বাংলাদেশের লালমনিরহাট অবস্থিত একটি বিদ্যালয় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত সহশিক্ষা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত একটি বিদ্যালয় (১ম থেকে ১০ম শ্রেণী)।[১] ১৯১৯ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টি উত্তরবঙ্গ তথা সমগ্র বাংলাদেশের প্রাচীন বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে বাংলা মাধ্যমে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান করা হয়। লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে আসন খালি থাকার শর্তে সকল শ্রেণীতে ছাত্র ভর্তি করা হয়ে থাকে। বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংখ্যা ৫২ জন এবং প্রায় ১৬০০ জন শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে থাকে।[২] বিদ্যালয়ের কোড : ৭২৫০
লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
![]() | |
থানা রোড, লালমনিরহাট | |
স্থানাঙ্ক | ২৫°৫৪′৫৯″ উত্তর ৮৯°২৬′৫৩″ পূর্ব |
তথ্য | |
ধরন | সরকারি |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ (জাতীয়করণ ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ) |
প্রতিষ্ঠাতা | স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর |
শিক্ষাবিষয়ক কর্তৃপক্ষ | মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর |
বিভাগ | প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল |
ইআইআইএন | ১২২৯০১ |
শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠান নং. | শিক্ষা অধিদপ্তর জাতীয় শিক্ষা অধিদপ্তর |
প্রধান শিক্ষক | মো. আবুল কালাম আজাদ |
কর্মকর্তা | ১০০(প্রায়) |
শ্রেণি | শ্রেণী ১-১০ |
লিঙ্গ | বালক |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | প্রায় ১৬০০ |
ভাষা | বাংলা |
ডাকনাম | LGHS |
বিদ্যালয়টি লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার থানা রোডে অবস্থিত। এর বিপরীতে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। লালমনিরহাট জেলা ডাকঘর ও লালমনিরহাট সদর থানার নিকটবর্তী।
তৎকালীন ব্রিটিশ আমলের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উদ্যোগে ১৯১৯ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তখন বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল গণেশ নারায়ণ করনেশন ইন্সিটিউট নামে। ১৯২২ সালে বিদ্যালয়টি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্ত হয় এবং এর নতুন নামকরণ করা হয় এইচ. ই. স্কুল। পরবর্তীতে রেলওয়ের ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারদের তত্ত্বাবধায়নে বিদ্যালয় ভবনের কাজ শুরু হয় এবং রেলওয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
১৯২৪ সালে এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রথম মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং স্বর্গীয় কৃষ্ণ মোহন বর্মা প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন নৃসিংহ প্রসাদ সিদ্ধার্থ মহাশয়। পরবর্তীতে ১৯২৮ সালে শ্রীশ চন্দ্র সান্যাল নামের একজন প্রতিভাবান শিক্ষক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময় তার অধীনে বিদ্যালয়টি উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ১৯৫৮ সালে মজিবর রহমান খন্দকার প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করেন এবং ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করেন। সে সময় বিদ্যালয়টি লালমনিরহাট মডেল হাইস্কুল নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৮০ সালের পহেলা জানুয়ারী লালমনিরহাট মহকুমা গঠিত হলে নবগঠিত মহকুমার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে এই বিদ্যালয়টির জাতীয়করণের দাবী ওঠে। ১৯৮১ সালের ৪ এপ্রিল এটি জাতীয়কণ করা হয়।
২০১০ সাল থেকে বিদ্যালয়টিতে দ্বৈত শিফ্ট চালু হয়। ২০১০ সালে শুধুমাত্র ১ম শ্রেনীতে এবং ২০১১ থেকে সকল শ্রেণিতে প্রভাতী ও দিবা দুইটি শিফ্টে পাঠদান শুরু হয়।[২]
প্রভাতি শিফ্ট | দিবা শিফ্ট |
---|---|
ক্লাস শুরুঃ সকাল ৭ টা ১৫ মিনিট | ক্লাস শুরুঃ দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট |
ক্লাস শেষঃ দুপুর ১১ টা ৪৫ মিনিট | ক্লাস শেষঃ বিকেল ৪ টা ৩০ মিনিট |
এ স্কুলের লাইব্রেরি ছিল খুব প্রসিদ্ধ। ব্রিটিশ আমলের তৈরি। অনেক মূলবান বই ছিল। জাতীয়করণের সময়ে লাইব্রেরিয়ানের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় এটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৬ সালে হেডমাস্টার সুরেশ চন্দ্রের আমলে সহ শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম এটি পুনরায় চালু করেন। তখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি বই ছিল। তিনি ২০১৬ সালে বদলি হয়ে গেলে লাইব্রেরিটি পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়।
বিদ্যালয়টি খেলাধুলায় বারাবরই কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে এসেছে। ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, কাবাডি ইত্যাদি খেলায় এই স্কুলের ছাত্রদের সাফল্য চোখে পড়ার মত। এই স্কুলের ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান লিপু ইয়ং টাইগার্স জাতীয় স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-এ একাই সর্বমোট ৩২৫ রান করেন যা বয়সভিত্তিক এবং জাতীয় স্কুল ক্রিকেটের সীমিত ওভারের যেকোনো প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ও দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।[৩]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.