Remove ads
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
যাত্রীবাহী জাহাজ হচ্ছে ব্যবসায়ী জাহাজ, যার প্রাথমিক কাজ সমুদ্রে যাত্রী বহন করা। এই শ্রেণিবিন্যাসের মাঝে কার্গো জাহাজ নেই যা স্বল্প সংখ্যক যাত্রী থাকার বাবস্থা করতে পারে যেমন খুবই সাধারণ সমুদ্রে সর্বসাকুল্যে ১২ জন যাত্রী বহনকারী মালবাহী জাহাজ যার মাল বহনের তুলনায় যাত্রী পরিবহন গৌণ। বিভিন্ন প্রকারের মধ্যে আছে নকশাকৃত বিভিন্ন শ্রেণীর যাত্রী বাহী এবং মালবাহী জাহাজ। কিছুদিন আগে পর্যন্তও পারতপক্ষে সকল সামুদ্রিক লাইনার চিঠি, মাল দ্রুত পরিবহন করতো এবং অন্যান্য কার্গো যাত্রীদের ভ্রমণকারীর মালপত্র বাবস্থাপনার জন্যে সমর্থ ছিল পণ্যসম্ভার রাখা, ভার-উত্তোলন যন্ত্র, কিং পোস্টস অথবা অন্যান্য যন্ত্রের। শুধুমাত্র কিছু দিন আগে সকল ক্রুজ জাহাজ এবং সামুদ্রিক লাইনারের এই ক্ষমতা সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
সাধারণভাবে যখন যাত্রীবাহী জাহাজ সমুদ্র বাণিজ্যের অংশ তখন যাত্রীবাহী জাহাজ সৈন্যবাহী জাহাজ হিসেবেও ব্যবহার করা হয় এবং যখন এই কাজে ব্যবহার করা হয় তখন এদেরকে নৌ জাহাজে উন্নিত করা হয়।
যাত্রীবাহী জাহাজের মধ্যে আছে ফেরি, যেগুলো দিনে অথবা রাতে সমুদ্রের মধ্যে ছোট ভ্রমণের জন্য যাত্রী অথবা যানবাহন পরিবহন করে। (সড়ক অথবা রেল যাই হোক না কেন); সামুদ্রিক লাইনার গুলো সাধারণত যাত্রী অথবা যাত্রীর কার্গো জাহাজ যা যাত্রী এবং প্রায়ই কার্গো পরিবহন করে এবং ক্রুজ জাহাজ প্রায়ই দুতরফা সফরের যাত্রী পরিবহন করে যেখানে সফরটি নিজে এবং জাহাজের আকর্ষণ ও বন্দর দর্শন হচ্ছে এর প্রধান আকর্ষণ।
একটি সামুদ্রিক লাইনার যাত্রীবাহী জাহাজের একটি ঐতিহ্যবাহী ধরন। একদা এরকম লাইনার জাহাজ গুলো পৃথিবীর সকল বসতিপূর্ণ অংশে নিয়মিত চলাচল করতো। উরজাহাজের যাত্রী এবং বিশেষ কার্গো জাহাজ উন্নতির সাথে সাথে লাইন জাহাজ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে তাদের কমে যাওয়ার সাথে আনন্দ ও ফুর্তির কারণে সমুদ্র ভ্রমণ বৃদ্ধি পায় এবং ২০ শতকের শেষের দিকে সামুদ্রিক লাইনার গুলো ক্রুজ জাহাজ গুলোকে স্থান ছেরে দেয় যেহেতু সেগুলো আধিপত্য বিস্তারকারী বড় যাত্রীবাহী জাহাজ যা ১০০ থেকে ১০০০ জন মানুষ বহন করে যার সাথে এর কাজের প্রধান এলাকা উত্তর আটলান্টিক সমুদ্র থেকে ক্যারাবীয় সমুদ্রে পরিবর্তিত হয়।
যদিও কিছু জাহাজের উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্য আছে তবে দুটির নকশার প্রকৃতিতে পার্থক্য দেখা যায়ঃ সামুদ্রিক লাইনার গুলো গুরুত্ব দেয় দ্রুতি এবং ঐতিহ্যবাহী ব্যায়বাহুল্লতার উপর যেখানে ক্রুজ জাহাজ গুলো গুরুত্ব দেয় সুযোগ-সুবিধাকে (সাঁতরানোর পুল, থিয়েটার, বল কক্ষ, কেসিনো, খেলার সুবিধা ইত্যাদি)। এই অগ্রাধিকার গুলো বিভিন্ন নকশা তৈরি করে। এর সাথে সামুদ্রিক লাইনার গুলো আদর্শগত ভাবে তৈরি করা হয়েছিল ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে আটলান্টিক সমুদ্র পারি দেবার জন্য অথবা এর থেকেও দূরে যেমন দক্ষিণ আমেরিকা অথবা এশিয়া যেখানে ক্রুজ জাহাজ গুলো সাধারণত ছোট রাস্তায় চলাচল করে যার মধ্যে তীরের অথবা দ্বীপে বিরতির সুযোগ থাকে।
