Loading AI tools
মুখ বৈশিষ্ট্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মানুষের নাক হলো মুখের সবচেয়ে প্রসারিত অংশ। এটি শ্বাসযন্ত্র ও ঘ্রাণতন্ত্রের প্রধান অঙ্গ। নাকের হাড়, নাকের কার্টিলেজ এবং নাকের সেপ্টাম দ্বারা নাকের আকৃতি নির্ধারিত হয়। নাকের সেপ্টাম নাকের ছিদ্রগুলোকে পৃথক করে এবং নাকের গহ্বরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে। পুরুষদের নাক গড়ে মহিলাদের নাকের চেয়ে বড় হয়।
মানুষের নাক | |
---|---|
বিস্তারিত | |
ধমনী | স্ফেনোপ্যালাটাইন ধমনী, বৃহৎ প্যালাটাইন ধমনী |
শিরা | ফেসিয়াল শিরা |
স্নায়ু | বাহ্যিক ন্যাসাল স্নায়ু |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | nasus |
টিএ৯৮ | A06.1.01.001 A01.1.00.009 |
টিএ২ | 117 |
এফএমএ | FMA:46472 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
নাকের প্রধান কাজ হচ্ছে শ্বাসক্রিয়া সম্পন্ন করা। নাকের মিউকোসা নাকের গহ্বরের দেয়ালে অবস্থান করে এবং প্যারানাসাল সাইনাস শ্বাসের সময় নেওয়া বায়ুকে উষ্ণ এবং আর্দ্র করে নাকের ভিতরে প্রয়োজনীয় কন্ডিশনিং বজায় রাখে। ন্যাসাল কঙ্কা হলো গহ্বরের দেয়ালে অবস্থিত শেলের মতো হাড় যেগুলো এই প্রক্রিয়ায় একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে। নাকের মধ্যে নাকের মিউকাস দ্বারা বাতাস ফিল্টার হয় এবং এর ফলে নাকে প্রবেশকৃত অপ্রয়োজনীয় কণাগুলিকে ফুসফুসে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। হাঁচির মাধ্যমে নাক থেকে অবাঞ্ছিত কণাগুলি বের হয়ে যায়। অ্যারোসল হাঁচি প্রক্রিয়াকে বাঁধা দিতে পারে।
নাকের আরেকটি প্রধান কাজ হল ঘ্রাণ এবং গন্ধের অনুভূতি। উপরের নাক গহ্বরের এপিথেলিয়ামে ঘ্রাণের জন্য সংবেদী বিশেষ ঘ্রাণকোষ রয়েছে।
বেশ কয়েকটি অস্থি এবং তরুণাস্থি নাকের কাঠামো এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামো তৈরি করে। ত্বক, এপিথেলিয়া, শ্লেষ্মা ঝিল্লি, পেশী, স্নায়ু এবং রক্তনালীর মতো নরম টিস্যুও নাকের গঠনে অংশ নেয়। ত্বকে সেবেসিয়াস গ্রন্থি রয়েছে, এবং শ্লেষ্মা ঝিল্লিতে নাকগ্রন্থি রয়েছে। অস্থি এবং তরুণাস্থি নাকের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর জন্য শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করে। বেশ কয়েকটি পেশী রয়েছে যা নাকের নড়াচড়ার সাথে জড়িত। তরুণাস্থি, নাকের পেশী নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নাকে নমনীয়তা দেয় যাতে বায়ুপ্রবাহ পরিবর্তন করা যায়।[1]
ম্যাক্সিলা, ফ্রন্টাল অস্থি এবং কয়েকটি ছোট অস্থির সমন্বয়ে নাকের গঠন বর্ণনা করা যায়।[1]
নাকের তরুণাস্থিগুলো হলো সেপ্টাল, পার্শ্বীয়, প্রধান অ্যালার এবং ক্ষুদ্র অ্যালার তরুণাস্থি।[2] প্রধান ও ক্ষুদ্র তরুণাস্থিগুলো বৃহত্তর এবং কম অ্যালার তরুণাস্থি নামেও পরিচিত। ভোমার এবং সেপ্টাল তরুণাস্থির মধ্যে অবস্থিত ভোমেরনাসাল তরুণাস্থি নামে তরুণাস্থির একটি সংকীর্ণ স্ট্রিপ রয়েছে।[3]
