬৯%।[৭]
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১৬ টি, বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৯ টি, জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় ০৭ টি, মোট উচ্চ বিদ্যালয় ৪৫ টি, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ০৩ টি, মোট কলেজ ০৫টি (বালিকা ১টি), দাখিল মাদ্রাসা ০৮ টি, আলিম মাদ্রাসা ০৩ টি, ফাযিল মাদ্রাসা ০৩ টি, কামিল মাদ্রাসা ০১ টি। উল্লেখ যোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলঃ
কলেজসমূহ:
উচ্চ বিদ্যালয়সমূহ:
মাদরাসাসমূহ:
প্রাথমিক বিদ্যালয়:
পাকা রাস্তা ১৩০ কি:মি:, আধা-পাকা রাস্তা ৬০ কি:মি:, কাঁচা রাস্তা ৬৮৭ কি:মি, সেতু/কালভার্ট ৩৬৮ টি, নদীর সংখ্যা ০৩ টি, জেলা সদর তথা মূল ভূখণ্ডের সাথে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। এছাড়া ঢাকা এবং চট্টগ্রামের সাথে লঞ্চ, জাহাজের মাধ্যমে নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে।
হাতিয়া উপজেলায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাকৃতিক সম্পদ। যার মধ্যে রয়েছে মৎস্য সম্পদ, গ্যাস, বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ইত্যাদি।
হাতিয়া উপজেলায় প্রধানত ধান চাষ বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য চাষ মধ্যে রয়েছে গম, পাট, আখ, ইত্যাদি
বুড়িরচর ইউনিয়নের সাগরিয়া বাজারের থেকে দক্ষিণে ডা.হাজী মোজাহার উদ্দিনের বাড়ি সংলগ্নে অবস্থিত। এটি ১২ একক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও বিদেশি গরু, ফলের বাগান, মাছের পুকুর ইত্যাদি। এছাড়া রয়েছে ভিয়েতনামি ৪০০ টি এর বেশি নারিকেল গাছের বাগান। যা হাতিয়া উপজেলা কৃষি ও খামার সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
হাতিয়া উপজেলায় ছোট খাটো অনেক গুলো কারখানা গড়ে উঠেছে। যেগুলোর মধ্যে জুতার কারখানা, রাইস মিল, প্লাস্টিকের কারখানা, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা ইত্যাদি
৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে হাতিয়া-নিঝুম দ্বীপ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ৫০ বছর পর ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের আদলে ৩০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ সেবায় যুক্ত হচ্ছেন। জানা গেছে, এই প্রকল্পের ব্যয় হবে ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এর মধ্যে সরকার দিবে ৭০ কোটি ৮৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ১৩ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা[কে?] জানান, প্রকল্পের মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হবে ১ হাজার ১০০টি ট্রাক। এর মধ্যে ২০ টন ওজনের বড় লরিও ব্যবহার হবে। হাতিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মশিউর রহমান জানান, স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান সরকার হাতিয়ায় ৫টি ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে শুরু করে ‘হাতিয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র’।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কিন্তু অনেক পুরনো এই ইঞ্জিনগুলো অনেকটাই বিকল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউসের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার ৩টি নতুন ইঞ্জিন দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কিছুটা সচল রাখে। অন্যদিকে নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়ার ১১টি ইউনিয়নের মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। গত বছরের প্রথম দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে হাতিয়া সফর করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি হাতিয়াতে শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। এরপর ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন প্রকল্প’। প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা। গত ৩রা ফেব্রুয়ারি একনেক’র সভায় তা অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ মানবজমিনকে জানান, সরকারের অনুমোদন দেয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু বিতরণ বিভাগের উন্নয়ন করা হবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
উৎপাদনের জন্য চুক্তি করা হয় দেশ এনার্জি লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির সঙ্গে। তারা প্রাথমিকভাবে ১৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্ল্যান্ট তৈরি করবে হাতিয়ায়।
হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, হাতিয়াবাসীর স্বপ্ন ছিল হাতিয়াতে শতভাগ বিদ্যুৎ উন্নয়ন হবে। এটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে জীবন যাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন আসবে হাতিয়াবাসীর। নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস বলেন, বার বার জাতীয় সংসদে এ দাবি উত্থাপনের পর বাস্তবায়ন করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৮] | সংসদ সদস্য[৯][১০][১১] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৭৩ নোয়াখালী-৬ | হাতিয়া উপজেলা |
হাতিয়া মহিষ ও গরুর দধির জন্য বিখ্যাত। কথায় আছে -
“হাতিয়ার দই,
নোয়াখালীর কৈ,
সন্দ্বীপের ডাব,
রামগতির রাব।”
এছাড়া রয়েছে জামাই পিঠা নামে খ্যাত “নকশী পিঠা” বা হাতিয়ার ভাষায় পাক্কন পিঠা। পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, জালার পিঠা, রস ভোগ, আনতাসা পিঠা, সাইন্না পিঠা, ভরা পিঠা সহ হরেক রকমের পিঠা। নাউর এবং গ্রামীণ কৃষ্টি-সংস্কৃতির বিয়ে এখানে এখনও প্রচলিত। হাতিয়ার দৃষ্টি নন্দন গ্রামীণ বাড়ি এখানেরই ঐতিহ্য। এখানে বাড়ি নির্মাণে বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় যা বাংলাদেশের কোথাও দেখা যায়না। এখানে বাড়ি নির্মাণে রাস্তার আয়তনমাত্রিক ভাবে নূন্যতম ৪০ শতাংশ জমির দরকার হয়। বাড়ির মাঝখানে একটি দরজা, দরজায় ফুল কিংবা সুপারি গাছের সারি থাকে। বাড়ির মাঝবরাবর ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘরের পিছনে পুকুর, ঘরের সামনে উঠানের জায়গা রেখে ফলের বাগান থাকে। পুকুর পাড়ে গাছের বাগান থাকে॥[১২]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.