সওয়াই মাধোপুর জেলা
রাজস্থানের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সওয়াই মাধোপুর জেলা উত্তর-পশ্চিম ভারতে অবস্থিত রাজস্থান রাজ্যের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত একটি জেলা৷ জেলাটির জেলাসদর সওয়াই মাধোপুর শহরে অবস্থিত, এবং এটিই ঐ জেলার মুখ্য ও বৃহত্তম শহর৷ জেলাটি ভরতপুর বিভাগের অন্তর্গত ও বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের দায়িত্বে৷ [২] জেলাটিতে রয়েছে ইতিহাসখ্যাত রণথম্বোর দুর্গ ও রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান৷
সওয়াই মাধোপুর জেলা | |
---|---|
রাজস্থানের জেলা | |
![]() রাজস্থান রাজ্যে সওয়াই মাধোপুর জেলার অবস্থান | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | রাজস্থান |
বিভাগ | ভরতপুর বিভাগ |
সদর | সওয়াই মাধোপুর |
সরকার | |
• জেলা সমাহর্তা | কে সি বার্মা |
আয়তন | |
• সর্বমোট | ৪,৪৯৮ বর্গকিমি (১,৭৩৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• সর্বমোট | ১৩,৩৫,৫৫১[১] |
জনতত্ত্ব | |
• সাক্ষরতার হার | ৬৫.৩৯ |
• লিঙ্গানুপাত | ৮৯৭ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
ওয়েবসাইট | sawaimadhopur |
ভূগোল
সওয়াই মাধোপুর জেলার সর্বমোট ক্ষেত্রফল ৪,৪৯৮ বর্গকিলোমিটার৷ জেলাটির উত্তর-পূর্ব দিকে রয়েছে কারৌলি জেলা, উত্তর দিকে রয়েছে দৌসা জেলা, পশ্চিম দিকে রয়েছে টঙ্ক জেলা এবং দক্ষিণ দিকে রয়েছে বুন্দি ও কোটা জেলা৷ জেলাটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশ সীমান্ত বরাবর রয়েছে চম্বল নদী এবং মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের শিউপুর জেলা৷ [৩]
বিভাগ
সওয়াই মাধোপুর জেলাতে রয়েছে আটটি তহশিল৷ এগুলি হলো:[৪]
- সওয়াই মাধোপুর
- চৌথ কা বারওয়াড়া
- খণ্ডার
- বোনলি
- মালার্না দুঙ্গার
- গঙ্গাপুর সিটি
- উজিরপুর
- বামনবাস
বিভাগ | ভূমি বিবরণী মণ্ডল (ব্লক) |
পাটোয়ার মণ্ডল | মোট গ্রাম |
---|---|---|---|
সওয়াই মাধোপুর | ৭ | ৪৮ | ১৫২ |
চৌথ কা বারওয়াড়া | ৩ | ২৪ | ৬৪ |
খণ্ডার | ৬ | ৩৭ | ১২৮ |
বোনলি | ৪ | ৩১ | ১০৪ |
মালার্না দুঙ্গার | ৩ | ২৪ | ৭৬ |
গঙ্গাপুর সিটি | ৩ | ২৪ | ৮৫ |
উজিরপুর | ৩ | ২৪ | ৪৪ |
বামনবাস | ৭ | ৫৫ | ১৫০ |
জেলা বিচারালয়
১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে সওয়াই মাধোপুর জেলা বিচারালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল৷ শ্রী ও. পি. জৈন সর্বপ্রথম এই জেলা বিচারালয়ের ও বৈঠকীয় আদালতের বিচাপতিরূপে দায়ভার গ্রহণ করেন৷ বর্তমানে এই বিচারালয়ের বিচারবৈঠক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রয়েছেন শ্রী অজয় কুমার ওঝা মহাশয়৷ জেলা আদালতটিতে মোট দশজন বিচারপতি রয়েছেন৷
অর্থনীতি
২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের গ্রামীণ বিকাশ এবং পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রণালয় সওয়াই মাধোপুর জেলাটিকে ভারতের তৎকালীন ৬৪০ টি জেলার মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া আড়াইশো টি জেলার তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে। [৫] এরকম পিছিয়ে পড়া জেলার তকমা প্রাপ্ত রাজস্থানের বারোটি জেলার মধ্যে সওয়াই মাধোপুর অন্যতম। জেলা টি ব্যাকওয়ার্ড রিজিওন গ্রান্ট ফান্ড বা বিআরজিএফ এর আওতাভুক্ত।[৫]
জনতত্ত্ব
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ২,৬৪,৬৩২ | — |
১৯১১ | ২,৬২,৫৭৫ | −০.০৮% |
১৯২১ | ২,৩৬,১১৫ | −১.০৬% |
