বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী দেবী সর্বমঙ্গলা।তিনি বাংলার লৌকিক দেবতা ও বটে। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজিত হন।এই মন্দিরটিকে অনেকে শক্তিপীঠ বলেন।সেই মতে এখানে দেবীর নাভি পরেছিল।দেবী সর্বমঙ্গলা ও ভৈরব শিব/মহাদেব ।[1]
কিংবদন্তি
কথিত আছে, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে শহর বর্ধমানের উত্তরাংশে বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ায় বাগদিরা পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে একটি শিলামূর্তি পেয়েছিল। সেটিকে প্রস্তর খণ্ড ভেবে তার উপরে শামুক–গুগলি থেঁতো করতো। সেই সময় দামোদর নদ লাগোয়া চুন তৈরির কারখানার জন্য শামুকের খোলা নেওয়ার সময় শিলামূর্তিটি চলে যায় চুন ভাটায়। তখন শামুকের খোলের সঙ্গে শিলামূর্তিটি পোড়ানো হলেও মূর্তির কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে সেই রাতে স্বপ্নাদেশ পাওয়া মাত্র বর্ধমান মহারাজা সঙ্গম রায় শিলামূর্তিটিকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন। পরবর্তীকালে ১৭০২ সালে টেরাকোটার নিপুণ কারুকার্য খচিত সর্বমঙ্গলা মন্দির নির্মাণ করেন মহারাজাধিরাজ কীর্তিচাঁদ মহতাব। [2] ক্রমে মূল মন্দিরের আশেপাশে গড়ে ওঠে নাট মন্দির, শ্বেত পাথরের তৈরি রামেশ্বর ও বাণেশ্বর নামে দুটি শিব মন্দির। কালো পাথরে তৈরি হয় মিত্রেশ্বর, চন্দ্রশ্বর ও ইন্দ্রেশ্বর নামে আরও তিনটি শিব মন্দির।
পুজো
সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নিত্যপুজো ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজবংশের শেষ যুবরাজ উদয়চাঁদ মহতাব ট্রাস্ট কমিটি গঠন করেন।তাঁর পুজো প্রায় সাড়ে তিনশো বছরেরও বেশি পুরোনো।[2] সর্বমঙ্গলার ঘট প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে শারদোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়ে থাকে পূর্ব বর্ধমানে।কুমারি পুজাও হয়।[2] বাদ্যযন্ত্র সহকারে বিশাল শোভাযাত্রায় ঢল নামে পুণ্যার্থীদের। দেবী সর্বমঙ্গলার ঘটপূর্ণ জল নিয়ে ঘোড়ার গাড়ি নানা পথ পরিক্রমা করেন । শোভাযাত্রা সর্বমঙ্গলা মন্দিরে এসে পৌঁছতেই বাদ্যযন্ত্র, শাঁখ, ঘণ্টা, কাঁসি ও হুলুধ্বনির মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজোর ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয়।[1]
মন্দির
বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির অবিভক্ত বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দির।[1] প্রাচীন এই মন্দির বর্ধমানের মানুষের কাছে পবিত্র তীর্থস্থান। দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের সমাগম হয় এই মন্দিরে।মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা ভেবে প্রাচীন এই মন্দিরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
মূর্তি
এখানে সর্বমঙ্গলা দেবীর মূর্তি কষ্টি পাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী ‘মহিষমর্দিনী’ মহালক্ষীরূপিণী।[2]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.