চুম্বক-উত্তোলিত রেল বা ইংরেজি পরিভাষায় ম্যাগলেভ রেল বলতে চৌম্বক শক্তির মাধ্যমে শূন্যে উত্তোলন করে কোন বস্তুকে চাকা, এক্সেল কিংবা বিয়ারিং ছাড়াই সামনের দিকে চালনা করার একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে যানবাহনকে ভূমি থেকে সামান্য ওপরে উঠিয়ে চৌম্বক শক্তির মাধ্যমেই সামনের দিকে ধাক্কা প্রদান করা হয়। সর্বব্যাপী ব্যবহার করা গেলে চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ি মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থাতে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।[১]

Thumb
একটি অতিপরিবাহী চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ি। ছবিটি ২০০৫ সালের নভেম্বরে জাপানের ইয়ামানাশি জেলা থেকে তোলা।
Thumb
জার্মানির রেল পরীক্ষাগারে একটি চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ি।

ঘর্ষন জনিত সমস্যা না থাকায় সাধারণত চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়িগুলো অন্যান্য চাকাযুক্ত গতানুগতিক রেলগাড়ির চেয়ে অনেক মসৃণ ও শব্দহীনভাবে চলতে পারে। এছাড়া চৌম্বক শক্তির মাধ্যমে এর ভর পরিবর্তিত করার ফলে যেকোন আবহাওয়াতেই এই রেলগাড়ি সর্বোচ্চ গতিবেগে চলতে পারে। যদিও চৌম্বক উত্তোলন পদ্ধতিতে চৌম্বক শক্তির মাধ্যমে বস্তুকে উত্তোলিত করা হয়, তথাপি কোনও কোনও ক্ষেত্রে বস্তুকে সামান্য পরিমাণে অবলম্বন প্রদানের উদ্দেশ্যে যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়িকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখতে খুব একটা বেশি শক্তির প্রয়োজন না হলেও বাতাসের ঘর্ষণ ভেদ করে সামনের দিকে ধাবিত হতেই সিংহভাগ শক্তি ব্যয় হয়।[২] বর্তমানে আধুনিক বৈদ্যুতিক রেলগাড়িগুলি যথেষ্ট গতিতে চলাচল করলেও চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ি আজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতিবেগের সর্বসেরা কীর্তিগুলি ধরে রেখেছে।

প্রচলিত চাকাযুক্ত উচ্চগতিসম্পন্ন রেলগাড়ির সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ির জন্য রেলপথ বানাতে প্রচুর পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। চাকাযুক্ত রেলগাড়ি রেলপথে চলার সময় প্রচুর ঘর্ষণ এবং কম্পনের ফলে এর যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত ও নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য গতানুগতিক রেলগাড়িগুলির উচ্চগতি ধরে রাখতে রেলপথ এবং রেলগাড়ি উভয়ের প্রচুর পরিমাণে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ ব্যপার।[৩] তবে চুম্বক-উত্তোলিত রেলগাড়ির জন্য রেলপথ নির্মাণ ব্যয়সাপেক্ষ হলেও গতানুগতিক রেলগাড়ির তুলনায় এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.