বেশ কিছু সময় ধরে পুরনো সামুদ্রিক জাহাজ গুলো থেকে ক্রুজ জাহাজ গুলো ছোট ছিল তবে ১৯৮০ এর দিকে এটি পরিবর্তিত হয় যখন নরওয়েজিয়ান ক্যারাবীয়ান লাইনের ডিরেক্টর নাট কলসটার সবচেয়ে বড় জীবিত লাইনার এস এস ফ্রান্স কে নিয়ে আসে এবং তাকে একটি বিশাল ক্রুজ জাহাজে পরিবর্তন করে যার নাম পুনরায় রাখেন এস এস নরওয়ে। এর সফলতা বড় ক্রুজ জাহাজের বাজার প্রদর্শন করে। একই শ্রেণীর আরও বড় জাহাজের নির্দেশ দেয়া হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না সুনারদ লাইনার রানী এলিজাবেথ কে তার সবচাইতে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ এর ৫৬ বছরের শাসন থেকে সিংহাসনচ্যুত না করে। (একটি সিংহাসনচ্যুতী যা একই অবস্থানের আরও অনেক গুলোর সিংহাসনচ্যুতী ঘটায়)।
উভয় আরএমএস রানী এলিজাবেথ ২ (কিউ ই ২) (১৯৬৯) এবং তার উত্তরাধিকারী সুনারদের পতাকাধারী হিসেবে আরএমএস রানী মেরি ২ (কিউ এম ২ ), যা সেবাতে আসে ২০০৪ সালে তা ছিল সংকর নির্মাণ। যেমন অ্যাটলানটিক পাড়ি দেয় এমন সামুদ্রিক লাইনার, তারা দ্রুত এবং মজবুত ভাবে তৈরি কৃত লাইন আটলান্টিক এর তীব্রতা থেকে বাচার জন্য।[1] তবে উভয় জাহাজই এর বাজারে সুযোগ সুবিধা রেখে ক্রুজ জাহাজ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করে নকশাকৃত। রাজকীয় ক্যারিবিয়ান লাইন থেকে কিউ এম ২ বাতিল হয়ে যায় সমুদ্রের স্বাধীনতা দ্বারা যা সবচাইতে বড় তৈরিকৃত যাত্রীবাহী জাহাজ; যাইহোক কিউ এম ২ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক লাইনার এর রেকর্ড ধরে আছে। সমুদ্রের স্বাধীনতা ২০০৯ এর অক্টোবরে বাতিল হয়ে যায় সমুদ্রের মরুদ্যান দ্বারা। [2]
রীতিনীতি এবং বেশি সময় ব্যবহারের জন্য অসামরিক যাত্রীবাহী জাহাজের আকার পরিমাপ করা হয় সহজবোধ্য টনের হিসাবে, যা একটি মাত্রাবিহিন পরিমাণ যা হিসাব করা হয় পুরো জাহাজের আবদ্ধ আয়তনের পরিমাপ করে। গ্রোস টনেজ ওজনের পরিমাপ নয় যদিও এই দুটি ধারণা বিভ্রান্তী ছড়ায়। ওজন পরিমাপ করা হয় সরনের মাধ্যমে, যা সামুদ্রিক জাহাজ পরিমাপের পুরনো পদ্ধতি। নির্দিষ্ট "ওজন" অথবা "সরনের" উপর ভিত্তি করে প্রায়ই একটি যাত্রীবাহী জাহাজকে বর্ণনা করা হয় টনে তবে পরিমাপ কৃত গ্রোস টোনেজ নির্দেশ করে যার এই অর্থে ওজনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।
গ্রোস টনেজকে যাত্রীদের জন্য সবচাইতে গুরুত্ব পূর্ণ পরিমাপ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে যেখানে একটি উঁচু সরণ নির্দেশ করে সমুদ্রে ভালো রাখার সক্ষমতাকে,[3] যেমন প্রতি যাত্রীর জন্য গ্রোস টনেজ – যাত্রী/খালি স্থান অনুপাত – একটি জাহাজের ব্যাপকতার ধারণা প্রদান করে, ক্রুজ জাহাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হিসেবে জাহাজের সুবিধাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। [4][5]
