রবীন্দ্র জৈন
ভারতীয় সঙ্গীত রচয়িতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রবীন্দ্র জৈন (২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ – ৯ অক্টোবর ২০১৫)[১][২] তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের যুক্তপ্রদেশের আলিগড়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভারতীয় সুরকার, গীতিকার এবং নেপথ্য গায়ক ছিলেন। ভারতীয় সঙ্গীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৭০-এর দশকে তার কর্মজীবন শুরু হয়। চোর মাচায়ে শোর (১৯৭৪), গীত গাতা চল (১৯৭৫), চিৎচোর (১৯৭৬) এবং আঁখিয়োঁ কে ঝারোখোঁ সে (১৯৭৮)-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালনা করেন। অনেকগুলো চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্যে সঙ্গীত রচনা করে গেছেন। তবে, রামানন্দ সাগরের রামায়ণের (১৯৮৭) মতো পৌরাণিক ধারাবাহিকে সঙ্গীত রচনার মাধ্যমে বিশেষভাবে পরিচিত লাভ করেন।[৩][৪][৫] শিল্পকলায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী প্রদান করা হয়।
রবীন্দ্র জৈন | |
---|---|
![]() ২০১৫ সালে রাজস্থান সিনেমা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র জৈন। | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৯ অক্টোবর ২০১৫ ৭১) | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা |
|
কর্মজীবন | ১৯৭২–২০১৫ |
দাম্পত্য সঙ্গী | দিব্যা জৈন |
সন্তান | ১ |
প্রারম্ভিক জীবন
রবীন্দ্র জৈন ১৯৪৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তপ্রদেশের আলিগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পণ্ডিত ইন্দ্রমণি জৈন এবং কিরণ জৈন দম্পতির সাত পুত্র ও এক কন্যার মধ্যে তার অবস্থান ছিল তৃতীয়।[৬][৭] তিনি জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন এবং জৈন সম্প্রদায়ভূক্ত ছিলেন। তার পিতা সংস্কৃত পণ্ডিত এবং তার মাতা গৃহিণী ছিলেন।[৩]
ছোটবেলা থেকেই তার সঙ্গীত প্রতিভা লক্ষ করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য পিতা তাকে জি.এল. জৈন, জনার্দন শর্মা এবং নাথু রামের ন্যায় বিশিষ্ট সঙ্গীত সাধকের কাছে পাঠান।[৮] শৈশব থেকেই তিনি মন্দিরে ভজন গাওয়া শুরু করেন।[৯]
কর্মজীবন
রবীন্দ্র জৈন তার কর্মজীবনে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। যেমন- সৌদাগর, চোর মচায়ে শোর, চিৎচোর, গীত গাতা চল, ফকিরা, আঁখিয়োঁ কে ঝারোকোঁ সে, দুলহান ওহি জো পিয়া মন ভায়ে, পহেলি, দো জাসুস, পতি পত্নী অউর ভো (১৯৭৮-এর চলচ্চিত্র), ইনসাফ কা তারাজু, নদীয়া কে পার, রাম তেরি গঙ্গা মেইলি এবং হেনা।[৩]
তিনি বিশেষভাবে কেরালার জশুদাস এবং হেমলতার মতো শিল্পীদেরকে নিয়ে তার গানের কাজ করিয়েছেন।[৩][৯] বাংলা এবং মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় তিনি বহু ধর্মীয় অ্যালবাম তৈরি করেন। রামানন্দ সাগরের রামায়ণ তার কর্মজীবনে উজ্জ্বল মাইলফলক হয়ে ওঠে।[৩][৪] এছাড়াও তিনি শ্রীকৃষ্ণ, আলিফ লায়লা, জয় গঙ্গা মাইয়া, জয় মহালক্ষ্মী, শ্রী ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ, সাই বাবা, জয় মা দুর্গা, জয় হনুমান, সংকট মোচন হনুমান এবং মহাভারতের মতো টিভি ধারাবাহিকের জন্য সঙ্গীত রচনা করেছেন।[৮]
স্বীকৃতি
শিল্পকলায় অসাধারণ অবদানের জন্যে ২০১৫ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে তাকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী প্রদান করা হয়।[১০] ১৯৮৫ সালে তিনি রাম তেরি গঙ্গা মেইলি চলচ্চিত্রের জন্য সেরা সঙ্গীত পরিচালকের ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন।[১১] ভারতীয় সঙ্গীতে তার অবদানের জন্য তিনি আরও বহু সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত হন।[৮]
ব্যক্তিগত জীবন
রবীন্দ্র জৈন, দিব্যা জৈনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির এক পুত্র সন্তান রয়েছে। ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর মুম্বইয়ে একাধিক অঙ্গ বিকলের কারণে তার দেহাবসান ঘটে। তার শবানুষ্ঠানে হেমা মালিনী, রণজিৎ ও সুরজ বার্যত্য উপস্থিত ছিলেন।[১২] প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাকে স্মরণ করে বলেন, “তার বহুমুখী সঙ্গীত প্রতিভা এবং লড়াকু মানসিকতার জন্যে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”[৩]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.