১৯৩১ | ২,৫৯,৮৫২ | +০.৯৬% |
১৯৪১ | ২,৯৩,৬৪৮ | +১.২৩% |
১৯৫১ | ৩,২৯,২০৬ | +১.১৫% |
১৯৬১ | ৪,২১,০৬৩ | +২.৪৯% |
১৯৭১ | ৫,৩৭,৬৭৫ | +২.৪৭% |
১৯৮১ | ৬,৮৮,৩৬০ | +২.৫% |
১৯৯১ | ৮,৭৫,৭৫২ | +২.৪৪% |
২০০১ | ১১,১৭,০৫৭ | +২.৪৬% |
২০১১ | ১৩,৩৫,৫৫১ | +১.৮% |
উৎস:[৬] |
২০১১ খ্রিস্টাব্দের ভারতের জনগণনা অনুসারে সওয়াই মাধোপুর জেলার জনসংখ্যা 1,335,551 জন,[৭] যা পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাস[৮] বা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। [৯] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে এই জেলাটির স্থান ৩৬২ তম। [৭] জেলাটির জনঘনত্ব ২৯৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৭৭০ জন/বর্গমাইল)।[৭] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই জায়গাটি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১৯.৭৯ শতাংশ।[৭] সওয়াই মাধোপুর জেলাতে প্রতি হাজার পুরুষে ৮৯৪ জন নারী বসবাস করেন। [৭] জেলাটির সর্বমোট সাক্ষরতার হার ৬৫.৪৯ শতাংশ যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮১.৫১ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৪৭.৫১ শতাংশ।[৭]
২০১১ খ্রিস্টাব্দের ভাষাভিত্তিক জনগণনা অনুযায়ী এই জেলাটি ৯৬.৪৮ শতাংশ লোক হিন্দিভাষী, যেখানে ৩.৬৮ শতাংশ লোক নিজেদের মাতৃভাষা রাজস্থানী ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত কোন একটি ভাষা বলে উল্লেখ করেছেন এবং ৩.০৮ শতাংশ লোক উর্দুভাষী। [১০]
অনুষ্ঠান ও মেলা
সারাংশ
প্রসঙ্গ
গণেশ চতুর্থীর মেলা
সওয়াই মাধোপুরে গণেশ চতুর্থীর মেলা সর্ববৃহৎ মেলা। রণথম্বোর দুর্গে অবস্থিত গণেশ মন্দিরটিকে উপলক্ষ করে ভাদ্রমাসের শুক্লা চতুর্থী দিন গনেশ পূজা আয়োজন করা হয়। রাজস্থানের বিভিন্ন জেলা এবং আশেপাশের রাজ্য থেকে একাধিক পুণ্যার্থী এই মেলায় আসেন। এখানে প্রত্যেক বছর প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ লোকের জনসমাগম হয় এবং মেলাটি থাকে তিন দিনের জন্য।
চৈতি মাতার মেলা
চৌথ বা চৈতি মাতার মন্দিরটি রয়েছে সওয়াই মাধোপুর শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চৌথ কা বারওয়ারা শহরে। এখানের মেলাটি মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্থী তিথিতে হয়। রাজস্থান এবং অন্যান্য অনেক জেলা থেকে এখানে প্রচুর লোক সমাগম হয়।
শিবরাত্রির মেলা
রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে এবং সওয়াই মাধোপুর শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে কোটা-জয়পুর রেলপথে শিবাড় স্টেশন অভিমুখে ইশর্দা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ঘুষ্মেশ্বর মন্দির ও রণথম্বোর জাতীয় উদ্যান৷ প্রতিবছর শিবরাত্রির দিন এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। [১১][১২]
রামেশ্বর ধাম
সওয়াই মাধোপুর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে বনাস এবং চম্বল নদীর মিলন স্থলে রয়েছে রামেশ্বর মন্দির। এখানে একটি শিবমন্দির রয়েছে যাকে ঘিরে প্রতি বছর শিবরাত্রির দিন একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের বহু লোক এখানে মেলা দেখতে আসেন।
কল্যাণজি মেলা
প্রতি বছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমার দিন গঙ্গাপুরে কল্যাণজির মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটি সাতদিনব্যাপী হয়ে থাকে এবং প্রচুর জনসমাগমও হয়।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.