গ্রোস টনেজ সাধারণত সরনের থেকে অনেক বড় মান। এটি সব সময়ের ঘটনা ছিল না; কাজ অনুযায়ী জাহজের প্রকৌশল এবং স্থাপত্তে পরিবর্তন আসে, বড় যাত্রীবাহী জাহাজের গ্রোস টনেজ এর মান বিশাল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে এই ধরনের জাহাজের সরন বারে নি। আরএমএস টাইটানিক এর, তালিকা অনুযায়ী গ্রোস টনেজ হচ্ছে ৪৬,৩২৯ জিআরটি তবে সরণ বলা হয়েছে ৫২,০০০ টনের উপরে,[6] সমকালীন ১০০,০০০ &ndash থেকে ভারী ; ১১০,০০০ জিটি ক্রুজ জাহাজ যারা সরিয়ে থাকে শুধুমাত্র প্রায় ৫০,০০০। একই ভাবে সুনারদ লাইন আরএমএস রানী মেরী এবং আরএমএস রানী এলিজাবেথ প্রায় ৮১,০০০ জিটি তবে সরণ ৮৩,০০০ টন,[7] সরনের ক্ষেত্রে নতুন ১৪৮,৫২৮ জিটি উত্তরসূরি থেকে বেশি পার্থক্য নেই , আরএমএস রানী মেরী ২,[8][9] যার সম্ভাব্য সরণ ধরা হয় প্রায় ৭৬,০০০ টন[10][11] ২০০৯ সালের প্রথম মরূদ্যান শ্রেণীর জাহাজ সাগরের মরুদ্দান সম্পূর্ণ হওয়ার সাথে, ১৯৩০ এর সুনারদ রানী সরনের ডিক দিয়ে ছাড়িয়ে যায় জেহেতু মরূদ্যান জাহাজ গুলোর সরণ ধারণা জরা হয় ১০০,০০০ টন।[12]
যাইহোক গ্রোস টনের পুরনো এবং ঐতিহাসিক পরিমাপে নতুন বড় জাহাজ গুলোর আকৃতিতে আমুল বৃদ্ধি আসে। সাগরের মরূদ্যান এর পরিমাপ ২২৫,০০০ জিটি এর থেকে বেশি যা ১৯৯০ শতকের শেষের দিকের সবচাইতে বড় ক্রুজ জাহজ থেকে দুই গুন বড়।
যাত্রীবাহী জাহাজের দুটি প্রধান ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের প্রয়োজনঃ জাহাজে আরোহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রী জড় করা (...) এবং ত্যাগ করনের নির্দেশ চিহ্ন দেয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ রূপে ত্যাগ করা.[13]
যাত্রীবাহী জাহাজ যেগুলোতে ব্যাকআপ জেনারেটর নেই তারা প্রকৃতপক্ষে কষ্টে ভোগে পানি, শীতলীকরণ এবং পয়নিষ্কাসন বাবস্থা কম থাকার কারণে যখন জরুরী অবস্থা অথবা আগুনের কারণে মূল ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। নাবিকদলের কাছে বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত যন্ত্রপাতির জন্য শক্তি অপ্রাপ্য হয়ে যায়। জাহাজ চালানোর একটি উপযোগী ব্যাকআপ প্রক্রিয়ার অভাবে অশান্ত সমুদ্রে পানির উপর একে মৃত বলা যেতে পারে এবং ফলাফলে জাহাজটি হারিয়ে যায়।[14] ২০০৬ সালের সংশোধিত যাত্রীবাহী জাহাজের নিরাপত্তা মান এই সমস্যাগুলোকে তুলে ধরে এবং যারা এই ক্ষমতা রাখে না তাদেরকে ২০১০ এর জুলাই এর মধ্যে নিরাপদ ভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত আসতে বলা হয়; যাইহোক ২০১৩ সালেও এই ক্ষমতা ছারাই অনেক জাহজ এই সেবা দিয়ে আসছে।[15]
১লা অক্টোবর। ২০১০ এর পর থেকে সাগরে জীবনের নিরাপত্তার আন্তর্জাতিক কনভেনশন (এসওএলএএস) পরামর্শ দেয় যাত্রীবাহী জাহাজ যেগুলো আন্তর্জাতিক পানির উপর চলে সেগুলকে উন্নত করতে হবে নতুবা দাহ্য পদার্থ বাদ দিতে হবে। এটি বিশ্বাস করা হয় ১৯৮০ সালের আগে তৈরিকৃত জাহাজের কিছু মালিক এবং চালকেরা, যেগুলোর উন্নতি অথবা বাতিলের প্রয়োজন ছিল সেগুলো জাহাজকে বিধিনিয়ম সহকারে চালাতে সক্ষম হবে না।[15] ফ্রেড অলসনের কালো রাজপুত্র, ১৯৬৬ সালে তৈরিকৃত এরূপ একটি জাহাজ তবে এটি ভেনিজুয়েলার পানিতে আন্ত দ্বীপের সেবার জন্য বের হয়েছে বলে জানা যায়।[16]
১৯১৪ সালে আর এম এস টাইটানিক এর ডোবার পর আন্তর্জাতিক আইস প্যাট্রোল গঠিত হয় দীর্ঘদিনের বরফের সাথে জাহাজের সংঘর্ষের সমস্যাকে তুলে ধরার জন্য।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.