শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত

বাংলা ভাষায় লেখা হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত বাংলা ভাষায় লেখা একটি হিন্দু ধর্মগ্রন্থমহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৮৫৪-১৯৩২) পাঁচ খণ্ডে এই বইটি রচনা করেন। এই বইতে উনিশ শতকের হিন্দু ধর্মগুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের কথোপকথন ও কার্যকলাপের বিবরণী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কথামৃত-এর পাঁচটি খণ্ড যথাক্রমে ১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮, ১৯১০ ও ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয়। বইটিকে বাংলা সাহিত্যের একটি ধ্রুপদি গ্রন্থ[] বলে মনে করা হয়। ভক্ত শাক্তরা বইটিকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দেন।[]

দ্রুত তথ্য লেখক, দেশ ...
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত
Thumb
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃতের ৫ খণ্ডের প্রচ্ছদ
লেখকমহেন্দ্রনাথ গুপ্ত
দেশভারত
ভাষাবাংলা
ধরনআধ্যাত্মিকতা
প্রকাশককথামৃত ভবন
প্রকাশনার তারিখ
১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮, ১৯১০ ও ১৯৩২
বন্ধ
Thumb
রামকৃষ্ণ পরমহংসের গৃহী ভক্ত মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত গ্রন্থের রচয়িতা।

রচনাপদ্ধতি ও ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
রামকৃষ্ণ পরমহংস
Thumb
দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে রামকৃষ্ণ পরমহংসের বাসকক্ষের দরজা। এই কক্ষেই বসেই মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত রামকৃষ্ণের বাণী শুনতেন।
Thumb
কথামৃত-এর অধিকাংশ অধ্যায়ের ঘটনাস্থল দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি

মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত (যিনি "শ্রীম" ছদ্মনামে কথামৃত রচনা করেন) ছিলেন কলকাতার রিপন কলেজের অধ্যাপক। কলকাতার একাধিক স্কুলে তিনি শিক্ষকতাও করেছিলেন। তের বছর বয়স থেকে তিনি ডায়েরি লিখতেন।[] ১৮৮২ সালে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সঙ্গে তার আলাপ হয়। রামকৃষ্ণের ব্যক্তিত্বে আকর্ষিত হয়ে মহেন্দ্রনাথ তার কথোপকথন ও কার্যকলাপের স্টেনোগ্রাফিক রেকর্ড রাখতে শুরু করেন নিজের ডায়েরিতে। এই রেকর্ডটিই পরবর্তীকালে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত নামক বইয়ের আকার নেয়।[][] প্রথম দিকে মহেন্দ্রনাথ যখন ডায়েরি লিখতে শুরু করেছিলেন, তখন তার সেটি প্রকাশের কোনো পরিকল্পনা ছিল না।[][] রচনাপদ্ধতি সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন, "বাড়ি ফেরার পর স্মৃতি থেকে সব কিছু লিখে রাখতাম। মাঝে মাঝে সারা রাতও জেগে থাকতে হত...মাঝে মাঝে টানা সাত দিন বসে থেকে লিখতে হত। গানগুলিকে স্মরণে আনতে হত, কোন ক্রমে সেগুলি গাওয়া হয়েছিল, সেগুলিও মনে করতে হত, সমাধি ও অন্যান্য সব ঘটনার কথা মনে করতে হত।"[] কথামৃতের প্রতিটি পরিচ্ছেদে মহেন্দ্রনাথ তথ্যের পাশাপাশি সময় ও স্থানের উল্লেখ করেছেন।[] "কথামৃত" শব্দটি বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ ভাগবত পুরাণ-এর ১০।৩১।৯ সংখ্যক শ্লোক থেকে গৃহীত।[]

"কথামৃত-এর প্রথম খণ্ড (১৯০২) প্রকাশের আগে আ লিফ ফ্রম দ্য গসপেল অফ শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৯৭) নামে একটি ছোট ইংরেজি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়।[] রামকৃষ্ণ পরমহংসের মৃত্যুর পর তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলে মহেন্দ্রনাথ নিজের ডায়েরিটি প্রকাশের উদ্যোগ নেন। তিনি ভেবেছিলেন এর মাধ্যমে রামকৃষ্ণের চিন্তাভাবনার কথা সঠিকভাবে লোকসমক্ষে প্রচার করা যাবে। ডায়েরি প্রকাশের আগে তিনি সারদা দেবীর অনুমতিও নেন।[] ১৮৯৮ থেকে ১৯০২ সালের মধ্যে তার ডায়েরির অংশবিশেষ বঙ্গদর্শন, উদ্‌বোধন, হিন্দু পত্রিকা, সাহিত্য পত্রিকা, জন্মভূমি প্রভৃতি প্রথম সারির সাময়িকপত্রে প্রকাশিত হয়।[] কিন্তু ‘কথামৃত’ শব্দটি প্রথমে ছিল না। তত্ত্বমঞ্জরী পত্রিকায় নাম ছিল ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণলীলামৃত’ পরে নাম হল ‘ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণপরমহংসের কথা’ ১৮৯৯ থেকে ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃতম্’। [১০] প্রথম চারটি খণ্ড যথাক্রমে ১৯০২, ১৯০৪, ১৯০৮ ও ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয়। মহেন্দ্রনাথের অসুস্থতার জন্য পঞ্চম খণ্ডটির প্রকাশ বিলম্বিত হয়। অবশেষে ১৯৩২ সালে পঞ্চম খণ্ডটি প্রকাশিত হয়।[১১] ১৯৩২ সালে মারা যাওয়ার আগে মহেন্দ্রনাথ ভেবেছিলেন ছয় বা সাতটি খণ্ড পর্যন্ত প্রকাশের পর তিনি গোটা বইটির বিষয়বস্তু কালানুক্রমিকভাবে সাজাবেন।[][১১]

শ্রীম কথিত রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জীবনের দিনপঞ্জি, কথোপকথন, ধর্মোপদেশের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ (১৮৮২ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ১৮৯৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের) যেমন বইটিতে লিপিবদ্ধ হয়েছে, তেমনই সমকালীন বহু মনীষীর সঙ্গে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের বাক্যালাপ ও সাক্ষাতকারের বিবরণ, বহু ধর্মসঙ্গীত, পরমহংসদেব কথিত গল্প ও উপদেশাবলী বইটিকে অমরত্ব দিয়েছে।

গ্রন্থকার ছদ্মনামের অন্তরালে নিজ ব্যক্তিত্বকে অবলুপ্ত করে পরমহংসদেবের জীবন ও চরিতকথা অসামান্য নৈপুণ্যের সাথে তুলে ধরেছেন।

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.