শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
সর্দি-কাশি
মানবদেহের ঊর্ধ্ব শ্বাসপথে (নাক, গলবিল ও অস্থিগহ্বরে) ভাইরাসের সংক্রমণজনিত অতিসাধারণ ও স্বল্পস্ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা বা সর্দি-জ্বর এক ধরনের ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগ যা মানবদেহের ঊর্ধ্ব শ্বাসপথ, বিশেষ করে নাকে আক্রমণ করে।[৭] এছাড়া এই রোগে গলবিল, অস্থিগহ্বর ও স্বরযন্ত্রও আক্রান্ত হতে পারে।[৫] ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার দুই দিন পর বা তারও আগেই এই রোগের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি প্রকাশ পেতে পারে।[৫] উপসর্গগুলি মধ্যে আছে কাশি, গলাব্যথা, নাসাস্রাব (নাক দিয়ে সর্দি-পানি পড়া), হাঁচি, মাথাব্যথা ও জ্বর।[২][৩] সর্দিকাশিতে অসুস্থ ব্যক্তি সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠে,[২] তবে কিছু উপসর্গ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত বজায় থাকতে পারে।[৬] সর্দিকাশির হওয়া ব্যক্তির অন্য কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকলে তার নিউমোনিয়া অর্থাৎ ফুসফুস প্রদাহ হতে পারে।[২]
Remove ads
এ পর্যন্ত দুই শতেরও বেশি শ্রেণীর ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে, যেগুলি সর্দি-কাশি সৃষ্টি করতে পারে, তবে এদের মধ্যে রাইনোভাইরাস (অর্থাৎ "নাসাভাইরাস") সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।[১১] ভাইরাস বাতাস দ্বারা বাহিত হয়ে আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকে অন্য ব্যক্তির দেহে সরাসরি ছড়াতে পারে; আক্রান্ত রোগী কোনও বস্তু ধরলে সেখানে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে, এবং আরেকজন ব্যক্তি সেই বস্তুটি হাতে ধরে পরবর্তীতে মুখে বা নাকে হাত দিলে ভাইরাস পরোক্ষভাবে আক্রমণ করতে পারে।[২] শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে গমনাগমন করলে, ভালো ঘুম না হলে এবং মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি থাকে।[৫] সর্দি-কাশির উপসর্গগুলি ভাইরাসের দ্বারা দেহকলা আক্রমণ বা ধ্বংসের কারণে সৃষ্ট হয় না, বরং মূলত এগুলি ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহের অনাক্রম্যতন্ত্র তথা প্রতিরক্ষাতন্ত্রের প্রতিক্রিয়ার ফসল।[১২] সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গের সাথে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণের কারণে সৃষ্ট রোগের উপসর্গের মিল থাকলেও ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলির তীব্রতা অনেক বেশি হয়।[৫] অধিকন্তু ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে নাক দিয়ে পানি পড়ার সম্ভাবনা সাধারণত কম থাকে।[১৩]
সর্দি-কাশির জন্য কোনও টিকা নেই।[২] সর্দি-কাশি প্রতিরোধের প্রধান উপায় হল হাত ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখা, আধোয়া হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করা, এবং সর্দি-কাশিতে অসুস্থ ব্যক্তির থেকে দূরে থাকা।[২] রোগ প্রতিরোধমূলক মুখোশ পড়লে উপকার হয়, এমন কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে।[১৪] সর্দি-কাশির জন্য কোনও চিকিৎসা বা ঔষধও নেই, তবে এর উপসর্গগুলি প্রশমন করা সম্ভব।[২] কিছু চিকিৎসা গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী উপসর্গগুলি প্রকাশ পাবার ঠিক পরপরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দস্তাভিত্তিক ঔষধ ব্যবহার করলে উপসর্গের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব উভয়ই হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।[৮] স্টেরয়েডহীন প্রদাহনিরোধী ঔষধ (NSAID) যেমন আইবুপ্রোফেন প্রদাহজনিত ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।[৯] তবে ব্যাকটেরিয়া নিরোধক তথা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত নয়।[১৫] আর কফের ঔষধের কার্যকারিতার তেমন ভাল প্রমাণ নেই। [৫][১৬]
সর্দি-কাশি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ঘনঘন সংঘটিত সংক্রামক ব্যাধি।[১৭] গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতি বছরে দুই থেকে তিন বার এবং একটি শিশু প্রতি বছরে গড়ে ছয় থেকে আটবার সর্দি-কাশিতে ভুগতে পারে।[৭][১০] তবে শীতকালে এই সংক্রমণটি বেশি পরিলক্ষিত হয়।[২] এ কারণেই হয়ত বাংলায় এটিকে "সর্দি-কাশি" বা "ঠাণ্ডা-কাশি" বলে। "সর্দি" কথাটি একটি ফার্সি শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ "ঠাণ্ডা ভাব"। সমগ্র মানব ইতিহাস জুড়েই সর্দি-কাশির সংক্রমণ হয়ে এসেছে।[১৮]
Remove ads
লক্ষণ ও উপসর্গ

সর্দিজনিত লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কাশি, সর্দি, হাঁচি, অনুনাসিক জঞ্জাল এবং গলা ব্যথা, কখনো কখনো পেশী ব্যথা, ক্লান্তি, মাথা ব্যথা এবং ক্ষুধা হ্রাস পায়। [১৯] প্রায় ৪০% ক্ষেত্রে গলাতে কালশিটে এবং ৫০% ক্ষেত্রে কাশি থাকে৷[৭] যখন এই সমস্যা ঘটে তখন পেশী ব্যথা প্রায় অর্ধেক সময় থাকে।[৩] প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে সাধারণত জ্বর লক্ষণ হিসাবে দেখা যায় না। তবে এটি শিশু এবং অল্প বয়স্ক শিশুদের মধ্যে এটি সাধারণ লক্ষণ। [৩] কাশি সাধারণত সহনীয় ইনফ্লুয়েঞ্জার তুলনায় হালকা হয়।[৩] সাধারণত কাশি এবং জ্বর প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা হওয়ার বড় সম্ভাবনা নির্দেশ করে। দুইটি এক না হলেও দুটি অবস্থার মধ্যে অনেকটাই মিল রয়েছে৷ [২০] এই সমস্যা সাধারণত সর্দি সৃষ্টিকারী বেশ কয়েকটি ভাইরাস সংক্রামিত সংক্রমণ থেকে হতে পারে৷[২১][২২]
Remove ads
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads