সূরা আল আরাফ (আরবি ভাষায়: سورة الأعراف, "অর্থ উঁচু স্থান") মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের সপ্তম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ২০৬টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ২৪টি। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরার কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হচ্ছে রিসালাতের প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত।
শ্রেণী | মাক্কী |
---|---|
নামের অর্থ | উঁচু স্থান |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৭ |
আয়াতের সংখ্যা | ২০৬ |
পারার ক্রম | ৮ এবং ৯ |
রুকুর সংখ্যা | ২৪ |
সিজদাহ্র সংখ্যা | ১ |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা আনআম |
পরবর্তী সূরা → | সূরা আনফাল |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
আয়াসমূহ ও অর্থ
সম্পূর্ণ সূরাটির বাংলা অনুবাদ উইকিসংকলনে দেখুন।
নামকরণ
এ সূরার ৪৬ ও ৪৭নং আয়াতে (পঞ্চম রুকূতে) আসহাবে আরাফ বা আরাফবাসীদের উল্লেখ করা হয়েছে। সেই জন্যে এর নামকরণ করা হয়েছে আল আরাফ। অন্য কথায় বলা যায়, এ সূরাকে সূরা আল আরাফ বলার তাৎপর্য হচ্ছে এই যে, যে সূরার মধ্যে আ’রাফের কথা বলা হয়েছে, এটা সেই সূরা।
নাযিলের সময়-কাল
এ সূরার আলোচ্য বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে সুস্পষ্টভাবে অনুভূত হয়ে যে, এ সূরাটি সূরা আন আমের প্রায় সমসময়ে নাযিল হয়। অবশ্য এটা আগে না আন’আম আগে নাযিল হয় তা নিশ্চয়তার সাথে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে এ সূরায় প্রদত্ত ভাষণের বাচনভংগী থেকে এটি যে ঐ সময়ের সাথে সম্পর্কিত তা পরিষ্কার বুঝা যায়। কাজেই এর ঐতিহাসিক পটভূমি অনুধাবন করার জন্যে সূরা আন’আমের শুরুতে যে ভূমিকা লেখা হয়েছে তার ওপর একবর নজর বুলিয়ে নেয়া যথেষ্ট হবে।[1]
আলোচ্য বিষয়
এ সূরার ভাষণের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হচ্ছে রিসালাতের প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত। আল্লাহ প্রেরিত রসূলের আনুগত্য করার জন্যে শ্রোতাদের উদ্বুদ্ধ করাই এর সমগ্র আলোচনার মৌল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। কিন্তু এ দাওয়াত সতর্ক করার ও ভয় দেখানোর ভাবধারাই ফুটে উঠেছে বেশি করে। কারণ এখানে যাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে (অর্থাৎ মক্কাবাসী) তাদেরকে বুঝাতে বুঝাতে দীর্ঘকাল অতিবাহিত হয়ে গিয়েছিল। তাদের স্থুল শ্রবণ ও অনুধাবন শক্তি, হঠকারিতা, গোয়ার্তুমী ও একগুঁয়ে মনোভাব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। যার ফলে রসূলের প্রতি তাদেরকে সম্বোধন করা বন্ধ করে দিয়ে অন্যদেরকে সম্বোধন করার হুকুম অচিরেই নাযিল হতে যাচ্ছিল। তাই বুঝাবার ভংগীতে নবুওয়াত ও রিসালাতের দাওয়াত পেশ করার সাথে সাথে তাদেরকে একথাও জানিয়ে দেয়া হচ্ছে যে, নবীর মোকাবিলায় তোমরা যে কর্মনীতি অবলম্বন করেছো তোমাদের আগের বিভিন্ন মানব সম্প্রদায়ও নিজেদের নবীদের সাথে অনুরূপ আচরণ অবলম্বন করে অত্যন্ত মারাত্মক পরিণতির সম্মুখীন হয়েছিল। তারপর বর্তমানে যেহেতু তাদেরকে যুক্তি প্রমাণ সহকারে দাওয়াত দেবার প্রচেষ্টা চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতে চলেছে। তাই ভাষণের শেষ অংশে তাদের দিক থেকে মূখ ফিরিয়ে আহলি কিতাবদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে। আর এক জায়গায় সারা দুনিয়ার মানুষকে সাধারণভাবে সম্বোধন করা হয়েছে। এ থেকে এরূপ আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, এখন হিজরত নিকটবর্তী এবং নবীর জন্যে তার নিটকতর লোকদেরকে সম্বোধন করার যুগ শেষ হয়ে আসছে।
এ ভাষণের এক পর্যায়ে ইহুদিদেরকেও সম্বোধন করা হয়েছে। তাই এই সাথে রিসালাত ও নবুওয়াতের দাওয়াতের আর একটি দিকও সুষ্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। নবীর প্রতি ঈমান আনার পর তার সাথে মুনাফিকী নীতি অবলম্বন করার, আনুগত্য ও অনুসৃতির অংঙ্গীকার করার পর তা ভংগ করার এবং সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য সম্পর্কে অবহিত হয়ে যাওয়ার পর মিথ্যার প্রতি সাহায্য সহযোগিতা দানের কাজে আপাদমস্তক ডুবে থাকার পরিণাম কি, তাও এতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.