নাকের রক্ত সরবরাহ অপথ্যালমিক, ম্যাক্সিলারি এবং ফেসিয়াল ধমনীর শাখা দ্বারা সম্পন্ন হয়। এগুলো ক্যারোটিড ধমনীর শাখা। এই ধমনীর শাখাগুলো নাকের মিউকাসে এবং নাকের নীচের অংশে প্লেক্সাস গঠন করতে অ্যানাস্টোমোসিস তৈরি করে। সেপ্টাল অঞ্চলে কিসেলবাখের প্লেক্সাস নাক থেকে রক্তপাতের একটি সাধারণ স্থান।[1]
নাক এবং প্যারান্যাসাল সাইনাসে স্নায়ু সরবরাহ সাধারণত ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুর দুটি শাখা যথা: অপথ্যালমিক স্নায়ু ও ম্যাক্সিলারি স্নায়ু এবং এদের শাখাগুলো থেকে আসে।[1][4]
নাক শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশে শ্বাসনালীর প্রথম অঙ্গ। এর প্রধান শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা হলো শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বাতাসের কণাগুলির উষ্ণায়ণ, ময়শ্চারাইজিং এবং ফিল্টারিং। নাকের মিউকাস ফুসফুসে প্রবেশের সময় বড় কণাগুলিকে ফাঁদে ফেলে। প্রশ্বাসবায়ু এবং নিঃশ্বাস বায়ু নাসারন্ধ্রের পথ দিয়েই যায় বা ফিরে আসে।
নাসিকা বা নাক আমাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়, মাথার সামনে দুটি চোখের মাঝে নাসিকা বা নাক অবস্থিত। নাকের বাইরের ছিদ্রকে বহিঃনাসারন্ধ্র (External Nasal opening) বলা হয়। ভেতরের নলাকৃতি অংশের নাম নাসাপথ (Nasal passage)। দুটি নাসাপথ বাইরের দিকে সেপটাম (Septum) প্রাচীর দিয়ে পৃথক থাকে। কিন্তু শেষ অংশে এই বিভেদ প্রাচীর থাকে না। নাসিকা বাইরে তরুণাস্থি দিয়ে গঠিত। নাসাপথ গলবিলের সঙ্গে অন্তঃনাসারন্ধ্র (Internal Nasal opening) দিয়ে যুক্ত থাকে। নাসাপথে ঝিল্লিময় আবরণ দেখা যায়, একে ঘ্রাণ-ঝিল্লি (Olfectory Epithelium) বলে। ঘ্রাণ-ঝিল্লিতে প্রচুর স্নায়ুকোষ বা নিউরন দেখা যায়। এগুলির মুক্তপ্রান্ত নাসাপথে অবস্থান করে। বহিঃনাসারন্ধ্রে সাধারণতঃ রোম থাকে। এগুলি ধূলো-বালি আটকায়। নাসিকা বা নাকের কাজ ঘ্রাণের অনুভূতি গ্রহণ করা। বাতাসে বাহিত হয়ে আসা কোন উদ্বায়ী বস্তু নাসিকায় প্রবেশ করলে তা ঘ্রাণ-ঝিল্লিতে অবস্থিত ঘ্রাণ-কোষ (Olfectory Cells)-গুলিকে উদ্দীপিত করে। এই উদ্দীপনা ঘ্রাণ-স্নায়ু (Olfectory Nerve) মাধ্যমে মস্তিষ্কে গেলে তবেই তার ঘ্রাণ আমরা অনুভব করতে পারি।[5]
নাকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ চিকিৎসা অবস্থার মধ্যে একটি হলো নাক থেকে রক্তপাত (এপিট্যাক্সিস)। নাক থেকে রক্তপাতের প্রধান কারণ হলো কিসেলবাখ প্লেক্সাসে আঘাত পাওয়া। এটি হলো সেপ্টামের নীচের সামনের অংশে একটি ভাস্কুলার প্লেক্সাস যা চারটি ধমনীর অ্যানাসটোমোসিসের সাথে জড়িত। নাক থেকে রক্তপাতের আরেকটি কারণ হলো উড্রফের প্লেক্সাসে আঘাত। উড্রফের প্লেক্সাস হলো নাকের সেপ্টামের নিচে মাংসের পিছনের অংশে পড়ে থাকা বড় পাতলা-প্রাচীরযুক্ত একটি শিরাযুক্ত প্লেক্সাস।[6] শিশুদের ক্ষেত্রে নাক হলো শরীরে বহিরাগত পদার্থ প্রবেশের একটি সাধারণ পথ।[7] নাক উন্মুক্ত অঞ্চলগুলির একটি যা ফ্রস্টোবাইট এর জন্য সংবেদনশীল।
Nestor, James (২০২০)। Breath: The New Science of a Lost Art। Riverhead Books। পৃষ্ঠা ৩০৪। আইএসবিএন 978-0735213616।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.