ল্যান্ডিং গিয়ার হলো বিমান বা মহাকাশযানের নিচে অবস্থিত একটি অবকাঠামো যেটি বিমান বা মহাকাশযান উড্ডয়ন ও অবতরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। বিমানের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি উড্ডয়ন ও অবতরণ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। পূর্বে কিছু কিছু নির্মাতা যেমন গ্লেন এল. মার্টিন কোম্পানির কাছে এটি অ্যালাইটিং গিয়ার নামে পরিচিত ছিল। [1]

Thumb
একটি বোয়িং ৭৪৭ এর প্রত্যাহারযোগ্য প্রধান অবতরণ গিয়ার

বিমানের ক্ষেত্রে, যখন বিমান উড্ডয়ন করে না তখন ল্যান্ডিং গিয়ার কোনো ক্ষতি ছাড়াই বিমানকে মাটিতে স্থির রাখে, উড্ডয়নে সহায়তা করে, অবতরণ ও চলাচলে সহায়তা করে। সাধারণত চাকা ব্যবহৃত হয় কিন্তু স্কিড, স্কি, ফ্লট অথবা এগুলোর সমন্বয়ে এবং অন্যান্য উপাদান ব্যবহৃত হয় পৃষ্ঠতল এবং যেখানে বিমান পরিচালিত হবে অথবা যে পৃষ্ঠে বিমান চলাচল করবে তার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। দ্রুতগামী বিমানে সাধারণত সংকোচনশীল অবকাঠামো ব্যবহার করা হয় যেটা উড্ডয়নের সময় ভাঁজ করে রাখা হয় যাতে বায়ুর ঘর্ষণ বা বায়ুর বাধা কমানো যায়।

মহাকাশ উড্ডয়ন যন্ত্র এবং মহাকাশযানের ক্ষেত্রে, ল্যান্ডিং গিয়ার সাধারণত এমনভাবে নকশা করা হয় যাতে এটা উড্ডয়নের পরে যানটাকে অবলম্বন করে থাকে এবং এটা সাধারণত উড্ডয়ন ও ভূমিতে চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হয় না।

বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার

বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার সাধারণত সজ্জিত থাকে সাধারণ ঝাঁকুনি প্রতিরোধকযুক্ত চাকা দ্বারা, অথবা আরো আধুনিক বায়ু/তেল ওলিও স্ট্রাটস দ্বারা, রানওয়ে এবং রুক্ষ্ম ভূমিতে অবতরণের জন্য। কিছু বিমান বরফে অবতরণের জন্য স্কি অথবা পানিতে অবতরণের জন্য ফ্লোটস, এবং/অথবা স্কিড অথবা পন্টুন (হেলিকপ্টার) দ্বারা সজ্জিত থাকে।

এটার জন্য ব্যয় হয় এমটিওডব্লিউ এর ২.৫ থেকে ৫% অংশ এবং বিমান তৈরির মোট খরচের ১.৫ থেকে ১.৭৫% অংশ কিন্তু বিমানের কাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণের ২০% খরচ হয় এটার জন্য। প্রতিটি চাকা ধারণ করতে পারে ৩০ টন (৬৬,০০০ পাউন্ড) ভর, প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ কি.মি বেগে ছুটতে পারে, ৫০০,০০০ কি.মি. (৩১০,০০০ মাইল) এর বেশি গড়াতে পারে, এটার আছে ২০,০০০ ঘণ্টা পূনর্গঠন সময় এবং এর জীবনকাল ৬০,০০০ ঘণ্টা বা ২০ বছর। [2] নিম্ন অবকাঠামো সাধারণত ৪-৫% উড্ডয়ন ভর নেয় যেটা ৭% পর্যন্ত পৌছতে পারে।

গিয়ারের পুনর্বিন্যাস

চাকাযুক্ত নিম্ন অবকাঠামো সাধারণত দুই ধরনের:

  • গতানুগতিক বা ‘টেইলড্রাগার’ গিয়ার, যেখানে দুইটি প্রধান চাকা থাকে বিমানের সামনের দিকে ‍এবং একটি, ছোট, চাকা অথবা স্কিড থাকে পিছনের দিকে। [3]
  • তিন চাকা বিশিষ্ট গিয়ার, যেখানে ডানার নিচে দুইটি প্রধান চাকা (অথবা চাকার সমষ্টি) থাকে এবং একটি তৃতীয় ছোট চাকা নাকের নিচে থাকে।

প্রথম প্রবর্তনের যুগে টেইলড্রাগার বিন্যাস ছিল সাধারণ ঘটনা, যেখানে প্রপেলার এর জন্য বেশি জায়গার দরকার হতো। সাম্প্রতিক আধুনিক বিমানে তিন চাকা বিশিষ্ট গিয়ার থাকে। টেইলড্রাগার গিয়ার দিয়ে অবতরণ ও উড্ডয়ন কঠিন ছিল ( কারণ এটার গঠন ছিল সাধারণত পরিবর্তনশীল, সেটা ছিল, চলাচল রেখা বরাবর সোজা একটি ছোট বিভাজন যেটা নিজেকে সঠিক করার পরিবর্তে ঝোঁক বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল), এবং সাধারণত দরকার হতো বিশেষ বিমান প্রশিক্ষণের। মাঝে মাঝে বিমানে তিন চাকা বিশিষ্ট গিয়ার এর সাথে একটি ছোট লেজ চাকা বা স্কিড যোগ করা হতো, যদি কোন কারণবশত উড্ডয়নের সময় লেজ কাজ না করে।

কনকর্ড বিমানে, উদাহরণ হিসেবে, সংকোচনশীল “বাম্পার” চাকা ছিল, যখন উড্ডয়ন করে তখন ডেল্টা উইংড বিমানের বেশি বাকানো কোণের মত মনে হয়। সকল বৃহৎ বোয়িং WWII বোম্বার, শক্তিশালী বি-২৯ বোমারু বিমান, এবং ১৯৬০ সালে অবমুক্ত হওয়া বোয়িং ৭২৭ ট্রাইজেট বিমান প্রতিটিতে আছে সংকোচনশীল লেজ বাম্পার। কিছু বিমানে গতানুগতিক সংকোচনশীল ল্যান্ডিং গিয়ার এর সাথে নির্দিষ্ট করা টেলহুইল, যেটি গতিকে সর্বনিম্ন করে ( টেইল হুইল তার কাঠামো দ্বারা অধিকাংশ বায়ুপ্রবাহকে আড়াল করে) এবং কিছু ক্ষেত্রে  এমনকি মসৃণভাবে চলাচলের উন্নতি করে।

তথ্যসূত্র

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.